কবুতর বেচা কেনার জন্য বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বসে কবুতরের হাট। বাংলাদেশের ঢাকার প্রধান কবুতরের হাট গুলো হল মিরপুর-১, গুলিস্তান, টঙ্গি ও জিঞ্জিরা। বাংলাদেশের কবুতরের হাট গুলতে যেসব জাতের কবুতর বেচা কেনা হয় তার মধ্যে অন্যতম জাত হল গিয়া চুল্লি, নান, সারটিন, ঝরনা, সিরাজি, লক্ষা, জেকবিন, টাম্লার, রেচার হমা, আওল, গিরিবাজ, শুয়াচন্দন, কাগজি ইত্যাদি। নিচে কিছু দামি কবুতরের জাত এর জোড়ার দাম সহ লিস্ট দেয়া হল।
আমাদের দেশে ২০ টিও অধিক জাতের কবুতর আছে বলে জানা যায়। নিম্নে প্রধান কয়েকটি জাত সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
১। #গোলা এই জাতের কবুতরের উৎপত্তিস্থল পাক-ভারত উপমহাদেশ। আমাদের দেশে এ জাতের কবুতর প্রচুর দেখা যায় এবং মাংসের জন্য এটার যথেষ্ট জনপ্রিয়তা রয়েছে। ঘরের আশেপাশে খোপ নির্মাণ করলে এরা আপনাআপনি এখানে এসে বসবাস করে। এদের বর্ণ বিভিন্ন সেডযুক্ত ধূসর এবং বারড-ব্লু রংয়ের। এদের চোখের আইরিস গাঢ় লাল বর্ণের এবং পায়ের রং লাল বর্ণের হয়।
২। #গোলী গোলা জাতের কবুতর থেকে গোলী জাতের কবুতর ভিন্ন প্রকৃতির। এ জাতের কবুতর পাকিস্তানের লাহোর ও ভারতের কলকাতায় বেশ জনপ্রিয় ছিল। এদের লেজের নীচে পাখার পালক থাকে। ঠোঁট ছোট হয় এবং পায়ে লোম থাকে না। এদের বর্ণ সাদার মধ্যে বিভিন্ন ছোপযুক্ত।
৩। #টাম্বলার এসব জাতের কবুতর আকাশে ডিগবাজী খায় বলে এদের টাম্বলার বলে। আমাদের দশে এই জাতটি গিরিবাজ নামে পরিচিত। এদের উৎপত্তিস্থল পাক-ভারত উপমহাদেশ। মনোরঞ্জনের জন্য আমাদের দেশে এদের যথেষ্ট কদর রয়েছে।
৪। #লোটান লোটন কবুতরকে রোলিং (rolling) কবুতরও বলা হয়। গিরিবাজ কবুতর যেমন শূন্যের উপর ডিগবাজী খায়, তেমন লোটন কবুতর মাটির উপর ডিগবাজী খায়। সাদা বর্ণের এই কবুতরের ঘুরানো ঝুঁটি রয়েছে। এদের চোখ গাঢ় পিঙ্গল বর্ণের এবং পা লোমযুক্ত।
৫। #লাহোরী আমাদের দেশে এই কবুতরটি শিরাজী কবুতর হিসেবে পরিচিত। এদের উৎপত্তিস্থল লাহোর। এদের চোখের চারদিক থেকে শুরু করে গলার সম্মুখভাগ, বুক, পেট, নিতম্ব, পা ও লেজের পালক সম্পূর্ণ সাদা হয় এবং মাথা থেকে শুরু করে গলার পিছন দিক এবং পাখা রঙ্গীন হয়। সাধারণত কালো, লাল, হলুদ, নীল ও রূপালী ইত্যাদি বর্ণের কবুতর দেখা যায়।
৬। #কিং_কিং জাতের কবুতরের মধ্যে হোয়াইট কিং এবং সিলভার কিং আমেরিকাসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলিতে বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। কিং জাতের কবুতর প্রদর্শনী এবং স্কোয়াব (ঝয়ঁধন বাচ্চা) উৎপাদনে ব্যবহার হয়। এছাড়াও রয়েছে ব্লু রেড এবং ইয়েলো কিং। এই জাতের কবুতর মূলত প্রদর্শনীতে ব্যবহৃত হয়।
৭। #ফ্যানটেল এটি অতি প্রাচীন জাতের কবুতর। ফ্যানটেল জাতের কবুতরের উৎপত্তি ভারতে। এ জাতের কবুতর লেজের পালক পাখার মত মেলে দিতে পারে বলে এদেরকে ফ্যানটেল বলা হয়। এদের রং মূলত সাদা তবে কালো, নীল ও হলুদ বর্ণের ফ্যানটেল সৃষ্টিও সম্ভব হয়েছে। এদের লেজের পালক বড় হয় ও উপরের দিকে থাকে। পা পালক দ্বারা আবৃত থাকে। এ জাতের কবুতর প্রদর্শনীতে ব্যবহৃত হয় এবং দেশ বিদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয়।
