চাঁদ সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা এবং সেগুলোর ব্যাপারে সঠিক তথ্য
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক আজ আমরা আপনাদের সাথে একদম আলাদা একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। সেটা হচ্ছে চাঁদ সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা এবং সেগুলোর ব্যাপারে সঠিক তথ্য জানুন এই বিষয়ে আপনাদের আজকে বলবো। অনেকের মনে চাঁদ সম্পর্কে সত্যিই অনেক ভুল ধারণা হয়ে থাকে। এবং সেই ভুল ধারনাগুলো কি আদৌ ভুল? নাকি কুসংস্কার। চলুন তাহলে চাঁদ সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা এবং সেগুলোর ব্যাপারে সঠিক তথ্য জেনে নেয়া যাক।
মানবসভ্যতার জন্মের শুরু থেকেই মানুষ চাঁদ দেখে অভিভূত হয়েছে। চাঁদ মহাকাশের আমাদের এক ধরনের সবথেকে কাছের প্রতিবেশী। তাই তা নিয়ে মানুষের এই অভিভূত হওয়া স্বাভাবিক। তাদের মধ্যে রয়েছে রহস্যময়তা, আর এই রহস্যময়তাই মানুষের মনের সৃষ্টি করেছে চাঁদ নিয়ে অসংখ্য জল্পনা-কল্পনা ওকিং বন্দি। কিন্তু বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে চাঁদ নিয়ে মানুষের অনেক ধারণা ভুল।
চাঁদ নিয়ে কিছু ধারণা মানুষের মনে এমন ভাবে গেঁথে গিয়েছে যে এখন সঠিক থেকে ভুল আলাদা করাই কঠিন হয়ে গিয়েছে। যেমন চাঁদের বুড়ির সুতা কাটার কথাই ধরুন? অনেকেই তো এটা আগে বিশ্বাস করত। এই ভুল ধারণা গুলো আমাদের সমাজ, সংস্কৃতি ও জীবনের সঙ্গে এক হয়ে গিয়েছে। আজকের এই পোস্টে আমরা চাঁদ সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা এবং সেগুলোর ব্যাপারে সঠিক তথ্য সেগুলোর কয়েকটি নিয়ে আলোচনা করব। সেই সাথে সংশ্লিষ্ট সঠিক তথ্য গুলো আমরা জানাতে চেষ্টা করব।
মানুষ কি আসলেই চাঁদে গিয়েছিল?
চাঁদ নিয়ে সবথেকে বড় ভুল ধারণাটি হলো অনেকেই বিশ্বাস করেন মানুষ কখনো চাঁদে পা ফেলে নি। অনেকের মতেই নাসার অ্যাপোলো 11 মিশন পুরোপুরি বানোয়াট ও সাজানো নাটক ছিল। নাসা ভিডিও এবং ছবি এডিট করার মাধ্যমে মানুষকে বোকা বানিয়ে বলে অনেকেই বিশ্বাস করে থাকেন্র্র্র্র্র। তবে এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন একটি ধারণা। অ্যাপোলো 11 মিশনের অনেক রকম প্রমাণ রয়েছে।
অ্যাপেলো 11 মিশনের হাজার হাজার ছবি রয়েছে, ঘন্টার পর ঘন্টা সময় ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। প্রচুর পরিমাণে বৈজ্ঞানিক তথ্য, অডিও রেকর্ডিং ও রয়েছে এই মিশনের। এছাড়াও 380 কেজি ওজনের একটি চাঁদের পাথর ও রয়েছে যা অ্যাপোলো মিশন হতে ফেরার পথে পৃথিবীতে নিয়ে এসেছিলেন নভোচারীরা। এটি যে চাঁদের ওই পাথর এটা আলাদা ভাবে অসংখ্য ল্যাবরেটরীতে প্রমাণিত হয়েছে। বৈজ্ঞানিক ভাবে চিন্তা করলে আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে যে মানুষ আসলেই চাঁদে গিয়েছিল।
পূর্ণিমা কি মানুষকে পাগল করে ফেলতে পারে?
সারা পৃথিবী জুড়ে অসংখ্য মানুষ বিশ্বাস করে থাকেন যে পূর্ণিমা মানুষের মনের উপর প্রভাব ফেলে। পূর্ণিমার সময় মানুষ পাগল হয়ে যেতে পারে। পূর্ণিমার সময় প্রভাবে অবৈধ বিভিন্ন কাজ করা, ঘুমের মধ্যে হাঁটা, আত্মহত্যা, পাগলের মত আচরণ, এমন ও এর ওয়েন উইল নামের জন্তুতে পরিবর্তিত হয়ে যাওয়া এমন বিভিন্ন কুসংস্কার প্রচলিত আছে সারা বিশ্ব জুড়ে বিভিন্ন সমাজে। হাজার বছর ধরে মনোবিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করতেন যে মানুষের পাগল হয়ে যাওয়ার সঙ্গে তাদের সংযোগ আছে। তবে বিভিন্ন পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে পূর্ণিমার সঙ্গে মানুষের আচরণের বড় ধরনের পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই।
চাঁদের একটি পাস কি পুরোপুরি কালো?
অনেকেই মনে করে থাকেন যে চাঁদের একটি পাশ সব সময় অন্ধকার থাকে। সেটিকে অনেকে চাঁদের কলঙ্ক, অনেকে তাদের অন্ধকার অংশ বলে থাকেন। তবে ধারণাটি একদমই ঠিক নয়। পৃথিবী থেকে আমরা তাদের যে অংশ দেখতে পায় তা সূর্যের আলোয় আলোকিত হয় বলেই আমরা দেখতে পাই। কিন্তু তাদের যে অংশ আমরা দেখতে পাই না, সেই অংশটি একইভাবে সূর্যের আলোয় আলোকিত হয়।
আসলে চাঁদ ও পৃথিবীর দুইটি নিজেদের কক্ষে একই দিকে একইসাথে সূর্যের চারিদিকে ঘুরছে বলে সাধারণত আমরা পৃথিবী হতে চাঁদের 59% দেখতে পাই। বাকি অংশ সব সময় আমাদের দৃষ্টি সীমার আড়ালেই থেকে যায়। তবে চাঁদের সেই অংশটিও একইভাবে সূর্য দ্বারা আলোকিত হয়। তাই চাঁদের একটি পাস সব সময় অন্ধকার থাকে এই ধারণাটি ভুল।
চাঁদের কি অভিকর্ষ বল নেই?
অনেকে চন্দ্রাভিযানের ভিডিওতে চাঁদে নভোচারীদের ভেসে ভেসে হাঁটতে দেখে ভেবে থাকেন যে তাদের কোনো অভিকর্ষ বল নেই। এটি ও সম্পূর্ণ ভুল একটি ধারণা। প্রত্যেক গ্রহ উপগ্রহের একটি নিজস্ব অভিকর্ষজ বল থাকে তার নিজের দিকে টানে। তবে কোথাও বেশি কোথাও কম। পৃথিবীর মতো চাঁদের ও মধ্যাকর্ষণ বল রয়েছে, তবে তা পৃথিবী 6 ভাগের এক ভাগ। তাই চাঁদে অল্প শক্তি ব্যবহার করতেই ভেসে-ভেসে হাটা সম্ভব যা দেখলে মনে হবে তাদের অভিকর্ষ বল।
চন্দ্রগ্রহণ নিয়ে কুসংস্কার
চন্দ্রগ্রহণ নিয়ে নানা রকমের কুসংস্কার চালু রয়েছে পুরো বিশ্বজুড়েই। অনেকের মতে চন্দ্র গ্রহণের সময় খাওয়া ঠিক নয়। চন্দ্রগ্রহণের সময় খারাপ কিছু ঘটবে এই ভ্রান্ত ধারণা পৃথিবীর অনেক দেশে প্রচলিত। তবে এসব ধারণার কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। এসব ভ্রান্ত ধারণা দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন সমাজে তৈরি হয়ে আসছে।
চাঁদ নিয়ে এরকম ধারনা অঞ্চলভেদে, দেশ ভেদে বিভিন্ন স্থানে আলাদা। এখানে পরিচিত কিছু ভ্রান্ত ধারণা তুলে ধরা হয়েছে। তবে তার কিছুটা হলেও মানুষের মনের ওপর প্রভাব ফেলে তা বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। তাই চাঁদ নিয়ে কিছু শুনে বিশ্বাস না করে বৈজ্ঞানিক ভাবে ভাবতে চেষ্টা করাই শ্রেয়।
চাঁদ না থাকলে কি হত?
চাঁদ সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা এবং সেগুলোর ব্যাপারে সঠিক তথ্য সেই প্রাচীনকাল থেকে চাঁদ মানুষের পরম বন্ধু। রাতের আঁধারে ঢাকা আকাশ অপথি মায়াময় আলোতে ঢেকে যায়., চাঁদ এর উপস্থিতিতে। জোসনা রাতে চাঁদ এর আলো সবার মনকে কিছুটা আনন্দিত করে। মানুষের মনের সঙ্গ চাঁদ তাদের সম্পর্ক কি ভাবে আছে ,তা আমাদের সঠিক জানা নেই। কিন্তু অপূর্ব যে আছে সেটা তো সত্য। যুগে যুগে সেকারণেই নিয়ে রচিত হয়েছে হাজারো কাব্যকথা আর গান। চাঁদ নিয়ে গল্প উপকথা সংখ্যাও কম নয়। বিভিন্ন প্রাচীন তাকে রীতিমত দেবতা পূজা করার ছিল।
প্রতি 24 ঘন্টায় একবার নিজ অক্ষে পৃথিবী। এ কই সঙ্গে এক বছরে চক্কর দিচ্ছে সূর্যের চারপাশে। এই পৃথিবীর সঙ্গে নিয়ে চাঁদকে । পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব প্রায় পুনে ৪ লাখ কিলোমিটার প্রায়। পৃথিবীর কেন্দ্রে রেখে ক্রমগত ঘুরতে চাঁদ। ওজন প্রায়৭.৩ ^ 10 . 22 কেজি সূত্র প্রতি মুহূর্তে পৃথিবী নিজের টানছে চাঁদ। এই টানাটানির ফলে প্রতিদিন দুইবার জোয়ার ভাটা হচ্ছে পৃথিবীর বুকে।
চাঁদ সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা এবং সেগুলোর ব্যাপারে সঠিক তথ্য পৃথিবীর উপর সূর্যের চেয়েও চাঁদের মহাকর্ষ টান বেশি। ফলে এখন যে জোয়ার ভাটা দেখি আমরা তার পিছনে চাঁদের ভূমিকাই মুখ্য। মূখ্য কিন্তু উভয়ের টানাটান মোট টান বল কুল ফটোস কিছুটা কমে যায়। চাঁদ না থাকলে, শুধু সূর্যের তান বল কাজ করতে পৃথিবী উপর। হলে সামগ্রিকভাবে জোয়ারের সময় পানির পরিমাণ প্রায় 40 শতাংশ। বিজ্ঞানীদের মতে এতে আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার প্রভাব তেমন একটা পড়তো না ঠিক, কিন্তু বিষয়টি দেখা যেত খালি চোখেই।
পৃথিবী যে নিজ অক্ষে উত্তর দক্ষিণ মেরু বরাবর হেলে আছে, তার পিছনেও কিন্তু যাদের অবদান রয়েছে। পৃথিবীর হেলানো অবস্থায় স্থির থাকতে সাহায্য করে চাঁদ। চাঁদ না থাকলে, এই অবস্থায় স্ত্রীর থাকতো না । প্রভাবপোর্তো ভূসংস্থান এবং ঋতু পরিবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।