ফ্যাশন জগত হুহু করে বাড়ছে – ইন্ধন যোগাচ্ছে প্রতিদিন নতুন নতুন অত্যাধুনিক ডিজাইন আর জামা কাপড়ের চাহিদা | আপনি যদি এমব্রয়ডারি ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে এটাই ভালো সময় |
নিজের এমব্রয়ডারি ডিজাইন ব্যবসা বাড়ি থেকেই শুরু করতে পারবেন | কম খরচে অল্প পরিমান উপকরণেই শুরু করতে পারবেন ব্যবসা |
তাহলে চলুন দেখেনি বিস্তারিতভাবে কীভাবে ধাপে ধাপে নিজের এমব্রয়ডারি ব্যবসা শুরু করতে পারবেন |
এমব্রয়ডারি ব্যবসায়ের সুযোগ
জামা কাপড়, পোশাক বা বুটিকের ব্যবসাতে সব সময়ে চাহিদা থাকে | বুটিকে থাকে নিত্যনতুন ডিজাইন, কালার আর বাহারি কাপড়ের পোশাক | থাকে বিভিন্ন ধরণের এমব্রয়ডারি ডিজাইন, ভারতীয় বা বিদেশী ডিজাইন, আধুনিক সাজ-পোশাকের সম্ভার যা অন্য কোথাও পাওয়া দুরূহ | তাই ফ্যাশন সচেতন ক্রেতারা বুটিক থেকেই নিজেদের পোশাক কেনা পছন্দ করেন |
ক্রেতাদের ফ্যাশন বা পোশাকপ্রীতির কারণেই হাতে বানানো পোশাক / এমব্রয়ডারি / সুতোর কাজের প্রসার দিন দিন বাড়ছে।
এমব্রয়ডারি ব্যবসার সুবিধা হলো যে এটা বাড়ি থেকেই করা যায় | ছেলে মেয়ে উভয়ে করতে পারেন এই কাজ | নিজেদের বানিয়ে নিতে হবে পরিকল্পনা যা অনুসরণ করে সহজেই নামতে পারবেন ব্যবসাতে |
এমব্রয়ডারি ব্যবসাতে কত লাভ করা যেতে পারে ?
এমব্রয়ডারি হলো হাতের কাজ যেখানে নতুন ডিজাইন ও নতুন চিন্তা ভাবনা প্রাধান্য পায় | কাজ যত সুক্ষ হয় তত তার চাহিদা বাড়ে |
আপনি মার্কেট থেকে পোশাক কিনে এবং এমব্রয়ডারি মেশিনের মাধ্যমে তার ওপর এমব্রয়ডারি ডিজাইন বানিয়ে তা দোকানে বা বুটিক-এ সেল করতে পারেন |
মার্জিন থাকে ৫০% থেকে ৮০% পর্যন্ত | মানে যদি আপনি একটা শাড়ী কেনেন ৫০০ টাকা দিয়ে এবং তার ওপরে এমব্রয়ডারির কাজ করে করেন, তাহলে সেই শাড়ী তা আপনি ১০০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে পারেন – নির্ভর করবে কাজের দক্ষতার ওপরে |
বুটিক এর সাথে যোগাযোগ রাখলেই সহজে প্রতি মাসে কাজ তুলতে পারবেন | নিজের কিছু কাজের নমুনাও রেখে দিতে পারেন বুটিকে বা দোকানে -সেখানে কাজ পছন্দ হলেই আপনি আরও কাজ পাবেন |
কী কী প্রকারের কাজ করতে পারবেন
১) কুর্তি, ব্লাউস -এর ওপর এমব্রয়ডারি ডিজাইন
২) বাচাদের পোশাক
৩) পার্টি বা অনুষ্ঠানে পড়ার জন্যে আধুনিক এমব্রয়ডারি কাজ
৪) লেহেঙ্গার ওপর ভারী এমব্রয়ডারি ডিজাইন
৫) টেবিল ক্লোথ, সোফা কভার, বেডশীট-এর ওপর কাজ
৬) বাড়ির সজ্জা
৭) হস্তশিল্প ডিজাইন করা
৮) লেপ ও তোষকের কভার
৯) ইউনিফর্ম এ লোগো বানানো
কীভাবে শুরু করবেন এমব্রয়ডারি ব্যবসা ?
