বিজয় দিবসের নমুনা ভাষণ |
বিজয় দিবসের সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা ভূমিকা
বিজয় দিবসের ভাষণ সম্পর্কে আজকে কথা বলব। বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পাশাপাশি বিভিন্ন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে নানা ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে বিজয় দিবসের ভাষণ দেওয়াটা খুবই জরুরী। তাই আজকের পোস্টে আমরা বিজয় দিবসের ভাষণ কিভাবে দিবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
প্রথমে আমরা বিজয় দিবসের ভাষণ সম্পর্কে কিছু নিয়ম নীতি আলোচনা করব। এরপর আমরা কিভাবে বক্তৃতা দেবেন সে সম্পর্কেও আলোচনা করব। সেই সঙ্গে বিজয় দিবসের নমুনা ভাষণ দেওয়ার চেষ্টা করব।
ভাষণ দেওয়ার নিয়ম
ভাষণ দেওয়ার ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়মাদি রয়েছে। সর্বপ্রথম আপনি যেখানে ভাষণ দেবেন সেই মঞ্চে উপস্থিত আছে সে সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। এছাড়া কোন বিষয়ের উপর ভাষণ দিতে যাচ্ছেন সে বিষয়ে আগে থেকে প্রস্তুতি থাকতে হবে। তবে আপনি যে বিষয়ে ভাষণ দেবেন সে বিষয়ে যদি পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকে তাহলে পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়াও ভাষণ দেওয়া সম্ভব।
বিজয় দিবসের ভাষণ দেওয়ার নিয়ম
বিজয় দিবসের ভাষণে অবশ্যই বিজয় দিবস কেন্দ্রিক আলোচনা করতে হবে । সে ক্ষেত্রে কিভাবে আমরা বাংলাদেশের বিজয় অর্জন করেছি, বাংলাদেশের বিজয়ের ইতিহাস, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, বাংলাদেশ স্বাধীন করার ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের কাহিনী ইত্যাদি নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যায়। বাংলাদেশের অসম্মান হয় এমন কোন কথা ভাষণে বলা যাবে না। এছাড়া বাংলা মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ, মুক্তিযুদ্ধের গাজী, অর্থাৎ এবং মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে কোন ধরনের বাজে মন্তব্য করা যাবে না।
মঞ্চে উঠে ভাষণ দেওয়ার নিয়ম
আপনি যেখানে ভাষণ দিতে চাচ্ছেন সর্বপ্রথম মঞ্চে যারা উপস্থিত রয়েছে সকলকে সম্মোধন করে অভিনন্দন জানাতে হবে। যেমন আপনি এভাবে বলতে পারেন.. মঞ্চে উপস্থিত মাননীয় সভাপতি, আরো উপস্থিত অত্র প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার প্রধান শিক্ষক, মঞ্চে উপস্থিত আমার সহকর্মী, মঞ্চে উপস্থিত সম্মানিত অভিভাবকবৃন্দ এছাড়া আরো উপস্থিত প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ সকলের প্রতি আমার অভিনন্দন আসসালামু আলাইকুম।
আরো পড়ুনঃ ১৬ ডিসেম্বরের শুভেচ্ছা
উপস্থিত ব্যক্তিবর্গের প্রতি সম্মান অথবা সংবর্ধনা জানানোর পর আপনার মূল বক্তব্য শুরু করতে হবে। বক্তব্যের মাঝে অবশ্যই আপনি যে বিষয়ের উপর বক্তব্য দিচ্ছেন সেই বিষয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকার চেষ্টা করবেন। যেহেতু বিজয় দিবসে ভাষায় কথা বলছে সেও তো আপনাকে বিজয় দিবসে ভাষণে শুধুমাত্র বিজয়ের কাহিনী বা গল্প বলতে হবে।
ভাষণ সংক্ষিপ্ত করুন
