চুল পড়া বন্ধ করার উপায়
আজকে আমরা জানবো চুল পড়া বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে। চুল নারী-পুরুষ উভয়ের একটি সুন্দর্য। দুনিয়াতে এমন কোন লোক নেই যে সুইট কে পছন্দ করেন না। আমরা মেয়েরা চুল লম্বা সিল্কি কাল সোজা ইত্যাদি অনেকেই এই রকম পছন্দ করি। আবার অনেকেই আছেন যারা খাটো চুল কোঁকড়া চুল কালারিং চুল ইত্যাদি পছন্দ করে থাকেন।
চুলের সৌন্দর্য হচ্ছে যার যার ইচ্ছা অনুযায়ী। তবে এই সুন্দর চুল পাতলা হয়ে যায় বা টাক হয়ে যায় এবং চুল পড়ে যায় তাহলে সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যাবে। তাই আজকে আলোচনা চুল পড়া বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে। কোঁকড়া চুল পাতলা চুল টাক মাথা পছন্দ এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু আমরা চুলের অনেক যত্ন করে থাকি। এবং চুল হচ্ছে সবার সৌন্দর্য তাই কেউ চায় না যে চুল পড়ে যাক এবং টাক হয়ে যায়। পাতলা চুল কারো কাছে পছন্দ না।
তাই আমাদেরকে জানতে হবে চুল পড়া বন্ধ করার উপায় এবং কিভাবে চুল পড়া বন্ধ করা যাবে সেই বিষয় নিয়ে আজকের এই আলোচনা।
বর্তমান যুগে চুল পড়া নিয়ে অনেক সমস্যা দেখা যায়। এবং আমরা অনেক পরিমানে হতাশ হয়ে পড়ি। আমরা বিভিন্ন পোষ্টের মাধ্যমে জানতে চাই চুল পড়া বন্ধ করার উপায় কিভাবে। চিন্তা করা কোন কারণ নেই যে আপনারা আমাদের এই পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারবেন যে চুল পড়া বন্ধ করার উপায় কিভাবে। তাই অহেতুক চিন্তাভাবনা না করে আমাদের এই পোস্টটি আপনি মনোযোগ দিয়ে পড়েন। আমরা যদি চুল পড়া নিয়ে টেনশন করি তাহলে চুল আরও কমে যাবে এবং ঘুম কম হলে চুল পড়া আরো বেড়ে যায়।
চুল ঘন করার উপায় সমূহ
খাদ্যভ্যাস পরিবর্তনঃ মদ, ধূমপান করা, কাঁচা ডিম, চিনি, ডায়েট সোডা, ইত্যাদি এসব খাবারের মাঝে কোন খাবার খাওয়া যাবেনা। এই খাবার গুলো যদি আপনার পছন্দ হয়ে থাকে বা অভ্যাস হয়ে থাকে তাহলে আপনি এই খাবারগুলো পরিবর্তন করুন। যদি পরিবর্তন না করতে পারেন তাহলে আপনার চুল পড়া বন্ধ হবে না। এজন্য আপনাকে মনে রাখতে হবে চুল পড়া বন্ধ করার জন্য আপনাকে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। চুল পড়া বন্ধ করার উপায় আপনাকে শাকসবজি ফলমূল আমিষ জাতীয় খাবার খেতে হবে। এবং রসালো খাবার খেতে হবে । ঘুমানোর ব্যাপারটা নিয়ে একটু বলে রাখি যে আধ ঘণ্টার বেশি বা কম যদি ঘুম হয়ে থাকে তাহলে চুল পড়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে। এবং অহেতুক টেনশন বা দুশ্চিন্তা করলে আপনার চুল পড়া শুরু হবে। তাই চুল পড়া বন্ধ করতে হলে আপনাকে সবগুলো নিয়ম সঠিকভাবে মেনে চলতে হবে। এবং বেশি পরিমাণে পানি খেতে হবে।
অতিরিক্ত চুল পড়া বন্ধ করার উপায় সমূহঃ
- অতিরিক্ত চুল পড়া বন্ধ করার উপায়
- চুল পড়া বন্ধ করার ঔষধ
- চুল পড়া বন্ধ করার দোয়া
- পুরুষদের চুল পড়ার উপায়
চুল পড়া বন্ধ করার প্রাকৃতিক উপায় জেনে নিন
