অ্যালোভেরা দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায়
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা ভালো আছেন। আজ আমরা আপনাদের সাথে অ্যালোভেরা দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব। যারা অ্যালোভেরা দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায় সম্পর্কে জানে না তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটি আমাদের।অ্যালোভেরার সৌন্দর্যের উপকারিতা সারা বিশ্বজুড়ে খুবই পরিচিত।
বিশ্বাস করা হয় এই উদ্ভিদটি উত্তর আফ্রিকা, মাদাগাস্কার এবং আরব উপসাগর এলাকাতে প্রথম পাওয়া গিয়েছে। এররস উদ্ভিদের পাতা, কান্ড এবং সংরক্ষণ করে যার ফলে এটি অনেক মাংশল প্রকৃতির হয়। অ্যালোভেরার আদ্রতা এবং শীতল কোন বৈশিষ্ট্যের জন্য এটি মশ্চারাইজার, ফেইস ওয়াশ, সাবান এবং স্থান স্কিন লোশন একটি উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
প্রাচীন গ্রিক এবং রোমানরা ক্ষত, কাটা এবং প্রদাহের চিকিৎসায় অ্যালোভেরা ব্যবহার করত। এটা বিশ্বাস করা হয় যে মিশরীয় রানী ক্লিওপেট্রা তার সৌন্দর্য বৃদ্ধির একটি অংশ হিসেবে এলোভেরা জেল ব্যবহার করতেন। অ্যালোভেরা দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায় সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো।
এলোভেরা কি ব্রণের জন্য ভালো?
চলুন জেনে নেই কিভাবে এই উদ্ভিদ ব্রণের চিকিৎসা করে এবং ব্রণ থেকে সৃষ্ট দাগ দূর করে।
- ১. অ্যালোভেরা জেলের এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য ব্রণের চিকিৎসায় এবং ব্রণের জলন কমানো খুবই কার্যকারী। এটি ব্রণের ক্ষত থেকে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ প্রতিরোধ করে এবং দ্রুত গতিতে নিরাময় করে। এর এন্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য ত্বকের প্রদাহ যেমন ফোরা এবংপুজ কোষ নিরাময়ের জন্য খুবই উপকারী।
- ২. এলোভেরা জেল এর উপস্থিতি ম্যাগনেসিয়াম এর কারণে হওয়া চুলকানির সমস্যা কমায়। এটি ত্বকে ফুসকুড়ি এবং রোদে পোড়া ভাব দূর করার ক্ষেত্রেও কার্যকারী।
- ৩. এলাবরাতে থাকায় s3z ব্রণ প্রতিরোধ করার জন্য তোকে জমে থাকা অতিরিক্ত তেল এবং ধুলাবালি দূর করে। এটি ব্রণের ব্যথা দূর করতে পূজ কোষের কমিয়ে আনে।
- ৪. শুধু ব্রণ নয়, এলোভেরা জেল ব্রণের দাগ কমাতেও সাহায্য করে। এটি ত্বকের রঙ উজ্জ্বল করে তাদের উপস্থিতি কমিয়ে আনে।
- ৫. ত্বকের ধুলোবালি জমে লোমকূপ বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে ত্বকে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ এবং ব্ল্যাকহেডস হয়। প্রতিদিন এই জেলের ব্যবহার মুখের লোমকূপ 860 করে, যার ফলে লোমকূপ জীবাণুর সংক্রমণ হ্রাস পায়।
- ৬. অ্যালোভেরা জেল এবং অ্যালোভেরার রস ব্যবহারের উপকারিতা ব্যাপকভাবে বিজ্ঞানীদের দ্বারা অধ্যায়ন করা হয়েছে এবং কিভাবে এলোভেরা একটি স্বাস্থ্যকর ত্বক পেতে সাহায্য করে তা উপরে এ স্পষ্ট করে বলা হয়েছে।
ব্রণের জন্য কিভাবে এলোভেরা ব্যবহার করবেন?
