মানুষ পরিবর্তনশীল, এবং তার এই পরিবর্তনের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয় তার চাহিদা এবং আকাঙ্ক্ষা। একজন ব্যাবসায়ি অথবা ইনটারনেট মার্কেটারের কাজ হচ্ছে সহজ উপায়ে এবং কম খরচে ক্রেতার চাহিদার কথা মাথায় রেখে কৌশল ঠিক করা। আর এই কাজটি সঠিক ভাবে করতে পারলেই ব্যাবসার প্রসার এবং উন্নয়ন দুইটাই সহজ হয়ে যায়।
আজ আমি এমন কিছু কৌশল নিয়ে আলোচনা করবো যা আপনার মার্কেটিং ক্যম্পেইন কে কার্যকরি করতে সহায়তা করবে।
কন্টেন্ট তৈরীর নেশা তৈরী করুন
অনলাইন ব্যাবসার সাথে কন্টেন্ট ওতপ্রুত ভাবে জড়িত। গুগল সার্চ ইঞ্জিনে প্রতি সেকেন্ডে সার্চ হয় ৪০,০০০। তার মধ্যে রয়েছে সরাসরি পন্য খোজা, পন্য সম্পর্কিত তথ্য খোজা, কোন সমস্যার সমাধান খোজা, কোন প্রশ্নের উত্তর খোজা ইত্যাদি। একজন ইন্টারনেট মার্কেটার হিসেবে অথবা উদ্যেক্তা হিসেবে আমাদের এই সুযোগটাকেই কাজে লাগাতে হবে, খুজে বের করতে হবে আমাদের সম্ভাব্য ক্রেতারা কি ধরনের তথ্য খুজে থাকেন, তারপর তৈরি করতে হবে কন্টেন্ট যা তাদের কে পর্যাপ্ত তথ্য দিয়ে সন্তুষ্ট করতে পারে। আর এটা করতে পারলেই কাজ অনেকটা এগিয়ে গেল। ভাল কন্টেন্ট আপনাকে দিতে পারে
☑ পর্যাপ্ত ব্রান্ড পরিচিতি
☑ পর্যাপ্ত এঙ্গেজমেন্ট
☑ পর্যাপ্ত বিক্রি
☑ পর্যাপ্ত সোস্যাল শেয়ার এবং আরো অনেক সুবিধা
নিজের জ্ঞানকে অন্যের মাঝে ছড়িয়ে দিন
আপনি নিজে কি জানেন অথবা আপনার পন্য কিভাবে মানুষকে সাহায্য করতে পারে তা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিন। প্রতিটা কোম্পানি তখনই তার মার্কেটিং ক্যম্পেইন থেকে পর্যাপ্ত ফল পেয়ে থাকে যখন সে তার সম্ভাব্য ক্রেতার বিশ্বাস অর্জন করতে পারে। আর বিশ্বাস অর্জন করার জন্য নিজের জ্ঞান তাদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার চাইতে ভাল উপায় নেই।
আমি এই ব্লগ ছাড়াও আমার ফেসবুক গ্রুপে নিয়মিত রিসোর্স শেয়ার করি। আপনি কানেক্টেড থাকতে গ্রুপে জয়েন করে নিতে পারেন।
সোস্যাল মিডিয়াকে মাথায় রেখে ভিন্ন ভিন্ন কন্টেন্ট তৈরি করুন
শুধু বাংলাদেশের কথাই যদি বলি তাহলে জানিয়ে রাখা যায় যে বর্তমানে বাংলাদেশ এ ১ কোটির উপরে ফেসবুক ব্যাবহারকারি রয়েছেন। টুইটার, গুগল প্লাস সহ অন্যান্য সোস্যাল মিডিয়াতেও রয়েছে অসংখ্য ব্যাবহারকারি। অর্থাৎ সোস্যাল মিডিয়া সার্চ ইঞ্জিন এর পরেই অনলাইনের সবচেয়ে কার্যকরি মিডিয়া যেখান থেকে ব্যাবসার প্রসার ঘটানো সম্ভব। কিন্তু সোস্যাল মিডিয়াগুলোর রয়েছে নিজস্ব এলগোরিদম। তাই কন্টেন্ট তৈরীর সময় এই ব্যাপারটা মাথায় রাখলে সোস্যাল মিডিয়া থেকেও পর্যাপ্ত সাফল্য পাওয়া যাবে।
