Time Management জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ? সময়ের সঠিক ব্যবহার এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা

time management tips bangla


Time Management  কি?

টাইম ম্যানেজমেন্ট বলতে আমরা বুঝি, নিজের সময়কে নিজের কাজের জন্য ভাগ করে দেওয়া । Time Management এর কারণে আমরা অল্প সময়ে প্রচুর কাজ করতে পারি। স্মার্ট ভাবে প্রচুর কাজ করতে হলে অবশ্যই আমাদেরকে সময়ের সদ্ব্যবহার  করতে হবে।  আজকের আর্টিকেলে আমরা শিখব কিভাবে আমাদের সময়কে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারি। চেষ্টা করব এ ব্যাপারে একটা ভিডিও তৈরি করার জন্য। যদি ভিডিও তৈরী করি তাহলে নিচে দেখতে পারবেন ।  

Time Management করলে কি লাভ হবে? 

সফলতার চরম শিখরে পৌঁছাতে চাইলে টাইম ম্যানেজমেন্ট জীবনে একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমাদের হাতে যতটুকু সময় আছে এটাকে পরিপূর্ণভাবে কাজে লাগাতে হবে। আর তার জন্য আমাদেরকে অবশ্যই সঠিক ভাবে টাইম ম্যানেজমেন্ট করা শিখতে হবে । গুগোল করলে আপনি টাইম ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে অনেক আর্টিকেল পাবেন এবং এটার কতটা গুরুত্ব রয়েছে সেটা অনুধাবন করতে পারবেন। সঠিকভাবে টাইম ম্যানেজমেন্ট করতে পারলে নিজেকে স্মার্ট ভাবে সবার কাছে উপস্থাপন করতে পারবেন,  অল্প সময়ে প্রচুর কাজ করতে পারবেন,  কম পরিশ্রমে বেশি কাজ করতে পারবেন,  কখনো সময় অপচয় হবে না ইত্যাদি নানা রকম সুফল রয়েছে। 

১. স্ট্রেস কমাতে সহায়তা করে

যদি আমরা কাজের তালিকা করে কাজ করি তাহলে যখন দেখব যে, একে একে সবগুলো কাজ করতে পেরেছি তখন মনের ভেতর প্রশান্তি আসে । প্রতিদিনের কাজের তালিকা থেকে যখন একটা একটা করে কমে আসবে তখন মনে হবে এই বুঝি আমার সবগুলো কাজ শেষ হয়ে গেল আর এতে করে মনের ভেতরে প্রশান্তি অনুভব হবে।  যখন এভাবে কাজ করব তখন আমাদের কাজের চাপ অনেকটাই কমে যাবে । 

২. হাতে প্রচুর সময় জমা থাকবে

 যখন আমরা প্রপার টাইম ম্যানেজমেন্ট করতে পারব তখন নিজেদের কাজ শেষ করার পর হাতে অনেক সময় বাকি থাকবে।  আর তখন আমরা আমাদের পরিবারকে সময় দিতে,  পারবো নিজেকেও সময় দিতে পারবো। 

৩. বেশি বেশি সম্ভাবনা তৈরি হবে

প্রপার টাইম ম্যানেজমেন্ট অবশ্যই অনেক বেশি সম্ভাবনা তৈরি করে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠাবনের উদ্যোক্তারা টাইম ম্যানেজমেন্ট কে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।  টাইম ম্যানেজমেন্ট এর বেলায় যদি গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো কে প্রথম সারিতে,  কম গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো কে দ্বিতীয় সারিতে এভাবে ম্যানেজ করে কাজ সম্পাদন করা যায় তাহলে বড় বড় প্রতিষ্ঠান মালিকেরা সেটাকে অনেক বেশি পছন্দ করে । 

৪. লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহায়তা করে

যে ব্যক্তি সঠিক টাইম ম্যানেজমেন্ট করতে পারে সে অন্যদের তুলনায় অনেক আগেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে। 

তাহলে কিভাবে টাইম ম্যানেজমেন্ট করব? 

আপনি মনে যদি এই প্রশ্নটা আসে তাহলে বাকিটুকু পড়ার অনুরোধ করছি।  কিভাবে টাইম ম্যানেজমেন্ট করবেন এ সম্পর্কে ইন্টারেস্টিং কিছু তথ্য আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব আশা রাখছি আপনাদের ভালো লাগবে। 




১. লক্ষ্য স্থির করুন

অবশ্যই এমন একটা লক্ষ্য স্থির করা প্রয়োজন যেটা অর্জন করা সম্ভব। অবাস্তব কোন লক্ষ্য স্থির করা কখনই বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।  লক্ষ স্থির করার ক্ষেত্রে আমরা SMART শব্দটি কে ব্যবহার করতে পারি।  এটা নিয়ে আমি একটা আর্টিকেল লিখেছি আপনারা চাইলে সেটা পড়ে আসতে পারেন। স্মার্ট শব্দটিকে যেভাবে বিন্যাস করা যায় Specific, Measurable, Attainable, Relevant, and Timely. 