৮। #জ্যাকোবিন এই কবুতরের মাথার পালক ঘাড় অবধি ছড়ানো থাকে যা বিশেষ ধরনের মস্তকাবরণের মত দেখায়। এদের উৎপত্তিস্থল সম্পর্কে সঠিকভাবে জানা যায় না। তবে এদের আদি জন্মস্থান ভারত বলেই ধারণা করা হয়। এই কবুতর সাধারণত সাদা, লাল, হলুদ, নীল ও রূপালী বর্ণের হয়। এদের দেহ বেশ লম্বাটে। চোখ মুক্তার মত সাদা হয়।
৯। #মুকি এ জাতের কবুতরের গলা রাজহাঁসের মত পিছন দিকে বাঁকানো এবং কম্পমান অবস্থায় থাকে। মুকি জাতের কবুতরের উৎপত্তি ভারতে বলে ধারণা করা হয়। এদের উভয় ডানার তিনটি উড়বার উপযোগী পালক সাদা হয় যা অন্য কোনো কবুতরে দেখা যায় না। এ জাতের কবুতরের মাথা সাদা, বুক খুব একটা চওড়া নয় তবে উঁচু ও বেশ কিছুটা সামনের দিকে বাড়ানো থাকে। সাদা, কালো এবং নীল বর্ণের এই কবুতরের পায়ে লোম থাকে না।
#বাংলাদেশি_জাতঃ- সিরাজি, জালালি, বাংলা, গিরিবাজ, লোটন, বোম্বাই, গোবিন্দ ইত্যাদি ।
#মাংস_উৎপাদনের_জন্যঃ- হোয়াইট কিং, টেক্সেনা, সিলভার কিং, হামকাচ্চা, কাউরা, হোমার, গোলা, ডাউকা, লক্ষ্যা ও পক্কা উল্লেখযাগ্য কবুতরের জাত।
#চিত্তবিনোদনের_জন্য_রয়েছেঃ- সিরাজী, ময়ুরপঙ্খী, লাহোরি, ফ্যানটেইল, জেকোভিন, মুকি, গিরিবাজ, টেম্পালার, লোটন প্রভৃতি। গিরিবাজ কবুতর উড়ন্ত অবস্থায় ডিগবাজি খেয়ে চিত্তাকর্ষণ করে।
- Victoria Crowned Pigeon- এর দাম ৫ লক্ষ টাকা
- Blue Crowned Pigeons - দেখতে অনেক সুন্দর, দাম অনেক বেশি
- Crowned Pigeon - বন্য টিপের , অনেক সুন্দর, অনেক দামি
জাত: German Shield
দাম per pair: 6000 টাকা
জাত: Jacobin
দাম per pair: 8,000 টাকা
জাত: Tumbler
দাম per pair: 14,000 টাকা
জাত: Bukhara
দাম per pair: 20,000 টাকা
জাত: Beauty Homa
দাম per pair: 12,000 টাকা
জাত: Crested White Frillback
দাম per pair: 10,000 টাকা
জাত: Blue Shartinr
দাম : 5,000 টাকা
জাত : Owl
দাম per pair: 6000 টাকা
জাত : Poutar
দাম per pair: 8000 টাকা
জাত : Shotface
দাম per pair: 28,000 টাকা
জাত : King
দাম per pair: 4000 টাকা
জাত : Siraji
দাম per pair: 4000 টাকা
জাত : Mukkhi
দাম per pair: 3,000 টাকা
#কবুতরের_হাট: যেখানে পাওয়া যায় সবধরণের কবুতর রঙ-
বেরঙের বিভিন্ন জাতের পোষা কবুতর নিয়ে শত শত মানুষের যেন এক মিলনমেলা বসেছে রাজধানীর কাপ্তান বাজারে। এখানে যারা আসেন তাদের কেউ কবুতর বিক্রেতা, আর কেউবা ক্রেতা। সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত এই হাটে চলে কবুতর কেনাবেচা। ক্রেতা, বিক্রেতা ও স্থানীয়রা জানায়, কাপ্তান বাজার হলো রাজধানীর সবচেয়ে বড় কবুতর কেনাবেচার বাজার। এখানে সর্বনিন্ম ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা দামের কবুতর পাওয়া যায়। মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের গুলিস্তান ২ নম্বর গেইট এলাকায় এই বাজারের অবস্থান।
প্রতি শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে এই বাজার জমতে শুরু করে। রাজধানী ও এর আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন কবুতর নিয়ে এই হাটে আসেন। আর এই কেনাবেচা চলে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। সরেজমিনে দেখা যায়, শুক্রবার সকাল থেকে বিক্রেতারা বিভিন্ন জাতের কবুতর নিয়ে বাজারে আসছেন। একইসঙ্গে ক্রেতারাও এসে বাজারে ভিড় করছেন। রাস্তার দু’পাশে সারিবদ্ধভাবে খাঁচা নিয়ে বসছেন বিক্রেতারা। ক্রেতাদেরকে ঘুরে ঘুরে তাদের পছন্দের কবুতর খুঁজতে দেখা যায়। সকাল থেকে ক্রেতা ও বিক্রেতারা জমায়েত হতে থাকলেও মূলত দুপুরের পর থেকে এই হাটে বেচাকেনা বাড়তে থাকে। একদিকে যেমন বাজারে বিভিন্ন ব্যক্তি আসেন তাদের পোষা কবুতর বিক্রি করতে, একইভাবে পাইকার বিক্রেতারাও কবুতর বিক্রি করে থাকেন এই হাটে। কেউ কবুতর বিক্রি করলে তাদের কাছ থেকে বিক্রির অর্থের ১০ শতাংশ হাটের ইজারাদারকে দিতে হয়।
