No title

চুলের একটা সৌন্দর্য হচ্ছে লম্বা ঘন এবং সিল্কি  কালো ছেলে মেয়ে সবার চুলের সুন্দর প্রয়োজন  | তাই যদি অনেকের ঘন চুল থেকে পাতলা হয়ে যায় প্রতিনিয়ত |  তাহলে অনেক চিন্তা মাথা চলে আসে | এই যে অদ্ভুত চিন্তা চেতনা নিয়ে আমরা সমাজে বসবাস করি | কিন্তু চিন্তা কারণে চুলের অনেক ক্ষতি হয় | বিভিন্ন কারণে চুল পাতলা হয়ে যায় | ঘুম কম হওয়ার কারণে, দুশ্চিন্তা,পুষ্টির ঘাটতি, এলার্জি ,খুশকি,যেকোনো রোগ ভাইরাস ইত্যাদি আমরা যদি নিয়ম অনুযায়ী চুলের যত্ন নিতে না পারি

তাহলে চুল বা ত্বকের ক্ষতি হয়ে দাঁড়ায় | এই সমস্যা গুলোর কারণে মাথার চুল হয়ে যায় পাতলা | মানসিক চিন্তা শারীরিক অসুস্থতা নানান ধরনের সমস্যা জন্য  আমাদের চুল পাতলা হয়ে যায় | অনেক সময় আমরা বাইরের কিছু কেমিক্যালযুক্ত কিছু প্রোডাক্ট চুল বা ত্বকে ব্যবহার করে থাকি , কেমিক্যালযুক্ত যেকোনো  প্রোডাক্ট ব্যবহার না করে আমরা ঘরোয়া উপায়ে ঘরে বসে পাতলা চুল কিভাবে ঘন করা যায় সেই পদ্ধতি অবলম্বন করব | 

শুধু নারীদের জন্য না পুরুষদের জন্য এই সমস্যা নিয়ে পুরুষরা অনেক চিন্তিত আমরা যদি প্রতি নিয়ত ও নিয়ম মত চুলের যত্ন নিয়ে থাকি, তাহলে চুল পড়া থেকে বা চুল পাতলা হওয়া এসব কারণে আমরা একটু মুক্তি পেতে পারি |  পছন্দ সব সময় ঘন চুলের প্রতি আকর্ষণ | মাথার চুল অতিরিক্ত পড়ে যাওয়ার পর মাথার টাক হতে পারে| তাই আমরা কিভাবে নিয়ম মেনে চলবো তা ঘরোয়া উপায় জানতে হবে 

১ .চুলের জন্য ডিমের ব্যবহার

 প্রাকৃতিক প্রোটিন হচ্ছে ডিম | ডিম সাধারণত পাতলা চুলকে ঘন করে | একটি ডিমে সাদা অংশ নিয়ে মিশিয়ে নিন |  তারপর সরাসরি হাত বা ব্রাশ দিয়ে চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত লাগিয়ে নিন |  ডিমের সাদা অংশ দেওয়ার পর আপনি আপনার চুল মোটা দাঁতের চিরুনি  সাহায্যে চুল আঁচড়ে  নিন |  তারপর হালকাভাবে ঝুটি বা কোন গামছা দিয়ে বেঁধে রাখুন | 20 থেকে 30 মিনিট রেখে দিন |  এর  নয় পানি দিয়ে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন |  ডিমের সাদা অংশ আমরা যেদিন চুলে ব্যবহার করব| সেই আলাদা আলাদা ভাবে কোন কন্ডিশনার ব্যবহার  করার প্রয়োজন নেই |

২.চুলের জন্য পেঁয়াজের রস ব্যবহার করুন

সব থেকে ভালো কাজ করে পেঁয়াজের রস মাথায় চুল গজাতে  | পরিমাণমতো পেঁয়াজ নিয়ে ব্লেন্ডারে বা পাটায় পিষে নিতে পারেন |  এরপর একটি ছাঁকনি দিয়ে রস ছেঁকে নিন | আপনার মাথার চুল যদি পাতলা বেশি হয়ে যায় তাহলে আপনি সপ্তাহে তিন থেকে চারদিন পেঁয়াজের রস ব্যবহার করতে পারেন |  এখানে 1 থেকে  দেড় ঘন্টা পেঁয়াজের রস মাথায় দিয়ে রাখুন |   আবার যাদের বেশি সমস্যা তারা সারা রাতের জন্য রেখে দিতে পারেন | দুই থেকে তিন মিনিট পেঁয়াজের রস মাথায় ঘষতে থাকুন হাত দিয়ে |  তার এক অথবা সারা রাতের জন্য তারপর সকালে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন|

