কবুতরের বাসস্থান এবং খাদ্য তালিকা। (পার্ট ০৩)


কবুতরের ঘর

আমাদের দেশে বিশেষত গ্রামে টিন বা খড়ের চালা ঘরের কার্ণিশে মাটির হাড়ি অথবা টিন বেঁধে রেখে কবুতর পালনের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। এ ছাড়া কাঠের তৈরি ছোট ছোট খোপ তৈরি করেও কবুতর পালা হয়ে থাকে। মজার ব্যাপার হলে, কয়েক জোড়া কবুতরের ঘর করে এক জোড়া কবুতর পালন করলে কয়েক দিনের মধ্যে বাকী ঘরগুলোতে নতুন জোড়া কবুতর এসে বাসা বাঁধে। কবুতর পোষা খুব সহজ এবং লাভজনক তা বলাই বাহুল্য। অল্প-পরিসরে যা বাণিজ্যিকভিত্তিতে কবুতর পালনের জন্য অবশ্যই সুপরিকল্পিত ব্যবস্থা থাকা বাঞ্ছনীয়। নিম্নে কবুতরের ঘর বা খোপ তৈরির বিশেষ ব্যবস্থাসমূহ আলোচনা করা হলো।

স্থান নির্বাচনঃ কবুতরের খামারের জন্য উঁচু ও শুষ্ক সমতল ভূমি থাকা প্রয়োজন।

ঘরের উচ্চতাঃ কুকুর, বিড়াল, ইঁদুর, বেজী ইত্যাদি যেন কবুতরের ঘর নাগালে না পায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে ঘর উঁচু করতে হয়। এ উদ্দেশ্যে কাঠ বা বাঁশের খুঁটি পুঁতে তার উপর ঘর নির্মাণ করা যেতে পারে।

ঘরের পরিসরঃ প্রতি এক জোড়া কবুতরের জন্য একটি ঘর থাকা প্রয়োজন। এক জোড়া কবুতর যাতে ঘরের ভিতর স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরতে ফিরতে পারে তা লক্ষ্য রেখে ঘর নির্মাণ করতে হবে।

স্বাস্থ্য সম্মত ব্যবস্থাঃ কবুতরের ঘর বা খোপ এমনভাবে নির্মাণ করতে হবে যেন সেখানে পোকা-মাকড়, কৃমি, জীবাণু ইত্যাদির উপদ্রব কম থাকে এবং ঘর সহজেই পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করা যায়।

সূর্যালোকঃ ঘরে যাতে সূর্যের পর্যাপ্ত আলো প্রবেশ করে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ সূর্যের আলো যেমন পাখির দেহে ভিটামিন-ডি সৃষ্টিতে সাহায্যে করে তেমনি পরিবেশও জীবাণুমুক্ত রাখে।

বায়ু চলাচলঃ কবুতরের ঘরে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। কারণ দূষিত বাতাস বা পর্যাপ্ত আলো বাতাসের অভাবে পাখির স্বাস্থ্যহানি ঘটতে পারে।







কবুতরের খাদ্য


হাঁস-মুরগির ন্যায় কবুতরের খাদ্যে শ্বেতসার, চর্বি, আমিষ, খনিজ ও ভিটামিন প্রভৃতি থাকা প্রয়োজন। কবুতর তার দেহের প্রয়োজন এবং আকার অনুযায়ী খাদ্য গ্রহণ করে থাকে। প্রতিটি কবুতর দৈনিক প্রায় ৩০-৫০ গ্রাম পর্যন্ত খাবার গ্রহণ করে থাকে। কবুতর প্রধানত গম, মটর, খেশারী, ভুট্টা, সরিষা, যব, চাল, ধান, কলাই ইত্যাদি শস্যদানা খেয়ে থাকে। মুক্ত অবস্থায় পালিত কবুতরের জন্য সকাল-বিকাল মাথা পিছু আধ মুঠ শস্যদানা নির্দিষ্ট পাত্রে

খাদ্য উপাদান                                                   পরিমাণ (%)

ভুট্টা                                                                  ৩৫

মটর                                                            ২০

গম                                                      ৩০

ঝিনুকের গুঁড়া/চুনাপাথর চূর্ণ/অস্থিচূর্ণ                           ০৭

ভিটামিন/এমাইনো এসিড প্রিমিক্স                                  ০৭

লবণ                                                                 ০১

মোট = ১০০

রেখে দিলে প্রয়োজন মত তারা খেতে পারবে। বাণিজ্যিকভিত্তিতে কবুতর উৎপাদনের জন্য নিম্নে প্রদত্ত খাদ্য মিশ্রণ ব্যবহার করা উত্তম।

কবুতরের খাদ্য তালিকা

এই সাথে কবুতরের জন্য বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করতে হবে। এক পাত্রে কবুতরের জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার ও অন্য পাত্রে প্রয়োজন মত পরিষ্কার ও বিশুদ্ধ ঠান্ডা পানি রাখতে হবে।

কবুতরের শারীরবৃত্তিক তথ্যাদি

* দেহের তাপমাত্রা = ৩৮.৮-৪০০ সে

* দৈহিক ওজন =  (ক) হালকা জাতঃ ৪০০-৪৫০ গ্রাম

                              (খ) ভারী জাতঃ ৪৫০-৫০০ গ্রাম

* পানি পান =       (ক) শীতকালঃ ৩০-৬০ মিলি প্রতিদিন

                             (খ) গ্রীষ্মকালঃ ৬০-১০০ মিলি প্রতিদিন

* খাদ্য গ্রহণ = ৩০-৬০ গ্রাম প্রতিদিন (গড়)

* ডিম ফুটানোর সময়কাল = ১৭-১৮ দিন।

শাহীন

আমি শাহীন । পেশায় একজন ব্যবসায়ী । পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করতে পছন্দ করি। আশা করছি আমার শেয়ারকৃত তথ্য থেকে আপনারা উপকৃত হচ্ছেন আর তা হলেই আমার পরিশ্রম স্বার্থক।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Ads

Ads