ইনশাআল্লাহ অর্থ কি?

ইনশাআল্লাহ অর্থ কি

ইনশাআল্লাহ অর্থ কি? আমাদের মাঝে অনেকেই জানেনা। আজকের পোস্টে আমরা থাকবো ইনশাআল্লাহ অর্থ কি?  ইন শা আল্লাহ লেখার সময় কিভাবে লিখতে হয় সে সম্পর্কে জানব।  ইনশাআল্লাহ অথবা ইংশাআল্লাহ অথবা ইন শা আল্লাহ কোনটি সঠিক এই সম্পর্কেও জানাবো। যদি ইনশাআল্লাহ দেখার নিয়ম জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়বেন।  যদি আমি এই বিষয়ে অভিজ্ঞ নই তবে বিভিন্ন স্কলারদের পড়া পড়ে এবং বিভিন্ন আর্টিকেল থেকে রিচার্জ করে এই আর্টিকেলটি লেখার চেষ্টা করেছি। 

আমরা কখন ইনশাআল্লাহ বলবো? 

আমরা মানব সমাজ একমাত্র আল্লাহ পাকের গোলামী করার জন্যই পৃথিবীতে এসেছি? পৃথিবীতে যা হচ্ছে অথবা সারাবিশ্ব মন্ডলের যা হচ্ছে সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ কর্তা হচ্ছেন একমাত্র  আল্লাহপাক।  যেহেতু তিনি সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করেন তাই আমরা মানুষের পক্ষে জানা সম্ভব নয় যে আগামীতে আমার জীবনে কি হতে যাচ্ছে।  আমরা অনেক সময় বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার ব্যাপারে অভ্যস্ত।  কিন্তু আমরা জানি না প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি কিন্তু সেটা পূরণ করতে পারবো কিনা।  যেমন:  আমরা অনেক সময় বলি আগামীকাল তোমার সাথে অমুক সময় দেখা করব।  এমনও তো হতে পারে ওই সময়টায় আমার জীবনে অন্য কোনো ঘটনা ঘটতে পারে অথবা আমি মৃত্যুবরণ করতে পারি। 

তাই এই সকল ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার সময় ইনশাআল্লাহ বলতে হয়।  এ ব্যাপারে আমাদের কে আল্লাহ পাক সতর্ক করেছেন। কোরআন হাদিসের বিভিন্ন বর্ণনামতে আমরা জানতে পারি যে একবার আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম ইনশাআল্লাহ বলতে ভুলে গিয়েছিলেন এবং সে ব্যাপারে উনাকে আল্লাহপাক সতর্ক বর্তা দিয়েছিলেন। 

আল্লাহ পাক বলেন: ‘ইনশাআল্লাহ’ কথাটি না বলে। যদি (কথাটি বলতে) ভুলে যাও, তাহলে (যখনই তোমার স্মরণে আসবে) তোমার রবকে স্মরণ কোরো এবং বোলো, সম্ভবত আমার রব আমাকে এর (গুহাবাসীর বিবরণ) চেয়ে সত্যের নিকটতর পথনির্দেশ করবেন। [সুরা : কাহফ, আয়াত : ২৩-২৪ (প্রথম পর্ব)

তাই কোন কাজ অথবা কোনো প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পূর্বে আমরা ইনশাআল্লাহ শব্দটি সংযুক্ত করে নেব। 

কেন ইনশাআল্লাহ বলতে হয়? 

 ইনশাআল্লাহ শব্দের অর্থ হচ্ছে “যদি আল্লাহ চান”।  যেহেতু আমরা আমাদের অতি নিকটবর্তী ভবিষ্যৎ সম্পর্কেউ কিছু জানিনা তাই সব কাজ করার সময় ইনশাআল্লাহ বলতে হবে। যেহেতু সবকিছু আল্লাহপাকের নিয়ন্ত্রণে তাই যদি আল্লাহ চান তবেই আমরা উক্ত কাজটি করতে পারব।  এজন্যই প্রত্যেক কাজের সময় ইনশাআল্লাহ বলবো। এতে এক ধরনের ইবাদত বলা যায়।  মুমিনগণ সব সময় আল্লাহ পাকের উপর পূর্ণ আস্থা রাখেন।  যেহেতু আমরা আল্লাহ পাকের গোলাম সেহেতু আমরা প্রতিনিয়ত আপনাকে খুশি করার জন্য আমরা এই শব্দটি ব্যবহার করতে পারি। 

