আজ আমরা আলোচনা করব শাবান মাসের ফজিলত , শাবান মাসের দোয়া । সাবান মাস হচ্ছে অষ্টম মাস ইসলামিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী , রমজানুল মোবারক উরসের মাঝে এসে থাকে , সাবান হচ্ছে আরবি শব্দ , শাবান মাসের ফজিলত অনেক , এর অর্থ হলো বেরিয়ে যাওয়া , ছড়িয়ে পড়া ইত্যাদি , শাবান মাস শব্দ ধারা নামকরণ প্রসঙ্গে হাফেজ ইবনে হাজার রহ বলেছেন আরবের লোকেরা এ মাসে পানি সংগ্রহ সংগ্রহের জন্য বস্তি ছেড়ে বেরিয়ে , তাই এই মাসকে সাবান শব্দ দ্বারা নামকরণ করা রয়েছে , যার মাঝে বেরিয়ে যাওয়া অর্থ , শব্দ দ্বারা নামকরণের কারণ হতে পারে রজব মাসের যুদ্ধ-বিগ্রহ নিষিদ্ধ হওয়া দুরুন সবাই নিজের এলাকায় অবস্থান করতো , এখন আমরা শাবান মাসের ফজিলত সম্পর্কে জেনে নেব
- শাবান মাসের ফজিলত
- শাবান মাসের রোজা
- শাবান মাসে দোয়া
- শাবান মাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস
- শাবান মাসের কেন ঐতিহাসিক
- শাবান মাসের ফজিলত ও হাদিস সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য জানুন
2022 শাবান মাসের দোয়া
শাবান মাসের দোয়া আমাদের জন্য খুব উন্নত মানের একটি দোয়া , রাসুল রজবের উটলেই দোয়া করতেন , আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রাজাবা ওয়া সাবান ওয়া বালিলগণা রামাদান , অর্থাৎ হে আল্লাহ আমাদের রজব ও শাবান মাসের বরকত দান করুন ও আমাদেরকে রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন
আমাদেরকে রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন কথা অর্থ হচ্ছে রমজান মাস পর্যন্ত আমাদের জীবন দান করুন ,আমরা রমজান মাসে অধিক হারে ইবাদত-বন্দেগির রোজা তারাবি লাইলাতুল কদরের ইবাদত ইতিকাফ ইত্যাদি পবিত্র রমজান মাসের ফজিলত নামের ধন্য হব , এজন্য পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ উঠার পর রমজান মাসের চাঁদ দেখা পর্যন্ত উপরে উল্লেখিত দোয়াটি পাঠ করা সুন্নত বা মুস্তাহাব , পবিত্র রমজান মাস বছরে সর্বশেষ্ঠ মাস , পূর্ব থেকেই এ মাসের ইবাদত বন্দেগির জন্য প্রস্তুত নেওয়াটা একজন মুমিনের বিশেষ বিশেষ কর্তব্য , রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর দোয়া প্রমাণ করে তিনি পবিত্র রমজান মাস শুরু থেকেই রমজানের জন্য অধীর অপেক্ষা করছেন , শাবান মাসের দোয়া যেটাকে বলে সেটা মূলত রজব মাস থেকে শুরু হবে
2022 শাবান মাসের ফজিলত
বিভিন্ন হাদিস থেকে প্রমাণিত হয় হরযত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম রজব ও শাবান রমজান এর পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন , রমজানের অধিক ইবাদতের জন্য সময় সুযোগ বের করতে , মানসিকভাবে তৈরি হতে , এই কারণে তিনি শাবান মাসের দিন , খুব গুরুত্বপূর্ণ ভাবে সাবান তারিখ হিসাব রাখেন , হযরত আয়েশা রা বর্ণনা করলেন , রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পবিত্র সাবানের দিন তারিখ হিসেবে প্রতি এত অধিক লক্ষ রাখতে রাখতে যা অন্যান্য অন্য কোন ক্ষেত্রে এত পরিমান এর হিসাব রাখতেন না , সুনানী আবু দাউদ 1 / 318 অনেক হাদীসে বর্ণিত রয়েছে হযরত হরযত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম পবিত্র সাবানের চাঁদ দিন তারিখ, হিসাব রাখার খুব গুরুত্ব রাখতেন পবিত্র শাবান মাসের দিন তারিখ হিসাব রাখার সুন্নত , মুমিনদের মুমিনের করণীয় একটি , পবিত্র শাবান মাসের অধিক হারে নফল রোজা উত্তম , এ প্রসঙ্গে একাধিক হাদিস বর্ণিত রয়েছে হযরত উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন আমি হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম সাবান ও রমজান ব্যতীত দুই মাস একাধারে রোজা রাখতে দেখেনি , হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে শাবান মাসের মত এত অধিক নফল রোজা রাখতে আর দেখিনি , এ মাসে অল্প কিছু দিন ব্যতীত বরঞ্চ তিনি সাড়া মাসটা জুড়ে নফল রোজা রাখতেন , ( জামে তিরমিজি 1/ 155 )
