গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের সতর্কতা । গর্ভবতী নারীর যত্ন

গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের সতর্কতা

গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের সতর্কতা সম্পর্কে আজকের আলোচনা।  গর্ভকালীন চেকআপ করে আপনি নিশ্চিত হয়ে সর্তকতা অবলম্বন করতে পারেন । প্রথমবার একবার পরীক্ষা করে তারপর সাবধানে চলাফেরা করুন।  বিভিন্ন বাজে দুর্গন্ধ থেকে দূরে থাকুন।  যেমন ধূমপান, সিগারেট,  মদ, নেশাখোর, গাঞ্জাখোর, ইত্যাদি। গর্ভকালীন অবস্থায় এসব থেকে দূরে থাকতে হবে অবশ্যই। সবকিছু থেকে দূরে থাকুন,  প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ যেমনই হোক না কেন গর্ভকালীন সময়ে আপনাকে অবশ্যই এসব জিনিস,  অন্য যেকোনো জিনিস থেকে  সবচাইতে বেশি ক্ষতি করে যা গর্ভের বাচ্চার উপর প্রভাব পড়ে।  তাই এসব থেকে অবশ্যই আপনাকে দূরে থাকতে হবে।  দীর্ঘ নয় মাস যাবত একজন মহিলা অনেক কষ্ট সাধন করার পর একটি সন্তান প্রসব করেন।।  তারপর থেকে শুরু হয় আলোকিত জীবন। তাই  আপনাকে সকল নিয়ম মেনে চলে সন্তানকে ভালো রাখতে হবে।  এ জন্যই এসব ধূমপান যেগুলো রয়েছে সব গুলো থেকে আপনাকে অবশ্যই দূরে থাকতে হবে।

গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের সতর্কতা

গর্ভকালীন অবস্থায় আপনি সব সময়ের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে থাকুন।  আপনি যদি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই ডাক্তার এর কাছে  অবশ্যই পরামর্শ করতে হবে। একজন ডাক্তার নির্বাচন করুন।  ডাক্তার নির্বাচন করার আগে কিছু জিনিস মনে রাখতে হবে।  যেমন ডাক্তারের সাথে যে কোন সময় যোগাযোগ করা সম্ভব কিনা যেকোনো প্রয়োজনীয় দরকার এর জন্য তাকে পাওয়া যাবে কিনা।  এজন্য প্রথমে আপনাকে চেকআপ এর মাধ্যমে ডাক্তারের সাথে সবসময় যোগাযোগ রাখতে হবে। গর্ভকালীন অবস্থায় বেশি বেশি চলাফেরা করা একদম নিষেধ।  অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় আপনি যদি বেশি চলাফেরা করেন তাহলে বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে।  সেদিকে আপনাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। এই সময়ে ডাক্তারের নিকট অল্প সময়ের মধ্যে পৌঁছানোর মতো একটি ব্যবস্থা করে রাখতে হবে।  কারণ বেশি চলাফেরা এবং জার্নি করা একদমই নিষেধ। 

হরমোনজনিত সমস্যায় গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের সতর্কতা

গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের সতর্কতার মধ্যে রয়েছে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর শরীরের কিছু হরমোনের পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। এজন্য আপনার বমি বমি ভাব মাথা ঘোরানো খাবার না খেতে পারা, শরীর দুর্বল লাগা, শরীর খারাপ লাগা ইত্যাদি এইসব হতে পারে শুধু হরমোনের পরিবর্তনের জন্য। নারীদের অনেকেই আছেন যারা  এসবের মধ্যে কোনটাই হয় না তারা অবিরত সুস্থ থাকেন। বেশি বেশি বমি করা, মাথা ঘোরা। শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যদি হয় তাহলে আপনি সকালে ঘুম থেকে উঠে লেবু পানি খেতে পারেন।  এতে করে আপনার বিভিন্ন ধরনের সমস্যাগুলো দূর হতে সাহায্য করবে।  এর জন্য ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই।  মাথা যদি বেশি ঘোড়ার সম্ভাবনা দেখেন তাহলে একটু বিশ্রাম করে নিন।  অল্প কিছুক্ষণের জন্য বিশ্রাম করার পর শরীর ঠিক হয়ে যাবে।