ইনশাআল্লাহ এর সঠিক বানান ।  কিভাবে ইনশাআল্লাহ লিখতে হয়

অনেকের ভাষ্যমতে ইনশাআল্লাহ আপনি যেভাবেই লিখুন না কেন আপনি মনে মনে জানেন যে এটার অর্থ কি পাশাপাশি যিনি পড়ছেন তিনিও জানেন এটার অর্থ কি।  এভাবে বিবেচনা করলে আমাদের মনে হয় ইনশাআল্লাহ লেখার নিয়ম নিয়ে বিতর্ক না করলেও চলবে।  তবে অনেকেই এটাকে বিভিন্নভাবে সঠিক নিয়মে লেখার চেষ্টা করেছেন।  ইনশাআল্লাহ অথবা ইন শা আল্লাহ কিংবা ইং শা আল্লাহ এই তিন উপায় কোনটি সঠিক স্মৃতি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। 

এ ব্যাপারে এমডি সুমন মিয়া Quora তে লিখেছেন

আমরা প্রায়ই সোশাল মিডিয়ায় কারো সাথে চ্যাটিং করতে গেলে, বা কমেন্ট করতে গেলে বা নিজেরই কোনো পোষ্টে إِنْ شَاءَ ٱللَّٰهُ, কিংবা ইনশাআল্লাহ বা ইনশা আল্লাহ অথবা ইংরেজী তে InShaAllah বা In Sha Allah লিখে থাকি। কিন্তু বাংলা তে সঠিক উচ্চারণ হলো, ইংশাআল্লাহ এবং ইংরেজীতে Ing Sha Allah বা IngShaAllah.

কেনো ইংশাআল্লাহ বলা সঠিক, কেনো অন্য গুলো বলা সঠিক নয়? আসুন জেনে নিচ্ছি...

মুহতারাম, আমরা জানি মহাগ্রন্থ আল কোরআন এর ভাষা আরবী। তাই আমাদেরকে আরবী ভাষার বানান, উচ্চারণ সম্পর্কে অত্যন্ত সচেতন হতে হবে। নাহয় ভুল বানান লিখে কিংবা ভুল উচ্চারণ করে আসল অর্থই পরিবর্তন করা হয়ে যাবে।যেমন, আমরা যদি সুরা ইখলাস এর প্রথম আয়াতের কথাই ধরি,

قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌউচ্চারণঃ ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ।অর্থঃ বলুন, আল্লাহ এক। কিন্তু এখানে যদি আমরা ق (ক্বফ) হরফকে ك (কা্‌ফ) এর মত করে উচ্চারণ করি, তাহলে এর অর্থ দাঁড়ায়, “খাও, আল্লাহ এক” (নাউজুবিল্লাহ! আস্তাগফিরুল্লাহ !)

মুহতারাম, আশা করি বুঝে গিয়েছেন, কেন শুদ্ধ ভাবে আরবী উচ্চারণ করা জরুরী।

আমরা অনেকেই হয়ত ছোটবেলায় মাদরাসার মক্তব বা নুরানী বিভাগে পড়েছি যে,তাজবীদ এর নিয়মানুসারে নুন সাকিন ও তানভীন এর পরে ইখফার ১৫টি হরফের যেকোনো একটি হরফ থাকলে নুন সাকিন ও তানভীন কে নাকের ভেতর লুকিয়ে বা ইখফা করে গুন্নাহর সাথে পড়তে বা উচ্চারণ করতে হয়।যেমনঃ ﻣِﻦْ ﺷَﺮِّ (উচ্চারণ হওয়ার কথা, মিন - শাররি কিন্তু হচ্ছে মিং - শাররি) , إِنْ شَاءَ (উচ্চারণ হওয়ার কথা, ইনশা, কিন্তু হচ্ছে ইং - শা) , فَلَنْ تَجِدَ (উচ্চারণ হওয়ার কথা, ফালান তাজিদা, কিন্তু হচ্ছে ফালাং - তাজিদা)

উল্লেখ্য, ইখফার ১৫টি হরফ হলোঃت ث ج د ذ ز س ش ص ض ط ظ ف ق ك

আশা করছি আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে বুঝতে পেরেছি যে ইনশাআল্লাহ পড়ার সঠিক নিয়ম কোনটি।  তারপরেও যদি আপনাদের এ ব্যাপারে কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আপনাদের মতামত আমাদেরকে জানাতে পারেন।  

শাহীন

আমি শাহীন । পেশায় একজন ব্যবসায়ী । পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করতে পছন্দ করি। আশা করছি আমার শেয়ারকৃত তথ্য থেকে আপনারা উপকৃত হচ্ছেন আর তা হলেই আমার পরিশ্রম স্বার্থক।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Ads

Ads