কবুতর পালন পদ্ধতি
আসসালামু আলাইকুম আজকে আলোচনা করব কবুতর পালন পদ্ধতি সম্পর্কে। কবিতার খুবই জনপ্রিয় একটি পাখি আপনি আপনার বাসা বাড়িতে কবুতর পালন করতে পারেন। আমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক রয়েছেন যাদের কবুতর পালন বিষয়ক তাই তারা কবুতর পালতে পারেন। কবুতর পালতে হলে আপনাকে প্রথমে জানতে হবে কবুতর পালনের পদ্ধতি সম্পর্কে । গৃহপালিত পাখির মধ্যে খুব জনপ্রিয় তাকে হচ্ছে কবুতর।
শহর বা গ্রামে বাসা বাড়িতে সকলে কবুতর পালন করে থাকেন। কবুতর পালন করে আপনি আপনার পরিবারের আর্থিক চাহিদা মেটাতে পারেন খুব অল্প খরচে। বাসা বাড়িতে কবুতর পালন করেন বাড়তি আয় করার চেষ্টা করুন। অনেকে রয়েছেন হাঁস-মুরগি এদের সঙ্গে কবুতর পালন করে থাকেন তাই অবশ্যই আমাদেরকে প্রথমে জানতে হবে এই পাখি পালার পদ্ধতি সম্পর্কে।
আরো পড়ুনঃ ছাত্র জীবনে পার্টটাইম জব
ছোট বাচ্চারা যেমন স্কুল কলেজে পড়ে তারা শখের মধ্যে দিয়ে এবং আনন্দ উন্নত করার জন্য কবুতর পালন করে থাকেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কাঠের বাক্স পুরোনো পদ্ধতি অবলম্বন করে কবুতর পালন করা হয়। বাজারে বাচ্চা কবুতরের চাহিদা বেড়ে উঠেছে প্রচুর পরিমানের। উন্নত পদ্ধতিতে কবুতর পালন করে আপনি আর্থিক আই লাভ করতে পারেন।
কবুতর পালন করার সুবিধা গুলো জেনে নিনঃ
- কবুতরের রোগ হয় কম
- একজন জোড়া কবুতর থেকে প্রতি মাসে দুটি বাচ্চা পাওয়া যায়। তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে বাদশা খাওয়ার উপযোগী হয়।
- কবুতরের ঘর তৈরি করতে খরচ কম হয়
- কবুতরের খাবার এর খরচ কম
- অল্প আয়ের কবুতর পালন করতে পারবেন
- অল্প পরিশ্রমে কবুতর পালন করা যায়
বাজার সম্ভাবনা জেনে নিনঃ
কবুতরের মাংস খুবই সুস্বাদু ও মজাদার। কবুতরের মাংস শরীরের জন্য খুবই ভালো। কবুতরের মাংস তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন। কবুতরের মাংস খেলে শক্তি বৃদ্ধি পায়। কবুতরের মাংস চাহিদা রয়েছে। আবার অনেকে কবুতর পালন করেন সখের বসে। কবুতর পালন করে শোকের বাসা বাড়িতে। বাসা বাড়িতে কবুতর পালন করে ক্রয় বিক্রয় করে থাকেন।
কবুতর পালন করার পদ্ধতি / কবুতরের জাতঃ
টেক্রেনা, সিলভার কিং, হামকাচ্চা, ডাউকা, কাউরা, গোলা, গোলী, পক্ক, লক্ষণ ইত্যাদি। সৌখিন লোকেরা খেলাধূলা বা আমোদ ফুর্তির জন্য ময়ূরপংখী, সিরাজী, লহোরী, ফ্যানটেইল, মুকি, জেকোভিন, গিরিবাজ, টেম্পলার, লোটন ইত্যাদি কবুতর পুষে থাকে। আমাদের দেশে জনপ্রিয় ও উল্লেখযোগ্য কবুতরের একটি জাত হচ্ছে ‘জালালী কবুতর’।
