চুলের যত্ন নেয়ার মঠিক পদ্ধতি
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক নিশ্চয়ই আপনার অনেক ভালো আছেন ।আজ আপনারা আপনাদের সাথে চুলের যত্ন নিয়ে আলোচনা করব। ছেলে হোক বা মেয়ে চুলের যত্ন আমরা প্রত্যেকেই করে থাকি। চুল প্রত্যেকটা মানুষের কাছে একটা সৌন্দর্যের বিষয়ে। চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক চুলের যত্ন এই আর্টিকেলটি। আশা করছি আপনারা যদি আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে অবশ্যই আপনার চুলের যত্ন সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা পাবেন।
সুন্দর ও স্বাস্থ্যজ্জ্বল চুলের জন্য কার্যকারী টিপস জেনে নেওয়া জরুরী চুলের যত্নে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় তেল। ঘরোয়া উপায়ে চুলের যত্ন নিতে পারেন। চুলের যত্ন নিতে সকাল থেকে রাত নানা উপায়ে মেনে চলতে পারেন। সহজ উপায়ে আপনারা চুলকে সুন্দর করতে নিয়মিত যত্ন নিন। ছেলেদের চুলের যত্ন নেয়া জরুরি। রুক্ষ চুলের যত্ন নিতে পারেন প্রাকৃতিক উপায়।
আরো পড়ুনঃ ওরি ব্যাংকে নিয়োগ চলছে
ঘরোয়া উপায়ে চুলের যত্ন করে নিন খুব সহজেই
কাজে ব্যস্ত থাকলে চুলের যত্ন নেয়া হয় না। আবার চুলের খুব ভালোভাবে যত্ন নেয়ার উপকরণ কেনাকাটা করা ও সময় সাপেক্ষে ব্যাপার। তারপরও কিছু বাড়তি যত্ন অবশ্যই দরকার। ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করেও আমরা চুলের সঠিক যত্ন নিতে পারি। চুলের যত্নে বাহিরের উপকরণ থেকে ঘরোয়া প্যাক ব্যবহার করা বেশি উপকারী। আমরা আজকে আপনাদের ঘরোয়া উপায়ে চুলের যত্ন নিতে কিছু কার্যকারী প্যাক সম্পর্কে ধারণা দিব। খুব বেশি না পারলে ও সপ্তাহে দুই দিন অন্তত নিয়ম করে এই ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো ব্যবহার কড়াই যায়। তাই চলুন জেনে নেই কিভাবে করবেন ঘরোয়া উপায়ে চুলের যত্ন।
ডিম
ঘরে যদি থাকে তাহলে সেটি চুলের জন্য ব্যবহার করতে পারেন। তবে যদি আপনার চুল রুক্ষ হয় তাহলে ডিমের সাদা অংশ বাদে শুধু কুসুম তেল মিশিয়ে নেবেন। আর পাতলা চুলের জন্য শুধু ডিমের সাদা অংশ নিবেন। মিশ্রণ তৈরি হয়ে গেলে চুলে ভালোভাবে মেখে 10 মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলবেন। এটি চুলের জন্য খুব কার্যকারী। খুব সহজেই প্যাক তৈরি করে ব্যবহার করতে পারেন।
সবচেয়ে সহজ এবং কম সময়ে ফল পাবার জন্য ডিম হতে পারে আপনার চুল ঘন করার উপাদান। ডিম হচ্ছে প্রাকৃতিক প্রোটিন যা চুলকে ঘন করতে সাহায্য করে। এর ভিটামিন চুলের স্বাস্থ্য চমৎকার কাজ করে।
টক দই
চুলে কন্ডিশনার অনেকেই ব্যবহার করলে প্রচুর চুল পড়ে। তাই প্রতিদিন কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন না। টক দই কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে। টক দই চুলে রেখে দিন 10 মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এভাবে শ্যাম্পুর পর টক দই ব্যবহার করলে আপনার চুল ঝলমলেল উজ্জল যেমনটি আপনি চান।