পোষা পাখি কবুতর নিয়ে বিভিন্ন জরিপে দেখা যায়, বিশ্বে ১২০ জাতের বিভিন্ন রঙ-বেরঙের কবুতর থাকলেও বাংলাদেশে ২০ জাতের কবুতর পাওয়া যায়। তবে কাপ্তান বাজারের বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই বাজারে পোটার জাতের কবুতর (সাদা, কালো ও হলুদ), কিং, ৠান, সিরাজী, জ্যাকপিন, বন, ঝর্ণা শাটিং, গিরীবাজ, জগা পিন, জার্মান ও হল্যান্ডের গ্লু পটার, একপেঞ্জার হেনা, পালিসনেস, সেকশন স্ট্রেচার, ফরমুনা, চন্দন এডেল, হেমলেট ও লাক্ষা জাতের কবুতর পাওয়া যায়। এছাড়া দেশি বিভিন্ন জাতের অসংখ্য কবুতর বিক্রি হয়ে থাকে এই বাজারে।
তাবারুল হক বাজারে কবুতর বিক্রি করতে রাজবাড়ি থেকে আসা রিয়ন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, এক জোড়া হলুদ পোটার কবুতর বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা। এছাড়া ৠান কালো ৬ হাজার ও হোয়াইট ৠান ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা, হোয়াইট কিং ১৫ থেকে ২০ হাজার, হলুদ সিরাজী ৬ হাজার এবং সিরাজী ব্লু ৮ হাজার, জ্যাকপিন সাদা ২৫ হাজার ও জ্যাকপিন কালো ২০ হাজার টাকা দাম হাঁকাচ্ছেন।
অন্যদিকে, বন জাতের কবুতর ১০ হাজার, ঝর্ণা শাটিং ৬ হাজার, গিরীবাজ ২ হাজার ও জগা পিন ২০ হাজার টাকা দাম বলে তিনি জানান। নরসিংদী থেকে আসা আরেক কবুতর বিক্রেতা তানভীর বাংলানিউজকে বলেন, জার্মান ও হল্যান্ড গ্লু পটার জাতের কবুতর জোড়া ১৫ হাজার টাকা ও একপেঞ্জার হেনা ১৫ থেকে ২০ হাজার বিক্রি হচ্ছে। গ্লু পটার জাতের এই কবুতর গত আট মাস আগে বাজারে ৬৫ থেকে ৭০ হাজার টাকা ও হেনা জাতের কবুতর এক লাখ টাকা দাম ছিল বলে জানান তিনি।
এছাড়া পালিসনেস্ ২০ হাজার, সেকশন স্ট্রেচার ১৫ হাজার টাকায় দাম বলে জানান তিনি। রাজধানীর যাত্রাবাড়ির মো. সুমন জানান, ফরমুনা জাতের কবুতরের দাম ২৫ হাজার টাকা, চন্দন ৪ হাজার, এডেল ৬ হাজার, হেমলেট ১২ হাজার, লাক্ষা চকলেট কালার ৮ হাজার এবং লাক্ষা কালো জাতের কবুতর ৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া দেশি জাতের আরো বিভিন্ন রঙের কবুতরের দাম ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকা বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ থেকে কবুতর কিনতে আসা মিজানুর রহমান বলেন, তিনি র্দীঘদিন ধরে কাপ্তান বাজারের এই কবুতরের হাটে আসছেন। তার বাড়িতে বিভিন্ন জাতের শতাধিক কবুতর রয়েছে। আরো নতুন কোনো জাতের পছন্দের কবুতর কিনতে হাটে এসেছেন। দুপুরে সিরাজী ও ৠান জাতের দুই জোড়া কবুতর কিনেছেন বলেও জানান তিনি। কাপ্তান বাজার ছাড়াও রাজধানীর আরো কয়েকটি এলাকায় কবুতরের হাট জমে। এগুলোর মধ্যে ঠাঁটারীবাজারে একটি কবুতরের বড় হাট রয়েছে। এখানে প্রতিদিন কবুতর বেচাকেনা হয়ে থাকে। এছাড়া রাজধানীর নিমতলী, মৌলভীবাজার, জিঞ্জিরা বাজার, কামরাঙ্গীরচর ও গাবতলীর আমিনবাজারে সপ্তাহে একদিন কবুতরের হাট বসে।