পৃথিবীতে বর্তমানে প্রায় ২০০-৩০০ জাতের কবুতর রয়েছে। মাংস উৎপাদনের জন্য উল্লেখযোগ্য হচ্ছে হোয়াইট কিং,
কবুতরের জীবনচক্রঃ
সাধারণত স্ত্রী-পুরুষ কবুতর জোড়া বেঁধে এক বসবাস করেন । স্ত্রী পুরুষ কবিতা জীবন একসাথে বাস করে। এদের জীবন কাল হয় 12 থেকে 15 বছর। স্ত্রী পাঁচ থেকে ছয় মাস বয়সেসেই কবুতরগুলো ডিম দিয়ে থাকে। 28 দিন পর 48 ঘন্টার পরে দুটি ডিম দিয়ে থাকে। স্ত্রী কবিতার পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত দেওয়া ডিমের বাচ্চা উৎপাদন ক্ষমতা সক্রিয় করে থাকে।
ডিম থেকে বাচ্চা ফুটাতে 17 থেকে 18 দিন সময় লাগে। স্ত্রী পুরুষ পালা করে ডিমে তাপ দেয়। ডিমে তা দেওয়ার 15 থেকে 16 দিনের মধ্যে স্ত্রী ও পুরুষ উভয় কবুতরের খাদ্য থলিতে দুধ জাতীয় বস্তু তৈরি হয়ে থাকে যা খেলে বাচ্চারা 4 দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকে। দশ দিন পর্যন্ত তাদের বাচ্চাকে ঠোট দিয়ে খাবার হয়। কবুতরের বাচ্চা গুলো তাদের মা-বাবার কাছ থেকে ঠোট দিয়ে খাবার খেয়ে থাকেন। একটু বড় হলে তারা নিজে নিজে খাবার খেয়ে খায়ে।
আরো পড়ুনঃ ব্লেন্ডার ব্যবহার পদ্ধতি
কবুতরের বাসস্থান সম্পর্কে জেনে নিনঃ
- আপনি কবুতর পালন করতে চান কোন সমস্যা নেই সব দিকে সুবিধা খুঁজে পাবেন। কবুতর পালন করার জন্য নির্দিষ্ট কোন জায়গায় স্থান এর প্রয়োজন নেই। আপনার যদি থাকে তাহলে আপনি যেখানেই ইচ্ছা করবেন সেখানে কবুতর পালতে পারবেন যেমনঃ বাড়ির ছাদে, বাড়ির আঙিনা, ইত্যাদি আপনি কবুতর পালন করতে পারবেন কোন সমস্যা নেই।
- কবুতরের ঘর বানাতে হলে আপনাকে হালকা কাট পাতলা টিন বাসবার প্যাকিং কার্ড দিয়ে কবুতর পালন করতে হবে।
- কবুতরের ঘর গুলো খুব উঁচু করে তৈরি করতে হবে যাতে ক্ষতিকর প্রাণীও পাখিদের নাগালের বাইরে না যায়।
- কবুতরের ঘর গুলো প্রচুর পরিমাণে পরিষ্কার ও শুকনো রাখতে হবে।
- কবুতরের ঘরগুলোতে প্রচুর পরিমাণে আলো প্রয়োজন। বৃষ্টির পানি কবুতরের ঘরে বা কবুতরের শরীরে যেন না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
- প্রতিমাসে একবার দুইবার করে কবুতরের ঘরে বিষ্ঠা পরিষ্কার করতে হবে।
কবুতরের খাদ্য সম্পর্কে জেনে নিনঃ
কবুতর বিভিন্ন ধরনের খাবার খেয়ে থাকেন যেমনঃ ভুট্টা, গম, ধানের ভুসি, ভান, জোয়ার, মোটর, গম, খেসারি সরিষা, ভুট্টা, কলাই ইত্যাদি। এই খাবারগুলো কবিতা তোর খেয়ে থাকেন।
