ফার্মেসি ব্যবসা আসলেই একটি সম্মানজনক পেশা



আমাদের দেশে চিকিৎসা একটি মৌলিক অধিকার । যদিও এটি একটি মৌলিক অধিকার তবুও আমাদের দেশে প্রচুর মানুষ চিকিৎসার অভাবে  ভোগে।  কারণ আমাদের দেশে যে পরিমাণ জনসংখ্যা তার তুলনায় ডাক্তার এবং হসপিটাল এর পরিমান খুবই কম।  পর্যাপ্ত ডাক্তার না থাকার কারণে আমরা সাধারন মানুষেরা সঠিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।  কিন্তু ছোটখাটো স্বাস্থ্য সমস্যা গুলোকে কাটিয়ে ওঠার জন্য এদেশে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পল্লী চিকিৎসক।  যাদের অবদানে অনেক সময় আমরা অল্প খরচে ভালো মানের চিকিৎসা পেয়ে যাই।  যদিও সব সময় আমরা তাদের অবহেলার চোখে দেখি।  কিন্তু প্রকৃত অর্থে এই পল্লী চিকিৎসকরাই আমাদের দুঃখের সঙ্গী।কেননা  আমরা যখনই সামান্য কোন অসুখে ভুগি তখনই পল্লী চিকিৎসকের শরণাপন্ন হই ।

 যারা ব্যবসা করবেন ভাবছেন এবং এটাও ভাবছেন যে স্মার্ট কোন ব্যবসা  করবেন তাহলে আপনি ফার্মেসি বিজনেস শুরু করতে পারেন।  কেননা এটি একটি সম্মানজনক পেশা।  এই পেশার মাধ্যমে  আপনি মানুষের সেবা করতে পারবেন।  সেই সাথে নিজের আত্ম কর্মসংস্থানের সুযোগও হল।

কিভাবে ব্যবসাটি শুরু করবেন? 

ফার্মেসি ব্যবসা এমন একটি ব্যবসা যেটি যে কেউ চাইলে করতে পারে না ।  আমরা যেমন যে কোন ব্যবসা যে কোন সময় একটি ট্রেড লাইসেন্স এর মাধ্যমে শুরু করতে পারি কিন্তু ফার্মেসি ব্যবসা  একটু ব্যতিক্রম। এমন হাজার হাজার ব্যবসা রয়েছে যেগুলো করার জন্য কোন শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না।  কিন্তু আপনি যদি ফার্মেসি ব্যবসা করতে চান তাহলে সামান্য একটু শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন হবে।  সরকারের কাছ থেকেও আপনাকে এই ব্যবসা করার জন্য আলাদাভাবে অনুমতি নিতে হবে।  যেমন: ফার্মেসি ব্যবসা করার জন্য আপনাকে বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিল এর অধীনে ফার্মাসিস্ট কোর্স করতে হবে অর্থাৎ আপনার ব্যবসাটি তাদের অধীনে নিবন্ধিত হতে হবে।

ফার্মেসি ব্যবসা করার জন্য কি কি যোগ্যতা লাগে? 

এই ব্যবসাটি করার জন্য তেমন একটা যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না।  সামান্য একটু দৌড়াদৌড়ি করলেই আপনি এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন।  এ ব্যবসা করার জন্য আপনাকে বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিল এর অধীনে ফার্মাসিস্ট কোর্স করতে হবে।  এটি সাধারণত তিন মাসের কোর্স।  কোর্স শেষ করার পর আপনি একটি সার্টিফিকেট পাবেন।  যেটির মাধ্যমে আপনি বৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন। অবশ্য যারা ফার্মাসিস্ট কোর্স না করে ব্যবসা করছে তারা আদেশ এর আইন অনুযায়ী অবৈধভাবে ব্যবসা করছে।  নিশ্চয় আমরা কোন বেআইনি কাজ করবো না।

ফার্মাসিস্ট কোর্স করার জন্য কি কি যোগ্যতা লাগে? 

