হতাশা কাটিয়ে এখনই বাড়িয়ে নিন আপনার আয়!

 


আপনি খুব পরিকল্পিত জীবন যাপন করেন। পরিমিত খাবার খান। বন্ধুদের সাথে আড্ডাবাজিও কমিয়ে দিয়েছেন। পছন্দের কফিশপে এখন আর নিয়মিত যান না। অর্থনৈতিক বিবেচনায় দৈনন্দিন জীবন এবং পথ চলা ক্রমশ সংকুচিত করছেন। তারপরও মাস শেষে সকল প্রয়োজন মেটানোর পর আপনার হাতে এক কাপ কফি কেনার দামও থাকে না।

আপনি প্রতিনিয়ত জীবনের কাছে পরাজিত হচ্ছেন, এবং একটু একটু করে পিছু হটছেন। হয়তো অবচেতনভাবে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু কেন? আপনি জীবন যুদ্ধে কেন পিছিয়ে পড়বেন? ভুলে যাবেন না, এমন সমস্যায় আপনি একা নয়, এদেশের লক্ষ লক্ষ তরুণ জর্জরিত।

দৈনন্দিন জীবনে এমন কিছু খরচ আছে, যা থেকে কোনোভাবেই নিষ্কৃতি পাওয়া যায় না। যেমন মাসের বাড়ি ভাড়া এবং ডাক্তার খরচের মধ্য থেকে কোনটি আপনি বাদ দিবেন? সুতরাং এখানে পিছু হটা চলবে না। আপনাকে নিজের শক্তি সামর্থের সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে হবে।

আসলে আপনি কখনোই নিজের শক্তি সামর্থ্য উপলব্ধি করার চেষ্টা করেননি। আপনি হয়তো জানেন না বিভিন্ন প্রয়োজন সংকুচিত করে খরচ কমানোর চেয়ে আয় বৃদ্ধি করা অনেক বেশি সহজ। শুধু একবার নিজেকে ছকবাঁধা গণ্ডির বাইরে বের করে আনুন এবং বাড়তি অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করে দেখুন।

আপনার উপার্জন বাড়ানোর জন্য বিদ্যমান চাকরি বা কাজের পাশাপাশি নতুন কিছু করুন। তাহলে খরচ কমিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করার পরিবর্তে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন যাপন করতে পারবেন। আজকের নিবন্ধে এমন কিছু সৃজনশীল আইডিয়া আলোচনা করা হলো, যা করে আপনি বিদ্যমান চাকরি বা কাজের পাশাপাশি বাড়তি অর্থ রোজগার করতে পারবেন।



বড়দের ইংরেজি শিক্ষক: ইংরেজি আন্তর্জাতিক ভাষা। তাই মাতৃভাষার পাশাপাশি সবক্ষেত্রেই ইংরেজি ভাষার প্রচলন আছে। তাছাড়া আধুনিক যুগে ইংরেজি ভাষা ছাড়া মানুষ চলতে পারে না। কিন্তু কর্মজীবী সব মানুষ ভালো ইংরেজি বলতে পারে না। এই বাস্তবতায় আপনি যদি ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হয়ে থাকেন, তবে বড়দের জন্য একটি বিশেষ ইংরেজি ভাষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলতে পারেন।

এমন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুললে শিক্ষার্থীর অভাব হবে না। সাথে ঘুচে যাবে আপনার অর্থনৈতিক দৈন্যদশা। এমন অসংখ্য পেশা আছে যা বিদ্যমান চাকরি বা কাজের পাশাপাশি পরিচালনা করা যায় এবং বাড়তি অর্থ রোজগার করা যায়। এমনকি এইসব কাজ শূন্য থেকে শুরু করে বড় কোম্পানিও তৈরি করা যায়। তবে সবকিছুর জন্য প্রয়োজন আপনার আগ্রহ ও সদিচ্ছা। 

শখের ব্যবসা: প্রত্যেক মানুষের কোনো না কোনো বিশেষ শখ বা ভালো লাগার বিষয় থাকে। ব্যক্তি নিজে সৃজনশীল কোনো ক্ষেত্রের মানুষ না হলেও নির্দিষ্ট শখ পূরণ করার ব্যাপারে সৃজনশীল হয়ে থাকেন। আপনার যদি এমন কোনো শখ থাকে তবে সেই শখ ব্যবসায় রূপান্তরিত করে বাড়তি অর্থ রোজগার করতে পারেন।

যেমন আপনি ছবি তুলতে পছন্দ করেন, অথবা গিটার বাজাতে পারেন, এমনকি হতে পারে আপনার অনেকগুলো পোষা কুকুর আছে। এজাতীয় প্রত্যেকটি শখ বড় বড় ব্যবসায় রুপান্তরিত করা সম্ভব। সুতরাং নিজের সৃজনশীলতা কাজে লাগান এবং শখকে ব্যবসায় রূপান্তরিত করে বাড়তি অর্থ রোজগারের ক্ষেত্র তৈরি করুন।