- কবিতার খোলা আকাশে উড়তে পছন্দ করে । তবে আপনাকে একটি জিনিস খেয়াল রাখতে হবে সেটা হচ্ছে। যে কবুতরগুলো আপনি কিনে নিয়ে আসবেন সে কবুতরগুলো ছাড়ার চেষ্টা করবেন না কারণ এই কবুতরগুলো আর ফিরে আসবে না চলে যাবে। যে কবুতরগুলো আপনি কিনে নিয়ে আসবেন সে কবুতরগুলো বন্দি রেখে এই কবুতরগুলো থেকে যে কবিতাগুলো বাচ্চা হবে সেই বাচ্চাগুলো আপনি ছেড়ে দিতে পারবেন।
- এর কারণ গুলি হল আপনার বাড়িতে যেয়ে কবুতরগুলোর জন্ম নিবে সে কবুতরগুলো একমাত্র আপনার বাড়িটা চেনে। এ বাচ্চা গুলো আপনার বাড়ি ছাড়া অন্য কোন বাড়িতে যাবেন না কারণ তাদের জন্মই এখানে। আপনি যে কবুতর পণ্য কিনে নিয়ে আসবেন সে কবুতরগুলো যত দূরে থেকে নিয়ে আসবেন যেখান থেকে কেনা হয়েছে বা যেখানে জন্ম হয়েছে সে কবুতরগুলো সেখানে চলে যাবে এটা আপনাকে মানতে হবে।
- কবুতর উড়তে পছন্দ করে তাই যদি আপনি কবিতার ছেড়ে দেন তাহলে আপনার বাড়িতে যে কবিতাগুলো জন্ম নিয়েছে সেগুলো ছেড়ে দিতে পারেন কোন সমস্যা নেই। কবুতরের খাবারের 15 পার্সেন্ট- 16 শতাংশ আমিষ থাকা প্রয়োজন। মুরগির ছানা তৈরি খাবার খাওয়ার সুফল পাওয়া যায়। কবুতরের বাচ্চা দ্রুত বৃদ্ধি পায় আর শক্তি ও পুষ্টি বয়স্ক কবুতরের সুস্বাস্থ্য ও ডিমের খোসা শক্ত হওয়ার জন্য ঝিনুকের গুড়া চিনা পাথর শক্ত কাঠ কয়লা ঘোড়া আর ঘোড়া লবণ মিশিয়ে গ্রিট মিক্সার তৈরি করে খাওয়াতে পারেন । প্রত্যেকটি কবিতার প্রতিদিন গড়ে প্রায় 30 থেকে 60 গ্রাম দানাদার খাদ্য খেয়ে থাকে। প্রতিদিন কিছু কিছু কাঁচা শাকসবজি খেতে দিতে হবে।
কবুতরের রোগবালাই কেন হয় জেনে নিনঃ
- কবুতর পালন করার সময় আপনাকে কিছু কিছু পরিষ্কার রাখার পদ্ধতি জেনে রাখা ভালো। কবুতরের খাঁচা গুলোকে ভিতর প্লেটগুলো কবুতরের খাবার খাওয়ার বাতিগুলো ইত্যাদি সকল জিনিসগুলো আপনি ভালো করে ধুয়ে তারপর পানি দিবেন এবং খাবার দেবেন।
- খাবারের যদি ময়লা থাকে এবং যে বাটি গুলোতে আপনি পানি দিবেন সে পানিতে ময়লা থাকে এবং যে বাটিতে করে কবিতা পায়খানা করে থাকেন সেগুলো ভালো করে ধরে দেবেন। যার ফলে আপনার কবুতরের কোন রোগ বালাই হবে না এবং কবুতর অসুস্থ হবে না বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারবে। আপনি যেমন আপনার ঘর আপনার শরীর পরিষ্কার করে রাখেন ঠিক তেমনি তাদের যদি নিজের মতো করে পরিষ্কার করে রাখতে পারেন তাহলে তাদের কোন রোগ বা কোনো সমস্যা দেখা দেবে না।
