ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা

 
ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা

ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা

ডায়াবেটিস  খুবই মারাত্মক একটি রোগ। ডায়াবেটিস আপনাকে ধীরে বিধিরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। ডায়াবেটিস রোগ মারাত্মক রোগের সঙ্গে যদি আরো অন্য কোন রোগ হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে তার কোনো সম্ভাবনাই থাকে না। তাই ডায়াবেটিস কিভাবে নিয়ন্ত্রণ রাখবেন সেই বিষয়ে আলোচনা করো। ডায়াবেটিস আমাদের সবারই পরিচিত একটি রোগ। ডায়াবেটিস বাংলাদেশের বিভিন্ন কারণে ডায়াবেটিস রোগ প্রতিরোধ দিন দিন বেড়েই চলছে। 

বর্তমানে বাংলাদেশের ডায়াবেটিস অনেক পরিমাণে। বর্তমান যুগের ডায়াবেটিসের রোগী এমন কোন পরিবারের নেই বললেই চলে। ডায়াবেটিস খুবই মারাত্মক  এই  রোগ  একজন হলে ও পরিবারে হতে পারে। ডায়বেটিস খুবই বিপদজনক আপনাকে সব সময় বিরক্ত  করবে। ডায়াবেটিস হলে আমরা বিভিন্ন হাসপাতালের ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঔষধ খাওয়ার চেষ্টা করি।  কিন্তু এই ঘন ঘন ঔষধ না খেয়ে আপনি যদি ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করেন তাহলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখা যাবে ইনশাল্লাহ। ডায়াবেটিস রোগীর মনে রাখতে হবে শৃংখলার জীবন। তুমি কারণেই একজন ডায়াবেটিস রোগীর জন্য অনেকের চেয়ে সুস্থ থাকে। 

একজন ডায়াবেটিস রোগীর প্রতিদিন খাবার-দাবার সবকিছু কন্ট্রোল করে রাখতে হয়। ডায়াবেটিসের প্রথম যে কাজটি আমরা করে থাকি সেটা হচ্ছে ঔষধ খাই  দ্বিতীয় খাবার তৃতীয় নিয়ম অবহেলিত। আপনি যদি এই নিয়মগুলো অবলম্বন করতে পারেন সেক্ষেত্রে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীর যে খাবারগুলো নিষিদ্ধ সেই খাবারগুলো সম্পর্কে আলোচনা করব। ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

ডায়াবেটিস রোগীদের প্রথম চিকিৎসা হচ্ছে রক্তের শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ রাখা। এবং অন্যান্য জটিলতা সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। ইনসুলিন স্বনির্ভর ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য নিয়ন্ত্রকের প্রাধান্য দেওয়া হয়। ইনসুলিন নির্ভর ডায়াবেটিকস অগির অপর্ণ একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকেন। এ কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের খাবার খেতে হবে পুষ্টিকর ও সুষম খাবার। 

প্রতি কেজি ওজনের 30 ক্যালরি খাদ্য শক্তির খাবার গ্রহণ করতে হবে। মোট 40 থেকে 50 শতাংশ শর্করা জাতীয় খাবার থেকে গ্রহণ করতে হবে ।জটেশ্বর করা যেমনঃ ,  চাল,,  আটা  ডাল শিমের বিচি ছোলা বাদাম ইত্যাদি। এসবে মোট গেলরে 15 থেকে 20 শতাংশ প্রোটিন জাতীয় খাদ্য থেকে গ্রহণ করতে হবে। সারাদিনের খাবার কে তিন ভাগে ভাগ করুন। পাঁচ ভাগের এক ভাগ সকালের নাস্তা দুই ভাগ দুপুরে এবং দুই ভাগ রাতে। সকাল 11 টায় ও বিকেল চারটায় দিনে হালকা নাস্তা খাওয়া যায়।

ডায়বেটিস রোগীদের অবশ্যই পরিমাণ মতো পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে। প্রত্যেকটি খাবারে তরতাজা খাবার খেতে হবে। বিশেষ করে আমরা যারা জাম্বুরা কামরাঙ্গা ইত্যাদি।  দৈনিক  ১৫০ থেকে২০০ গ্রাম পরিমাণ খাওয়া যেতে পারে। এ খাবার গুলোতে তেমন কোনো  ক্যালোরি নেই।