ব্রণ প্রতিরোধ করার জন্য এলোভেরা ব্যবহার অসংখ্য উপায় আছে। এদের সম্পর্কে আরো জানার জন্য পড়তে থাকুন।
- ১. মধু এবং এলোভেরা।
- ২. অ্যালোভেরা এবং লেবু।
- ৩. এলোভেরা এবং হলুদ।
- ৪. টি ট্রি তেল এবং অ্যালোভেরা।
- ৫. বেবি অয়েল এবং এলোভেরা।
- ৬. এলোভেরা জেল এর সাথে ভিটামিন ই।
- ৭. অ্যাপেল সিডার ভিনেগার এবং এলোভেরা।
- ৮. এলোভেরা, দুধ এবং চিনির মাক্স।
- ৯. ব্রণের চিকিৎসায় অ্যালোভেরা এবং কসমেটিক কাদামাটি।
ব্রণের চিকিৎসামধু এবং অ্যালোভেরা কিভাবে ব্যবহার করব?
উপকরণ
- ১. একট টেবিল টেবিল-চামচ অ্যালোভেরা জেল।
- ২. 1 টেবিল-চামচ অপরিশোধিত মধু।
- ৩. এক থেকে দুই চা চামচ গোলাপ জল।
প্রস্তুতি
অ্যালোভেরা জেল, মধু এবং গোলাপজল একসাথে ব্লেন্ড করে একটি মসৃণ পেস্ট তৈরি করুন। আপনি আপনার মুখের রং উজ্জ্বল করতে মুখের মাক্স টিতে এক চিমটি হলুদ যোগ করতে পারেন।
কিভাবে লাগাবেন?
- ব্রণের আক্রমণে স্থানে মাক্স টিলা গান এবং 20 মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
- ব্রণ থেকে মুক্তি পেতে এই সপ্তাহে তিনবার ব্যবহার করুন।
এটা কিভাবে কাজ করে?
মধু একটি এন্টি ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট এবং মধু নানারকম এন্টিঅক্সিডেন্ট বহন করে। এটি আপনার ত্বককে পুনরায় হাইড্রেট করে এবং এতে উৎপাদিত অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। মধুতে পরিষ্কারক বৈশিষ্ট্য আছে এছাড়াও আরও অনেক সমস্যা সমাধানে খুবই উপকারী। অ্যালোভেরা দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায় সম্পর্কে আমাদের সকলের জ্ঞান অর্জন করা উচিত।
অ্যালোভেরাঅ্যালোভেরা এবং লেবুর রস
- 1 থেকে 2 টেবিল-চামচ অ্যালোভেরা জেল।
- কয়েক ফোঁটা লেবুর রস।
প্রস্তুতি
এলোভেরা জেল লেবুর রস যোগ করুন এবং পেস্ট তৈরি করতে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
কিভাবে লাগাবেন?
- আপনার মুখ এবং গলায় লাগান এবং সারারাত রেখে দিন।
- যদি আপনার কাছে মাক্স টি খুব আঠালো মনে হয় তাহলে অন্তত এক ঘণ্টা মাক্স টিম মুখে রেখে ধুয়ে ফেলুন।
- ব্রণ না যাওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন রাতে এই মাক্স কি ব্যবহার করুন।
এটা কিভাবে কাজ করে?