৩ পাতলা চুলের জন্য এলোভেরা জেল অনেক উপকারী

 অ্যালোভেরা জেল চার থেকে পাঁচ চামচ নিয়ে এর সঙ্গে পরিমাণমতো মধু মিক্স করে সাথে সাথে মাথার তালুতে লাগিয়ে নিন | অ্যালোভেরা জেল ত্বকের জন্য ,এবং চুলের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে |  চুল ঘন করার সঙ্গে চুলের আগা ফাটা দূর করে |  তাই নিয়মিত এলোভেরা জেল ব্যবহার করে নিন |  সপ্তাহে 1 থেকে 2 দিন | 30 থেকে 35 মিনিট রেখে দিন |  তারপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন |


৪. মাখন দুধ ও কলা

 আমরা বাঙালি একটা কথা বলে থাকি সেটা হচ্ছে | দুধ কলা দিয়ে মানুষ  পোষা | কিন্তু আমরা শুধু জানি দুধ কলা দিয়ে মানুষ পোষা যায় এবং দুধ কলা দিয়ে  চুল পোষা যায় | কিন্তু এটা হয়তো কখনও আমরা জানতে পারিনি ও বুঝতে পারেনি | এখন মাখন দুধ ও কলা দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নেব | 


প্রয়োজনীয় উপকরণ; পাকা কলা এক পিস |  1 কাপ দুধ  পরিমাণ মাখুন  সবকিছু একসঙ্গে  ব্লেন্ডার ব্লেন্ড  করুন | তারপর একটি ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নিন | মাথার গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত লাগিয়ে রাখুন| সপ্তাহে 2 থেকে   তিন দিন ব্যবহার করুন 20 থেকে 25 মিনিট 

৫. পাতলা চুলের জন্য লেবুর রস ও তেল 

একটি বাটিতে পরিমাণমতো লেবুর রস নিয়ে এর সঙ্গে মিশিয়ে নিন নারিকেল তেল |  এরপর আস্তে আস্তে মাথার গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত মালিশ করুন | লেবুর রস ত্বকের জন্য খুব উপকারী |  লেবুর রস মাথার খুশকি রোধ করে |  কখনো ভুলেও শুধু লেবুর রস ব্যবহার করবেন না |  অবশ্যই সঙ্গে নারিকেলের তেল হবে | ভালোভাবে মাথায় গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত লেবু ও নারিকেল তেল এর মিশ্রন এক ঘন্টার জন্য চুলে লাগিয়ে রাখুন |  সপ্তাহে কয়েক বার ব্যবহার করুন |  তারপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন |

৬. পাতলা চুলের জন্য মেথি ব্যবহার করুন

মেথির ব্যবহার চলছে যুগ যুগ ধরে |  মেথি খুব কার্যকারী একটি উপাদান |  চুলকে লম্বা করে  কালো  চুল আগা ফাটা  চুল পাতলা হওয়া  ইত্যাদি |

উপকরণ/ব্যবহার বিধি 

মেথি--------- পরিমানমতো |

চুল লম্বা ঘন পাতলা হয়ে যাওয়া দূর করে জবা ফুলের রস | চুল পড়া বন্ধ করার জন্য নিয়মিত জবা ফুলের রস ব্যবহার করুন |  যুগ যুগ ধরে জবা ফুলের তেল চুলের জন্য অনেক উপকার | জবা ফুলের রস চুলকে গজাতে সাহায্য করে এবং চুল পড়া বন্ধ করে  পাতলা চুল থেকে ঘন চুলের  আনে তাই নিয়মিত জবা ফুলের রস চুলে ব্যবহার করুন | প্রয়োজন অনুযায়ী এক কাপ নারকেল তেল এর সঙ্গে আটটি জবা ফুল ও  আটটি জবা ফুলের পাতা |নারিকেল তেলের সঙ্গে জবা ফুলের পাতা বা জবা ফুল যেকোনো একটি নিয়ে | তারপর চুলায় দিয়ে হালকা  গরম করে নিন |  তারপর ঠাণ্ডা করে চুলে লাগিয়ে রাখুন |  10 থেকে 15 মিনিট আধা ঘন্টা ও 1 ঘন্টা রেখে দিন | তারপর শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন |

৭ চুল ঘন করার জন্য আদার রস

আমরা সাধারণত খাবারের জন্য বা চায়ের জন্য এইরকম বিভিন্ন ধরনের কাজের জন্য আমরা আদা ব্যবহার করে থাকি |  কিন্তু কখনও আমরা অনেকেই চুলের জন্য আদা পেস্ট ব্যবহার করিনি | তাই আদার রস চুলের জন্য কতটা উপকারী ও কতটা ব্যবহারকারী তা বলব | আদা চুলের গোড়া শক্ত করে পুষ্টি যোগায় চুলকে মজবুত করে |  আদার রস চুল পড়া বন্ধ করে | প্রথমে আদা ব্লেন্ডারের   ব্লেন্ড করে নেব | একটা বাটি নিয়ে এরমধ্যে  ব্লেন্ড করা আদা ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নেব | এর সঙ্গে মিশিয়ে নেব হালকা গরম নারিকেল তেল | তারপর ঠাণ্ডা করে 5 থেকে 6 মিনিট চুলের গোড়ায় লাগিয়ে নেব |  তারপর  1 থেকে দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করে |  তারপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলবো

৮ জবা ফুলের রস

 পাতলা চুল ঘন করার জন্য জবা ফুলের রস ব্যবহার |  জবা ফুল আরো সেটা সাদা |  এইরকম বিভিন্ন সমস্যা দূর করে ফেলে জবা ফুলের রস | প্রথমে একটি বাটিতে পরিমাণমতো নারিকেল তেল এর সঙ্গে পরিমাণমতো জবা ফুলের রস মিশিয়ে নিন |  মেশানো হয়ে গেলে এর পর মিশ্রণটি চুলের গোড়ায় লাগিয়ে রাখুন |  20 থেকে 25 মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিন |  সপ্তাহে 2 থেকে 3 দিন ব্যবহার করুন | 

৯  আলুর রস এর ব্যবহার

 আলু আমরা বিভিন্ন রান্নার কাজে ব্যবহার করে থাকি | কিন্তু আমি অনেক কাজে ব্যবহার করা যায় | এত সহজ একটি পদ্ধতি হয়তো অনেকের জানা ছিল না  আলু আমরা নিত্যদিন সবজি হিসেবে ব্যবহার করি  কিন্তু কখনো আলুর রস চুলের জন্য অনেকেই হয়তো ব্যবহার করতে জানেনা  আলুর রস চুল পড়া থেকে দূরে রাখে  পাতলা চুল ঘন করে  চুল পড়া বন্ধ করে ইত্যাদি। পরিমাণমতো আলু ব্লেন্ডার করে ছাঁকনি দিয়ে ছেকে রস বের করে নেব  এরপর থেকে নেওয়া হয়ে গেলে আলুর রস চুলের গোড়ায় মালিশ করুন ।30 মিনিট পর হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে এর সঙ্গে অল্প পরিমাণে শ্যাম্পু ব্যবহার করে মাথা ধুয়ে নিন।

১০.আলুর রসের সঙ্গে মধুর ব্যবহার

 একটি ডিমের সাদা অংশ নিয়ে এর মধ্যে 2 টেবিল চামচ মধু 2 টেবিল চামচ আলুর রস নিয়ে সবগুলো এক সঙ্গে মিশিয়ে নিন ।    মেশানো হয়ে গেলে এরপর একটি ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নেব । চুলের গোড়ায়   লাগিয়ে রাখুন ।  পাঁচ থেকে 6 মিনিট ।  এরপর ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ।  সপ্তাহে দুই দিন । 