ডায়াবেটিস কি জেনে নিনঃ

  • ডায়াবেটিস এক ধরনের মেটাবলিক ডিজঅর্ডার বা শরীরবৃত্তীয় কার্যক্রমের সমস্যা তৈরি করে এমন একটি রোগ । এক্ষেত্রে শরীর অগ্নাশয়ের মাধ্যমে পর্যাপ্ত ইনসুলিন উৎপাদন ও তা ব্যবহার করতে পারে না। অনেকের ক্ষেত্রে ইনসুলিন একেবারেই নষ্ট হয়ে যায়।  যে কোনো খাবার খাওয়া পর আমাদের শরীর সেই খাদ্যের শর্করাকে ভেঙে চিনিতে (গ্লুকোজ) রুপান্তরিত করে।
  • অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন নামের যে হরমোন নিসৃত হয়, তা শরীরের কোষগুলোকে নির্দেশ দেয় চিনিকে গ্রহণ করার জন্যে। এই চিনি কাজ করে শরীরের জ্বালানি বা শক্তি হিসেবে। শরীরে যখন ইনসুলি্নের উৎপন্ন হতে পারে না অথবা এটি ঠিক মতো কাজ করতে পারে না তখনই এই ডায়াবেটিস রোগটি হয়।
  •  এর ফলে রক্তের মধ্যে চিনি জমতে শুরু করে বা রক্তে চিনি বা গ্লুকোজ এর মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়। এর ফলে ঘন ঘন পশ্রাব হয়, গলা শুকিয়ে যায়, ওজনে পরিবর্তন হয়, শরীরে দূর্বলতা আসে, কোন ঘা সহজে শুকায় না, রক্তনালী ধংস হয়, স্নায়ু তন্ত্রে সমস্যা হয়, পা পচে যেতে পারে, অনুভুতি কমে যেতে পারে, এমনি স্ট্রোক ও মৃত্যুঝুকি বেড়ে যায়।

ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা ৪ ধরনের হয়ে থাকে জেনে নিনঃ

টাইপ 1ঃডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের সব  ইনসুলিন নষ্ট হয়ে যায়। ডায়াবেটিস রোগীদের আলাদাভাবে ইনসুলিন দেওয়া না হয় তাহলে তারা মারা যেতে পারে ।  প্রায় 5 থেকে 10 শতাংশ মানুষ এই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।  টাইপ 1

 টাইপ 2ঃ আবার কারো কারো শরীরে ইনসুলিন আছে সেটা কাজ করতে পারছে না। তখন আমরা যে খাবার খাই না কেন তার গ্লুকোজ হিসেবে শরীরের জমে যায়। প্রায় আশি থেকে নব্বই শতাংশ মানুষ টাইপ 2 ডায়াবেটিস ভুগছেন।

টাইপ 3ঃ সাধারণ গর্ভবতী মায়েদের মধ্যে পাওয়া যায় গেস্টেশনাল ডায়াবেটিস।গর্ভাবস্থার ক্ষেত্রে, প্লাসেন্টার কিছু হরমোন ইনসুলিন প্রতিরোধের জন্য দায়ী।বেশিরভাগ মহিলাই প্রসব পরবর্তী স্বাভাবিক গ্লুকোজ সহনশীলতায় ফিরে আসেন কিন্তু পরবর্তী জীবনে ডায়াবেটিস হওয়ার যথেষ্ট ঝুঁকি (30-60%) থাকে। প্রায় ২-৫ শতাংশ মানুষ এ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়।

টাইপ 4ঃ রক্তে শর্করা কোন বৃদ্ধি পায় না এটি হলো প্রচণ্ড দীপ্তস্বর অনুভূতি পায় কমেন্টি ডায়রেক্ট টিফিন হরমোন এর কারণে অতিরিক্ত প্রস্রাব হয়ে থাকে। এন্ড এন্টি ডায়াবেটিস হরমোন স্মরণ করে যারা প্রসাবের উৎপাদনে রয়েছেন এটি প্রায় 1 থেকে 2 শতাংশ মানুষের হয়ে থাকে। 