- বিভিন্ন প্রকার রোগ জীবাণু দ্বারা কবুতর আক্রান্ত হয়ে থাকে। সাধারণত খাদ্য ও পানির মাধ্যমে মানুষের দেহে প্রবেশ করে ফেলে। অতিরিক্ত গরম বা ঠান্ডা জনিত কারণে অনেক সময় কবিতা দুর্বল ও অসুস্থ হতে পারে। কবুতরের রোগ এবং ছত্রাকজনিত রোগ ছাড়া ভিটামিন খনিজ লবণের অভাব জনিত রোগ জনিত সমস্যা পরজীবী যেমন কৃমি বাহিরকিছু পোকামাকর মাসি পিপরা মশা উকুন ইত্যাদি ।
- এসব আক্রমণের কারণে অনেক রোগ হতে পারে। এগুলো অপরিষ্কার করার রাখার কারণে এবং জীবাণুর কারণে আপনার কবুতরের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে যার ফলে তাদের মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সবুজ ডায়রিয়া এবং প্রাচীন ইত্যাদি রোগের প্রাথমিক লক্ষণ। কবিতা প্রয়োগ এবং নিরাপদ ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
- ক্যাঙ্কারঃ আক্রান্ত বয়ষ্ক পিতামাতা কবুতর থেকে দুধের মাধ্যমে বাচ্চায় প্রটোজোয়া এ রোগের সংক্রমণ ঘটে। আক্রান্ত জীবিত কবুতর সারাজীবন এ রোগের জীবাণু বহন করে। মৃত্যুহার শতকরা প্রায় ৫০ ভাগ। আক্রান্ত কবুতর অস্থির থাকে, পাখা উশকু-খুশকু হয়ে যায়, খাদ্য গ্রহণ কমে যায় এবং ধীরে ধীরে শুকিয়ে মারা যায়। আক্রান্ত কবুতরের মুখের চারিদিকে সবুজাভ বা হলুদ লালা লেগে থাকে। আক্রান্ত কবুতরকে দ্রুত সরিয়ে ফেলতে হবে।
রোগপ্রতিরোধের ব্যবস্থাপনা জেনে নিনঃ
- কবুতর কেনার সময় আপনাকে সুস্থ সবল কবুতর কিনে তারপর কবুতর পালন করতে হবে। দুর্বল কবুতরগুলোকে গোসল করাতে হবে। কবুতর গুলোকে মুখ দিয়ে দৌড় ঢুকানো যাবেনা।
- কবিতর উঠানোর আগে খামারসহ ব্যবস্থাপনা সকল যন্ত্রপাতি সঠিকভাবে জীবাণুমুক্ত করে তারপর কবুতর খাচায় উঠাতে হবে। কবুতরের খাঁচা প্রথমে আপনি পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিন তারপর কবুতর খাঁচা ঢোকাতে পারেন। বিশেষ কথা হচ্ছে কবুতর পালতে হলে আপনাকে খুবই খুবই যত্ন সহকারে পালন করতে হবে এবং পরিষ্কার রাখতে হবে প্রচুর পরিমাণে।
- কবুতরের খোপ দানাদার সরবরাহ পাত্র পানির পাত্র গোসল করার পাত্র কবুতরের পানির মত পরিস্কার জীবাণুমুক্ত করতে হবে। কবুতরের প্রথম থেকে লাস্ট যে কাজগুলো রয়েছে এসব কাজগুলো করতে হবে তাহলে আপনার কবুতর পরিষ্কার থাকবে ভালো থাকবে সুস্থ থাকবে ইত্যাদি।
- তাই কবুতর পালন করার আগে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে কবুতর পালার পদ্ধতি সম্পর্কে। কবুতর কিভাবে পালতে হয় এর কবুতর পালন করার পদ্ধতি ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারলে আপনার কবুতর পালতে খুবই সহজ হবে। তাই কবুতর তার আগে জেনে নিন কবুতর পালার পদ্ধতি সম্পর্কে।