ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়ম নিয়ত ও ফজিলত
আসসালামু আলাইকুম আজকে আলোচনা করব ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়ম ও ফজিলত সম্পর্কে। আজকের আলোচনায় রয়েছে ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়ম ও নিয়ত ফজিলত ও হাদিস সম্পর্কে।
ইশরাকের নামাজ নফল নামাজ যা আদায়ের ফলে অনেক সওয়াব পাওয়া যায়। আপনার গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। দৈনিক পাঁচ অক্ত নামাজের আমাদের ওপর ফরজ করা হয়েছে। তাই আমরা অবশ্যই দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার চেষ্টা করব। দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সঙ্গে নফল নামাজ পড়ার চেষ্টা করব।
আমরা যদি নফল নামাজ গুলো পড়তে পারে সেক্ষেত্রে আমাদের অতিরিক্ত সওয়াব পাওয়া যাবে এবং বান্দার যে গুনাহ রয়েছে সেগুলো মাফ হয়ে যাবে। তাই ইশরাকের নামাজের ফজিলত অনেক বেশি। দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার সঙ্গে এশরাক নামাজের আদায় করা দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ অর্জন করা যায়। তাই অবশ্যই আমাদেরকে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সাথে ইশরাকের নামাজ পড়া দরকার।
আরো পড়ুনঃ
- রবি ইন্টারনেট অফার । রবি মিনিট অফার
- রোজার ঈদ ২০২৩ কত তারিখে / ঈদুল ফিতর ২০২৩
- জনপ্রিয় ৪০ জন বাংলাদেশের সেরা আলেমদের বক্তাদের তালিকা
- কিসমিসের ৩০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন
চলুন তাহলে জেনে নেই ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়ম ও ফজিলত সম্পর্কে
সূচিপত্রঃ
- ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়ম
- এশরাকের নামাজ পড়ার নিয়ত
- ইশরাকের নামাজ
- এশরাকের নামাজ কত রাকাত
- ইশরাকের নামাজের ফজিলত
- সর্বশেষ কথা ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়ম ও ফজিলত নিয়ত
ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়ম জেনে নিনঃ
নবী করিম সল্লালাহ সালাম মিউজিক আদায় করতেন ও সকলকে আদায় করার কথা বলতেন ইশরাকের নামাজ। সালাতুল ইশরাক ও এর ইশরাকের নামাজ হলো একটি নফল নামাজ। ইসরাত শব্দের অর্থ হলো আলোকিত হওয়া। সূর্য উদিত হওয়া। জগত আলোকিত হয়ে। ইত্যাদি তাই এই সমাজে নামাজ আদায় করতে হয় তাকে এশরাকের নামাজ বলা হয়ে থাকে।
ইশরাকের নামাজ ফজরের নামাজের পর সূর্য ওঠার পর আদায় করতে হয়। ইশরাকের নামাজ অনেকেই সূর্য ওঠার 15 থেকে 20 মিনিট পরে নামায আদায় করে থাকেন। সূর্য এক বর্ষা বা দেড় মিটার পরিমাণ আকাশের দিকে ওঠা পর্যন্ত ইশরাকের নামাজের সময় থাকে। সূর্য উদিত হওয়ার পরপরই আদায় করতে হয় ইশরাকের নামাজ। এর কিছুক্ষণ পর আদায় করতে হয় চাশতের নামাজ। দুটি নামাজ একই।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম ফজরের নামাজ আদায়ের পর কিছুক্ষণ দিনের আলোচনা করতেন।ইশরাকের নামাজের অক্ত হলে এই নামাজ আদায় করে নিতেন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম ইশরাকের নামাজ পড়তেন এবং সকলকে ইশরাকের নামাজ পড়ার আদেশ দেন।
ইশরাকের নামাজ নফল না সুন্নত এই নিয়ে অনেক মতভেদ রয়েছে। তাই বিভিন্ন হাদিসে জানা যায় এটি একটি নফল ইবাদত। ইশরাকের নামাজে কোন কাজ নেই। ইশরাকের নামাজ আদায় না করলে কোন গুনাহ হবে না। ইশরাকের নামাজ আদায় করলে আপনি অতিরিক্ত সওয়াব পাবেন।
এশরাকের নামাজ কত রাকাত জেনে নিনঃ
হাদীসে রয়েছে ইশরাকের নামাজের 2 রাকাত থেকে 8 রাকাত পর্যন্ত আদায় করা যায়। কিছু কিছু ওলামা একরাম কন বলে থাকেন ইশরাকের নামাজ দুই রাকাত করে 12 রাকাত পর্যন্ত পড়া যেতে পারে।
আমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম দুই রাকাত করে চার রাকাত ইশরাকের নামাজ আদায় করতেন। এজন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম সকল মুসলিম ভাইদের এবং বোনদের কে ইশরাকের নামাজ দুই রাকাত করে চার রাকাত পড়া কথা বলেছেন। ইশরাকের নামাজ সঠিক পড়ার নিয়ম হচ্ছে ফজরের নামাজের 15 থেকে 20 মিনিট পর দুই দুই রাকাত করে চার রাকাত নামাজ আদায় করা।
ইশরাকের নামাজের নিয়তঃ
সালাতুল ইশরাক বা ইশরাকের নামাজের জন্য আলাদা কোনো নিয়ম নেই। হাদিসে যেই নিয়ম রয়েছে ইশরাক নামাজ পড়ার নিয়ত সে অনুযায়ী পড়া উত্তম। ইশরাক নামাজ পড়ার শুরু করার আগেই নিয়ত বাংলাতে করতে পারবেন।
বাংলা অনুবাদঃ ইশরাকের নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে কেবলা মুখী হয়ে নিয়ত করলাম আল্লাহু আকবার।
ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়মঃ
ইশরাকের নামাজ পড়ার জন্য আলাদা কোন সূরা বা কেরাত পড়তে হয় না। ইশরাকের নামাজ আদায় করার জন্য বিশেষ কোন সূরা বা কেরাত পড়ার কোনো প্রয়োজন নেই। সাধারণত আমরা দুই রাকাত সুন্নত নামাজ পড়ে থাকি ঠিক সেইরকম করেই আপনি ইশরাকের নামাজ আদায় করতে পারবেন।
আপনাদের সুবিধার জন্য ইশরাকের নামাজ আদায় করার কিছু ধাপ নিচে বর্ণনা করা হলোঃ
ফজরের নামাজ আদায় করার পর ওই স্থানে বসে তাসবীহ-তাহলীল পাঠ করতে হবে। চাইলে সময় আল্লাহর দরবারে যে কোন দোয়া করা যেতে পারে।
15 থেকে 20 মিনিট অপেক্ষা করার পর নামাজ আদায় করার জন্য দাঁড়াতে হবে। এশার নামাজ পড়ার জন্য বাংলা নিয়ত পড়ে নামায শুরু করতে হবে।
তারপর দুই রাকাত সুন্নত নামাজের ন্যায় আদায় করতে হবে। ইশরাকের নামাজ দুই রাকাত থেকে চার রাকাত পর্যন্ত এবং 12 রাকাত পর্যন্ত পড়া যায়।
ইশরাকের নামাজের ফজিলত জেনে নিনঃ
সাধারণত আমরা মুসলিম ভাই ও বোনেরা নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে থাকি এর সঙ্গে ইশরাক নামাজ আদায় করা উত্তম। ইশরাকের নামাজের অনেক ফজিলত রয়েছে এবং হাদীস রয়েছে অনেক। তাই কোরআন ও হাদিস আলোকে ইশরাক নামাজের ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম ফজরের নামাজ আদায়ের পর সূর্য উদিত হওয়ার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে ইশরাকের নামাজ আদায় করতেন। এতে বুঝা যায় ইশরাক নামাজের কতটা গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত।
আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি জামাতের সহিত ফজরের নামাজ আদায় করলো ওই সূর্যোদয় পর্যন্ত আল্লাহ তাআলার জিকির থাকবে। তারপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করল সে যেন পরিপূর্ণ একটি হজ ও ওমরাহ পালন করল এবং অনেক পরিমাণে ছোঁয়া পেল।
হযরত আবু উমামাহ থেকে বর্ণিত করেছেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম বলেছেন এক নামাজের পর ধারাবাহিক আরেক নামাজ যার মাঝখানে কোন গোনাহ হয়নি তাই উক্ত মাদ্রাসা লেখা হয় আবু দাউদ
সূর্য ওঠার আগে আল্লাহর যিকির তাকবীর পাঠ করা আমার নিকট ইসমাইল বংশের দুজন গোলাম আজাদ করার চেয়েও অধিক প্রিয় মোহাম্মদ
ইশরাক নামাজ নিয়মিত আদায় করা একটি কাজ।নফল ইবাদত পালন করা খুবই ভালো। আল্লাহ তাআলার নিকট অধিক প্রিয় আমলটি হচ্ছে যে আমল নিয়মিত করা হয় সেই আমন আল্লাহতালার কাছে অধিক প্রিয়। তবে আপনি যদি ইশরাক নামাজ নিয়মিত প্রতিদিন পড়তে পারেন তাহলে আপনি মহান আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয় হতে পারবেন।
নবী করিম সল্লালাহ সাল্লাম নফল ইবাদত করা শুরু করলে তা তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ছেড়ে দেননি। কোন নফল ইবাদত নিয়মিত আদায় করা খুবই সুন্নত। তাই নবী করীম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম আগ পর্যন্ত এশার নামাজ। তাই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম তিনি নফল ইবাদত ক্ষেত্রে অধিকাংশ গুরুত্ব দিতেন। নফল ইবাদত খুবই জরুরী হিসেবে।
