থাইরয়েড কমানোর উপায়

থাইরয়েড কমানোর উপায়
থাইরয়েড কমানোর উপায়

থাইরয়েড কমানোর উপায়

আমাদের আজকের আর্টিকেল এর বিষয় হলো থাইরয়েড কমানোর উপায় সম্পর্কে। তবে চলুন কথা না বাড়িয়ে জানা যাক থাইরয়েড কমানোর উপায় সম্পর্কে। 

থাইরয়েড আসলে কি

থাইরয়েড কমানোর উপায় জানার আগে আমাদের জানতে হবে থাইরয়েড কি।  থাইরয়েড হলো এক ধরনের ছোট প্রজাতির আকারের গ্রন্থি যা শরীরের বেশ কয়েকটি বিপাকীয় প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। হাইপোথাইরয়েডিজম এবং হাইপারথাইরয়ডিজম দুটি সাধারণ থাইরয়েড রোগ যা আমরা কিভাবে শক্তি তৈরী এবং ব্যবহার করি তার ওপর প্রভাব ফেলে।   থাইরয়েড এরকম একটি রোগ যা কিনা একবারের নির্মূল করা সম্ভব না।  কিন্তু এই রোগটা আমরা কিছু কিছু খাবার খাওয়ার মাধ্যমে বা খাদ্যাভাসের পরিবর্তন মাধ্যমে এবং জীবনটাকে গুছিয়ে চলাফেরা করার মাধ্যমে থাইরয়েড কমানো সম্ভব বা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। দেশের 17 শতাংশ মানুষ থাইরয়েড হরমোনের সমস্যায় ভুগছে। এরমধ্যে থাইরয়েড হরমোনের ঘটনার জনিত সমস্যা বেশ প্রকট। এর রোগ পুরুষদের তুলনায় নারীদের দশগুণ বেশি হয়ে থাকে।  

থাইরয়েড এর মাত্রা

মানব শরীরের বিভিন্ন ধরনের উপাদান রয়েছে।  এবং এই  উপাদানগুলোর নির্দিষ্ট একটি মাত্রা রয়েছে।  যেমন মানুষের শরীরের জন্য থাইরয়েড হরমোন এর একটি নির্দিষ্ট মাত্রা আছে।  এই নির্দিষ্ট মাত্রার থেকে যদি কম বা বেশি হরমোন উৎপাদিত হয় তাহলে শরীরের বিভিন্ন প্রকার ক্ষতি হতে পারে। তাই অবশ্যই আমাদের থাইরয়েড এর মাত্রা দিকে খেয়াল রাখতে হবে। 

থাইরয়েড হরমোনের ভূমিকা

থাইরয়েড কমানোর উপায় সম্পর্কে জানার আগে আমাদের জানতে হবে থাইরয়েড হরমোন আমাদের শরীরে কিভাবে প্রভাব ফেলে থাইরয়েড হরমোনের ভূমিকা টা আমাদের মানব শরীরে কি।  থাইরয়েড হরমোন আমাদের বিপাক প্রক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, শরীরের তাপমাত্রা, হৃদস্পন্দন, পৌষ্টিক নালীর অভ্যন্তরীণ পরিবহন, প্রজনন স্বাস্থ্য, মস্তিষ্কের গঠন, কোষের গঠন, ও ক্ষয়পূরণ  এ এই হরমোন এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এবং এই কারণে হাইপোথাইরয়েডিজমে আক্রান্ত হলে শরীরের নানান সমস্যা দেখা দেয়।  

থাইরয়েড রোগের লক্ষণ

থাইরয়েডের কমানোর উপায় জানার আগে আমাদের জানতে হবে থাইরয়েড রোগের লক্ষণ সম্পর্কে। থাইরয়েড রোগের লক্ষণ গুলো নিচে দেওয়া হল,

  • অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়া
  •  ক্লান্তি বোধ মনে হওয়া
  •  অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগা
  •  পেশী এবং জয়েন্টে দুর্বলতা এবং ব্যথা অনুভব করা
  •  অতিরিক্ত চুল পড়া
  • অবসন্নতায় ভোগা
  • কোন কিছুতে মনোযোগ দিতে না পারা বা সহজেই সবকিছু ভুলে যাওয়া
  • অতিরিক্ত ঋতুস্রাব এর সমস্যা।  

আপনি যদি আপনার শরীরের মধ্যে এর সকল লক্ষণ গুলো দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন আপনার থাইরয়েডের সমস্যা হয়েছে।  তাই অতি দ্রুত তাড়াতাড়ি এই সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।  চাইলে আপনি ঘরোয়া পদ্ধতিতে এ সমস্যার সমাধান করতে পারেন।  কিন্তু যদি দেখেন ঘরোয়া পদ্ধতিতে এসকল সমস্যার সমাধান হচ্ছে না তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। 

