তাহলে চলুন দেখে নেই গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের খাবার তালিকা গুলো কিভাবে খেতে হয় ।
১. ক্যালসিয়াম
গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের খাবার তালিকার প্রথম ধাপে রয়েছে ক্যালসিয়াম। গর্ভবতী নারীদের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার খেতে হবে । গর্ভবতী অবস্থায় ক্যালসিয়াম শিশুর হাড় গঠনে একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে । গর্ভবতী মা যদি প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার খেতে পারলে তাহলে শিশুর হাড় শক্ত হবে ।
তাই আপনার প্রথম তিন মাস নিয়ম ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার খেতে হবে । কচু শাক , লাল শাক দুধ দই ছোট মাছ বিভিন্ন পদের , ইত্যাদি । এসবের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে । আপনি বড় মাছের কাটা গুলো খেতে পারেন ।
গর্ভবতী অবস্থায় আপনাদের প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার খেতে হবে তা না হলে অনেক সময় মায়েদের দেখা যায় ক্যালসিয়ামের অভাবে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে । গর্ভবতী অবস্থায়
মায়েদের ক্যালসিয়ামের অভাবে হাত পা জ্বালাপোড়া করে শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয় । এসব বিভিন্ন ধরনের সমস্যা গুলো শুধুমাত্র ক্যালসিয়ামের অভাবে হয়ে থাকে । এসবের বাহিরে যদি কোন সমস্যা হয়ে থাকে তবে আপনি ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন ।
২. আয়োডিন
আয়োডিন জাতীয় খাবার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে গর্ভকালীন অবস্থায় । কারণ আয়োডিনের অভাবে শিশুর প্রতিবন্ধী সমস্যা দেখা দিতে পারে । তাই আমাদের সবসময় খেয়াল রাখতে হবে গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের খাবার তালিকায় বা সবসময় কখনো যেন আয়োডিনের অভাব না হয় ।
আয়োডিনের অভাব আপনার শিশু প্রতিবন্ধী হতে পারে । তাই গর্ভবতী মায়েদের আয়োডিনযুক্ত খাবার খাওয়া খুবই দরকার । আয়োডিনযুক্ত খাবার গুলো জেনে নিন । দুধ , চিংড়ি মাছ, সিদ্ধ ডিম, টক দই, কলা, সামুদ্রিক মাছ, ইত্যাদি। এসবে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়োডিন ।
৩. জিংক
গর্ভবতী মায়েদের জন্য কিছু খাবার তালিকা । জিংক জাতীয় খাবার তাদের জন্য উন্নত মানের একটি খাবার । গর্ভবতী মায়ের যদি জিংক এর সমস্যা দেখা দেয় তাহলে শিশুর জন্মানোর সময় কম ওজনের জন্ম নেয় ।
জিংকের অভাবে কম ওজনের শিশু জন্ম নেওয়া সমস্যা হয়ে থাকে ডায়াবেটিস , নিউমোনিয়া , জিহ্বায় ক্ষত,মুখের চারপাশে বিভিন্ন ক্ষত ক্ষত দেখা দিতে পারে ।
জিহ্বা জাতীয় খাবার গুলো হচ্ছে , গরুর মাংস , ভেড়ার মাংস , ডিম , খাসি গরুর কলিজা , মসুর ডাল , সোয়াবিন , , বাদাম , আটার রুটি , ইত্যাদি এসব নিয়ম অনুযায়ী খেতে হবে তাহলে জিংক এর সমস্যা দেখা দেবে না । গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের খাবার তালিকা
৪. আইরন
আয়রনের অভাবে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দেয় । অনেক শিশু জন্মের পর রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় , আয়রন জাতীয় খাবার শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় । তাই যেসব খাবারে আয়রন রয়েছে সেগুলো খেতে হবে । আয়রন যুক্ত খাবারের তালিকা , লাল শাক , কচু শাক , পালং শাক , বাদাম , ছোলা , ডালিম , শিং মাছ , মাগুর মাছ, ইত্যাদি । এই খাবারগুলো সবসময় বেশি বেশি খাবেন তাহলে আয়রনের ঘাটতি হবে না ।
