স্বপ্নের পদ্মা সেতু রচনা
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনার অনেক ভালো আছেন। আজ আমরা আপনাদের সাথে পদ্মা সেতু রচনা নিয়ে আলোচনা করব। যারা পদ্মা সেতু রচনা নিয়ে আগ্রহী বা পদ্মা সেতু সম্পর্কে জানতে চান তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটি আমাদের। পদ্মা সেতু হচ্ছে প্রত্যেকটা মানুষের কাছে স্বপ্নের মতো। চলুন শুরু করা যাক আজকের আর্টিকেলটি পদ্মা সেতু রচনা সম্পর্কে।
পদ্মা সেতু রচনা |
ভূমিকা:
সাধারণভাবে বলা যায়, স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। তা কখনো বাস্তবে পরিণত হয় না। কেননা স্বপ্নতো কল্পনা। কিন্তু কিছু কিছু স্বপ্ন বা কল্পনা বাস্তবায়ন করা যায়। তার দরকার প্রতীক্ষা, উদ্বেগ, একাগ্রতা ও সাধনা। মানুষের নানান আবিষ্কার ও উদ্ভাবন অন্য মানুষকে আশান্বিত আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। সেই আশা বিশ্বাস অধীর প্রতীক্ষা স্বপ্নের পদ্মা সেতু রচনা কে বাস্তবে পদ্মা সেতু নির্মাণে অনুকৃত করছে।
পদ্মা সেতুর শুরুর ইতিহাস:
aecom- এর ডিজাইনে পদ্মা নদীর উপর বহুমুখী আর্থসামাজিক উন্নয়ন প্রকল্প পদ্মা বহুমুখী সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল 2011 সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল 2013 সালে। পুরো প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছিল 292 কোটি ডলার এডিবির ঋণ সহায়তা 61.5 কোটি ডলার। এছাড়া বিশ্বব্যাংক 120 কোটি ডলার, জাইগা 41 দশমিক 5 কোটি ডলার, আবুধাবি দেভেলোপমেন্ট তিন কোটি ডলার ঋণ সহায়তা দেয়ার কথা ছিল।
কিন্তু পরামর্শক নিয়োগের তথাকথিত দুর্নীতির অভিযোগে গত 29 জুন 2012 সালে বিশ্বব্যাংক 120 কোটি ডলার ঋণ সহায়তা বাতিল করে। অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ। কিন্তু থেমে থাকেনি বাংলাদেশ। আজ আমাদের স্বপ্ন। পদ্মা সেতু রচনা আমাদের কাছে স্বপ্নের সেতু।
নির্মাণ কাজের বিন্যাস:
পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের নির্মাণ কাজে সাতটি ভাগে এগিয়ে নেওয়া হয়েছিল এগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো:
১. মূল সেতু নির্মাণের দায়িত্ব আছেনা চায়না মেজর ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড। কার্যাদেশ 26 শে নভেম্বর 2014 সালে।
২. নদী শাসনের কাজ পেয়েছেন সিনোহাইড্রো কর্পোরেশন লিমিটেড, চায়না। চুক্তিমূল্য ৮,৭০৭,৮১ কোটি টাকা।
৩. 1290 কোটি টাকায় বাংলাদেশের আব্দুল মোনেম লিমিটেড ও মালয়েশিয়া ভিত্তিক এইচসিএম জেভি যৌথভাবে মাওয়া-জাজিরা সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ করেছেন।
৪. ভূমি ও পূর্ণবাসন প্রকল্পের জন্য মোট চোদ্দশ 1408.54 জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।
এছাড়া পরিবেশ উন্নয়নে 2021 সাল থেকে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে এবং হাজার হাজার বৃক্ষ রোপন পদ্মা সেতুর দুই পাশের সিটে লাগানো হয়েছে।
পদ্মা সেতু রচনা ও পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান 2022:
- পদ্মা সেতু প্রকল্পের রুপরেখা: পদ্মা সেতু প্রকল্প বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মাণাধীন একটি বহুমুখী সেতু প্রকল্প।
- পদ্মা সেতু প্রকল্পের নাম: পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প।
- বাহক: যানবাহন ও ট্রেন। ক্রস- পদ্মা নদী।
- স্থান: লৌহজং, মুন্সিগঞ্জের শরীয়তপুর মাদারীপুর।
- নির্মাণ শুরু: সাতে ডিসেম্বর 2014।
- নকশা: aecom।
- মোট দৈর্ঘ্য: 6.1 50 মিটার( 20. 180 ফুট)
- প্রস্থ : 18 দশমিক 10 মিটার( 49.4 ফুট)
- নির্মাণকারী: চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড।
পদ্মা সেতু অন্যান্য সাহসী সিদ্ধান্ত:
ভবিষ্যৎ ত তারই জন্যে, স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি যে। স্বপ্নের পিছু ছুটতে সাহসের সঙ্গে এগিয়ে যায়। বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্ন দেখাও বাস্তাবায়নের রূপকার। তারা সাহসী ও সংগ্রামী। প্রবল বন্যা সঙ্গে, ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকা এদেশের মানুষ। বিশ্বব্যাংক ষড়যন্ত্র কথা বুঝতে পেরে আমাদের সরকারও ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এদেশের মানুষ। পদ্মা সেতু রচনা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য এদেশের সরকার প্রধান শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণে সাক্ষ্যম হয়েছেন। এটা নিঃসন্দেহে অন্যান্য ও সাহসী।
পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকায় কর্মচাঞ্চল্যে:
হাজার হাজার শ্রমিক, বহু সংখ্যক বহুসংখ্যক প্রকৌশল, পরামর্শ ও বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞরা পদ্মা সেতু নির্মাণের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছেন। প্রথম প্রথমদিকে 220 200 বিদেশিসহ প্রায় 2000 2 হাজার লোকের কর্মসংস্থান। তারপর হাজার হাজার লোক প্রত্যক্ষভাবে বিভিন্ন কাজে সম্পৃক্ত হয়েছেন।
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পদ্মা সেতুর গুরুত্ব:
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পদ্মা সেতুর গুরুত্ব অপরিসীম। কুটি কুটি মানুষের জীবন যাত্রার মান পরবর্তী হয়েছে। এ সেতু চালু হওয়ার কারণে টাকাসহ দেশের পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি সড়ক পথে যুক্ত হচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের 19 টি জেলা এবং রেলপথ যুক্ত হবে অধিকাংশ জেলায়। দেশের জিডিপি বৃদ্ধি পাবে 1.2 শতাংশ। তাছাড়াও বাংলা ও পায়রা বন্দরের সাথে যোগাযোগের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য শিল্পায়নের ক্ষেত্রে সুযোগ সৃষ্টি হবে। পদ্মা সেতু রচনা বাংলাদেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু:
মানুষের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। স্বপ্নের পদ্মা সেতু হয়েছে সবচেয়ে বড়, সবচেয়ে দীর্ঘ, সবচেয়ে সুন্দর, সবচেয়ে কার্যকরী। এর আশেপাশে রয়েছে বাগান ও ফোয়ারা। একটি দ্বিতল বিশিষ্ট এর উপর দিয়ে চলেছে যানবাহনের নিচে দিয়ে চলবে ট্রেন।
পদ্মা সেতু সেতুর অগ্রগতি;
চীন থেকে এসেছে ভারী যন্ত্রপাতি। জার্মানি থেকে এসেছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী হ্যামার। পাইলিং শুরু হওয়ার পর মানুষের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিতে শুরু করেছে। একে একে বসানো হয় 41 স্পেন। আজ সেই পদ্মা সেতু মানুষের সুখের সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পেরেছে।
পদ্মা সেতু নির্মাণের সমস্যা:
2012 সালের 4 জুলাই জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করার কথা বললেন। 8 ই জুলাই নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা সংসদে পেশ করেন তিনি। 2012 সালের 9 জুলাই নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রিসভা। বিশ্বব্যাংকের শর্তের কারণে 23 শে জুলাই তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
পদ্মা বহুমুখী সেতু আলোচনা শুরু থেকেই বিতর্ক ষড়যন্ত্র জড়িয়ে পড়েছি। বলেছে যে, বিশ্বব্যাংক তারা বিভিন্ন অংশের দ্বারা প্রমাণিত বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ হওয়ায় পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পে বাংলাদেশে সরকারি কর্মকর্তা এসএনসি-লাভালিনের ব্যক্তিদের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ে দুর্নীতি ষড়যন্ত্র দিকে ইঙ্গিত করে। কথিত দুর্নীতির ফলে বিশ্ব ব্যাংক প্রাথমিকভাবে সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাবিত ঋণ মঞ্জুর করতে অস্বীকার করে এবং সরকারের সাথে আলোচনা অব্যাহত রাখার শর্ত আরোপ করে।
উপসংহার:
পদ্মা সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে একটি নতুন যুগে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশ নানা কারণে একটি উল্লেখযোগ্য প্রতিনিধিত্বশীল দেশ হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। পদ্মা সেতু রচনা পৃথিবীর সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও ঐতিহাসিক নিদর্শন এবং অর্থনীতির সকল চাবিকাঠি পদ্মা সেতু বহুমুখী সেতু নির্মাণের মাধ্যমে এদেশে আরো একধাপ এগিয়ে যাচ্ছে।পদ্মা সেতু মাওয়া জাজিরা কে একত্রে মিলিয়ে দিয়ে বাংলাদেশের উন্নতি আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।
পরিশেষে বলা যায় যে পদ্মা সেতু রচনা সম্পর্কে আমরা আমাদের বিশেষ বিশেষ ধারণা দিতে পেরেছি। আপনারা যদি পদ্মা সেতু রচনা সম্পর্কে কিছু জানতে চান তাহলে আপনার অবশ্যই আমাদের আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়বেন। আশা করছি পদ্মা সেতু রচনা সম্পর্কে আপনার ধারণা পেয়ে যাবেন।