এঙ্গেজমেন্ট তৈরি করার চেষ্টা করুন
আপনার পণ্য সম্পর্কে সম্ভাব্য ক্রেতাসমুহের মনে নানান ধরনের প্রশ্ন আসবে সেটাই স্বাভাবিক। আর আপনার ব্যাবসাকে সফল করার জন্য এই প্রশ্নের উত্তর, উত্তর দেয়ার ধরন, কত দ্রুত উত্তর দিচ্ছেন সব গুরুত্বপূর্ণ। সোস্যাল মিডিয়া হচ্ছে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়া, সম্ভাব্য ক্রেতা এবং ক্রেতার সাথে সুসম্পর্ক তৈরি করার সবচেয়ে ভাল উপায়। তাই মার্কেটিং ক্যম্পেইকে কার্যকরী করার জন্য শুধু প্রচারনার দিকে মনযোগ না দিয়ে এঙ্গেজমেন্ট তৈরি করার চেষ্টা করুন।
এঙ্গেজমেন্ট তৈরি করার জন্য, আপনি তাদেরকে বিভিন্ন রকম প্রশ্ন করতে পারেন, সার্ভে করতে পারেন। সার্ভে করার জন্য অনেক টুল রয়েছে।
☑ সার্ভে মানকি
☑ গুগল ফর্ম
ছবি ব্যাবহার করুন
“Picture Says 1000 words” এই কথাটা আমরা প্রায়ই শুনে থাকি। আসলে টেক্সট কন্টেন্ট এর পাশাপাশি ইমেজ কন্টেন্টেরও রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষেত্রে ইমেইজ কন্টেন্টের রিচ টেক্সট কন্টেন্টের চাইতে বেশি হয়। আবার ফেসবুকে এই দুইটার মিশ্রন অনেক ভাল কাজ করে। তাই কন্টেন্ট তৈরির সময় ইমেজ কন্টেন্ট এর দিকে অবশ্যই মনযোগ দেয়া উচিত। ফেসবুক ছাড়াও দিনে দিনে ইন্সটাগ্রামের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। ডেভেলপড কান্ট্রিতে ইতিমধ্যেই পিন্টারেস্ট (Pinterest) খুব জনপ্রিয়।
আপনার যেকোন ছবিকে এডিট করতে ব্যাবহার করতে পারেন Canva. আর ভাল ভাল কপি রাইট ফ্রী ইমেইজ খুজে পেতে Pixabay ব্যাবহার করতে পারেন।
সব ধরনের কন্টেন্টকে হিবিজিবি করা থেকে বিরত থাকুন
পৃথিবীর সবচেয়ে সিম্পল ওয়েবসাইট হচ্ছে পৃথিবীর এক নম্বর প্রতিষ্ঠান গুগলের। তারমানে টাকার অভাবে তাদের ওয়েবসাইট কে সিম্পল রাখা হয় নি, বরং অনেক টাকা খরচ করে তাদের ওয়েব সাইট কে সিম্পল এবং কার্যকরি করা হয়েছে। একই রকম দৃশ্য দেখতে পাবেন অন্যান্য বড় বড় প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটেও। সিম্পল ওয়েবসাইট অথবা সিম্পল কন্টেন্ট এর কনভারশন রেট সব সময় বেশি হয়। তাই অযথা কন্টেন্ট অথবা ওয়েবসাইটকে হিবিজিবি করা থেকে বিরত থাকুন।
এসইও এবং এসএমএম কে এক সুতায় বাধুন
বর্তমান সময়ে সোস্যাল মিডিয়া সিগনাল সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনে সহায়ক ভুমিকা রেখে থাকে। তাই মার্কেটিং স্ট্রাট্যাজি তৈরি করার সময় এই দুইটি অধ্যায়কে গুরুত্ব দেয়া এবং একসাথে প্লানিং তৈরি করাটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
তথ্যসুত্রঃ ইন্টারনেট