জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়

সারাবিশ্বে অনেকে জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে । তুমিতো সাধারণ জ্বর কেমন খারাপ কিছু নয় কারণ অনেক সময় জ্বর শরীরের যে কোনো সংক্রমণ বা প্রদাহের বিপরীতে প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। বর্তমান সময়ে জ্বর আসা মানে বিশাল আতঙ্কের ব্যাপার। আমাদের মাঝে অনেকেই এমন রয়েছে যারা মনে করে যে জল আসলে বুঝি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পড়েছি। কিন্তু জ্বর আসা মানেই যে করুণা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ব্যাপারটা তেমন নয়। 

যদি শরীরের জ্বরের মাত্রা 38 দশমিক 3 ডিগ্রি সেলসিয়াস অথবা 101 ডিগ্রি ফারেনহাইট পায়ের নিচে হয় তাহলে ঔষধ খাওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণেই মাত্রার জ্বর ঘরোয়া কিছু উপায় অবলম্বন এর মাধ্যমেই সারিয়ে তোলা সম্ভব।  তবে যদি এর চেয়ে অধিক হারে বা অধিক মাত্রায় জ্বরে আক্রান্ত হন তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। আরেকটা বিষয় যদি এক নাগাড়ে তিন দিনের বেশি জ্বরে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। 

এখন আমরা জানবো কিভাবে ঘরোয়া পদ্ধতিতে জ্বর কমানো যায়। অনেক সময় ঘরোয়া পদ্ধতিতে কাজ না হলে প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ সেবনের মাধ্যমে ওজন কমানো যায় খুব সহজে।  প্রাচীন আমল থেকে এমন কিছু নিয়ম চলে এসেছে যেগুলো অনুসরণ করলে শরীরের হালকা-পাতলা জোর কমিয়ে আনা সম্ভব । 

কুসুম গরম পানিতে গোসল করা

আমরা অনেকেই ভাবে জ্বর অবস্থায় ঠান্ডা পানিতে গোসল করলে হয়তো সেভাবে তাপমাত্রা কমে যাবে কিন্তু এটা একটা ভুল ধারণা। খুব জ্বর আসলে কুসুম গরম পানিতে গোসল করলে শরীরের তাপমাত্রা কমে যাবে খুব সহজ এ। যদি আমরা ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করি তাহলে শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গের রক্ত ছুটে যাবে এবং মূল তাপমাত্রা বেড়ে যাবে অন্যদিকে শীতল হয়ে পড়বে এবং কাঁপুনি শুরু হবে । তাই জ্বর হলে ঠান্ডা পানি দিয়ে নয় বরং হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করতে হবে । 

ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দেওয়া 

ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে কে বলা হয় স্পন্স বাথ।  গুগোল এবং কুচকির মত উচ্চ তাপমাত্রা যুক্ত অঙ্গে ঠান্ডা পানিতে ভেজা নরম কাপড় দিয়ে মুছে দিলে জ্বর কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে । যেহেতু সুতি কাপড়ে পানি শোষণ ক্ষমতা বেশি তাই চেষ্টা করতে হবে সুতি কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দেওয়ার জন্য। 

জ্বরের পট্টি দেওয়া 

যদি জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির গোসল করতে না পারে সে ক্ষেত্রে জ্বরের পট্টি  ব্যবহার করা যেতে পারে। অর্থাৎ ঠান্ডা পানিতে ভেজা কাপড় কপালে এবং ঘাড়ের উপর রেখে দিলে জ্বর কমে আসে। একটু সময় নিয়ে এই কাজটা করতে হবে তাহলে যারা আক্রান্ত ব্যক্তির অনেকটা আরাম হবে।  

ঘাম নিঃসরণ করা 

শরীরকে ঠাণ্ডা করার আরও একটি চমৎকার উপায় হচ্ছে ঘাম নিঃসরণ করা।  ঘাম নিঃসরণ করার জন্য অনেকগুলো উপায় অনুসরণ করা যেতে পারে। যা যা করলে শরীরের ঘাম নিঃসরণ হয় তার সবগুলোর ক্রয় করতে পারেন । 

খাবারের ঝাল 

জলের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে তা হল ক্যাপসাইসিন।  শরীরের ঘাম ঝরাতে ক্যাপসাইসিন বেশ জোরালো ভূমিকা পালন করতে পারে। তাই জ্বর আসলে খাবারে বেশি করে জ্বাল মরিচের গুঁড়া ব্যবহার করুন। এটি শরীর থেকে ঘাম ঝরিয়ে জ্বর কমাতে সক্ষম। 

ওয়েট শট ট্রিটমেন্ট 

জ্বর কমানোর ক্ষেত্রে আরেকটি জনপ্রিয় ট্রিটমেন্ট হচ্ছে ওয়েট শট ট্রিটমেন্ট। বিছানায় যাওয়ার পূর্বে প্রথমে গরম পানিতে পা ভিজিয়ে নিতে হবে । এক জোড়া সুতি কাপড়ের মোজার পানিতে ভিজিয়ে করে নিতে হবে ।তারপর এক জোড়া শুকনো মুজা পড়তে হবে। এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করুন শরীরের রক্ত পায়ের দিকে ছুটে চলে আসবে তারপর  ধীরে ধীরে জ্বর কমে আসবে।