২. চতুরতার সাথে কাজের অগ্রাধিকার শ্রেণীবিন্যাস করুন

টাইম ম্যানেজমেন্ট এর সময় দৈনন্দিন কাজের তালিকায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো কে প্রথম সারিতে রাখতে হবে। 

  • ইম্পর্টেন্ট এবং আর্জেন্টঃ অবশ্যই সবার আগে কমপ্লিট করতে হবে
  • ইম্পর্টেন্ট কিন্তু আর্জেন্ট নাঃ কখন করবেন ঠিক করে নিন
  • আরজেন কিন্তু ইম্পর্টেন্ট নাঃ ইচ্ছা করলে সেটা করতে পারেন অথবা নাও করতে পারেন
  • আর্জেন্ট না এবং ইম্পর্টেন্ট নাঃ এধরনের কাজগুলোকে পরে করার সিদ্ধান্ত নিবেন

৩. প্রত্যেকবার সময় এর সীমাবদ্ধতা নির্ধারণ করুন

প্রত্যেকটা কাজ শুরু করার আগে শর্ট টাইম বর্ণ ধারণ করা প্রয়োজন। ধরা যাক আপনি একটি নতুন বিজনেস শুরু করতে চাচ্ছেন।  কিন্তু আপনার মাথায় প্লান আগামী 6 মাসের মধ্যে ব্যবসা করব।   কিন্তু কিভাবে শুরু করবেন সে সম্পর্কে কোন প্ল্যান নেই।  এক্ষেত্রে আমরা কিভাবে শুরু করতে পারি তার জন্য ছোট-ছোট অংশে কাজগুলোকে ভাগ করে নিতে পারি। যেমন আগামী দুই দিনের মধ্যে আমি আমার ব্যবসার জন্য অর্থ সংগ্রহ করব,  তারপরে দুই দিন আমি কাঁচামাল সংগ্রহ করবো,  তারপরে দুই দিন সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্টগুলো চালু করে নেব । 

যদি আমরা এভাবে টাইম ম্যানেজমেন্ট করি তাহলে অল্প সময়ে প্রচুর কাজ করতে পারব 

৪. দুইটা কাজের মাঝখানে বিরতি নিন

আমরা যদি সারা দিন একটানা কাজ করতেই থাকি তাহলে কখনোই বেশি কাজ করতে পারবোনা।  তাই কাজ করার সময় অবশ্যই যখন একটা কাজ কমপ্লিট হবে তখন অল্প সময়ের জন্য ব্রেক নিতে হবে।  যখন ব্রেক নেব তখন নতুন করে আরেকটা কাজ শুরু করতে সুবিধা হয়। 

৫. নিজেকে অরগানাইজ করুন

যে কোন কিছু করার সময় অবশ্যই নিজেকে অরগানাইজ করা প্রয়োজন।  নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে যে আমি কি করতে চাই।  প্রয়োজনে ক্যালেন্ডারের পাতায় চিহ্ন দিয়ে রাখতে হবে।  তাহলে যখন যে কাজ সম্পন্ন করতে চাচ্ছে ঠিক তখন সে কাজটা সম্পন্ন হয়ে যাবে।  

৬. অপ্রয়োজনীয় কাজগুলো কে বাদ দিন

দৈনন্দিন জীবনে আমরা অনেক অপ্রয়োজনীয় কাজ করে সময় নষ্ট করি।  তাই সঠিকভাবে সময়ের সদ্ব্যবহার করতে চাইলে অপ্রয়োজনীয় কাজগুলোকে জীবন থেকে বাদ দিতে হবে।  নিজেকে খুঁজে বের করতে হবে যে আমি কোন কাজটা সবচেয়ে ভালো পারি এবং সেটা খুঁজে বের করার পর শুধুমাত্র সে কাজের উপর এই ফোকাস করতে হবে।  সাথে সাথে ও প্রয়োজনীয় কাজগুলো জীবনের পাড় থেকে বাদ দিতে হবে।   তাহলেই নির্ধারিত লক্ষ হাসিল করার ক্ষেত্রে প্রচুর সময় পাওয়া যাবে। 

৭. নিজের প্ল্যান নিয়ে এগিয়ে যান 

টাইম ম্যানেজমেন্ট এর ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকরী উপায় হচ্ছে প্রতিদিন কি কাজ করব তার একটা তালিকা তৈরী রাখা।  আজ সারাদিন আমি কি করব অথবা আগামী কাল সারাদিন কি করব তার একটা ক্লিয়ার ধারণা থাকতে হবে।  প্রয়োজনে সেটা লিস্ট করে রাখতে হবে এবং এটাকে অভ্যাসে পরিণত করতে হবে।  তবে টাইম ম্যানেজমেন্ট শব্দটার সাথে নিজেকে খাপ খাওয়ানো সম্ভব হবে। 

 অনেক বেশি পাকনামী করে ফেললাম।  আমার কথায় কোন ভুল থাকলে অবশ্যই আপনারা সেটা ধরে দিবেন। নিচে কমেন্ট সেকশনে আপনার মূল্যবান মতামত জানাবেন।  আপনাদের উৎসাহ পেলে আরো অনেক দূর এগিয়ে যেতে চাই। 


শাহীন

আমি শাহীন । পেশায় একজন ব্যবসায়ী । পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করতে পছন্দ করি। আশা করছি আমার শেয়ারকৃত তথ্য থেকে আপনারা উপকৃত হচ্ছেন আর তা হলেই আমার পরিশ্রম স্বার্থক।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Ads

Ads