মাথায় গরম পানি ব্যবহার করা যাবে নাঃ আপনি যদি মাথায় গরম পানি ব্যবহার করেন তাহলে চুলের গোড়া নরম হয়ে যায় তাই চুল ভালো রাখার জন্য গরম পানি ব্যবহার না করে ঠাণ্ডা পানি ব্যবহার করুন।
মাথায় অবশ্যই তেল ব্যবহার করাঃ আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা চুলে তেল ব্যবহার করতে চান না কারণ চুলে তেল ব্যবহার করার ফলে চুল আর ফ্যাশন থাকে না এজন্য অনেকেই চুলে তেল ব্যবহার করতে চান না কিন্তু আপনি যদি চুলে তেল ব্যবহার করেন তাহলে আপনার চুল হবে সিল্কি সুন্দর লম্বা কালো এবং চুলের গোড়া শক্ত হবে ইত্যাদি। ভালোভাবে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিয়ে তারপর সপ্তাহে দুইদিন চুলের তেল ব্যবহার করুন।
হেয়ার ড্রায়ার এ চুল শুকাবে নাঃ আবার অনেকে আছেন যারা হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকিয়ে নেন আমি মনে করি যে অতিরিক্ত কোন কাজ করা ভালো না। তাই এটা আপনি বাদ দিতে পারেন। হেয়ার ড্রায়ার চুলের গোড়া এবং বিভিন্ন সমস্যা হয়ে থাকে। তাই আপনি এটা থেকে বিরত থাকুন।
কেমিক্যালযুক্ত শ্যাম্পু প্রত্যাহার করুনঃ কেমিক্যালযুক্ত শ্যাম্পু প্রত্যাহার করতে হবে না । এর জন্য আপনাকে হারাতে হবে স্বাদের চুল।
মাথার স্ক্যাল্পে কন্ডিশনার লাগাবেন না:মাথার স্ক্যাল্পে শ্যাম্পু লাগালে চুলের গোড়া নরম হয়ে যায়। তাই স্ক্যাল্পে শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন না। অগ্রভাগে শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন এতে চুল ঝরঝরে হবে।
চুল পড়া বন্ধ করার পেঁয়াজের উপকারিতাঃ চুল পড়া বন্ধ করার জন্য পেঁয়াজের উপকারিতা। অনেকেই হয়তো ভাববেন যে পেঁয়াজ দিয়ে কিভাবে চুল পড়া বন্ধ করা যায়। তা আজকে আপনাদের বলে দেবো কিভাবে পেঁয়াজের রস দিয়ে চুলের গোড়া শক্ত করা যাবে সিল্কি হবে চুল কালো হবে ইত্যাদি এবং চুল পড়া বন্ধ করে দেবে।
আমরা অনেকেই আছি যারা কর্মব্যস্ততার কারণে চুলের যত্ন নিতে পারেনা তাই তাদের জন্য সহজ একটি উপায় হচ্ছে পেঁয়াজের রস এর ব্যবহার। পেঁয়াজের রস আপনার চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করবে। আপনার চুল এর পরিমাণ অনুযায়ী পেঁয়াজের পরিমাণ নিয়ে নেবেন এরপর ব্লেন্ডার বা পাটায় পিষে আপনি পেঁয়াজের রস করে নিন।
পেঁয়াজের রস করার পর সেই রস গুলো চুলের গোড়ায় গোড়ায় ভালো করে তেলের মতো ব্যবহার করুন এবং সারা রাতের জন্য রেখে দিন। এরপর সকালে শ্যাম্পু ব্যবহার করে পরিষ্কার করে নিন। পেঁয়াজের রস চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করবে।
ব্যবহার করার পর আপনি চুল পড়া বন্ধ করার উপায় খুঁজে পাবেন। আমরা বাজারের বিভিন্ন কেমিক্যালযুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার করে থাকি। আমরা যদি ওই কেমিক্যালযুক্ত কোন প্রোডাক্ট ব্যবহার না করে নিজে হাতে ঘরে বসে তৈরি করে ব্যবহার করতে পারি তাহলে বেশি উপকার আসবে। পেঁয়াজের রস ছাড়া আপনি যদি চান চুল পড়া বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন প্যাক ব্যবহার করতে যেমনঃ টক দই কলা প্যাক মেথি ও মেহেদি প্যাক এলোভেরা জেল প্যাক সহ বিভিন্ন প্যাক আপনি ব্যবহার করতে পারেন।