ডায়াবেটিস হলে যে খাবারগুলো খাওয়া যাবে না জেনে মনঃ 

  • চিনি, মিষ্টি, গুড়, জ্যাম, মধু, জেলি, মিষ্টি, পানীয়, মদ, দুধের সর, আইসক্রিম, কেক, মিষ্টি বিস্কুট, মিষ্টি দই, পেস্ট্রি,ডালডা  ইত্যাদি।

ডায়াবেটিস হলে চর্বিযুক্ত খাবার গুলো খাওয়া যাবেনাঃ 

  • গলদা চিংড়ি মগজ কলিজা মাংস ভাজা খাদ্য পাকা কলা খেজুর কিসমিস আখের রস আঙ্গুর ফল ইত্যাদি ডায়াবেটিস রোগীদের খাবার গুলো একদম নিষেধ করা হয়েছে।

 ডায়াবেটিস রোগীদের যে খাবারগুলো খাওয়া যাবেঃ

  • চিড়া, মুড়ি, গম,  চাল, নুডুলস রুটি নোনতা বিস্কুট আর বাদাম শিমের বিচি আলু গাজর শালগম শাক শসা গাজর খিরা ইত্যাদি।

 চর্বিযুক্ত খাবারঃ

  • ফল, মাংস, মাছ, দুধ, পনির,  দুধ,  ড্রিম, সানা  ইত্যাদি।
  • ডায়াবেটিস রোগীদের সকালের নাস্তা আটটার মধ্যে তিনটি ছোট পাতলা আটার রুটি বা পাউরুটি ডিম এক বাটি ডাল সবজি ও ফল ইত্যাদি। সকাল বেলা 11 টায় যে খাবারগুলো খাওয়া যাবে মুড়ি নোনতা বিস্কুট একটি ফল। 
  • দুপুরে খাবার রাখতে হবে 4 কাপ ভাত দুই টুকরো মা বা মাংস সবজি সালাদ লেবু। বিকেলে এক কাপ দুধ খাবেন 30 গ্রাম ডাল এবং বাদাম।রাতের বেলায় আটার রুটি চারটি 3 কাপ ভাত এক টুকরা মাংস এর সঙ্গে সবজি খেতে পারেন।

মটরশুঁটিঃ 

  • হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা পালন করে মটরশুঁটি। মটরশুঁটি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। প্রায় প্রতিদিন ২০০ গ্রামের মতো মটরশুঁটি খেলে হৃদরোগ, টাইপ-২ ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপজনিত বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমে যায়। 
  • বর্তমানে আমাদের দেশে প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায় মটরশুঁকি। যদি না থাকে তবে যখন মটরশুঁটির মওসুম, তখন বেশি করে কিনে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিন। তারপর সারা বছর খাদ্য তালিকায় রাখুন এই সবজি। তেলাকুচা পাতা এবং ফল সবজির মতো খান। মেথি চূর্ণ করেও খেতে পারেন।

তুলসীঃ 

  • ঔষধি গাছ তুলসীকে বলা হয় ডায়াবেটিস রোগের ইনসুলিন । গবেষণায় দেখা গেছে, তুলসীপাতা বিভিন্নভাবে ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। খালি পেটে তুলসীপাতার রস পান করলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায়। চাইলে তুলসীর রস আপনি চায়ের সাথে মিশিয়েও খেতে পারেন।

কার্বোহাইড্রেট বা শর্করাঃ 

  • কার্বোহাইড্রেট হল এক ধরনের জৈব রাসায়নিক পদার্থ। যা হল কার্বন, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের সমন্বিত রূপ। এটি একটি জৈব যৌগ। যাতে হাইডোজেন ও অক্সিজেনের অনুপাত ২:১। কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্যের প্রধান কাজ হল শরীরে শক্তির যোগান দেওয়া। কার্বোহাইড্রেট শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে থাকে।
  • কার্বোহাইড্রেট শরীরে কোষ্ঠবদ্ধতা দূর করে। ভাত, রুটি, পাউরুটি, মিস্টি জাতীয় খাবার ইত্যাদি কার্বোহাইড্রেট এর উৎস। ডায়াবেটিস রোগীদের কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার যথা সম্ভব কমিয়ে দিতে হবে।
  • ।প্রোটিন বা আমিষঃ 

