পিত্তপাথুরীর কারণ,লক্ষণ ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাঃ
পিত্তপাথুরীর হোমিওপ্যা
থিক চিকিৎসাঃ
পিত্তপাথুরী কি ?
পিত্ত ঘনীভুত হয়ে যে শিলা বা পাথর হয় তাহাই Gall Stone বা পিত্ত শিলা।পিত্ত শিলা পিত্ত প্রনালীর যে কোন এক অংশে হইতে পারে।অধিকাংশ ক্ষেত্রে ইহাতে পিত্ত থলির মধ্যে উৎপন্ন হতে দেখা যায়।
কারণ তথ্যঃ
রোগটি সাধারণত চল্লিশের বেশী বয়সী লোকদের হতে দেখা যায়।পুরুষের চেয়ে মেয়েদের এ রোগ বেশী হয়।যারা অলস দিন যাপন করে অতিরিক্ত পরিমানে তৈল মশলা,ঘৃত পক্ক বা চর্বিযুক্ত খাবার খায় অথবা গুড় চিনি ও মিছরি বেশী খায় তাদের এ রোগ হওয়ার সম্ভাবণা বেশী।যে সকল পরিবারে হাঁপানি আর্ধকপালে মাথা বেদনা আছে, সেই সকল পরিবারে পিত্ত পাথুরীর ঝুকি বেশী।
পিত্তশিলার লক্ষণ সমুহঃ
যতক্ষণ পিত্ত পাথর বিশ্রাম অবস্হায় থাকে ততক্ষণ এটি টের পাওয়া যায় না।যখন ইহা নড়াচড়া করে তখন রোগ টের পাওয়া্ যায়।উপর পেটে অত্যন্ত বেদনা প্রকাশ পায়।পিত্তশুল বেদনা সচড়াচড়ায় বৃদ্ধিপায়। উপর পেটে শুরু হয়ে যকৃতের দিকে ধাবিত হয়।যকৃত প্রদেশ হতে পিছনের দিকে পাজরের দুইদিকে এত বেদনা হয় যে রোগী বেদনায় কাতর হয়ে পরে।রোগীর বমি ভাব ও হিক্কা,প্রকাশ পায়।রোগীর নাড়ী দুর্বল হয়,হিমাঙ্গ অবস্হায় পতিত হয়।এই রোগের আক্রমন কয়েক ঘন্টা হতে কয়েক দিন পর্যন্ত স্হায়ী হতে পারে।যকৃত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় এবং আক্রমনের বার ঘন্টার হতে চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে ন্যাবা বা জল সঞ্চয় হতে দেখা যায়।কমন বাইলডাক্টে শিলা প্রবেশ করিলে রোগের জটিলতা আরো বৃদ্ধি পায়।
জটিলতাঃ
পিত্তশিলা হলে রোগীর চন্ডিস দেখা দেয়, প্যানক্রিয়াস প্রদাহ,পিত্ত থলিতে প্রদাহ এমনকি ক্যান্সারও হতে পারে।
চিকিৎসাঃ
প্রচুর পরিমানে গরম পানি পান করতে দেয়া প্রয়োজন।উপর পেটে সেকতাপ দেয়া হলে রোগী আরাম পায়।রোগীকে মদ,মাংশ,মিষ্টিদ্রব্য,
গুড়,চিনি,মিছরি খেতে দেওয়া যাবে না।পিত্ত থলি ও কমন বাইলডাক্টের মাঝে পুজ উৎপন্ন হলে ব্লক হয়ে গেলে অপারেশন ছাড়া কোন চিকিৎসায়ই ফল হয় না।সে ক্ষেতে অপারেশনই একমাত্র পথ।রোগীকে বার্লি ,দুধ, সাগু ও ডাবের পানি কমলালেবুর রস খেতে দিলে রোগীর জন্য ভাল।
পিত্তপাথুরির হোমিওপ্যাথিক চিকিৎস ঔষধসমুহের নামঃ
লাইকোপোডিয়াম,বার্বারিসভলগারিস,ভিরেট্রাম,চেলিডোনিযাম,চায়না,পডোফাইলম,মার্কসল,ল্যাকেসিস,ম্যাগমিউর,ম্যাগফস,ফসফরাস,কার্ডুয়াসমরি,ব্রাইয়োনিয়া,কলোসিন্থ,নেট্রামসালফ,বেলেডোনা ইত্যাদি ঔষধসমুহ ব্যবহৃত হয়।আনেক অভিজ্ঞ হোমিও ডাক্তারদের মতে চায়না ও পডোফাইলাম নিয়মিত সেবন করালে পিত্তশিলা জন্মাতে পারে না।