চা পাতা
চা খাওয়ার পর চা পাতা ফেলে দেবেন না। সেটি আরেকবার ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে রেখে দিন। গোসলের শেষে চায়ের পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে এই চা পাতা।
কলা ও মধু
সিল্কি চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে কলা আর মধুর মিশ্রণ ব্যবহার করুন। তবে এই পেস্ট 10 মিনিটের বেশি তুলে রাখবেন না। তাহলে চুল ধুতে কষ্ট হবে। 5 থেকে 6 মিনিট রেখে তারপর ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।
ক্যাস্টর অয়েল
চুল ঘন করার জন্য এবং দ্রুত বাড়ার জন্য ক্যাস্টর অয়েল অনেক উপকারী। এই তেল ব্যবহার করলে চুল অনেক ঘন হয়। তাই এই তেল অল্প করে চুলে ম্যাসাজ করে 30 মিনিট রাখবেন নারকেল তেলের সাথে মিক্স করে অয়েল ম্যাসাজ করলে উপকার পাবেন। সারারাত রেখে সকালে ধুয়ে ফেলতে পারেন।
পেঁয়াজের রস
ঘরে থাকা প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় একটি জিনিস হল পেঁয়াজ। চুলকে মজবুত রাখার জন্য খুবই উপকারী। রুক্ষ চুলে পেঁয়াজের রস এর সাথে লেবুর রস অল্প তেল মিশিয়ে নেবেন। তারপর 10 মিনিট হয়ে গেলে আপনি আপনার চুলটি ধুয়ে ফেলবেন।
সরিষার তেল ও নারিকেল তেল
সরিষার তেল ব্যবহার করলে চুল ঘন হয়। এটি সবসময় ঘরে কম বেশি থাকে। চুলের সৌন্দর্য বাড়াতে সাহায্য করে। খুবই অল্প পরিমাণ সরিষার তেল নারিকেল তেল মিশিয়ে নেবেন। তারপর চুলের তালুতে আড়ালে মিস করে নিবেন। 10 মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলবেন। সরিষার তেলের বদলে ক্যাস্টর অয়েল বা আমলা অয়েল ইউজ করতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ জন্ম নিবন্ধন হারিয়ে গেলে করণীয়
ঘরে থাকা উপকরণ দিয়ে চট জলদি কীভাবে চুলের যত্ন নেয়া যায় দেখলেন তো! খুব সহজেই ঘরোয়া উপায়ে চুল করতে পারেন স্বাস্থ্যউজ্জ্বল। এতে খরচ কম হবে। একদম ঘরে থাকা উপকরণ দিয়ে চুল হবে ঝলমলে। তাই এই কার্যকারী প্যাক গুলো ব্যবহার করুন এবং ফিরে পান চুলের আসল সৌন্দর্য।
চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি
ক্ষতিকর কেমিক্যাল এর ব্যবহার, আয়রন করা, অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে চুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে, চুলের ঘনত্ব কমে যায়, হয়ে পড়ে নিষ্প্রাণ, নির্জীব। অনেকের চুল পড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা পেতে নানা রকমের হেয়ার ট্রিটমেন্ট করেন। এর কোনটি দীর্ঘস্থায়ী হয়না। ব্যয়বহুল ট্রিটমেন্ট এর চেয়ে বাড়িতে বসেই প্রাকৃতিক ভাবে পাতলা চুল ঘন করার জন্য টিপস দেখে নিন তাহলে।
চুলের ঘনত্ব বাড়াতে প্রাকৃতিক উপায় তেল
চুলের যত্নে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় তেল। আর এই তেলে হতে পারে আপনার চুল ঘন করার সবচেয়ে সহজ উপায়। চুলের তেল বলতে সাধারণত সবাই নারিকেল তেল কে বুঝে থাকেন। তবে চুল ঘন করা এবং যাদের চুল পড়ে যাচ্ছে তারা এই তেলের মিশ্রণ ব্যবহার করলে ভাল ফল পাবেন। আমাদের দেশের সবচেয়ে সহজলভ্য-