থাইরয়েড কমানোর উপায়

থাইরয়েড কমানোর জন্য আমরা চার ধরনের ফল খেতে পারি।  ফলগুলো থাইরয়েড কমানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।  নিচে এই ফলগুলো নাম দেওয়া হল,

আপেল 

থাইরয়েড কমানোর উপায় এর ক্ষেত্রে আপেল এর ভূমিকা অপরিসীম।  আপেল হচ্ছে স্বাস্থ্যকর খাবারের মধ্যে একটি এবং বিশ্বব্যাপী বেশ জনপ্রিয় খাবার হলো আপেল।  প্রতিদিন একটি আপেল খেলে ওজন বৃদ্ধি রোধ করে, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখে এবং থাইরয়েড গ্রন্থিকে কর্মক্ষম অবস্থায় রাখে। 

বেরি

বেরিতে এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে থাইরোড  অঙ্গের জন্য চমৎকার ভূমিকা পালন করে।  এই ফলটি থাইরয়েড হরমোনের উৎপাদনকে উদ্দীপিত করতে এবং তাদের নির্বিঘ্নে কাজ করতে সাহায্য করে থাকে।  এই ফলটিতে রয়েছে ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ।  আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হন বা স্থূলতায় ভোগে তবে বেরি জাতীয় ফল খান। 

কমলা

থাইরয়েড কমানোর উপায় এর ক্ষেত্রে কমলার ভূমিকা অপরিসীম।  কমলাতে আছে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ উপাদান।  যা কিনা আপনাকে ফ্রিরেডিকেল ক্ষতি থেকে আপনার কোষগুলোকে রক্ষা করে।  ফ্রিরেডিকেল থাইরয়েড  গ্রন্থিতে প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং এর কার্যকারিতা প্রভাবিত করতে পারে।  ভিটামিন সি রোগপ্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে, কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে, ত্বকের ক্ষতি রোধ করে এবং ক্ষত সারাতে সাহায্য করে, তাই প্রতিদিন একটি করে হলেও কমলা খেতে হবে।  

আনারস

আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং কি ম্যাঙ্গানিজ এই দুটি উপাদান আমাদের শরীরকে ফ্রিরেডিকেল ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে পারে।  এই ফলে আরো রয়েছে ভিটামিন বি যা কিনা ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে থাকে।  আমরা সকলেই জানি অতিরিক্ত ক্লান্তি হল থাইরয়েডের লক্ষণ।  ক্যান্সার টিউমার এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোগীদের জন্য আনারসের ভূমিকা অপরিসীম।  

এছাড়াও কিছু খাবার আছে যা খেলে হায়রোড কমানো সম্ভব।  এই খাবারগুলোর সম্পর্কে নিচে দেওয়া হল,

রান্না করা শাকসবজি খান

থাইরয়েড কমানোর উপায় ক্ষেত্রে রান্না করা শাকসবজি খান কারণ এর ভূমিকা অপরিসীম।  আপনি যদি জানেন যে আপনার থাইরোড জনিত সমস্যা হয়েছে তাহলে আপনি সবসময় শাক সবজি কিভাবে রান্না করে খাবেন।  কোন সময়ে কাঁচা শাকসবজি খাবেন না কেননা এতে আপনার থাইরয়েডের সমস্যা আরো বাড়তে পারে। 

থাইরয়েড কমানোর ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি

থাইরয়েড কমানোর উপায় এর ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি এর ভূমিকা অপরিসীম।  শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব থাকে তাহলে থাইরয়েডের সমস্যা দেখা দিতে পারে।  এই সমস্যার সমাধান করতে প্রতিদিন সূর্যের আলোতে দাঁড়িয়ে থাকুন কিছু সময়।  আপনি যদি জানতে পারেন যে আপনার থাইরয়েডের সমস্যা হয়েছে তাহলে প্রতিদিন সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে রোদ্রে দাঁড়িয়ে ব্যায়াম করুন।  ব্যায়াম করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং শরীরে ক্যালসিয়াম তৈরি হয়। আপনি প্রতিদিন সকাল-বিকাল ব্যায়াম করুন এবং হাঁটুন তাহলে দেখবেন আপনার থাইরয়েড এর মাত্রা কমে আসছে। 

