বর্তমানে আমরা লক্ষ্য করছি যে আমাদের চারপাশে ভিডিওর ছড়াছড়ি। বিনোদনের একমাত্র খোরাক হয়ে দাঁড়িয়েছে এটি। শুধুমাত্র বিনোদন নয় বরং শিক্ষা, ভ্রম্ প্রয়োজন-অপ্রয়োজন প্রায় সব ক্ষেত্রেই ভিডিওর চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। জোর সবচেয়ে বড় প্রমাণ হচ্ছে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যা্ ইউটিউব, টিকটক ইত্যাদি সাইট। এই ওয়েবসাইটগুলোতে মানুষ অনেক বেশি সময় কাটাই শুধুমাত্র বিভিন্ন ধরনের ভিডিও দেখার জন্য যেমন বিয়ের ভিডিও, অনুষ্ঠানের ভিডিও, খাবার অথবা ভ্রমণের ভিডিও, শিক্ষামূলক ভিডিও, নাটক সিনেমা এবং বিভিন্ন ধরনের তথ্যচিত্র। এছাড়া হাসি, মজার ভিডিও এখনতো বাংলাদেশের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট পোর্টালগুলো ইউটিউবে ভিডিও আপলোড দিতে শুরু করেছে।
গবেষণা অনুযায়ী 2019 সাল থেকেই ভিডিও চলছে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে। মোবাইলে অথবা ব্রডব্যান্ডের ইন্টারনেট এর দাম কমে যাওয়ায় মানুষ প্রচুর ভিডিও দেখছে। মোটামুটি ভালো এবং আকর্ষণীয় ভিডিও তৈরি করতে পারলে প্রচুর দর্শক পাওয়া সম্ভব। ভিডিও তৈরি করার ক্ষেত্রে স্পেসিফিক কোন ক্যাটাগরির প্রয়োজন হয় না বললেই চলে। ইউটিউবে ঢুকলে আমরা বিভিন্ন ধরনের ভিডিও দেখতে পারি যেমন বিবাহের আগের ভিডিও, বিবাহের পরে হানিমুনে ভিডিও, এমনিতে ঘুরতে যাওয়ার ভিডিও ইত্যাদি।
যেহেতু চারদিকে ভিডিও প্রচুর চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই আমরা চাইলে এই সুযোগকে কাজে লাগাতে পারি। সামান্য ভিডিও এডিটিং এর কাজ শিখে নিলে এখান থেকে প্রচুর অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। সামান্য কিছু প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কিনে বাড়িতে বসে এই ব্যবসা করা সম্ভব।
১.বিবাহের ভিডিও এডিটিংঃ
বিবাহের ভিডিও এডিটিং এর চাহিদা অনেকদিন আগে থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে। যদিও এটা একটা সময় ডিমান্ডিং ছিল কিন্তু বর্তমানে এটা নরমাল হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ প্রায় সব শ্রেণীর লোকেরা বিবাহের স্মৃতিটাকে ধরে রাখার জন্য ভিডিও করে রাখতে পছন্দ করে। তাই বিবাহের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য ভিডিওগ্রাফার দের মাধ্যমে সেগুলো করিয়ে নেয়। বিবাহের আগের ভিডিও, বিবাহের ভিডিও, বিবাহ পরবর্তী সময়ের ভিডিও ইত্যাদি অনেক কিছু ডিমান্ড আছে। এডিটিং এর বিভিন্ন ধরনের ইফেক্ট ব্যবহার করে এগুলোকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা হয়। আর এই কাজগুলো করতে হলে আপনাকে কিছু সময় ব্যয় করে এগুলো শিখে নিতে হবে এবং কিছু প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কিনে ব্যবসা শুরু করা যাবে।
২. শর্টফিল্ম অথবা তথ্যচিত্র তৈরীর ভিডিওঃ