ভাষণ দেওয়ার সময় অবশ্যই আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করতে পারেন। এছাড়া আপনার বক্তৃতা শুনে মঞ্চে উপস্থিত সকলে কতটা উপভোগ করছে সেদিকেও নজর রাখা উচিত। যদি মনে হয় আপনার বক্তব্য শুনে সকলে বেশ উপভোগ করছে তাহলে সে টাকা আর একটি উপভোগ্য করার চেষ্টা করুন। অবশ্যই বক্তৃতা সংক্ষিপ্ত করবেন। কারণ আপনি যেখানে বক্তৃতা দিচ্ছেন সেখানে শুধুমাত্র আপনি বক্তিতা দিবেন এমন নয় আরো অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ কে বক্তৃতা দিতে হবে। তাই বক্তব্য দেওয়ার সময় অবশ্যই সময় জ্ঞান থাকা জরুরি।
বিজয় দিবসের নমুনা ভাষণ
মঞ্চে উপস্থিত মাননীয় সভাপতি, শ্রদ্ধেয় প্রধান শিক্ষক, পাশাপাশি আমার গুরুজনেরা অর্থাৎ আমাদের বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক বৃন্দ, এছাড়া আমার সামনে উপস্থিত সম্মানিত অভিভাবকবৃন্দ ও আমার সহপাঠী বন্ধুগণ সকলের প্রতি আমার সালাম আসসালামু আলাইকুম।
আজ এই বিজয়ের দিনে আমরা সবাই এখানে উপস্থিত হয়েছি। আজ বিজয়ের দিন তবে এই বিজয় এত সহজে আসেনি, দীর্ঘ নয় মাস মুক্তিযুদ্ধ, লক্ষ লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে, লক্ষ লক্ষ তারা জীবনের বিনিময়ে, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে আমরা এই স্বাধীনতা ও বিজয় পেয়েছি। এই বিজয়ের পেছনে রয়েছে অকল্পনীয় আত্মত্যাগের কাহিনী। যেটা হয়ত এ প্রজন্মের অনেকেই অনুভব করতে পারে না।
প্রতিবছরই আমরা বিজয়ের এই দিনে সমবেত হই এবং যারা আমাদেরকে এই বিজয় উপহার দিয়েছে তাদের আত্মার প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা যারা আমাদেরকে এই বিজয় উপহার দিয়েছে তাদেরকে যেন তিনি সুখে শান্তিতে রাখেন। এছাড়া যে সকল মায়ের বুক খালি করে দামাল ছেলেরা এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গিয়েছেন সে সকল মায়ের প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। হয়তো আমরা মুখে দুইটা শ্রদ্ধা বা সমবেদনা প্রকাশ করব কিন্তু এই সমবেদনা বা শ্রদ্ধা দিয়ে তাদেরকে যথার্থ সম্মান করা যায় না বলে আমি মনে করি।
বিজয় সম্পর্কে বলতে গেলে আমরা অনেক কিছুই বলতে পারি। তবে আজকে আমার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য এখানেই শেষ করতে চাচ্ছি। তার আগে বলতে চাচ্ছি যে আমরা তো বিজয় পেয়েছি কিন্তু বিজয়ের যে লক্ষ্য উদ্দেশ্য ছিল আমরা কি আজও সেটা অর্জন করতে পেরেছে কিনা সেটা একবার ভাবতে হবে। আমরা যারা নতুন প্রজন্ম রয়েছে তাদেরকে বিজয়ের প্রকৃত উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য কাজ করতে হবে। প্রত্যেক নাগরিকের নিজ নিজ দায়িত্ব যদি আমরা সঠিকভাবে পালন করি তবেই আমাদের বাংলাদেশের বিজয়ের প্রকৃত উদ্দেশ্য পূরণ হতে বেশি দেরী লাগবে না। আজ আমরা শপথ করি যেন আমরা প্রত্যেকেই নিজেদের দায়িত্ব টা পরিপূর্ণভাবে পালন করি।
সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন যেন আমরা সেই কাজটা সঠিকভাবে করতে পারি। এই বলে আমি আমার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষ করছি সকলের প্রতি আমার সালাম আসসালামু আলাইকুম।
শেষকথা বিজয় দিবসের নমুনা ভাষণ সম্পর্কে
বিজয় দিবসের ভাষণ সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই। আশা করছি দ্বারা বিজয় দিবসের ভাষণ সম্পর্কে গুগলে সার্চ করতে ছিলেন তারা একটা সঠিক সমাধান পেয়েছেন। বিজয় দিবসের ভাষণ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। এর পরও যদি আপনার বিজয় দিবসের ভাষণ সম্পর্কে কিছু জানার থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে জানাবেন। আপনি চাইলে এই পোস্টটিকে আপনার ফেসবুক ওয়ালে শেয়ার করতে পারেন।