 আপনি যদি ফার্মাসিস্ট কোর্স করতে চান তাহলে আপনাকে মিনিমাম এসএসসি পাস হতে হবে।   এছাড়াও কোন একজন ড্রাগ লাইসেন্স এর মালিক  এর রেফারেন্স নিতে হবে। একটি জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি প্রয়োজন হবে।  এছাড়াও আপনি বর্তমানে কোথায় প্র্যাকটিস করছেন সেই প্রতিষ্ঠানের একটি প্যাড লাগবে।  একজন এমবিবিএস ডাক্তারের সাধারণত যে ধরনের প্রেসক্রিপশন স্লিপ থাকে বা পেড থাকে সে ধরনের পেডের মধ্যে লিখিত ভাবে  ড্রাগ লাইসেন্স ধারণকারীর স্বাক্ষর  অঙ্গীকারনামা লাগবে। এই কাগজপত্রগুলো আপনি বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিল এর বিভিন্ন শাখা রয়েছে সেখানে জমা দেবেন।  আপনার কাগজপত্র যদি তাদের কাছে এলাও হয় তাহলে আপনি এই ফার্মেসি কোর্স করতে পারবেন।

ফার্মাসিস্ট কোর্স করে কি চিকিৎসা দেয়া যাবে? 

না আপনি যদি শুধুমাত্র ফার্মাসিস্ট কোর্স করেন তবে চিকিৎসা দিতে পারবেন না।  যদি আপনি চিকিৎসা দেন তাহলে আপনি বেআইনী কাজ করছেন।  চিকিৎসা দেয়ার জন্য আপনাকে আরো একটি কোর্স করতে হবে সেটি হল পল্লী চিকিৎসক কোর্স।  সাধারণত এক বছরের ডিপ্লোমা কোর্সে এই পল্লী চিকিৎসকের চিকিৎসা বিদ্যা শেখানো হয়।   তাহলে আপনি যদি চিকিৎসা দিয়ে ব্যবসা করতে চান আপনাকে পল্লী চিকিৎসকের কোর্স করতে হবে।  পল্লী চিকিৎসক এর কোর্স করার জন্য আপনাকে এসএসসি পাস হতে হবে।  যখন আপনি এই কোর্সটি কমপ্লিট করবেন তখন আপনি প্রেসক্রিপশন এর ঔষধ বিক্রির পাশাপাশি নিজেও চিকিৎসা দিয়ে ওষুধ বিক্রি করতে পারবেন।

এ ব্যবসা করার জন্য কেমন পুজি লাগে ?

একটি ব্যবসা শুরু করার জন্য পুঁজি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।  বিজনেস করার ক্ষেত্রেও এটির কোন ব্যতিক্রম হবে না কারণে ব্যবসা করতেও পুঁজি লাগবে।  আমাদের বাংলাদেশের সাধারণত অনেক ব্যবসায়ী অন্যের টাকা দিয়ে ব্যবসা করতে চায়  অর্থাৎ মহাজনের কাছ থেকে বাকি নিয়ে ব্যবসা করার একটা প্রবণতা রয়েছে।  আর ফার্মেসি ব্যবসায় এই প্রবণতা টি সবচেয়ে বেশি।  অর্থাৎ কোম্পানির কাছ থেকে আপনি ঔষধ বাকি নিয়ে বিক্রি করতে পারবেন।  আপনি যদি দোকানের 30 থেকে 40 হাজার টাকার মাল উঠান তাহলে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন।  আপনি নিজের প্রতি পূজা খাটিয়ে যাবে মাল তুলবেন তা তো আপনার থাকবেই পাশাপাশি আপনি অনেক কোম্পানির কাছ থেকে বাকিতে ওষুধ নিয়ে বিক্রি করতে পারবেন।  অর্থাৎ এখানে আপনি অন্যের পুঁজি দিয়ে নিজের ব্যবসা করবেন।

মাল ছাড়াও দোকানে আরো কিছু অন্যান্য আনুষাঙ্গিক খরচ এর প্রয়োজন হবে । যেমন একটি ভালো পজিশনে দোকান নেওয়ার জন্য এডভান্স টাকা প্রদান করতে হয়। এছাড়াও প্রথম অবস্থায় একটি দোকানের কিছু জিনিসপত্র প্রয়োজন হয়।  দোকানের ফার্নিচার বাবদ আপনাকে আরো কিছু খরচ করতে হবে।




শাহীন

আমি শাহীন । পেশায় একজন ব্যবসায়ী । পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করতে পছন্দ করি। আশা করছি আমার শেয়ারকৃত তথ্য থেকে আপনারা উপকৃত হচ্ছেন আর তা হলেই আমার পরিশ্রম স্বার্থক।

1 Comments

  1. এই কোর্সটি চট্টগ্রামে কোথায় শখানো হয়..

    ReplyDelete
Post a Comment
Previous Post Next Post

Ads

Ads