একটা সময় শর্ট ফিল্ম তৈরি করে কোথায় পাবলিশ করব সে নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকার কারণে অনেক সময় এই পেশায় আশা কষ্টসাধ্য হত। কিন্তু বর্তমানে ইউটিউব এর মত প্লাটফর্ম তৈরি হওয়া তে যে কেউ চাইলে এই ইন্ডাস্ট্রিতে ক্যারিয়ার গড়তে পারে। বিভিন্ন ধরনের শিক্ষামূলক শর্ট ফিল্ম তৈরি করে এবং পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা মুলক তথ্য চিত্র নির্মাণ করে ইউটিউবে ভিডিও পাবলিশ করে অর্থ উপার্জনের সুযোগ রয়েছে। যদি আপনার সৃজনশীলতা থাকে এবং এই কাজের প্রতি নেশা থাকে তাহলে আপনি এখান থেকে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। কারণ ইউটিউবে সৃজনশীলতা এবং ভাল কনটেন্ট এর প্রচলন রয়েছে।
৩. খাবার অথবা ভ্রমণ এর ভিডিওঃ
আপনি বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াবেন চিল করবেন এবং সেগুলো ভিডিও করে ইউটিউবে আপলোড দিবেন আর সেখান থেকে টাকা উপার্জন করবেন। ব্যাপারটা খুবই ইন্টারেস্টিং তাই না ? ঘোরাঘুরি হলো, মজা করা হল আবার টাকাও ইনকাম হলো। ভ্রমণ অথবা খাবারের ভিডিও করে অর্থ উপার্জনের দুটি উপায় রয়েছে। ইউটিউব থেকে তাদের বিজ্ঞাপনের কমিশন নেওয়া এবং ঘুরতে যাওয়ার সময় বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট এর কাছ থেকে স্পন্সর নিয়ে টাকা ইনকাম করা। পাশাপাশি বিভিন্ন রিসোর্ট, আবাসিক হোটেল, পিকনিক স্পট এর কাছ থেকে স্পন্সর নিয়েও অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।
৪. শিক্ষামূলক ভিডিওঃ
আমাদের দেশে শিক্ষামূলক ভিডিও প্রচার করে অর্থ উপার্জন করছে অনেকেই যার মধ্যে টেন মিনিট স্কুল ডটকম খুবই জনপ্রিয় একটি ওয়েবসাইট। এধরনের একটা প্ল্যাটফর্ম আপনিও চাইলে তৈরি করতে পারেন। কারণ ইউটিউবে শিক্ষামূলক ভিডিও প্রচুর চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে আমরা প্রায়শই যখন কোন কিছু শিখতে চাই অথবা কোন কিছু করতে গিয়ে আটকে যায় তখন তার সমাধান খোঁজার জন্য ইউটিউবে ভিডিও দেখি। আপনি যদি কোন স্পেসিফিক বিষয়ে দক্ষ হন তাহলে সেই বিষয়ের উপর শিক্ষামূলক ভিডিও তৈরি করে ইউটিউবে প্রচার করতে পারেন। অনলাইন টিচিং করণা পরবর্তী সময়ে প্রচুর জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। তাই আমরা চাইলেই অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষকতা করে অর্থ উপার্জন করতে পারব।
৫. বিজ্ঞাপন তৈরি এজেন্সিঃ
ভিডিওটি এডিটিং করে অর্থোপার্জনের খুবই জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হচ্ছে বিজ্ঞাপন তৈরীর এজেন্সি। বড় ছোট সব ধরনের প্রতিষ্ঠান ব্যবসা প্রচার করার জন্য বিজ্ঞাপন এর প্রয়োজন হয়। আরে বিজ্ঞাপনগুলো তৈরি করতে তাদের প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয়। আমরা এই সুযোগকে কাজে লাগাতে পারি। অর্থ উপার্জনের জন্য এখানে বিশাল সুযোগ রয়েছে। কাজ পাওয়ার জন্য ইউটিউব এর মাধ্যমে নিজের ব্র্যান্ডিং করতে পারেন। কিভাবে বিজ্ঞাপন ভিডিও বানায় তার উপরে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভিডিও আপলোড দিয়ে নিজের সক্ষমতাকে সবার কাছে ছড়িয়ে দিতে পারবেন। আর এভাবে করতে করতে একটা সময় বড় বড় কোম্পানি আপনাকে ডাকবে।
আশা করছি আজকের আর্টিকেলটা আপনাদের ভালো লাগবে। ভালো লাগলে নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আর এই ধরনের আরো ইন্টারেস্টিং ব্যবসায়িক আইডিয়া পেতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটের সঙ্গেই থাকুন। পাশাপাশি আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন।