আসসালামুআলাইকুম প্রিয় পাঠক আজ আমরা আপনাদের সাথে এই টিপস গুলো না জেনে পুরাতন ফোন কিনবেন না সম্পর্কে আলোচনা করব। অনেকেই পুরাতন ফোন কিনে ঠকে যায়। যার ফলে আমরা আজকের এই আর্টিকেলটি লিখব। যাতে আপনাদের পুরাতন ফোন কেনার পরে কোন সমস্যা না হয় তাহলে চলুন এই টিপস গুলো না জেনে পুরাতন ফোন কিনবেন না জেনে নেয়া যাক।
বর্তমান সময়ে মোবাইল ব্যবহার করে না এমন মানুষ খুবই কম দেখা যায়। আমরা সবাই দামি বা সস্তা যেকোনো মোবাইল ব্যবহার করে থাকি। অনেকের কাছে দামি মোবাইল এর চাহিদা থাকা সত্বেও টাকার সমস্যার কারণে নতুন মোবাইল কিনতে পারে না। আবার অনেকেই নতুন মোবাইল না কিনে সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইল কিনতে চাই। তখন আমরা পুরাতন মোবাইল কিনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেই।
এখন অনেকেই দেখা যায় মোবাইল কিনব বলেই কোন কিছু না ভেবে ঝটপট পুরাতন মোবাইল কিনে ফেলেন। এটা কিন্তু বুদ্ধিমানের কাজ নয়। আপনার পুরাতন মোবাইল কেনার আগে কিছু বিষয় অবশ্যই ভাবতে হবে। অর্থাৎ পুরাতন মোবাইল কিনার ব্যাপারে আপনার কিছু জিনিস সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।এই টিপসগুলো না জেনে পুরাতন ফোন কিনবেন না চলুন তাহলে টিপসগুলো বলে দেয়া যাক।
পুরাতন ফোন কোথায় খুঁজবেন:
ফেসবুকের মাধ্যমেও এখন সেকেন্ড হ্যান্ড বা হাত ফেরত পুরনো মোবাইল ফোন কেনা বেচা হচ্ছে। এ ধরনের হাত ফেরত পুরনো ফোন কেনার আগে কয়েকটি বিষয় জেনে নেওয়া জরুরী। সবার আগে ফোনটি চোরাই ফোন কিনা তা দেখে নেওয়া বেশি জরুরি। আপনি যদি ব্যবহৃত ফোন খুচরা দোকানের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কিন্তে চান তাহলে অবশ্যই খুব সতর্কতার সাথে এই ধরনের ওয়ারেন্টির অফার এবং সলিড ইন্টারনেট ওয়ারেন্টি দেখে কিনতে হবে। কারণ আপনি কেনার আগে এটি চেক না করলে যেকোনো সময় এই ফোনের জটিলতার কারণে আপনি ফোন টি ফেরত দিতে আসবেন।
আপনাকে প্রথমেই কেনার সময় ভালোভাবে নিশ্চিত হতে হবে যে এটা ব্যবহার পর কোন সমস্যা কারণে ফেরত দেবার কোন সুযোগ আছে কিনা? কিছু ওয়েবসাইটের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে চার্জ নেয়া হয়। কেউ যদি ইবে এর মাধ্যমে কিন্তে চান সতর্কতার সহিত সেই পর্নের ফিডব্যাক রেটিং এবং উন্নত মানের বিক্রয় সেবা নিশ্চিত করতে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক এর ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়গুলো জানা উচিত বা এই টিপস গুলো না জেনে পুরাতন ফোন কিনবেন না:-
মোবাইলটি অরজিনাল ব্র্যান্ডের কিনা:
বর্তমানে অনেক ডুব্লিকেট ফোন পাওয়া যায়। যেগুলো দেখতে হুবহু অরজিনাল বলে মনে হয়। পুরাতন মোবাইল কেনার আগে আপনাকে এটাও দেখে নিতে হবে যে আপনি যে মোবাইলটা কিনতে যাচ্ছেন এটি কি অরজিনাল মোবাইল ফোন? এর জন্য আপনি ভালো করে মোবাইলটি লক্ষ্য করুন। বিশেষ সেটিং গিয়ে এই ফোনে সকল কনফিগারেশন গুলো চেক করে নিন এবং ইন্টারনেট চেক করে নিন এই ফোনের কনফিগারেশন গুলোর সাথে ইন্টারনেট দেওয়া অরজিনাল মোবাইলের কনফিগারেশন মিল আছে কিনা। যদি সব ঠিক থাকে তাহলে তো ভালোই।
ডিসপ্লের যাচাই:
পুরাতন মোবাইল কেনার আগে মোবাইলটা কিছুক্ষণ ব্যবহার করে দেখুন। পুরাতন মোবাইলের অনেক সময় ডিসপ্লে এর সমস্যা থাকে। তাই আপনি কিছুক্ষণ চালানোর পর বুঝতে পারবেন মোবাইলের ডিসপ্লে কোন সমস্যা আছে কিনা। সাথে আপনি এটাও বুঝতে পারবেন যে আপনার এই ফোনটি ভালো হবে কিনা। এটা স্প্রিড কেমন তাও জানতে পারবে। অথবা ব্যবহার করতে গেলে কোন সমস্যা দেখা দেয় কিনা তাও বুঝতে পারবেন।
মোবাইলের পোর্ট যাচাই:
মোবাইলের পোর্ট গুলো ভালো করে লক্ষ্য করুন। অনেক সময় দেখা যায় পুরাতন মোবাইলের পোর্ট কোড গুলো বিশেষ করে হেডফোনের জ্যাক এর পোট, চার্জার পোর্ট এর সমস্যা থাকে। এখানে আপনাকে একটি সিক্রেট বলে রাখি, আপনি যদি চার্জারের পট্টি টি ভাল করে দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন মোবাইলটি কত সময় পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়েছে এই। কারণ অত বেশি ব্যবহার করবে তত বেশি চার্জে লাগাতে হবে। যার কারণে চার্জার পট টি অনেক ক্ষয় হয়ে।
মোবাইলের মালিকানা যাচাই:
পুরাতন মোবাইল কেনার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই যে বিষয়ের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে তা হলো মোবাইল এর মালিকানা।নয়তো ঝামেলায় পড়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। কারণ অনেকে অন্যের মোবাইল চুরি করে বিক্রি করতে পারে। তাই আগে দেখে নিবে এটি চুরি কিনা। বিক্রেতা যে মোবাইলটির প্রকৃত মালিক বা মোবাইল চুরির নয় তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য কিছু বিষয় দেখতে পারেন।
মোবাইল ক্রয়ের রশিদ:
পুরাতন মোবাইল ক্রয় করার আগে আপনাকে অবশ্যই বিক্রেতার কাছ থেকে মোবাইলটির পূর্বের ক্রয়ের রশিদ চেয়ে নিতে হবে। যদিও অনেকেই এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয় না। কিন্তু আপনি যদি এটি নিশ্চিত হতে চান যে এটি চুরির মোবাইল বিক্রেতা নিজেই এই মোবাইলের মালিক তাহলে অবশ্যই আপনাকে রশিদটি নিতে হবে।
আইএমইআই নাম্বার মিলানো:
ক্রোয় রশিদ এই ফোনের আই এম এম আই নম্বর আছে কিনা চেক করে নিন। পুরাতন মোবাইল থেকে*#০৬# ডায়াল করলেই ঐ ফোনের আই এম এম ই আই নাম্বার পাবেন।রশিদ টিতে যদি ওই মোবাইলের হয় তাহলে রশিদ ওই আইএমইআই নম্বর থাকবে।
মোবাইলটি বৈধতা যাচাই:
এবার আপনাকে দেখতে হবে মোবাইলটি বৈধ কিনা। অর্থাৎ মোবাইলটির আই এম ই আই নাম্বার দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা আছে কিনা। কারণ বর্তমানে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী যে মোবাইল আই এম আইএমইআই গুলো ওই মোবাইল মোবাইলগুলো অবৈধ মোবাইল হিসেবে খুব শীঘ্রই বন্ধ করে দেওয়া হবে। এজন্য প্রথমে আপনি আইএমইআই চেক করে নিন।
অন্যান্য যাচাই:
মোবাইলের আরো কিছু অতিরিক্ত তথ্য আপনাকে যাচাই করি নিতে হবে। যেমন মোবাইলটির ক্যামেরা কত মেগাপিক্সেল এর? রেম ও রম কতটুকু আছে। এটি প্রসেসর কেমন? এটি ভার্সন কত? ফোনটি নেটওয়ার্ক সিগন্যাল কেমন? মোবাইল চার্জিং অবস্থা কেমন? এই মোবাইল থেকে আপনার পরিচিত কারো সাথে কথা বলে মাউথ স্পিকার ইয়ার স্পিকার চেক করে নিন। কারণ অনেক সময় মাউথ স্পিকার এবং ইয়ার স্পিকার সমস্যা থাকতে পারে। সব ভালো ভাবে দেখে নিন। নয়তো দেখা যাবে আপনি মোবাইলটি কিনতে বেশি দাম দিয়ে দিলেন কিন্তু এটি তেমন ভালো নয় এমন একটি মোবাইল কিনে ফেলবেন।
দাম নির্ধারণ:
সব কিছু দেখার পর যদি মোবাইলটি ভালো মনে হয় তাহলে মোবাইল টির দাম ঠিক করুন। মোবাইল তীর এমন একটি দাম নির্ধারণ করুন যাতে আপনার জন্য সাশ্রয়ী হয়। বর্তমান মূল্যের কয়েকটি মোবাইল ফোন। দামের ব্যাপারে ধারণার জন্য আপনি চাইলে ইন্টারনেট থেকে মোবাইলটি বর্তমান বাজারের দাম দেখে নিন। তারপর মোবাইলের কনফিগারেশন ও আগে কত সময় পর্যন্ত এটি ব্যবহার করা হয়েছে ইত্যাদির উপর নির্ভর করে একটি দাম ঠিক করে নিন।
পরিশেষে:
এই টিপস গুলো না জেনে পুরাতন ফোন কিনবেন না সম্পর্কে উপরের টিপসগুলো অনুসরণ করলে আশা করি আপনি খুব কম দামে ভালো একটি পুরাতন মোবাইল কিনতে পারবেন এবং পুরাতন মোবাইল কিনতে গিয়ে আর আপনি ঠকবেন না। আমার দেখানো টিপসগুলো ছাড়াও যদি আপনি অন্য কোন টিপস জানা থাকে তাহলে সেটি এপ্লাই করে দেখতে পারেন।এই টিপস গুলো না জেনে পুরাতন ফোন কিনবেন না উপরে আপনাদের সকল ধরনের টিপস দেওয়া হয়েছে। আশা করি আপনারা অবশ্যই পুরাতন ফোন কেনার আগে আমাদের এই টিপস গুলো ভালোভাবে পড়বেন।