  • অ্যামাইনো এসিডের পলিমার দ্বারা বেষ্টিত উচ্চ ভরবিশিষ্ট নাইট্রোজেন যুক্ত জটিল যৌগকে প্রোটিন বা আমিষ বলে। খাদ্যের ছয়টি উপাদানের মধ্যে প্রোটিন হল একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। প্রোটিন সুস্বাস্থের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রোটিন মূলত কোষ গঠনে সাহায্য করে। অঙ্গের গঠন, কার্যকারীতা ও নিয়ন্ত্রনের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • উদ্ভিদ ও প্রাণীভিত্তিক উভয় খাবারেই প্রোটিন বিদ্যমান থাকে। ভাল প্রোটিন জাতীয় খাবার হলো ডিম, অল্প চর্বি জাতীয় দুধ, টক দই দেশজ মাছ ও মুরগি ইত্যাদি। ডায়াবেটিস রোগীদের প্রোটিন জাতীয় খাবারে বাধা নেই যদি না তাদের কিডনি তে কোন জটিলতা না থাকে।

প্রয়োজনীয় ক্যালোরিঃ 

  • একজন মধ্য বয়সী বা বৃদ্ধ ডায়াবেটিস রোগীর সঙ্গে ১০০০ – ১৬০০ কিলোক্যালরি প্রয়োজন। একটি বয়স্ক ডায়াবেটিস রুগীর ১৪০০ -১৮০০ কিলোক্যালরির বেশি হবে না। একজন কম বয়সী ডায়াবেটিস রুগী হবে ১৮০০ -৩০০০ কিলোগ্রাম। প্রতিদিন কার্বোহাইড্রেট গ্রহণের পরিমাণ: প্রায় মোট ক্যালোরি ১৮০ গ্রাম। প্রতিদিন প্রোটিন গ্রহণের পরিমাণ: ৬০ গ্রাম থেকে ১১০ গ্রাম। প্রতিদিন ফ্যাট গ্রহণের পরিমাণ: ৫০ গ্রাম থেকে ১৫০ গ্রাম।

ডায়াবেটিস রোগীর ডায়েট চার্টঃ

সকালের নাস্তা -সময়- 7:30 থেকে আটটা পর্যন্তঃ

গমের আটার রুটি এক পিস । এক থেকে দুই পিস ডিম। এক গ্লাস দুধ, মুরগি এবং হাঁসের ডিম সিদ্ধ অথবা ভাজি। শাকসবজি এক কাপ।

দুপুরের খাবার- 1:30 থেকে দুইটা পর্যন্তঃ 

দেড় কাপ ভাত, মাছ-মাংস 50 গ্রাম, শাকসবজি  1 কাপ পাতাযুক্ত সোহাগ দেড় কাপ অন্যান্য সবজি ডাল এক কাপ ডাল মাঝারি ঘন

বিকালের নাস্তা সময় 5:30 থেকে ছয়টা পর্যন্তঃ

সিজনাল ফল পছন্দমত একপিস সারভিং সিজনাল ফল, বুট, বাদাম, কলা, ১/৪ কাপ

শাকসবজি এক কাপ

রাতের খাবার সময় নয়টা থেকে নয়টা ত্রিশ মিনিটঃ 

ভাত অথবা রুটি১/২ কাপ আটার রুটি হতে হবে। মাছ-মাংস 60 গ্রাম।



শাহীন

আমি শাহীন । পেশায় একজন ব্যবসায়ী । পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করতে পছন্দ করি। আশা করছি আমার শেয়ারকৃত তথ্য থেকে আপনারা উপকৃত হচ্ছেন আর তা হলেই আমার পরিশ্রম স্বার্থক।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Ads

Ads