অনলাইনে পণ্য রিভিউ: বাড়তি রোজগারের জন্য একটি স্মার্ট পেশা হতে পারে অনলাইনে পণ্য রিভিউ। আপনার যদি যেকোনো পণ্য পর্যবেক্ষণ এবং সে সম্পর্কে মতামত দেওয়ার দক্ষতা থাকে। আপনি যদি লেখনীর মাধ্যমে অন্য মানুষকে উৎসাহিত করতে পারেন, তবে আজই অনলাইনে পণ্য রিভিউ করা শুরু করুন।

ইন্টারনেটে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পণ্য রিভিউ করার অসংখ্য প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। সেখান থেকে পছন্দনীয় কোনো প্ল্যাটফর্ম বেছে নিয়ে পণ্য রিভিউ করা শুরু করুন। নিশ্চিতভাবেই আপনি বাড়তি রোজগার করতে সমর্থ হবেন।

ঘর ভাড়া দেওয়া: বাড়ি ভাড়া দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চয়ই নতুন করে কাউকে শেখানোর প্রয়োজন নেই। আমরা সবাই জানি বড় বড় শহরের পাশাপাশি এখন মফস্বল শহরেও বাড়ি ভাড়া দেওয়া এবং নেওয়া যায়। কিন্তু অনেক পরিবার আছে যারা অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি হলেও শুধু পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রাখতে কখনোই বাড়ি ভাড়া দেন না।

আবার পরিবারের সদস্য সংখ্যা সীমিত হওয়ায় অনেকের বাড়িতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ঘর থাকে। আপনি চাইলে এমন অতিরিক্ত ঘর ভাড়া দিয়ে বাড়তি অর্থ রোজগার করতে পারেন। তবে ভাড়া দেওয়ার পূর্বে অবশ্যই ভাড়াটিয়ার বিস্তারিত পরিচয় জানুন এবং অবশ্যই তার সাথে ভাড়া সম্পর্কিত একটি চুক্তিপত্র তৈরি করুন।

পোষা প্রাণীর প্রশিক্ষক: অনেকের বাড়িতেই পোষা প্রাণী থাকে। কিন্তু তারা জানে না কীভাবে পোষা প্রাণীগুলো পারিবারিক নিয়মের সাথে মানানসই করে নিতে হয়। কীভাবে তাদের আরো প্রশিক্ষিত করা যায়। আপনি যদি পোষা প্রাণী প্রেমী হয়ে থাকেন তবে এ সম্পর্কিত একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলতে পারেন। যেহেতু এটি সম্পূর্ণ নতুন ধরনের একটি পেশা। তাই এক্ষেত্রে সম্ভাবনা অনেক। আপনি অন্যের পোষা প্রাণী কয়েক দিন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পারিবারিক পরিবেশের উপযুক্ত করে দেওয়ার বিপরীতে মোটা অংকের সম্মানী নিতে পারবেন।

ঐতিহ্যবাহী পুরনো জিনিস বিক্রয়: ঐতিহ্যবাহী পুরনো জিনিসের প্রতি মানুষের বরাবরই বিশেষ আগ্রহ থাকে। সৌখিন মানুষেরা অনেক উচ্চমূল্যে এসব জিনিস ক্রয় করে থাকে। আপনি যদি বিদ্যমান চাকরি বা কাজের পাশাপাশি বাড়তি অর্থ রোজগারের জন্য ছোট কোনো ব্যবসা শুরু করতে চান, তবে ঐতিহ্যবাহী পুরনো জিনিস বিক্রির এমন একটি কেন্দ্র বা অনলাইন দোকান শুরু করতে পারেন।

এই দোকানের পণ্য হিসেবে কোনো প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন বা রাষ্ট্রীয় মূল্যবান সম্পদ খুঁজে বের করার প্রয়োজন নেই। আপনার শৈশবে ব্যবহার করেছেন এমন জিনিস, শৌখিন বস্তু বা এখন থেকে ৪০/৫০ বছর আগে সাধারণ মানুষ ব্যবহার করতো এমন আকর্ষণীয় জিনিস খুঁজে বার করুন।

গ্রাম বা মফস্বল শহর থেকে কম মূল্যে কিনে নিয়ে আপনার অনলাইন দোকানে বিক্রির জন্য প্রদর্শন করুন। সাথে এই পণ্যের বিস্তারিত তথ্য এবং ঐতিহাসিক ব্যবহারের কথা উল্লেখ করুন। আশা করা যায় আপনি অল্পদিনেই ব্যাপক সাড়া পাবেন। এমন প্রতিষ্ঠান শুরু করার জন্য আপনাকে খুব বেশি অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে না। এমনকি আপনি সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহার করেও এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।

শাহীন

আমি শাহীন । পেশায় একজন ব্যবসায়ী । পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করতে পছন্দ করি। আশা করছি আমার শেয়ারকৃত তথ্য থেকে আপনারা উপকৃত হচ্ছেন আর তা হলেই আমার পরিশ্রম স্বার্থক।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Ads

Ads