নবী করীম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন দিনের শুরুতে যেন বেশি বেশি সেজদার মাধ্যমে হয়। তাই ফজরের নামাজের পর ইশরাকের নামাজ অধিক উত্তম।
বেশি বেশি নফল নামাজ আদায় করলে গুনাহ মাফ হয়ে যায়। তাই অবশ্যই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সঙ্গে অতিরিক্ত নফল নামাজ পড়া উত্তম। এসবের পাশাপাশি অন্যান্য নফল নামাজ ইবাদত পালন করা খুবই উত্তম।
ইশরাকের নামাজের সময়/ এশরাকের নামাজ/ ইশরাকের নামাজের ফজিলত/ ইশরাকের নামাজের নিয়ম
বেশি বেশি নফল নামাজ আদায় মহান আল্লাহ তাআলার প্রিয় বান্দা হতে পারবেন। তাই আমাদেরকে বুঝে নিতে হবে নফল ইবাদত কতটা গুরুত্বপূর্ণ। যত নফল ইবাদত রয়েছে শব্দগুলো করার চেষ্টা করুন। তার মধ্যে একটি হচ্ছে ইশরাকের নামাজ।
ইশরাক নামাজ পড়ার পর মহান আল্লাহতালার কাছে প্রিয় বান্দা হতে পারবেন।
একদম এক সাহাবী প্রশ্ন করলেন আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় কাজ কি? উত্তরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বললেন তুমি আল্লাহর জন্য বেশি বেশি সেজদাহ করবে তবে তুমি আল্লাহকে বেশি বেশি খুশি রাখতে পারবে।
তাই মহান আল্লাহ তালা কে খুশি রাখার জন্য অবশ্যই আমাদেরকে নফল ইবাদত গুলো রয়েছে সেগুলো করা। নফল ইবাদত করার ফলে মহান আল্লাহতালা আপনার একটি মর্যাদা বৃদ্ধি করবে। নফল ইবাদত করার ফলে আপনার গুনাহ মাফ হয়ে যাবে।
মহান আল্লাহতালা বলেছেন বান্দারা তুমি দিনের প্রথম অংশে আমার জন্য চার রাকাত নামাজ আদায় করো। বরঞ্চ তোমাদের যা কিছু প্রয়োজন হবে আমার কাছে চেয়ে নাও। পুনরায় আমি তোমাদেরকে আবদার পূরণ করে দেব।
আল্লাহতালা মুসলিম উম্মতকে নির্ধারিত ফরজ নামাজগুলো আদায়ের পাশাপাশি হাদিসে গ্রণ্ড নফল নামাজ পড়ার মাধ্যমে দুনিয়া ও পরকালে ফজিলত ও মর্যাদা লাভ করার সুযোগ করে দেন। তাই সকল মুসলিমদের উচিত ইশরাকের নামাজ সহ অন্যান্য নামাজ আদায় করা।
সর্বশেষ কথাঃ
ইতিমধ্যে আমরা জানতে পেরেছি এশরাক নামাজের নিয়ম ও নিয়ত ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি সকলে মনোযোগ দিয়ে আমাদের সঙ্গে থাকুন। আমরা যদি প্রতিনিয়ত নফল ইবাদত নিয়মিত করতে পারি তাহলে দৈনিক ফরজ ইবাদতের ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে। নফল ইবাদত করার ফলে আপনি আল্লাহতালার কাছে প্রিয় বাবা হতে পারবেন।
আমাদের মধ্যে অনেকেই এই নামায আদায় সম্পর্কে উদাসীন হয়ে থাকেন। ইশরাক নামাজের ফজিলত সম্পর্কে জেনে সঠিকভাবে ইশরাক নামাজ নফল নামাজ নফল ইবাদত পালন করার চেষ্টা করুন দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ সুনির্দিষ্ট করা যায়। তাই সকল মুসলিমদের উচিত এশার নামাজ নিয়মিত আদায় করা। এবং আল্লাহকে সন্তুষ্ট করা।
মহান আল্লাহ তালা কে খুশি রাখার জন্য অবশ্যই আমাদেরকে ইশরাক নামাজ পড়া ও নফল ইবাদত করা খুবই জরুরী। দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সঙ্গে আমাদের অবশ্যই নফল ইবাদত করা খুবই জরুরী।
আজকের এই আলোচনায় আমরা জানতে পেরেছি এশরাক নামাজের নিয়ম ও নিয়ত ফজিলত সম্পর্কে। আমাদের এই পোস্ট যদি আপনারা সকলে মনোযোগ দিয়ে পড়ে তারপর এশার নামাজের নিয়ম ও নিয়ত ফজিলত করে থাকেন সেক্ষেত্রে মহান আল্লাহতালার কাছে অনেক প্রিয় বান্দা হতে পারবেন। তাই অবশ্যই আমাদেরকে ইশরাক নামাজ পড়া খুবই জরুরী।
আজকের আলোচনায় এ পর্যন্তই সকলে ভাল থাকবেন। আবার কোন নতুন পোস্ট নিয়ে আপনাদের সঙ্গে আবার হাজির হব সকলেই সে পর্যন্ত সুস্থ থাকুন।