চুল পড়া বন্ধ করার প্রাকৃতিক উপায় জেনে নিনঃ
চুল পড়া বন্ধ করার নিমপাতার ব্যবহারঃ অনেক সময় দেখা যায় যে বিভিন্ন কারণের জন্য চুলের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে যেমন চুল পড়া এর কারণ হচ্ছে আপনার মাথায় যদি খুশকি থাকে তাহলে মাথার চুল ঝরে পড়বে। খুশকি হচ্ছে এক ধরনের ছত্রাক। তাই আমরা কখনও খুশকিকে অবহেলা করবো না। খুশকি দূর করার জন্য এবং চুল পড়া বন্ধ করার জন্য আপনি ব্যবহার করে নিন নিম পাতা। নিমপাতা ভালো করে ধুয়ে তারপর ব্লেন্ডারে বাতায়ে পিষে নিন এবং মাথায় ব্যবহার করুন।
চুলের গোড়ায় গোড়ায় নিম পাতার পেস্ট ব্যবহার করতে হবে। নিম পাতার পেস্ট শুকিয়ে যাওয়ার পর শ্যাম্পু দিয়ে ভালো করে মাথা ধুয়ে নিন। নিম পাতার পেস্ট এর জন্য আপনার চুলের গোড়া শক্ত হবে খুশকি ও চুল পড়া বন্ধ করে দেবে। চুল পড়া বন্ধ করার কার্যকারী উপায় হচ্ছে নিমপাতা।
চুল পড়া রোধে শ্যাম্পুঃ চুল পড়ার জন্য শ্যাম্পু অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। কেমিক্যাল যুক্ত শ্যাম্পু চুলের অনেক পরিমাণে ক্ষতি করে দেয়। কেমিকেলমুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহারে ফুল হয় সুন্দর সিল্কি এবং ঝরঝরে। তাই কেমিক্যালমুক্ত ব্যবহার করুন । তবে আপনি যদি ঘরে বসে শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আপনার চুলের জন্য খুব উপকারী। তেঁতুলের পানি ও রিঠা ব্যবহার করে ঘরোয়া পদ্ধতিতে বানিয়ে নিতে পারেন। তবে বাজার থেকে স্যাম্পু কেনার পর ভালোভাবে শ্যাম্পু দেখে নিন। সাম্প্রতিক কেমিক্যালযুক্ত কিছু রয়েছে কিনা। ভালো যাচাই বাছাই করে কেমিক্যাল মুক্ত শ্যাম্পু কিনে আনুন।
আমরা কখনো অতিরিক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করব না এবং প্রতিদিন শ্যাম্পু ব্যবহার করব না। তেল ব্যবহার করার যেমন নিয়ম রয়েছে শ্যাম্পু ব্যবহার করার তেমন নিয়ম রয়েছে। সপ্তাহে দুই থেকে 3 দিন শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। আবার এমন কোন কাজ করা যাবে না যে চুলে প্রচুর পরিমাণে ময়লা রেখে শ্যাম্পু না ব্যবহার করে। শুকনো চুলে কখনো সরাসরি শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন না। শ্যাম্পু ব্যবহার করার আগের রাত্রে চুলে তেল ও শ্যাম্পু দেওয়ার পূর্বে পানি দিয়ে মাথা ভিজিয়ে নিন এরপর শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।
চুল পড়া বন্ধ করার ঔষধঃ চুল পড়া বন্ধ করার হোক বা যেকোনো রোগ এর জন্য হোক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ব্যতীত কোনো ওষুধ সেবন করা উচিত নয়। তাই বন্ধের ঔষধ ব্যবহার করতে চাইলে বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করে নিন। কারণ এলোমেলো ঔষধ যদি ব্যবহার করে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। তাই ডক্টরের ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ চুল পড়া বন্ধ করার ঔষধ নিয়ে নিন ।