৫. ভিটামিন
ভিটামিন জাতীয় খাবার শরীরের জন্য কোনোভাবেই ঘাটতি করা যাবে না । ভিটামিন ঘাটতির কারণে শিশু ও মা এর বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয় । অনেক ভূমিকা পালন করে ভিটামিন এ ও ভিটামিন ডি এ দুটোর কারণে শিশুর দৃষ্টি শক্তি হীনতা হতে পারে । এসব বলে থাকে ডাক্তাররা ।
তাই ভিটামিন-এ কার্যকরী উপাদান শুধু চোখের জন্য । সবকিছু সবজীতে রয়েছে ভিটামিন এ । মলা মাছ , ধরা মাছ ডিমের কুসুম , এসব হলো ভিটামিন । ভিটামিন ডি, এটি দেহের অন্ত্র থেকে ক্যালসিয়ম গুলো শোষণ করে থাকে ।
ভিটামিন ডি এর অভাবে শিশুর হাড় পরিপূর্ণ ভাবে বৃদ্ধি পায় না।এতে শিশুর হাড় বাঁকা হয়ে যেতে পারে । ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার গুলো জেনে নিন । সমুদ্রের মাছ , সিদ্ধ ডিম , দুধ , দই , পনির , গরুর কলিজা , মাছের তেল , মাশরুম , ইত্যাদি । এসবে রয়েছে ভিটামিন ডি ।
গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের খাবার তালিকা জেনে নিন
গর্ভবতী মায়েদের জন্য প্রথম তিন মাস খুব গুরুত্ব দিতে হবে । তাই গর্ভবতী হওয়ার প্রথম দিন থেকে আপনার ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে । নিয়মিত ব্ল্যাক পেশার পরীক্ষা করাতে হবে । গর্ভকালীন অবস্থায় খাবারের তালিকা সঠিকভাবে খেতে হবে এবং এর সঙ্গে হালকা ব্যায়াম করতে হবে ।
উপরে গর্ভবতী মায়েদের জন্য খাদ্য তালিকা বলে দেওয়া হয়েছে সেগুলো মেনে চলতে পারলে আপনার জীবনে অনেক সুযোগ-সুবিধা বা বিভিন্ন সমস্যা দূর হতে সাহায্য করবে । এর পরবর্তী যদি আপনি ডাক্তারের সাথে পরামর্শ রাখতে চান তাহলে সে করতে পারবেন । এখানে উল্লেখিত সবকিছু ঠিকঠাকভাবে বলা হয়নি । তাই আপনি চাইলে ডাক্তারের পরামর্শ থাকতে পারেন এবং দুই মাস পর পর ওজন মেপে নিবেন ।
গর্ভকালীন অবস্থায় যেসব খাবার খাওয়া একদম নিষেধ সেগুলো জেনেনিন নিন ।
১. চা , কফি , ক্যাফেইন যুক্ত খাবার খাওয়া নিষেধ । এতে আয়রন শোষণে বাধা দেয় ।
২. প্রচুর পরিমানে শর্করাযুক্ত খাবার খাওয়া যাবেনা । যেমন ; ফাস্টফুড আইটেমের কিছু খাবার , মিষ্টি , তেলেভাজা ইত্যাদি । এসব খাবার ভুলেও খাওয়া যাবেনা ।
৩. না বুঝে অতিরিক্ত লবন খাওয়া যাবেনা । যাবে না এতে উচ্চ হওয়ার সম্ভাবনা ।
শেষ কথা
গর্ভবতী মহিলাদের জন্য আমরা যে তালিকা গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি । গর্ভবতী মহিলাদের খাবার গর্ভবতী মায়েদের প্রথম তিন মাসের খাবার তালিকা । গর্ভ অবস্থায় যেসব খাবার খাওয়া যাবে এবং খাওয়া যাবেনা । এসব বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা গর্ভকালীন অবস্থায় মেনে চলতে হয় ।
তাহলে কোন ধরনের সমস্যা থেকে আপনি বিরত থাকবেন । গর্ভকালীন মহিলাদের জন্য উপরে যে সব তালিকা গুলো বলা হয়েছে সেগুলো নিয়ম অনুযায়ী মেনে চলবেন । এর ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলতে হবে । এবং প্রতিদিন হালকা ব্যায়াম । খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠা ।
আধাঘন্টা থেকে এক ঘন্টা । শরীরে একটু রোদ লাগানো ইত্যাদি। এসব বিভিন্ন ধর্মের নিয়ম মেনে চলতে পারেন তাহলে যেকোনো সমস্যা থেকে আপনি দূরে থাকবেন । তাই আমাদের এই আলোচনা গুলো আপনি একটু পড়ে নিতে পারেন । তবে এখানে শেষ করছি ।