তারকাটা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে খুবই প্রয়োজন একটি জিনিস। আসবাবপত্র, দালানকোঠা, বাড়ি নির্মাণ কাজ করার জন্য সাধারণত এই তারকাটা ব্যবহার করা হয়। তার কাটার ব্যবহার অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে গ্রামে শহরে সব জায়গায় এই জিনিসটির চাহিদা রয়েছে। আজকে আমরা জেনে নেব কিভাবে এই তারকাটা তৈরির ব্যবসা করা যায়। এই ব্যবসা কেমন লাভজনক এই ব্যবসা করতে হলে কেমন শ্রমিকের প্রয়োজন হবে। অর্থাৎ তারকাটা তৈরির ব্যবসার খুঁটিনাটি সব বিষয় সম্পর্কে জানব। চলুন শুরু করা যাক :
কিভাবে ব্যবসা শুরু করা যায়? আপনার মনে যদি প্রশ্ন কিভাবে ব্যবসা করা যায় তাহলে আমি বলব আপনাকে সবার প্রথম সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে আপনি এই ব্যবসা করতে চান। যখন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়ে যাবে তখন পুঁজি সংগ্রহের কাজ করতে হবে। পুঁজি সংগ্রহের পর আমাদেরকে মেশিন কিনতে হবে। মেশিনের দাম কত মেশিন কোথায় পাব ইত্যাদি বিষয়ে একটু পরেই জানতে পারবেন।
এরপর আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোথায় মেশিনটি স্থাপন করবেন। যেখান থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করবেন আশেপাশে যদি মেশিন স্থাপন করে ব্যবসা শুরু করতে পারেন তবে ভালো হয় কেননা তারকাটা তৈরি করার জন্য আপনার প্রচুর লোহার প্রয়োজন হবে আর এগুলো আনা নেওয়ার জন্য প্রচুর খরচ এর প্রয়োজন রয়েছে।
এ ব্যবসা শুরু করতে কত টাকা পুজি লাগে? তারকাটা তৈরির ব্যবসা করতে চাইলে সফল প্রথম আপনাকে মেশিন কিনতে হবে আর একটি মেশিনের দাম সাধারণত তিন লাখ ৪০ হাজার থেকে চার লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। মেশিন ভেদে দামের পার্থক্য হতে পারে। এছাড়াও আপনার মেশিন স্থাপন করার জন্য একটি ঘরের প্রয়োজন হবে। যদি নিজের ঘর হয় তাহলে এখানে ভাড়া দিতে হবে না আর যদি অন্যের ঘর হয় তাহলে আপনাকে প্রতি মাসে ভাড়া দিতে হবে।
এছাড়াও যদি শ্রমিক রেখে কাজ করতে চান তাহলে প্রতিমাসে শ্রমিকদের কেউ কিছু টাকা প্রদান করতে হবে। অর্থাৎ মেশিন কেনার খরচ শিন স্থাপন করার খরচ আনুষঙ্গিক অন্যান্য খরচ এবং কাঁচামাল কেনার জন্য কিছু অর্থ খরচ হবে সব মিলিয়ে পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা ইনভেস্ট করতে হতে পারে।
মেশিন চালানোর জন্য কতজন শ্রমিক লাগেএবং কেমন পারিশ্রমিক দিতে হয়? তারকাটা তৈরির মেশিন গুলো সাধারণত অটোমেটিক মেশিন পেয়ে থাকে। তাই এই মেশিন চালানোর জন্য বেশি একটা শ্রমিকের প্রয়োজন হয় না ৮-১০ টি মেশিন চালানোর জন্য দুই থেকে তিন জন শ্রমিক হলেই চলে। অর্থাৎ আপনি অল্পতেই প্রচুর কাজ করে নিতে পারবেন।
একজন শ্রমিককে সাধারণত প্রতি কেজি তারকাটা তৈরি করার জন্য ২০ টাকা মজুরি প্রদান করা হয়। অনেক সময় এটা আর পরিমাণ কমবেশি হতে পারে। দুজন শ্রমিক সাধারণত দৈনিক ১৫ থেকে ২০ কেজি তারকাটা তৈরি করতে পারেন। তাহলে এখানে প্রতি শ্রমিককে দৈনিক ৩ থেকে ৪০০ টাকা প্রদান করতে হবে। তাহলে আপনি যদি দুইজন শ্রমিক লাগান প্রতিদিন ৮০০ টাকার মতো খরচ হবে শ্রমিক এর পেছনে।
এই ব্যবসার লাভের পরিমাণ কেমন? লাভের পরিমাণ আসলে নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। কারণ শ্রমিক সংখ্যা মেশিনের প্রোডাকশন ক্যাপাসিটি কাঁচামাল সরবরাহ ইত্যাদির উপরে আসলে ব্যবসায়ীর লাভ লস নির্ভর করে। তবে যারা তারকাটা তৈরি ব্যবসা করে তারা সাধারণত প্রতি কেজি তারকাটায় সব ধরনের খরচ বাদ দিয়ে ৫০ থেকে ৮০ টাকা লাভ হয়।
তাহলে বুঝতেই পারছেন এই ব্যবসাটি কেমন লাভজনক। যদি আপনি প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ কেজি তারকাটা তৈরি করেন এবং প্রতি কেজি তারকাটা ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা দরে বিক্রি করেন তাহলে আপনি হিসাব করে দেখুন লাভের পরিমাণ কেমন দাঁড়ায়। প্রতি মন কাচামালের ক্রয় করতে খরচ হয় ২০০০ টাকা থেকে ২২০০ টাকা। সাথে ফিক্সড খরচ ও বিদ্যুৎ বিল যোগ করে নিবেন।
কাঁচামাল কোথায় পাবেন? যে কোন ব্যবসা যেকোনো ধরনের মেশিন স্থাপনের পূর্বে আমাদের মাথায় এই বিষয়টি রাখতে হবে যে কাঁচামাল সংগ্রহের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে কিনা। যেহেতু তারকাটা তৈরির ব্যবসা টি পুরাতন একটি ব্যবসা সেহেতু কাঁচামালের অভাব হবে না। মালিটোলা এবং নবাবপুরে সাধারণত এই তারকাটা তৈরির কাঁচামাল পাওয়া যায়।
মেশিন কোথায় পাব? মেশিন আপনি চাইলে বাংলাদেশের বাইরে থেকে ইমপোর্ট করতে পারেন যেমন alibaba.com indiamart.com ইত্যাদি ওয়েবসাইট থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সাথে যোগাযোগ করে আনতে পারেন। অথবা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিদেশ থেকে মেশিন বাংলাদেশে এনে দেয়। অনেক সময় জিঞ্জিরায় যেকোনো ধরনের মেশিন বানিয়ে নেয়া যায়। আপনি তাদেরকে বলে দেখতে পারেন যে তারা একটি তার কাটা মেশিন তৈরি করার জন্য কত টাকা নেবে।
এছাড়াও আমাদের ইউটিউব চ্যানেল এ তারকাটার মেশিন এর কারখানার ভিডিও দেওয়া আছে। চাইলে সেখান থেকেও আপনি অর্ডার করতে পারেন। ভিডিও লিংক নিচে দেওয়া হলো
https://www.youtube.com/watch?v=DoW6cRY4x-8