পিত্তপাথুরির চিকিৎসায় ব্যবহৃত হোমিওপ্যাথিক ঔষধসমুহের লক্ষণভিত্তিক আলোচনাঃ
আর্সেনিক এলবামঃ
রোগীর রোগ যন্ত্রনা রাত দ্বিপ্রহরের পরে বৃদ্ধি বা দুপুরের পরে বৃদ্ধিসহ আর্সেনিক এলবমের সর্বলক্ষণ বিশিষ্ট রোগীর পিত্তশিলা বেদনায় আধিক উপযোগী।
নাক্স ভুমিকাঃ
অলস প্রকৃতির রোগী, পেটে এসিডিটি,বুক জ্বালা পেটে মোচড়ানি বেদনা,যে রোগরী মষলা যুক্ত খাদ্যে রুচি বেশী, ভাজি পোড়া খাদ্য বেশী খায় তার জন্য নাক্স উপযোগী।
লাইকোপোডিয়ামঃ
যে রোগীর মাঝে লাইকোপোডিয়ামের সকল লক্ষণ বিদ্যমান যেমন কোষ্ঠদ্ধতা,পেটফাপা,রাগ চাপা স্বভাব ওগ্যাষ্ট্রিকের সকল লক্ষণ বিদ্যমান তার জন্য লাইকোপোডিয়াম উপয়োগী।
বেলেডোনাঃ
রক্ত প্রধান ধাতু বিশিষ্ট যুবক যুবতীদের পিত্তশিলা বেদনায় বেলেডোনা উপযোগী।বেদনা হঠাৎ আসে হঠাৎ চলে যায় এইরুপ বেলেডোনার লক্ষণ বিবেচনায় প্রয়োগ করিলে বেদনা দ্রুত আরোগ্য হয়।
বার্বারিস ভলগারিসঃ
পিত্তশিলা বেদনার এটি শ্রেষ্ঠ ঔষধ।বেদনা নড়াচড়ায় বৃদ্ধি,যকৃতে কাটিয়া ফেলার মতবেদনা।সুচফোটানো বেদনা, শ্বাস প্রশ্বাস গ্রহনে বেদনা বাড়ে,মুখে দুর্গন্ধ,মুখে শুষ্কতাসহ বারবার পানি পানের ইচ্ছা,বারবার বমি ভাব,আহারের পরে বমিভাব বাড়ে,বায়ু জমে,মুত্রত্যাগের সময় জ্বালাকরে।ঘোর পিত্তবর্ণের প্রস্রাব,প্রস্রাবে মাঝে মাঝে সুরকির গুড়ার মত তলানি পরে।
ব্রাইয়োনিযা এলবামঃ
সকালে বা বিকালে যকৃতের বেদনা বৃদ্ধি,কথনও শ্বাস প্রশ্বাসে,কাশিতে ,ঝাকিতে,হাঁছিতে ও নড়াচড়ায় বেদনা বাড়ে।জ্বর ও কম্প অবস্হায় অথবা ক্রোধ বা বিরক্তির পর বেদনার বৃদ্ধি,ডান পার্শে শয়নে রোগ যন্ত্রনার আরাম,জিহ্বার উপর পুরু ও পিত বর্ণের লেপ;মুখে তিক্ত স্বাদ ,পিত্ত বমি,জলপিপাসা ইচ্ছা কঠিন কোষ্ঠবদ্ধতা,দুইতিন দিনেও মল ত্যাগের ইচ্ছা থাকে না।খুব বড় ঝামার মত মল।মাথায় দপদপানি বেদনা।সর্দি প্রবন,একগুয়েমী স্বভাব ও জেদী রোগীর পিত্ত শিলা চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ।
ক্যালকেরিয়া কার্বঃ
মোটা থলথলে রোগীর পেট মোটা ও কেঠিন বোধ,যকৃতে চাপ বোধ,হাটিবার সময় পা ফেলার সময় যকৃতে ঝাকুনি ও বেদনা,মাথা নিচা করার সময় যকৃতে বেদনা, পাথরী নির্গমনের সময় যে বেদনা হয় তাহা ক্যালকেরিয়া কার্ব দ্বারা নিবারিত হয়।সাদা খড়িমাটি অথবা কাদার মত মল,দুধে অরুচি,দুধপানে বমিভাব বা বমি হয়।মাথার উপরে,বগলে,বুকে, পিঠে,হাত-পায়ে প্রচুর ঘাম
থিক চিকিৎসাঃ