১১.পাতলা চুলের জন্য আমলকির ব্যবহার

আমলকিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট  ভিটামিন সি । চুলের স্বাস্থ্য বৃদ্ধি করে ।  চুল সুন্দর রাখে । এবং চুলের গোড়া শক্ত করে । খুশকি দূর করে ।পাতলা চুলকে ঘন করতে সাহায্য করে ।1 টেবিল চামচ লেবুর রস 1 টেবিল চামচ আমলকি গুড়া মিশিয়ে নিন । 30 থেকে 40 মিনিট অপেক্ষা করুন ।  এরপর শ্যাম্পু করে নরমাল পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ।  এর ব্যবহার সপ্তাহে 1 থেকে 2 দিন । 

১২. মেহেদি পাতার ব্যবহার

 পাতলা চুলকে ঘন  করতে মেহেদি পাতা সাহায্য নিন । মেহেদি পাতা  চুলকে   ভেতর মজবুত করে ।  এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে । পরিমাণমতো মেহেদি পাতা নিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিয়ে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন । আপনি চাইলে নারিকেল তেল মেশাতে পারেন । 30 থেকে 35 মিনিট চুলের গোড়ায় লাগিয়ে রাখুন ।  এরপর  শ্যাম্পু অর্থ কন্ডিশনল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন । মাসে 1 থেকে 2 দিন ব্যবহার করুন । 

১৩.মানসিক চাপের কারণে দুঃশ্চিন্তা এরকম বিভিন্ন ধরনের সমস্যার কারণে আমাদের চুল পাতলা হয়ে যায় এবং চুল পড়া শুরু হয় পড়া শুরু । তাই এসব সমস্যা থেকে দূরে থাকার জন্য ।  আট ঘন্টা ঘুম এর  প্রয়োজন ।

উপরের যে কথাগুলো বলা সেগুলো হচ্ছে পাতলা চুল ঘন করার ক্ষেত্রে খুব কার্যকরী । আপনি উপরের যে নিয়মগুলো বলা হলো সেগুলো নিয়মমতো মেনে চলবেন ।   নিয়ম অনুযায়ী করলে অবশ্যই চুল ঘন হবে ।   অল্পদিনে বিরক্ত হওয়া যাবে না ।  কারণ নিয়মগুলো কাজ করতে একটু সময় লাগবে  । তিন থেকে চার মাস লাগতে পারে  । তাই ঘাবড়ানোর কোনো প্রয়োজন নেই । কারণ নতুন চুল গজাতে ও সেটা লম্বা হওয়ার জন্য কতটুকু সময় লাগতে পারে । 

বিভিন্ন কারণের জন্য চুল পাতলা হয়ে থাকে । খাদ্যভ্যাস স্বাস্থ্যকর খাবার না খেলে । নিয়মমতো শ্যাম্পু ব্যবহার করা ।  নিয়ম অনুযায়ী মাথায় তেল দেওয়া । এইসব নিয়ম মেনে চলতে পারলে আপনার চুল কখনো পাতলা হবে না । এবং চুল আগের থেকে এখন আরো সুন্দর হবে আমাদের অনেকেরই চুলের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে । শুধু অবহেলার জন্য । চুল যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি খাবার বৃদ্ধি  বাড়াতে হবে ।  নিয়মমতো মাছ, মাংস,দুধ, ডিম,শাকসবজি বাঁধাকপি ফুলকপি পালং শাক ইত্যাদি । 

চুল ভালো রাখার জন্য দুশ্চিন্তা টেনশন রাতের ঘুম হারাম করা যাবে না ।  প্রতিনিয়ত  8 ঘণ্টা ঘুমানোর দরকার । ঘুমানোর নির্দিষ্ট একটি টাইম  নিয়ম 8 ঘন্টা ঘুমানো ।   রাত জাগা শরীরের জন্য ক্ষতিকর ।  তাই সময় মত ঘুমাতে হবে । তিন থেকে চার মাস পর আপনার চুলের যদি কোনো পরিবর্তন না  আসে ।  তবে আপনার খুঁজে বের করতে হবে আপনার চুলের কোথায় সমস্যাটা হচ্ছে । এরপর আপনার চুলের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন । 


শাহীন

আমি শাহীন । পেশায় একজন ব্যবসায়ী । পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করতে পছন্দ করি। আশা করছি আমার শেয়ারকৃত তথ্য থেকে আপনারা উপকৃত হচ্ছেন আর তা হলেই আমার পরিশ্রম স্বার্থক।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Ads

Ads