চুল পড়া বন্ধ করার তেলঃ চুল ভালো রাখার জন্য আপনি যেকোন জিনিস ব্যবহার করুন না কেন সবথেকে বড় উপকারী জিনিস হচ্ছে তেল। তাই সঠিকভাবে সঠিক নিয়মে তেল ব্যবহার করলে চুল হবে সিল্কি সুন্দর চুলের গোড়া শক্ত চুল পড়া বন্ধ করবে ইত্যাদি। এই সব সমস্যা থেকে আপনাকে রক্ষা করতে পারবে একমাত্র তেল। আপনি যদি সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন নিয়মমতো চুলে তেল ব্যবহার করতে পারেন তাহলে বাইরের কোন প্রোডাক্ট আপনার ব্যবহার করার দরকার নেই।
চুল পড়া বন্ধ করার দোয়াঃ চুল পড়া বন্ধ করার দোয়া জেনে নিন। মুসাল্লামা তুল্লা শিয়াতা ফি-হা (আরবি উচ্চারণ বাংলায় লিখলে পুরোপুরি শুদ্ধ হয়না তাই আরবি দেখে নিতে পারেন(সুরা বাকারাহ আয়াত ৭১) হাতের তালুতে তেল নিয়ে এই দোয়া তিনবার পড়ে ফু দিয়ে সেই তেল মাথায় মালিশ করবেন। চুল পড়া অনেকটা কমে যাবে।
পুরুষদের চুল পড়া বন্ধ করার উপায়ঃ বর্তমান যুগের চুল হচ্ছে নারীদের সৌন্দর্য এবং ফ্যাশন তাই মেয়েরা চুলের জন্য অনেক কিছু করে থাকেন। আমরা সচরাচর বলে থাকে যে চুল হচ্ছে নারীদের সৌন্দর্য কিন্তু যদি চুল নারীদের সৌন্দর্য হয় ছেলেদের কেন হবেনা।
একজন পুরুষের যদি মাথায় চুল না থাকে তাহলে তাকে দেখতেও অনেক খারাপ লাগে তাই সবার ক্ষেত্রেই চুল হচ্ছে নারী পুরুষ উভয়ের সৌন্দর্য। এখানে আরেকটি কথা হলো নারীদের যদি চুল পড়ে তাহলে নারীরা কখনো টাক হয় না কিন্তু পুরুষদের যদি চুল পড়ে যায় তাহলে তারা টাক হয়ে যায়। তাই পুরুষদের চুল পড়া বন্ধ করা থেকে বিরত থাকার জন্য কিছু নিয়ম রয়েছে সেগুলো আজকে আলোচনা করব।
তাই পুরুষদের উচিত চুলের সঠিকভাবে সঠিক নিয়মে শ্যাম্পু তেল ব্যবহার করে চুলের যত্ন নেওয়া। অনেক পুরুষ রয়েছেন যারা বিদেশে থাকেন তাদের জন্য চুলের যত্ন করে রাখা সম্ভব হয় না কারণ বিদেশে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ধুলাবালি রোধ এবং বিভিন্ন সমস্যার কারণে তাদের চুলের যত্ন নেওয়া হয় না এজন্য তাদের চুলের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। এজন্যই আবহাওয়ার সাথে মিল রেখে চুলের যত্ন নেওয়া উচিত।
শেষ কথাঃ আজকের এই আলোচনা থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে চুল বন্ধ করার উপায় সমূহ। চুল পড়া নিয়ে বা চুলের বিভিন্ন সমস্যার কারণে একদমই অবহেলা করা ঠিক নয়। আমাদের সঠিক সময়ে ঘুমাতে হবে এবং আট ঘণ্টার কম অথবা বেশি ঘুমানোর কারণে চুল পড়ে থাকে এবং টেনশনের কারণে চুল পড়ে থাকে সেদিকে খেয়াল রেখে আমাদের চুলের যত্ন রাখতে হবে। বেশি পরিমাণে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পর চুল পড়তে থাকে এবং ক্যান্সার হলে হাই প্রেসার হলে ইত্যাদি এসবের কারণে চুল পড়া বন্ধ হতে পারে না। তাই আপনাকে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে তারপর আপনি চুল পড়া বন্ধ করা থেকে রক্ষা পেতে পারেন। তাই সবাইকে বলব সবাই চুলকে যত্ন করে রেখো।