একজন সফল তরুণ উদ্যোক্তার গল্প!



 দুই বছর আগে মাশরুম চাষ শুরু করেছিলেন সাদ্দাম হোসেন। তিনি সাতক্ষীরার প্রথম মাশরুম চাষি। এরই মধ্যে সফল হয়েছেন তিনি। তাকে অভাব জয়ের পথ দেখাল মাশরুম। গত তিন মাসে মাশরুম বিক্রি করে আয় করেছেন ৬০ হাজার টাকা। তার সাফল্য দেখে জেলার অনেকেই এখন মাশরুম চাষে আগ্রহী। সাতক্ষীরা শহরতলীর পারকুকরালী এলাকার বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন।

সদর উপজেলা কৃষি অফিসের ন্যাশনাল সার্ভিসে চাকরির সুবাদে সাদ্দামের সঙ্গে পরিচয় হয় কৃষি কর্মকর্তা আমজাদ হোসেনের। তার মাধ্যমে জানতে পারেন মাশরুম চাষের সুফল। এটি চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ রয়েছে জেনে চাকরির পাশাপাশি মাশরুম চাষ শুরু করেন। সাতক্ষীরা শহরের মুনজিতপুর এলাকায় টিনশেডের দুটি রুম ভাড়া নেন সাদ্দাম। সেখানে বাড়ির মালিক মোদাসেরুজ্জামান টুটুলের সঙ্গে যৌথভাবে শুরু করেন মাশরুম চাষ।


দুই বছর আগে মাশরুম চাষ শুরু করলেও গত এক বছর থেকে বাণিজ্যিকভাবে মাশরুম চাষ করছেন সাদ্দাম। এরই মধ্যে চাষ পদ্ধতি, পরিচর্যা ও বাজারজাতকরণের প্রক্রিয়া আয়ত্ত করে নিয়েছেন তিনি। গত এক বছর ধরে ওয়েস্টার জাতের মাশরুম বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন সাদ্দাম। গত তিন মাসে বিক্রি হয়েছে ৬০ হাজার টাকার মাশরুম। এখনও তার কাছে তিন লাখ টাকার মাশরুম রয়েছে।


মাশরুম চাষি সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমি এখন বাণিজ্যিকভাবে মাশরুম চাষ করছি। বর্তমানে আমার কাছে মাশরুমের ২০০ স্পন প্যাকেট রয়েছে। যা থেকে ৪০০ কেজি পর্যন্ত মাশরুম উৎপাদন সম্ভব। প্রতিকেজি মাশরুম ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়। এক বছর ধরে এর পেছনে সময় দিয়েছি। এখন চাষপদ্ধতি জানি। মার্কেটিং করার জন্য ভালো ক্রেতাও পেয়েছি। এখন বিক্রি করতে কোনো অসুবিধা হয় না।


গত শীত মৌসুমে এক লাখ টাকার মাশরুম বিক্রি করেছি উল্লেখ করে সাদ্দাম হোসেন বলেন, ৩০ হাজার টাকা খরচ করে মাশরুম চাষ শুরু করেছিলাম। এখন প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা আয় হয়। মাশরুম চাষে অল্প খরচে অধিক লাভ জানিয়ে তিনি বলেন, সাভারের মাশরুম গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে বীজ সংগ্রহ করি। ৫০০ গ্রামের এক প্যাকেট বীজ সংগ্রহ করতে খরচ হয় ৪০ টাকা।


২৫০ গ্রামের প্যাকেটে খরচ হয় ৩০ টাকা। মাশরুম খুবই জনপ্রিয় ও সুস্বাদু। তবে মাশরুমের বিষয়ে প্রচারণা কম। এর উপকারিতা ও ব্যবসায় লাভ সম্পর্কে প্রচারণা প্রয়োজন। আমার এখান থেকে ব্যাংকার, শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ মাশরুম কেনেন। সাদ্দাম হোসেনের পরামর্শ নিয়ে মাশরুম চাষ শুরু করেছেন শহরের আলিয়া মাদরাসা এলাকার উম্মে হাবিবা, জেলার পাটকেলঘাটা থানার বল্ডফিল্ড এলাকার সোলায়মান হোসেন ও মির্জাপুর এলাকার নিভাষ সরকার।


পাটকেলঘাটা থানার বল্ডফিল্ড মোড় এলাকার মৃত সহিল উদ্দিনের ছেলে সোলায়মান হোসেন বলেন, মাশরুম রান্না করে খেতে খুব সুস্বাদু। গত ২৮ ডিসেম্বর থেকে আমি মাশরুম চাষ শুরু করি। বর্তমানে আমার ফলন এসেছে। স্থানীয় কয়েকজন মাশরুমের জন্য ইতোমধ্যে অর্ডার দিয়েছেন। তাদের কাছে বিক্রি করব।


এছাড়া সাতক্ষীরায় মাশরুমের অনেক ক্রেতা রয়েছেন। আমি ৩৫০টি আড়াই কেজি ওজনের স্পন প্যাকেট করেছি। আশা করছি ৭০০ কেজি মাশরুম উৎপাদন হবে। পাটকেলঘাটা থানার মির্জাপুর এলাকার নিহির পালের ছেলে নিভাষ পাল বলেন, ৫০ হাজার টাকা খরচ করে এবার প্রথম এক হাজার স্পন প্যাকেট মাশরুম চাষ করেছি। আশা করছি মাশরুম বিক্রি করে আড়াই লাখ টাকা আয় হবে আমার।


সাতক্ষীরার ন্যাশনাল ব্যাংকের জুনিয়র কর্মকর্তা (ক্যাশ) মশিউর রহমান। তিনি নিয়মিত মাশরুম খেয়ে থাকেন। মশিউর রহমান বলেন, চাকরির সুবাদে ঢাকায় থাকার সময় মাশরুম খাওয়া শুরু করেছিলাম। সাতক্ষীরায় আসার পর প্রথম দিকে মাশরুম খুঁজে পাইনি। পরে জানতে পারি শহরের এক তরুণ মাশরুম চাষ করেন। তার কাছ থেকে এখন নিয়মিত সংগ্রহ করি।


আমার অনেক সহকর্মীও তার কাছ থেকে নিয়মিত মাশরুম কেনেন। মাশরুমের ঔষধি গুণের বিষয়ে শহরের জজকোর্ট এলাকার চিকিৎসক তহিবুল ইসলাম বলেন, মাশরুম সম্পূরক খাদ্য। নিয়মিত মাশরুম খেলে অ্যাজমা, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। নিয়মিত মাশরুম খেলে বাতব্যথা ও শ্বাসকষ্ট দূর হয়।


সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক নুরুল ইসলাম বলেন, জেলার মাশরুম চাষিদের বিষয়ে কোনো জরিপ আপাতত আমাদের কাছে নেই। মাশরুম একটি ঔষধি গুণ সম্পন্ন সবজি। মাশরুম চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ রয়েছে। যারা মাশরুম চাষ করছেন কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের খামার পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেয়া হবে।

  তথ্যসূত্র: জাগো নিউজ।

শাহীন

আমি শাহীন । পেশায় একজন ব্যবসায়ী । পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করতে পছন্দ করি। আশা করছি আমার শেয়ারকৃত তথ্য থেকে আপনারা উপকৃত হচ্ছেন আর তা হলেই আমার পরিশ্রম স্বার্থক।

1 Comments

  1. তুই একটা ফালতু। ২০০ স্পন দিয়ে ৪০০ কেজি মাশরুম কিভাবে পায়? এই মাদারচোদ

    ReplyDelete
Post a Comment
Previous Post Next Post

Ads

Ads