 তাই আপনাকে গর্ভকালীন অবস্থায় সঠিক নিয়ম গুলো মেনে চলতে হবে অবশ্যই এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে এবং খুবই জরুরী। একজন গর্ভকালীন মায়ের যত্ন এবং ভালো রাখার পরামর্শ তার ফ্যামিলির দিতে পারবে।  তাই এই সময়ে ফ্যামিলিদের উচিত তাকে হাসিখুশি এবং চিন্তা মুক্ত করে রাখা। 

গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের সতর্কতা এ পর্যায়ে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের প্রতি আলোকপাত করব। গর্ভকালীন অবস্থায় হরমোনজনিত পরিবর্তনের কারণে এই সময় স্তনের আকার পরিবর্তন হওয়া শুরু হয় আস্তে আস্তে।  হরমোনের কারণে স্তনে হালকা ব্যথা ও স্তন নরম হয়ে যায়।  গর্ভকালীন অবস্থায় এমন হলে ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। আপনাকে এর জন্য আনন্দ করতে হবে এবং মনে রাখতে হবে এই যে পরিবর্তন টা শুধু আপনার সন্তানের জন্য জরুরী।  তাই এর জন্য ভয় পাওয়ার কোন দরকার নেই।

গর্ভকালীন অবস্থায় সন্তান গর্ভে ধারণ করার ফলে কিছু শারীরিক পরিবর্তন ঘটতে পারে।  যেহেতু সন্তান ধারণ করা হয় ও জরায়ুর অবস্থা থাকে প্রসাবের উপরে, তাই বাচ্চার বৃদ্ধির সাথে সাথে জরায়ুর প্রসাবের নারীর ওপর চাপ ফেলে।  এর ফলে প্রস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাবে।  প্রথম তিন মাস এই সমস্যা এবং শেষের তিন মাসের মধ্যে প্রবল থাকে অবশ্যই।

অতিরিক্ত রক্তচাপ

তাছাড়া গর্ভকালীন মায়েদের শরীরে রক্তচাপ এর সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে।  অনেকেরই রক্তচাপ কমে যেতে পারে আবার অনেকেরই রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে।  এরজন্য দেখা দিতে পারে সুগারের সমস্যা। তাই আপনাকে অবশ্যই গর্ভকালীন অবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শে সবকিছু পরীক্ষা একবার করে  নিয়ে দেখতে হবে গর্ভ অবস্থায় স্বাভাবিক আছে কিনা।  এজন্য আপনাকে অবশ্যই ডাক্তারের চেকআপ থাকতে হবে।  এরকম কোন সমস্যা দেখা দিলে নিয়মিত চেকআপ এর মধ্যে অবশ্যই থাকা ভালো। যদি কোন সমস্যা না হয় তাহলে তা ভালোর কোন শেষ নেই। আর যদি সমস্যা দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই আপনাকে শুরু থেকে লাস্ট পর্যন্ত ডাক্তারের পরামর্শে চলতে হবে এবং ডাক্তার যা বলে তাই করতে হবে।  তাই আমি আপনাকে বলব আপনি অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক কাজ করুন।

গর্ভাবস্থায় বুকে জ্বালাপোড়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য

গর্ভকালীন অবস্থায় অনেক মায়ের বুকে জ্বালাপোড়া করা ও কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। গর্ভকালীন অবস্থায় খাবার হজম ও পেট খালি হতে অনেক বেশি পরিমানে সময় লাগে।  স্বাভাবিক মহিলাদের মত পেট খালি হয় না।  গর্ভকালীন মহিলাদের হজম  ও পেট তাড়াতাড়ি না হওয়ার কারণ হচ্ছে গর্বের বাচ্চা খাবার থেকে পুষ্টি গ্রহণ করতে অনেক বেশি সময় লেগে যায়।  তাই একটু সময় লাগতে পারে। তাই গর্ভকালীন মহিলাদের এজন্য অনেক কষ্ট হয়ে যায়। এই সমস্যার জন্য  গর্ভবতী মহিলার শিকার হতে পারেন কোষ্ঠকাঠিন্য ও বুক জ্বালাপোড়া করা রোগীর।  এই সমস্যা নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই।  কারণ এই সময় আপনাকে অবশ্যই হাসিখুশি থাকতে হবে কোন টেনশন করা যাবেনা।  আপনি শুরু থেকে লাস্ট পর্যন্ত চেকআপে থাকুন তাহলে আপনাকে কোন রকমের টেনশন করতে হবে না।  আর দরকার পড়লে আপনি ডাক্তারের পরামর্শে কোনো ওষুধ সেবন করতে পারেন।

গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের সতর্কতা বা বাড়তি সতর্কতা

একজন মহিলা  গর্ভ ধারণ করেছেন এটা জানার পরে অনেক বেশি খুশি ও আনন্দিত হন আবার অনেকে প্রফুল্ল ক্লান্তি অনুভব করেন এসব ধরনের অনুভূতি অনুভব করেন ইত্যাদি। গর্ভকালীন অবস্থায় নারীদের অনেক কিছু মেনে চলতে হয় এবং অনেক  কষ্ট করে একটি সন্তান প্রসব করেন।  আবার অনেকেই রয়েছেন গর্ভকালীন অবস্থায় একদমই মেনে নিতে পারেন না।  অনেকেই আছেন এত ধৈর্য্য না রেখে রেগে যান। আপনার শরীর খারাপ লাগতেই পারে ।  কারণ আপনি মানুষ আপনার শরীরে আরেকজন মানুষের বসবাস।  মহান আল্লাহতালার বিধি-বিধান তাই আপনাকে অবশ্যই তার হুকুম মেনে চলতে হবে।  সকল নারীদের  এই কাজটি হচ্ছে   ধৈর্যের কাজ। আমরা নারীরা যদি ধৈর্য ধরে রাখতে পারি তাহলে আমাদের আনন্দটা আরো বৃদ্ধি পাবে কারণ ফুটফুটে একটি সন্তান যদি আপনার কলে আসি তাহলে আপনার মনে সকল কষ্ট বেদনা ক্লান্তি দূর হতে সাহায্য করবে একটি সন্তান। 

স্বামী-স্ত্রীর মিলনের ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের সতর্কতা

গর্ভকালীন অবস্থায় স্বামী স্ত্রীর সহবাসের  দিক থেকে অনেকেরই ধৈর্য ধরে রাখতে পারেন না।  কিন্তু অবশ্যই আপনাকে ধৈর্য রাখতে হবে কারণ একজন স্ত্রী এত কষ্ট করার পরেও যদি সে ধৈর্য ধরে একটি  সন্তানের মা হতে যাচ্ছেন। তবে আপনি কেন এত ধৈর্য ধরে রাখতে পারবেন না আপনিও তো একজন বাবা হতে যাচ্ছেন।  তাই এই বিষয় নিয়ে দুজনকে অনেক সার দিয়ে চলতে হবে এখানে রাগারাগির কোন প্রশ্নই আসে না এবং অভিমানের কোন প্রশ্ন আসে না তাই স্বামীদেরকে বুঝতে হবে গর্ভকালীন অবস্থায় সহবাসের কিছু নিয়ম অবলম্বন করতে হবে এবং স্ত্রীকে একটু রেস্টে থাকার সুযোগ করে দিতে হবে।  আবার অনেকে আছেন যারা এই সময়ে কোনো একটি কাজে ভুল হলে অনেক রাগারাগি করেন আপনি চাইলে রাগারাগি না করে অসুস্থ স্ত্রীকে সাহায্য করতে পারেন। কারণ এই সময় সবারই ভালো লাগে না খারাপ লাগতেই পারে তাই আপনাকে বুঝে শুনে তাকে একটু সাহায্য করতে হবে। 

খাওয়া দাওয়া ও চলাফেরার ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের সতর্কতা