মাস্টার্ড ফুটবাথ

ওজন কমানোর আরেকটি উপায় হচ্ছে মাস্টার্ড ফুটবাথ।উপরে বর্ণিত হয়েছে ট্রিটমেন্টের মতোই এটি আরেকটি কার্যকরী ট্রিটমেন্ট ।কিভাবে করবেন তা বলে দিচ্ছি প্রথমে 4 মগ কুসুম গরম পানি নিতে হবে তার মধ্যে দুই চা-চামচ সরিষা গুঁড়া মিশিয়ে কয়েক মিনিট রাখুন ।এখন সেই পানিতে পা দুটিকে কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখুন এতেও ধীরে ধীরে জ্বর কমে আসবে ।

শরীর মুছে দেওয়া 

এবার একটু কঠিন তম পদ্ধতি সম্পর্কে বলবে যেটা মাধ্যমে খুব সহজে এড়ানো সম্ভব ।আর সেটা হচ্ছে শরীর মুছে দেওয়ার পদ্ধতি ।একটি চাদর কে অথবা একটি গামছা ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে হালকা পানি ঝরিয়ে সেটা দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে ।কিন্তু বর্তমানে আধুনিক চিকিৎসকেরা বলছেন যে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত কমানো  ঠিক নয়। 

বেশি বেশি পানি পান করা 

শরীরের তাপ মাত্রা বেড়ে গেলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে তাই জ্বরের সময় বেশি বেশি পানি পান করা প্রয়োজন ।সেক্ষেত্রে দিনে অন্তত পক্ষে 8 থেকে 12 ক্লাস পানি পান করতে হবে ।

ভিটামিন সি জাতীয় খাবার 

আমরা অনেকে শরীরের ভিটামিনের অভাব দূর করার জন্য বিভিন্ন ধরনের সাপ্লেমেন্ট খেয়ে থাকি ।তবে আমরা যদি আমাদের দৈনন্দিন খাবারের তালিকা গুলো কি সুন্দর ভাবে সাজাতে পারি তাহলে অতিরিক্ত সাপ্লিমেন্ট এর প্রয়োজন হবে না । তবে জ্বর শরীরে ভিটামিন সি জাতীয় খাবার বেশি গ্রহণ করলে সেটা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এক্ষেত্রে ভিটামিন সি জাতীয় খাবার যেমন কমলা এবং প্রকৃতির অন্যান্য খাবার গ্রহণ করা যেতে পারে। ভিটামিন-সি ইনফিউশনের সিস্টেমকে ইনফেকশনের বিরুদ্ধে লোকদের সাহায্য করে ।

আদা চা পান করুন 

জ্বর অবস্থায় ঠান্ডা লাগা খুবই স্বাভাবিক ।গর্ভাবস্থা ও মোটে ভাল থাকে না এমতাবস্থায় শুধু গলার কফ শান্তিময় বুকের কফ পরিষ্কার করার জন্য আদা চায়ের ব্যবস্থা করতে পারেন। জ্বর অবস্থায় চা বানানোর ক্ষেত্রে কৌশল অবলম্বন করতে পারেন তা হচ্ছে ফুটন্ত পানিতে চিনি দিয়ে ফোটানো ।তিনি যখন মিশে যাবে তখন তাতে চা দিয়ে আবারও দেখা হবে এরপর হাতে কুচি মিশিয়ে নিন। একটু পরে স্যার কে দিয়েছে কি চা পান করুন তাহলে ভালো ফল পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

মধু ও তুলসী পাতা 

সর্দি,  জ্বর, কাশি হলে মধু এবং তুলসী পাতার মাধ্যমে চিকিৎসা করা যায়। মূর্খ এবং তুলসী পাতা গলার কফ সারাতে সাহায্য করে। তাই সর্দি এবং কাশি অবস্থায় প্রতিদিন সকালে মধু এবং তুলসীপাতা একসঙ্গে মিশিয়ে খেয়ে নিন । তাহলে আপনি খেয়াল করবেন যে আপনার গলাটা পরিষ্কার হয়ে গেছে এবং আপনি আগে যে আরাম পাচ্ছেন। 

পর্যাপ্ত বিশ্রাম 

প্রত্যেক রোগীর প্রয়োজন অসুস্থ অবস্থায় পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম নেওয়া। অসময় দেখা যায় যে হয়তো আপনার ফ্লও জাতীয় রোগ হয়েছে।  তাই পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম নিন সাথে আপনার মাধ্যমে অন্য কারো শরীরে রোগ আক্রমণ না হয়। 

পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ 

পুষ্টিকর খাদ্য আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে । তাই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করার জন্য অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে।  অবশ্যই জ্বর অবস্থায় যে সকল খাবারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে সে ধরনের খাবার গুলো বেছে বেছে খেতে পারেন।  বিশেষ করে যে খাবার গুলোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে সেগুলোর প্রতি একটু বেশি গুরুত্ব দিন। আমরা জানি টকজাতীয় ফল গুলাকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি থাকে তাই সেই জাতীয় খাবার বেছে বেছে খেতে পারেন। 

 যদি তাপমাত্রা 105 ডিগ্রির অধিক হয়ে যায় সেক্ষেত্রে জরুরী ভিত্তিতে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।  অনেক সময় 105 ডিগ্রি জ্বর উঠে গেলে অনেক কাশি, পেট ব্যথা বেশি এবং জ্বরের ঘোরে অসংলগ্ন আচরণ করলে অথবা অবচেতনের মত হলে অবশ্যই দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। 


শাহীন

আমি শাহীন । পেশায় একজন ব্যবসায়ী । পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করতে পছন্দ করি। আশা করছি আমার শেয়ারকৃত তথ্য থেকে আপনারা উপকৃত হচ্ছেন আর তা হলেই আমার পরিশ্রম স্বার্থক।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Ads

Ads