নিম পাতার উপকারিতা
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা ভালো আছেন। আমরা আপনার নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব। নিম পাতার উপকারিতা অনেক। আমরা আজকে জানবো নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে।
নিম হচ্ছে একটি গাছ। নিম গাছের পাতা ও বীজ ঔষধ তৈরীর ব্যবহৃত হয়। নিম পাতার চোখের রোগ, রক্তাক্ত নাক, কুষ্ঠ রোগ, পেট খারাপ হওয়া, ত্বকের সমস্যা,, জ্বর, ডায়াবেটিস, মাড়ির রোগ, লিভারের জন্য ব্যবহৃত হয়। নিম পাতা শুধু যে উপকার করে তার নয় এর কিছু অপকারিতা আছে।তাহলে শুরু করা যাক নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে।
১.নিম এন্টি এজিং বৈশিষ্ট্যের জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত। এর এন্টি অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য ক্ষতিকারক ইউ uv- ইউভি রাশি রাশি, দূষণ ও অন্যান্য ত্বককে রক্ষা করে। নিমের ভিটামিন ও ফ্যাটি এসিড ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা উন্নত করে এবং বজায় রাখে, বলিরেখা ও কমায় ত্বকের। এটি আপনার ও আপনাকে ত্বকের পুনরুজ্জ্বীবিত ও তরুণ দেখাবে।
২. ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ এর চিকিতসায় নিমপাতার ব্যবহার করা হয়। এগুলো চিকেন পক্স ও চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়। নিম পাতার পেস্ট তৈরি করে আক্রান্ত স্থানে লাগালে বা নিমপাতা সিদ্ধ করার পানি দিয়ে আক্রান্ত ব্যক্তিকে গোসল করালে আক্রান্ত ব্যক্তি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায়।
৩.নিম পাতা আমাদের শরীরের হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে। নিম পাতায় শক্তিশালী ক্যালসিয়াম ও খনিজ উপাদান আছে যা আমাদের শরীরের প্রতিটি হাড় মজবুত করতে অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে।
আপনি চাইলে নিমের পাতা তেল বানিয়ে নিতে পারেন। বয়স্ক রোগীদের বাতের ব্যথা ও বয়সের সাথে সাথে আসা যে কোন সত্যতা ব্যথা উপশম করতে পারে।
৪. বাড়ির চারপাশের পোকামাকড় তাতে নিম পাতা খুবই উপকারী। নিম পাতা উড়িয়ে পোকামাকর থেকে রক্ষা পেতে পারেন।
৫. নিম পাতা বিভিন্ন জীবাণু কে আপনার শরীরের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। নিয়মিত নিম পাতা বা নিম পাতার বড়ি খেলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
৬. নিমপাতা চিবানোর কারণে আমাদের মুখের লালায় একটি পিএইচ স্তর বজায় থাকে যা মুখের স্বাস্থ্যকে যেকোনো ধরনের ক্ষয় থেকে রক্ষা করে। নিম জ্বর কমাতে ব্যাপক সাহায্য করে। বিশেষ করে ম্যালেরিয়া।
৭.দাঁতের পরিছন্নতা ও যত্নের জন্য নিমের ডাল একটি বহু প্রাচীন ঐতিহ্য। আগের যুগের মানুষেরা নিমের ডাল দিয়ে দাঁত ব্রাশ করতে। তবে বর্তমান যুগের নিয়ম ভিত্তিক টুথপেস্ট পাওয়া যায়। এন্টি ব্যাকটেরিয়া, এন্টিফাঙ্গাল, বৈশিষ্ট্যের কারণে তাদের সমস্ত ধরনের সংক্রমণ ও রোগকে দূরে রাখে।
৮. নিম চুলের গুনমান কে শক্তিশালী করতে ও চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। চুলের কন্ডিশনার হিসেবে নিমের পেস্ট ব্যবহার করা যায়। ত্বকের ব্রণ ও ব্রণের দাগ সারাতে সাহায্য করে নিমের পেস্ট। ত্বকের শুষ্কতা চুলকানি ও লাল ভাব দূর করে এই নিমের পেস্ট। এগুলো নিম পাতার উপকারিতা ।
এলার্জি দূর হবে নিম পাতায়
এলার্জির সাথে আমরা কমবেশি সবাই পরিচিত। এলার্জির কারণ যখন তখন অস্বস্তিতে ভোগেন অনেকেই। এলার্জি চুলকানি নয়, হাসি কিংবা হাঁপানি ও এলার্জির মধ্যে পড়ে। এরশাদ যে কতটা ভয়ঙ্কর তা শুধু ভুক্তভোগীরা ও জানেন।
এলার্জির কারণে অনেকে খাদ্য তালিকা থেকে বাদ রাখে প্রিয় খাবার। যেমন গরুর দুধ, গরুর মাংস, হাঁসের ডিম, ইলিশ মাছ, চিংড়ি, পুটি,, বোয়াল, বেগুন , কচু, হাঁসের মাংস ইত্যাদি। কারণ এলার্জির কারণে অনেকের চুলকাতে থাকে এবং সঙ্গে সঙ্গে চাকা হয়ে লাল হয়ে যায়। কারো চোখ চুলকায়, এ থেকে পানি পড়া ও চোখ লাল হয়ে ফুলে ওঠে।
চর্মরোগ, হাঁপানি ও নাক দিয়ে পানি পড়া সমস্যা হয় এলার্জির কারণে। তাই এ থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই নিয়মিত ঔষধ খেয়ে থাকেন। তবে করার ঔষধ করা সম্ভব ঔষধ এলার্জি দূর করার প্রাকৃতিক মাধ্যমে। নিম পাতার মিশ্রনে এক মাসের মধ্যে সহজ উপায়ে এলার্জিকে চিরবিদায় করা যায়।
নিমপাতার মিশ্রন বানানোর পদ্ধতি
1 কেজি নিমপাতা ভালো করে রোদে শুকিয়ে নিন। তারপর শুক্ল নিমপাতা পাটায় পিষে গুঁড়ো করে একটি কাচের পাত্রে ভরে রাখুন।
ব্যবহারের পদ্ধতি
1 চা চামচের 3 ভাগের 1 ভাগ নিম পাতার গুঁড়া এবং 1 চা-চামচ ভুষি একগ্লাস পানিতে আধাঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন। আধাঘন্টা পর চামচ দিয়ে নেড়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে দুপুরে এবং রাতে শোয়ার আগে এই মিশ্রণ খেতে পারেন। একনাগাড়ে একমাস খাওয়ার পর এলার্জি অনেকটাই কমে যাবে এই মিশ্রণ খেলে। এলার্জির জন্য আমরা নিম পাতার উপকারিতা পেয়ে থাকি।
গোসলের পানিতে নিমপাতা মেশানোর উপকারিতা
নিমপাতা প্রায় সবার কাছে পরিচিত। বিশেষ করে গ্রামবাংলায় নিম গাছ বেশি দেখা যায়। ভেজস চিকিৎসায় নিমপাতার ব্যবহার বহুল। যদি বাড়িতে একটি নিম গাছ থেকে একজন ডাক্তারের চেয়ে সেটি বেশি কাজ করে। ঔষধি গাছ ডাল, পাতা,, রস,, ফল, ফুল, তেল, বা কল, কি কাজে লাগে। নিম একটি বহু বর্ষজীবি ও চিরহরিৎ বৃক্ষ ।
গৃষ্ম কাল শেষে বর্ষার শুরুতেই সময়ে সর্দি, জ্বর, কাশি, নানারকম এলার্জি সাধারণ অসুখ হয়। প্রতিবছর এই সময়ে মনটা স্বাভাবিক হলেও করোনাভাইরাস এর কারণে এখন সবই ভয়ের কারণ। তবে সর্দি-জ্বর-কাশি হলেই আতঙ্কিত হবেন না বরং মেনে চলতে হবে সাবধানতা।
ত্বকের যত্নে নিম পাতার উপকারিতা
ত্বকের জন্য আমরা অনেকেই বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে থাকি। কিন্তু সময় না থাকার কারণে কেউ কেউ ভালোভাবে যত্ন নিতে পারে না। সারাদিনের পরিশ্রম, সকল ও দুলা বালি তে লাবণ্য হারিয়ে নিষ্প্রাণ হয়ে যায় ত্বক। ত্বকের সতেজতা ও প্রাণবন্ত রাখতে সঠিক পদ্ধতিতে ত্বকের যত্ন নেওয়া খুবই জরুরী।
আমাদের শরীরের ত্বক ও মুখের ত্বকের গঠন একেবারেই আলাদা। মুখের ত্বক অনেক বেশি নাজুক অনেক বেশি কোমল। তাই শরীরের বিভিন্ন রকম সাহায্য করতে পারলেও মুখের ত্বক তা একদমই পারেনা। সাবান ব্যবহারে ত্বক হয়ে যায় শুষ্ক। এছাড়াও ত্বকের পিএইচ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সাবান ব্যবহারের কারণে যারা হেরফের হয়।
অনেক আগে থেকেই ও হলুদের বহুল ব্যবহার দেখা যায়। ঔষধি গাছ হিসেবে নিমের ব্যবহার হয়ে আসছে প্রায় 5000 বছর আগে থেকে। ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া নাশক হিসেবে যা খুবই কার্যকর। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এর জুড়ি মেলা ভার। তাই ত্বকের জন্য ব্যবহার করতে পারেন নিমপাতা।
ত্বকের জন্য নিম পাতা ব্যবহারের পদ্ধতি
কয়েকটি নিম পাতা, অল্প হলুদের গুঁড়ো এবং ঠাণ্ডা তরল দুধ নিয়ে পেস্ট তৈরি করে ত্বকে লাগিয়ে ম্যাসাজ করুন। 15 মিনিট পর শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। ও হলুদ ত্বকের সংক্রমণ এবং ব্যাকটেরিয়া দূর করে। এছাড়াও তৈলাক্ততা এবং ব্রণের প্রকোপ কমায়।
নিম পাতার পাউডার, গোলাপজল এবং লেবুর রস একত্রে মিশিয়ে 20 মিনিট লাগিয়ে শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুই দিন ব্যবহার করলে ব্রণ দূর হবে।
নিমপাতা সিদ্ধ করে পেস্ট করে মুখে লাগিয়ে 10 মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের দাগ থাকবেনা। নিম পাউডার এর সঙ্গে তরল দুধ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এবার কয়েক ফোঁটা লেবুর রস দিয়ে দিন। মুখ ও ঘাড়ে লাগান। শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে।
সবশেষে বলা যায় নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা আপনাদের কিছুটা হলেও ধারণা দিতে পেরেছি। আপনারা যদি নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে কিছু জানতে চান তাহলে আমাদের আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত পড়বেন। তাহলে আপনার নিম পাতার উপকার সম্পর্কে কিছুটা ধারনা পাবেন। নিমপাতা নিমপাতার শুধু যে উপকারিতা অপকারিতা আছে। আপনাদের যদি আরো কিছু জানার থাকে তাহলে আপনারা আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন। আমরা আপনাদের সঠিক তথ্য দেয়ার চেষ্টা করব।