বর্তমান সময়ে কেউ যদি চায় কিছুটা অনুপ্রেরণা পেতে তবে বন্ধুবান্ধব কিংবা শুভাকাঙ্খীদের কাছ থেকে যেই বাক্যগুলো শুনতে হয় সেগুলো অনেকটা “হাল ছেড়ো না”,“পরিশ্রম চালিয়ে যাও,সফলতা আসবেই” কিংবা “সবসময় ইতিবাচক চিন্তা করবে” এই ধরনের হয়ে থাকে। এই কথাগুলো সত্য এবং অনুপ্রেরণা যোগানোর জন্যে দারূণ সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।তবে সমস্যা হলো আমরা সবাই এই কথাগুলোর সাথে মোটামুটি অনেক আগে থেকেই পরিচিত। ফলে বিষয়টি এই রকম হয়ে দাঁড়ায় যে এই ধরণের অনুপ্রেরণামূলক বানীগুলো আর তেমন কার্যকারী ভাবে অনুপ্রেরণার আধার হিসেবে কাজ করতে পারেনা।
এই সমস্যার সমাধান হিসেবে আমরা এই লেখার মাধ্যমে আপনার কাছে কিছু নতুন ও অনন্য উপায়ের কথা তুলে ধরবো যেগুলো আপনারা আপনাদের জীবনে কাজে লাগানোর মাধ্যমে আরো বেশী সফল হয়ে উঠতে পারেন। চলুন তবে দেখে নেওয়া যাক নিজেকে অনুপ্রেরণা দেওয়ার ৭টি অনন্য টিপসগুলোঃ-
১. স্বাগত জানান ব্যার্থতা কে
জ্বী, ঠিকই পড়েছেন। জীবনে ব্যাথা ও কষ্টকে হাসিমুখে মেনে নিন। জীবনে এমন কোনো পরিস্থিতির মাঝে রয়েছেন যা আপনার শারীরিক ও মানসিক কষ্টের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে? মেনে নিন পরিস্থিতিকে এবং জেনে রাখুন যখন আপনার এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরন ঘটবে তখন আপনি নিজেকে আবিষ্কার করবেন আরো বেশি শারীরিক ও মানসিকভাবে পরিপক্ক হিসেবে। সুতরাং, এর পরে যখন কঠিন কোনো পরীক্ষার মুখোমুখি করবেন নিজেকে তখন আগে থেকেই কষ্ট ও ব্যাথা সহ্য করার মানসিকতা নিয়ে প্রস্তুত হয়ে থাকবেন।
২. ভালো অনুভূতির জন্যে সানন্দে প্রত্যাশা করুন
এটি আমার নিজের সবচেয়ে প্রিয় সুত্র নিজেকে উদ্দীপ্ত করার জন্যে। আপনি যখন কঠোর পরিশ্রম করবেন কোনো কিছু পাওয়ার জন্যে এবং শেষ পর্যন্ত যখন সেটি পেয়েও যাবেন সেই মুহূর্তে আপনার কি রকম অনুভূতি হবে ভাবতে পারেন? নিশ্চয়ই আত্মতৃপ্তিতে ভেসে যাবে আপনার মন। ফিটনেস অর্জনের জন্যেও একই সিক্রেট প্রযোজ্য। যখনই কোনো কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবেন তখন কল্পনা করার চেষ্টা করুন কতটা ভালো অনুভব করবেন আপনি চ্যালেঞ্জটি সম্পূর্ণ করার পরে। দেখবেন তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবেই আপনার মনে অদম্য উদ্দীপনার জন্ম নেবে।
৩. মনে রাখুন সেই পুরোনো প্রবাদ, মাঝে মাঝে চার কদম আগাতে হলে দুই কদম পিছে যেতে হয়
একটানা কোনো কাজ না করে মাঝে মাঝে বিরতি দিন। সময় দিন নিজেকে, বুঝতে চেষ্টা করুন আপনার উদ্দেশ্য। তারপরে সেই উদ্দেশ্য ঠিক ভাবে পূরণ করবেন সেই ব্যাপারে ভাবনা চিন্তা করুন। এতে করে যেই লাভ হবে তা হলো আপনি বুঝতে পারবেন আপনি ঠিক কীভাবে আগাবেন।
৪. প্রয়োজনে হাল ছেড়ে দিন
মাঝেমাঝে হাল ছেড়ে দেওয়াটাই হলো সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। তবে কোন সময়ে হাল ছাড়া জরুরি তা বুঝতে প্রয়োজন কাজের অগ্রগতি ও ফলাফল প্রাপ্তির সম্ভাবনা মূল্যায়ন।
যখন বুঝতে পারবেন আপনি যা করছেন তা আপনাকে কোনো সাহায্য করছে না তখন হাল ছেড়ে দিন এবং নিজেকে যুক্ত করুন অন্য কোনো কাজে।
৫. বিরতি নিন কাজ থেকে এবং নিজের মন ও শরীরকে বিশ্রাম দিন
একটি পরিপূর্ণ বিশ্রাম কাজ করবে আপনার শরীর ও মনের রিচার্জ হিসেবে। একটানা গাধার খাটুনি খেটে আসলেই কাজের প্রোডাক্টিভিটি বাড়ানো সম্ভব নয়। মাঝেমাঝে ক্লান্তিকর কাজ থেকে বিশ্রাম নিন এবং কিছু সময় কাটান নিজের মতো করে। বিশ্রামের সময়টিতে এমন কিছু করুন যা আপনি উপোভোগ করেন। তা হতে পারে গান শোনা, মুভি দেখা কিংবা বই পড়া।বিশ্রান শেষে কাজে ফিরে এলে আপনি নিজেই আপনার কাজের অগ্রগতিতে অনেক পার্থক্য খেয়াল করবেন।
৬. ব্যর্থতাই আপনার সবচেয়ে বড় বন্ধু
ব্যর্থতা হতে পারে আপনার সবচেয়ে উপকারী বন্ধু যদি আপনি যথাযথ শিক্ষা নিতে পারেন। ব্যর্থ হওয়া মানেই আপনার সফল হতে পারার সম্ভাবনা শেষ এমনটি মনে করার কোনো কারণ নেই। উল্টো আপনি যদি সফল না হতে পারার পিছের কারণগুলো বিশ্লেষন করে সেগুলো মনে রেখে আর পুনরাবৃত্তি না করেন তবে সাফল্য অবশ্যই আপনার হাতে ধরা দেবে।
৭. জীবনকে উপোভোগ করুন
জীবনে যেরকম পরিস্থিতিতেই থাকুন না কেনো সেই অবস্থাতেই জীবনকে উপোভোগ করা শিখুন। নিজের ভুলগুলোর দিকে তাকিয়ে হাসুন, নিজের ফিউচার সম্পর্কে ইতিবাচক চিন্তা করুন। সৃষ্টিকর্তার কাছে নিয়মিত শুকরিয়া আদায় করুন। চেষ্টা করুন অন্য কাউকে সাহায্য করার মাধেমে তার মুখে হাসি ফোটানোর। প্রতিটি দিনশেষে প্রার্থনা করুন পরের দিনটি যেনো আরো ভাল কিছু বয়ে নিয়ে আসে আপনার জন্যে।