গর্ভকালীন অবস্থায় আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে কাজগুলো আপনি করছেন সেগুলো এই সময়ে করা ঠিক কিনা তা ভালো করে জেনে নেওয়া ভালো। ভারী কোনো কাজ একদমই করা যাবে না, একটানা বেশিক্ষণ কাজ করা যাবে না, এবং সঠিক সময়ে নিয়মমতো রেস্টে থাকতে হবে।  প্রথম তিন মাস অবশ্যই আপনাকে খুব সাবধানে থাকতে হবে। কারণ প্রথম তিন মাস এবরশনের হার সবচাইতে বেশি। জয় এর সঙ্গে আপনাকে মনে রাখতে হবে আপনি এমন কোন খাবার খাবেন না যার ফলে আপনার সন্তানের ক্ষতি হতে পারে।  তাই খাবারের ব্যাপারটা আপনাকে ভালোভাবে খেয়াল রাখতে হবে।   গর্ভকালীন অবস্থায় যে খাবারগুলো খাওয়া একদমই নিষেধ, যেমনৎ পেঁপে আনারস গাজর,  কাঁচা বা আধা সিদ্ধ যে কোন খাবার খাওয়া একদমই নিষেধ।  যেমনঃ মাছ, মাংস, ডিম এসব খাবার পরিহার করতে হবে।  

প্রথম তিন মাস আপনাকে অবশ্যই একটু কষ্ট করে চলতে হবে।  অনেক কিছু খেতে মন চায় কিন্তু সন্তানের জন্য আপনাকে অবশ্যই এসব খাবার থেকে বঞ্চিত থাকতে হবে। তেলে ভাজা খাবার অবশ্যই আপনাকে পরিহার করতে হবে। আপনার গর্ভের বাচ্চার চিন্তা করে আপনাকে অবশ্যই স্বাস্থ্যকর যে খাবারগুলো রয়েছে সেই খাবারগুলো খেতে হবে।  ভেজাল কোন খাবার খাওয়া একদমই উচিত না।  এতে আপনার গর্ভে সন্তানের ক্ষতি  হওয়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে। তাই আপনাকে খাবারের দিক থেকে বুঝে-শুনে খেতে হবে। 

ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী যদি কোন ঔষধ দেওয়া থাকে তাহলে সেই ওষুধগুলো খাবেন অবশ্যই। কিন্তু যদি আপনার গ্যাসের সমস্যা মাথা ব্যাথা জ্বর হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ঔষধ আপনি খেতে পারবেন না।  যদি এই ভুলটা করে থাকেন তাহলে আপনার গর্ভে সন্তানের ক্ষতি হতে পারে।

গর্ভকালীন অবস্থায় ঘুমের কিছু নিয়ম রয়েছে। আপনি চাইলে ঘুমের সময় বাড়িয়ে দিতে পারেন।  অবশ্যই অবশ্যই আপনাকে রাতে  8 থেকে 10 ঘন্টা অবশ্যই ঘুমানোর চেষ্টা করতে হবে।  সারাদিনের কাজের ফাঁকে ফাঁকে আপনাকে অবশ্যই হালকা হালকা বিশ্রাম করতে হবে।

গর্ভকালীন অবস্থায় এই তিনমাস যদি আপনি সঠিকভাবে সঠিক নিয়মে চলতে পারেন তাহলে আপনার কোন ধরনের সমস্যা দেখা দিবেন না। তাই প্রথম তিন মাস অবশ্যই আপনাকে সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। 

আজকের আলোচনা রয়েছিল গর্ভাবস্থায় প্রথম 3 মাসের সতর্কতা তা কি বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আজকে এ পর্যন্তই সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে বিদায় নিচ্ছি সবাই ভালো থাকবেন। আবারো নতুন কোন পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।


শাহীন

আমি শাহীন । পেশায় একজন ব্যবসায়ী । পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করতে পছন্দ করি। আশা করছি আমার শেয়ারকৃত তথ্য থেকে আপনারা উপকৃত হচ্ছেন আর তা হলেই আমার পরিশ্রম স্বার্থক।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Ads

Ads