পবিত্র শাবান মাসের 14 তারিখ দিবাগত রাত,15 শাবান রাত পবিত্র শবে বরাত, ভাগ্য রজনী এড়াতে অবশেষ ফজিলত হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, বছরের শেষ রজনী অন্যতম এই রাত, এর রাতের করনীয় সম্পর্কে হরযত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এরশাদ করেছেন 15 হিসাবায়ন রাতে শবেবরাত তোমরা জেগে থেকে পরের দিন রোজা রাখো।
2022 শাবান মাসের রোজা
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই মাসে বেশি বেশি নফল রোজা করতেন , শাবান মাসের রোজা মুসলিম ধর্মপ্রাণ সকল মানুষের জন্য সুন্নত, শাবান মাসের ফজিলত যেমন গুরুত্বপূর্ণ ঠিক তেমনি শাবান মাসের দোয়া আমল মুমিন মুসলমানের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ , হাদিস থেকে প্রতীয়মান হয় যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর আদর্শ ও সুন্নত হল এই মাসের বেশি বেশি নফল রোজা রাখা।
2022 শাবান মাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস
শাবান মাসের গুরুত্ব নিয়ে ও শাবান মাসের ফজিলত নিয়ে অনেক হাদিস রয়েছে , তাহলে চলুন দেখে নেই শাবান মাসের গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলত সম্পর্কে
হযরত আবু হুরায়রা রাদি আল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত এক হাদীসে এসেছে , তিনি বলেছেন হযরত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন আদম সন্তানের প্রতি আমলের সওয়াব দ্বিগুণ করে দেওয়া হয়, পূর্ণ কর্মের সুভাসগ্রম থেকে 27 গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয় , আল্লাহ তায়ালা বলেন তবে রোযা রাখা ব্যতীত, কারণ রোজা আমার আর আমিও এর প্রতিদান দেই সহি বুখারী ও মুসলিম
রোজা অন্যতম নফল ইবাদতের মধ্যে , আল্লাহতালা নিকন অর্জনের জন্য ফরজ ওয়াজিব নয় এমন নফল রোজা বলা হয় , নফল রোজার অনেক বড় ফজিলত রয়েছে
আলহামদুলিল্লাহ , মহিমান্বিত শাবান মাস চলছে , মাহে রমজানের আগমনী বার্তা নিয়ে আমরা চেষ্টা করব শাবান মাসের রোজা রাখতে
2022 শাবান মাসে ফজিলত কেন ঐতিহাসিক
ইতিহাসে ইসলামিক শাবান মাস অন্তত গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস, মুসলমানদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ঘটনা
1. মদিনায় হিজরতের পর মুসলমানরা কিছুদিনের জন্য বাইতুল মাকদিস এর দিকে ফিরে নামায আদায় করে , আল্লাহতালা পুনরায় কাবা শরীফ কে মসজিদের জন্য কেবলা নির্ধারণ করেন এ মাসে
2. ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান জিহাদের হুকুম এ মাসের নাযিল হয় , দীর্ঘ সময় মুসলমান নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর জিহাদের মাধ্যমে মুসলমানদের প্রভাব-প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠান নির্দেশ আসে এই মাসে
2022 শাবান মাসের ফজিলত ও রোজা সম্পর্কে আরো কিছু জেনে নিই
শাবান মাসে যদি কোন ব্যক্তি অসুবিধার জন্য রোজা রাখতে না পারে , তাহলে তিনি রমজান মাসের পর রোজা রাখতে পারবেন , শাবান মাসের রোজা পরবর্তী সময়ে পালন করা ফরজ কিংবা ওয়াজিব নয়
সাহাবী ইমরান ইবনে হুসাইন থেকে বর্ণিত নবী সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এক ব্যক্তি কে জিজ্ঞাসা করেন , তুমি কি এ মাসের মধ্যভাগে কিছুদিন রোজা রেখেছিলে , সে বলল না , রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বললেন তুমি তারপরে রমজানের রোজা শেষ করে দুই দিন রোজা রাখবে ( সহি , মুসলিম, হাদিস ; 2642 )
এই আলোচনার মাধ্যমে শাবান মাসের ফজিলত ও শাবান মাসের দোয়া এবং শাবান মাসের রোজা সম্পর্কে জানতে পেরেছি , তাই আমরা চেষ্টা শাবান মাসের প্রত্যেকটি আমল পালন করতে , আপনারা কিভাবে শাবান মাস অতিবাহিত করবেন সে বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কমেন্টে জানিয়ে রাখুন