লেবু এবং মধু এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য ব্রণ দূর করে এবং ব্রণের বারবার ফিরে আসা প্রতিরোধ করে। লেবুর রস আপনার ত্বক পরিষ্কার এবং দূষণমুক্ত করে এবং লোমকূপগুলো ছোট করে তাদের দূষণ হওয়া থেকে রক্ষা করে।
সর্তকতা
যদি আপনার ত্বক সংবেদন শীল হয় তাহলে লেবুর রস এর পরিবর্তে টমেটোর রস ব্যবহার করুন কারণ টমেটো কোমল প্রকৃতি।
অ্যালোভেরা এবং হলুদ
- এক থেকে দুই চা-চামচ অ্যালোভেরা জেল।
- এক অথবা দুই চা চামচ হলুদ গুঁড়ো।
- একটা চামচ বেসন
প্রস্তুতি
সব উপকরণ একসাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। টেস্ট বেশি ঘন হয়ে গেলে কয়েক ফোটা পানি যোগ করুন।
কিভাবে লাগাবেন?
- পেস্ট টি মুখে লাগান এবং 15 থেকে 20 মিনিট সুজিয়ে যাওয়া পর্যন্ত রাখুন।
- পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- সপ্তাহে 2 বার ব্যবহার করুন।
এটা কিভাবে কাজ করে?
ব্রণের চিকিৎসার জন্য হলুদ খুবই শক্তিশালী একটি ঔষধ। এর এন্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য ব্রণের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস এবং এর anti-inflammatory বৈশিষ্ট্য কমিয়ে আনে। এন্টিঅক্সিডেন্ট নিরাময় প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে এবং ব্রণের দাগ হওয়া প্রতিরোধ করে।
সতর্কতাঃ
হলুদের কারণে আপনার ত্বক হলুদ দাগ পড়তে পারে। এই হলুদ দাগ থেকে মুক্তি পেতে সামান্য লেবুর রস আলতো ভাবে মুখে ঘষে নিতে পারেন।
অ্যাপেল সিডার ভিনেগার এবং অ্যালোভেরা
- এক টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল।
- এক থেকে দুই চা-চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার।
- এক থেকে দুই চা চামচ পানি।
কিভাবে লাগাবেন?
- আপনার হাত অথবা তুলোর বল ব্যবহার করে মিশ্রণটি আপনার পুরো মুখে লাগান।
- 15 থেকে 20 মিনিটের জন্য এটি শুকাতে দিন এবং পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
এটা কিভাবে কাজ করে?
অ্যাপেল সিডার ভিনেগারেম্যালিক এসিড এসিড যা ত্বকের এর ধারক হিসেবে কাজ করে। এটি সকল ব্যাকটেরিয়া অপসারণকরে এবং ত্বকের পিএইচ তার স্বাভাবিক রাখে। এর মধ্যে জমা থাকা মৃত চামড়া তুলে ফেলে।
অ্যালোভেরা ব্যবহারের ব্রণ দূর হতে কতদিন সময় লাগে?
প্রতিদিন অ্যালোভেরা ব্যবহারের মাত্র কয়েক দিন সময় লাগে আপনার মুখের ব্রণ পার্থক্য লক্ষ্য করার জন্য। এগুলো কোন অস্বস্তি এবং জ্বালাপোড়া না দিয়েই। দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে, আপনি আপনার ব্রনের দাগের পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন।
এটা খুবই জানা খুবই জরুরী যে অ্যালোভেরা ব্রণ নিরাময় করে না। কিন্তু এর সাথে যুক্ত সংক্রমণ প্রভাব এবং ফুসকুড়ি কমিয়ে আনে। এর উপাদান গুলি সাথে এটি নিরাময় প্রক্রিয়ায় আরো দ্রুত করে। প্রতিদিন এই জেল ব্যবহার করলে ভবিষ্যতে আবার ব্রণ হওয়া প্রতিরোধ করে। তাহলে আর দেরি কেন? এখনই অ্যালোভেরা দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায় সম্পর্কে সজাগ হন।
পরিশেষে বলা যায় যে অ্যালোভেরা দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায় সম্পর্কে আমরা আপনাদের বিশেষ কিছু ধারনা দিতে পেরেছি। আপনারা যদি অ্যালোভেরা দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে অবশ্যই আমাদের আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়বেন তবে আপনারা এই বিষয়ে জানতে পারবেন।