১. আমলা অয়েল ক্যাস্টর অয়েল
২. তিলের তেল ও সরিষার তেল
৩. অলিভ অয়েল ক্যাস্টর অয়েল
আরো পড়ুনঃ কবুতরের চিকিৎসা ও পরিচর্যা
রাতে ঘুমানোর আগে এই তেলের মিশ্রণ হালকা গরম করে নিয়ে মাথার তালুতে ভালোভাবে ম্যাসাজ করে নিতে হবে। চুলের গোড়ায় সেজন্য একটু সময় নিয়ে আস্তে আস্তে পুরো চুল আর তালুর তেল দিয়ে নিতে হবে। সারারাত রাখা সম্ভব না হলে গোসলের এক ঘন্টা আগের চুলের তেল দিয়ে তারপর শ্যাম্পু করে নিতে হবে। সপ্তাহে 2 বার যদি এটা করা যায় এক মাসের মধ্যে চুল পাতলা ভাব কমে আসবে চুল পড়া বন্ধ করে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে।
জেলাটিন
সাধারণত জেলি তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয়। তবে চুল ঘন করার জন্য এটি বেশ কার্যকরী উপকরণ। বাজারে সাধারণ দুই রকম জেলাটিন পাওয়া যায়। ফ্লেভার সহ এবং ফ্লেভার ছাড়া। তবে চুলের জন্য ফ্লেভার ছাড়া জেলোটিন ব্যবহার করায় ভালো হবে। জেলাটিন ব্যবহার করতে পারেন দুই ভাবে। শ্যাম্পুর সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন অথবা আলাদাভাবে প্যাক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন আপনার ইচ্ছামত।
গরম পানিতে জেলাটিন নরম করে নিন এরপর আপনার শ্যাম্পুর সাথে মিশিয়ে ফেলুন। প্রতিবার শ্যাম্পু করার পূর্বে বোতল ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে নিন। তারপর ব্যবহার করুন। এতে কিছুটা ঘন দেখাবে। প্যাক হিসেবে ব্যবহার করার জন্য গরম পানিতে জেলাটিন দিয়ে তা ধীরে ধীরে নেড়ে মিশিয়ে নিন। তার পর চুলে লাগান। জেলাটিন আপনার চুলকে ক্ষতিগ্রস্ত স্টান্ট গুলোকে ভরাট করতে সাহায্য করবে এবং নিয়মিত ব্যবহারে আপনার চুলকে ঘন দেখাবে এবং উজ্জ্বল করবে। চুলের যত্ন নেয়ার এটাই আসল পদ্ধতি।
অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরা জেল বের করে নিন। এখন অবশ্য রেডি টু ইউজ জেল কিনতে পাওয়া যায়। চার চামচ মধুর সাথে মিক্স করে সরাসরি চুলে এবং মাথার তালুতে লাগিয়ে ফেলুন। তাইলে ট্রিটমেন্ট ক্রিম যোগ করতে পারে। চুল ঘন করার সাথে সাথে এটি আপনার চুলের আগা ফেটে যাওয়া রোধ করবে।
আরো পড়ুনঃ কিডনির ব্যথা কোথায় হয়
আশা করছি আপনারা চুলের যত্ন সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পারলেন। ঘরোয়া পদ্ধতি কিভাবে চুলের যত্ন নেয়া যায় সেটাও আমরা আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনার যদি আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে অবশ্যই আপনারা বুঝতে পারবেন চুলের যত্নে কি কি ব্যবহার করলে চুল পড়া বন্ধ হবে এবং চুলের ঘনত্ব এবং উজ্জলতা দেখাবে। ছেলে অথবা মেয়ে সবাই চায় তাদের চুল ঘন এবং উজ্জ্বল দেখানোর জন্য। আশা করছি আপনারা চুলের যত্ন সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।