জীবিকার তাগিদে নাপিতের রূপে এক নারীর গল্প!


 আজকাল সর্বক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ সমানভাবে থাকলেও নরসুন্দরের (নাপিত) কাজে সাধারণত তাদের দেখা যায় না। কিন্তু ঝালকাঠীর কাঠালিয়া উপজেলার শৌলজালিয়া ইউনিয়নের বলতলা বাজারে এ কাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করছেন শেফালী শীল।

কৌতুহলবসত তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, উপজেলার পশ্চিম ছিটকী গ্রামের দরিদ্র যাদব শীলের চতুর্থ সন্তান শেফালী শীল। দারিদ্র্যের কারণে ৫ম শ্রেণি পর্যন্তই লেখাপড়ার সৌভাগ্য হয়েছে তার। পরিবারের চাপে আতরআলী গ্রামের বিশ্বনাথ শীলের সঙ্গে মাত্র ১২ বছর বয়সে বিয়ে হয় তার। শুরু হয় দারিদ্র্য আর মানিয়ে নেয়ার সঙ্গে যুদ্ধ। জীবনকে বুঝে ওঠার আগেই ৪ মেয়ে ও ১ ছেলের মা হয়ে যান তিনি।

স্বামীর অবহেলা আর উদাসীনতায় জীবন বিষণ্ন হয়ে ওঠে তার। একসময় বাবার বাড়িতে থাকা শুরু করেন শেফালী। পরে সেখান থেকে বলতলা গ্রামের দোগনা বাজারে চলে আসেন। বলতলা গ্রামের দোগনা বাজারে আসার পরও স্বামী কাজ করতো। কিন্তু ২০১২ সালে স্বামী মানসিক বিকারস্ত হয়ে বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়।

এরপর থেকেই ৫ সদস্য বিশিষ্ট পরিবারের দায়িত্বভার পুরোটাই শেফালীকে নিতে হয়। পরিবারের সদস্যদের মুখে দু’বেলা দু’মুঠো খাবার তুলে দিতে প্রথমে তিনি অন্যের বাড়িতে কাজ শুরু করেন। কিন্তু তাতে সংসার না চলায় বেছে নেন বাবার চুল কাটার পেশা।

প্রথমে গ্রামের কিছু লোক তার এ পেশাকে ভালোভাবে গ্রহণ করেনি। অনেকেই হাসি-ঠাট্টা ও সমালোচনা করতো। আবার গ্রামের কিছু লোক শেফালীর অভাব দেখে সহযোগিতাও করেছে। বর্তমানে তার বড় মেয়েটি বিএ (পাস কোর্স), ছেলেটি এইচএসসি আর বাকি ৩ মেয়ে অষ্টম, সপ্তম ও প্রথম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।

শেফালি জীবনযুদ্ধে হার না মানা একজন নারী। পুরুষশাসিত সমাজ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী এক কণ্ঠ। নারী হয়েও ব্যতিক্রমী পেশা গ্রহণ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।

কাঠালিয়ার শৌলজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ হোসেন রিপন জানান, শেফালী আমাদের সমাজের অনুকরণীয় নারী। লজ্জা এবং সমাজের ঠাট্টা উপেক্ষা করে সে এখন নারী সমাজের গর্ব।


তথ্যসূত্র: জাগো নিউজ ডটকম।

শাহীন

আমি শাহীন । পেশায় একজন ব্যবসায়ী । পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করতে পছন্দ করি। আশা করছি আমার শেয়ারকৃত তথ্য থেকে আপনারা উপকৃত হচ্ছেন আর তা হলেই আমার পরিশ্রম স্বার্থক।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Ads

Ads