আয়োডিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ খাবার

থাইরয়েড কমানোর উপায় এর ক্ষেত্রে আয়োডিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ খাবারের ভূমিকা অপরিসীম। আপনার যদি থাইরয়েড জনিত সমস্যা হয় তাহলে আপনি অবশ্যই খনিজ এবং আয়োডিন সমৃদ্ধ খাবার খাবেন। আয়োডিন সমৃদ্ধ খাবার গুলো আপনি পেয়ে থাকবেন সামুদ্রিক মাছ থেকে, আয়োডিনযুক্ত লবণ থেকে।  এসকল খাবার থাইরয়েড হলে বেশি বেশি খাবেন।  আরো কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো থাইরয়েডের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।  যেমন দুধ, পনির,দই, দুগ্ধজাতীয় খাবার ধারণের জন্য অনেক বেশি উপকারী।  

আদা চা

আপনি যদি জানতে পারেন আপনার তো সমস্যা হয়েছে।  তাহলে আপনি নিয়মিত থাইরয়েডের সমস্যার নিয়ন্ত্রণের জন্য আদা চা পান করুন। কেননা আদায় রয়েছে বিভিন্ন ধরনের খনিজ উপাদান, যেমন পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি।  তাই বলা যায় যে আদা থাইরয়েড সমস্যার জন্য অনেক কার্যকর। 

আপনি যখন জানতে পারবেন আপনার ধারণা জনিত সমস্যা হয়েছে তখন থেকেই আপনি চেষ্টা করবেন আয়োডিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া এবং খনিজ সমৃদ্ধ।  কেননা এই ধরনের খাবার খেলে আপনার থাইরয়েডের সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে। থাইরয়েড কমানোর ক্ষেত্রে ভিটামিন বি এর ভূমিকা অপরিসীম।  আপনি যদি জানতে পারেন আপনার থাইরয়েড হয়েছে তাহলে অবশ্যই ভিটামিন বি জাতীয় খাবার খাবেন।  থাইরয়েড এমন একটি রোগ যা কিনা  একবারে প্রতিকার করা সম্ভব না।  সব সময় নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। 

থাইরয়েডের সমস্যা হলে যে সকল খাবার খাওয়া নিষেধ

আপনি যদি জানতে পারেন আপনার থাইরোড জনিত সমস্যা হয়েছে তাহলে একটু সাবধানে খাওয়া-দাওয়া করতে হবে।  এমন কিছু খাদ্য আছে যা থাইরয়েড হরমোনের কাজকর্মকে ব্যাহত করে। যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রোকলি, সমজাতীয় খাদ্য, মিষ্টি আলু, কাসাবা, স্ট্রবেরি ফল, নাশপাতি চিনাবাদাম। এসকল খাবার যদি আপনি কাঁচা অবস্থায় খান তাহলে এটা আপনার থাইরয়েডের সমস্যা আরো বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই অবশ্যই এগুলো রান্না করে খেতে হবে। আরো কিছু খাবার আছে এগুলো হলো কেক, কুকিজ, চিপস,সয়া দুধ, পিচ,কফি, গ্রিন টি, অ্যালকোহল, এই ধরনের খাবার আপনাকে অবশ্যই অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে।  থাইরয়েডের সমস্যা হলে সকল খাবার খাওয়া নিষেধ। থাইরয়েডের সমস্যা হলে অবশ্যই আপনাকে চিনি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে কেননা চিনিজাতীয় খাবার খেলে মানুষের ওজন বেড়ে যায়। এবং আপনাকে সর্বপ্রথম বাহিরের প্রক্রিয়াজাত খাবার গুলো এবং কি জাঙ্কফুড গুলো পরিহার করতে হবে।  থাইরয়েডের সমস্যা হলে এগুলো একবারে খাওয়া যাবেনা। 

আমাদের আজকের আর্টিকেলের বিষয়টি ছিল থাইরয়েড কমানোর উপায় সম্পর্কে।  আশা করি আপনারা সবাই বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন থাইরয়েড কমানোর উপায় সম্পর্কে।  যদি দেখেন এই খাবারগুলো খাওয়ার মাধ্যমে আপনার থাইরয়েডের সমস্যা কমছে না বা পরিবর্তন হচ্ছে না।  সে ক্ষেত্রে আপনি অবশ্যই অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।  

Md.Mahmud

আমার নাম মোঃ মাহমুদুল হাসান বাবু । আমি পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স এবং মাস্টার্স সম্পন্ন করেছি। এবং ইনফরমেশন টেকনোলজি বিষয়ে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছি । আমি বিজ্ঞান এবং টেকনোলজি নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করি । আমি আমার কাজের ফাঁকে ফ্রিল্যান্সিং ব্লগে লেখালেখি করি। 01921822498

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Ads

Ads