আসুন এবার দেখেনি কি কি জানতে হবে এমব্রয়ডারি ব্যবসা শুরু করতে:
১) এমব্রয়ডারি মার্কেট ও চাহিদা
অনলাইন এবং স্থানীয় ট্রেড ফেয়ার / বাণিজ্যিক মেলা বা ব্যবসায়ী সমিতির সাথে কথা বলতে হবে | যোগাযোগ করুন স্থানীয় গার্মেন্টস বিক্রেতাদের সাথে – ওখান থেকেই পাবেন এই তথ্যের খোঁজ |
কথা বলুন বুটিকদের সাথে – ক্রেতারা কি চাইছে, কোন ধরণের ডিজাইন এখন মার্কেট এ চলছে, নতুন কি ট্রেন্ড আসছে ও কোন স্টাইল-এর পোশাক এর চল বেশি আপনার এলাকাতে |
ব্যবসায়ী সমিতি থেকে আরও জানতে পারবেন প্রস্তুতকারক এর খোঁজ |
২) ক্রেতাদের চাহিদা
এম্ব্রয়ডারি মার্কেট নিয়ে অনুসন্ধান করার সময়ে বুঝতে পারবেন ক্রেতাদের চাহিদা ও পছন্দ | সব জায়গাতে একই ধরণের এমব্রয়ডারি পছন্দ হবে না |
কোথাও শান্তিনিকেতনি কাজ, কোথাও ফিশবোন, কোথাও ফ্রেঞ্চ নট, কোথাও সাটিন স্টিচ – এরকম ৩০ টার ওপর এমব্রয়ডারি টেকনিক আছে | জানতে হবে কি চাইছে ক্রেতারা আর তা বানাবেন কীকরে |
৩) সুতা ও সুচ
এমব্রয়ডারি করতে লাগবে বিভিন্ন ধরণের সুতা ও সুচ | সুতার ঘনত্ব ও স্থূলতার সম্বন্ধে জানতে হবে | কোন এমব্রয়ডারি স্টাইল বা ডিজাইন এ কি ধরণের সুতা লাগে ও সেটা কোথায় কিনতে পাওয়া যাবে |
সুচ ও প্রচুর প্রকারের হয় | পোশাকের ওপর ভিত্তি করে সুচ ব্যবহার করতে হবে | এক রঙের সুতা থেকে শুরু করে একাধিক রঙের সুতা পাওয়া যায় – কোন এমব্রয়ডারি কাজে কোনটা ব্যবহার করবেন সেটার অনুমান থাকতে হবে |
৪) কাঁচামালের সন্ধান
সুতা ও সুচ লাগবে প্রচুর | তাই পাইকারিতে কিনতে হবে | সেই সম্বন্ধে জেনে রাখতে হবে | বুটিক এ দুই প্রকারের চাহিদা থাকে : এক, আপনাকে পোশাক দিয়ে দেবে| তার ওপর এমব্রয়ডারি করতে হবে| দুই, আপনাকে নিজে থেকে পোশাক বা কাপড় কিনে এমব্রয়ডারি ডিজাইন বানিয়ে দিতে হবে |
যদি প্রথম প্রকারের হয়ে তাহলে আপনাকে পোশাক কিনতে খরচ করতে হবে না | আর যদি দ্বিতীয় প্রকারের হয় তাহলে আপনাকে পোশাক, ফ্যাব্রিক, বা কাপড়ের পাইকারি মার্কেট-এর খোঁজ রাখতে হবে | দ্বিতীয় প্রকারের কাজে মার্জিন বা লাভ বেশি |
৫) ক্যাটালগ / পোর্টফোলিও
ক্যাটালগ অর্থাৎ আপনার বানানো ডিজাইনার নমুনা, পুরানো কাজের ছবি ও নতুন ডিজাইনার নকশা | ক্যাটালগ বা পোর্টফোলিও প্রচারের জন্যে লাগবে | যখনি মার্কেটিং-এ যাবেন তখন সাথে রাখতে ভুলবেন না | আপনার কাজের নমুনা দেখেই পাবেন নতুন কাজের অর্ডার |
এমব্রয়ডারি ডিজাইন করতে কী কী লাগবে:
১) সুতা
২) কাপড় বা ফ্যাব্রিক
৩) কাঁচি
৪) সুচ
৫) এমব্রয়ডারি ফ্রেম
৬) সুতা রাখার বাক্স
৭) ফোকাস লাইট বা জোরালো আলো
এমব্রয়ডারি শিখবেন কি করে
এমব্রয়ডারি শিখতে পারবেন অনলাইন বা ক্লাসরুম ট্রেনিং এর মাধ্যমে | ক্লাসরুম ট্রেনিং করতে হলে আপনাকে কোচিং সেন্টারে এ গিয়ে শিখতে হবে | অনলাইন শিখতে গেলে বাড়ি থেকেই শিখতে পারবেন | লাগবে স্মার্টফোন আর ইন্টারনেট কানেকশন /ডাটা | বাড়ি থেকেই নিজের সময়ে মতন শিখে নিতে পারবেন |
এমব্রয়ডারি শিখতে যোগাযোগ করতে পারেন Vivaron Education-এর সাথে – এখানে মৌলিক থেকে উন্নত কৌশলের সমস্ত স্টাইল-এর এমব্রয়ডারি ও সুতার কাজ সেখান হয় | বিশদ জানতে কল বা হোয়াটস্যাপ করুন করুন 8017743134 অথবা 7044439663 নম্বরে