ব্লগ লিখে আয় করার উপায় গুলো কি কি
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা ভালো আছেন। আজ আমি আপনাদের সাথে ব্লগ লিখে আয় করার উপায় গুলো কি কি এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। আমরা অনেকেই লেখালেখি করতে পছন্দ করি। তবে লেখালেখি করেও যে টাকা ইনকাম করা যায় সেটা অনেকেই জানে না। তাই আজ আমি আপনাদের সাথে ব্লগ লিখে আয় করার উপায় গুলো কি কি এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। চলুন তাহলে শুরু করা যাক ব্লগ লিখে আয় করার উপায় গুলো কি কি এই বিষয়ে।
অনেক বছর আগে পর্যন্ত নিজের লেখা গল্প, প্রবন্ধ, কবিতা, মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া ছিল বেশ কঠিন।, বড় পত্রিকায় ছাপার সুযোগ পান খুবই কম সংখ্যক লেখক, না হলে ভরসা ম্যাগাজিন, তাতেও রয়েছে বিক্রির সমস্যা। আর এই লেখা থেকে আয়? সেই সুযোগ তো মেলে ভাগ্যবানদের। তবে অবস্থাটা দ্রুতই বদলেছে, ঘরে ঘরে ইন্টারনেট আসার হাত ধরে এসেছে ব্লোগিং। নিজের মতামত, লেখা, কবিতা, ছবি সব কিছুই মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার সহজ উপায় ব্লক।
ব্লগ লিখে আয় করার উপায় গুলো কি কি অনেকের অজানা। অনেকেই বলেন ভারতে এখনও ব্লগ লিখে আয় করার যথেষ্ট সুযোগ নেই। কিন্তু এই দেশে অনেক ব্লগার রয়েছেন যারা তাদের ব্লগ থেকে আয় করছে লাখ লাখ টাকা। উপায় আছে হাতের কাছেই। জানতে হবে কয়েকটি সহজ পদ্ধতি, আর তাহলে আপনার ব্লগটি হবে আপনার ভবিষ্যতের আয়ের পর।
বিজ্ঞাপন প্রকাশ
সব থেকে সহজও প্রচলিত উপায় হচ্ছে এটি। যদি আপনি প্রথমবার আপনার ব্লগ থেকে আয়ের কথা ভাবেন তাহলে বেছে নিন এই। ব্লগ লিখে আয় করার উপায় গুলো কি কি এর মধ্যে একটি বহুল প্রকাশিত প্রক্রিয়া। সারা পৃথিবীতেই ব্লগে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে তা থেকে একটু চালু উপায়,আর আমাদের দেশেও তা সমান জনপ্রিয়।
কিভাবে কাজ করে
আপনার ব্লগে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করুন, পাঠক যদি সেই বিজ্ঞাপনে ক্লিক করে তাহলেই মিলবে কমিশন। তাহলেই আপনার যত জনপাঠক মিলবে ততই আপনার কমিশন বাড়বে।
আপনার ব্লগে কিভাবে এটি ব্যবহার করবেন
* প্রথমেই বেছে নিন একটি বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক। ব্লগার এবং বিজ্ঞাপন দাতা উভয়ের মধ্যেই সবচেয়ে জনপ্রিয় বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক হলেও গুগল এডসেন্স। রয়েছে বিড ভার টিচার , ইনফোলিং,স এর মত অন্যান্য নেটওয়ার্ক।
* আপনার পছন্দের নেটওয়ার্কের বিজ্ঞাপন প্রকাশ হওয়ার জন্য আবেদন করুন। অন্যান্য তথ্যের সঙ্গে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, যেখানে কমিশনের টাকা পাঠানো হবে তার বিবরণও দিতে হবে আবেদন পত্র, তাই সেই বিবরণ তৈরি রাখুন।
* আপনার আবেদন মঞ্জুর হলে বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্কের তরফ থেকে তা জানিয়ে আপনাকে একটি মেল করা হবে।
* এরপর আপনাকে পাঠানো হবে বিজ্ঞাপন কোড যা আপনি আপনার ব্লগে প্রকাশ করবেন। আপনি আপনার পছন্দ মতো জায়গায় একটি প্রকাশ করতে পারেন, যেমন আপনি একটি লেখার মাঝে বা লেখার পাশে বাড়ে রাখতে পারেন।
* আপনি বিজ্ঞাপন কোডটি ঠিক স্থানে রাখার দুই ঘণ্টার মধ্যে বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে তা আপনার ব্লগে প্রকাশ করা হবে এবং বিজ্ঞাপনটি আপনার ব্লগে দেখাবে।।
* আপনার কাজ শেষ।এবার আপনার পাঠকরা ওই ভিডিওগুলি ক্লিক করলেই পয়সা জমা পড়বে আপনার একাউন্টে।
কত টাকা পেতে পারেন
প্রতি ক্লিকে ০.১ থেকে ৫০ ইউএস ডলার পর্যন্ত আয় করা যেতে পারে। আপনার ব্লগের বিষয়ের ওপরই নির্ভর করে এই আয়, কারণ ব্লগের বিষয়ে ভিত্তিতে দেওয়া হয় বিজ্ঞাপন। আপনার আয়ের পরিমাণ নির্ভর করছে কতজন বিজ্ঞাপনটি ক্লিক করছেন তার উপর।
বেশি আয় করবেন কিভাবে
আপনার ব্লগে কোন জায়গায় বিজ্ঞাপন দিলে সব থেকে বেশি পাঠকের চোখে পড়বে এবং তারা তা ক্লিক করতে উৎসাহিত হবেন, সেটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। ঠিক করুন বিজ্ঞাপনের ধরুন। যেমন কোন ব্লগে ছবিসহ বিজ্ঞাপনের বেশি ক্লিক হয় আবার অন্য কোন ব্লগের লেখা বিজ্ঞাপনের পাঠক বেশি।
মার্কেটিং এফিলিয়েট
বেশ ভাল রকমের আই হতে পারে এই উপায়ে।। ব্লগে লেখার মাধ্যমে কোন একটি পর্ন বা পরিষেবার প্রচার করতে হবে আপনাকে।। বন্য বা পরিষেবাটি বাছার বিষয়ে সতর্ক হোন। আপনার পাঠকরা কি কিনতে চাইতে পারে সেটি বুঝে নিতে হবে আপনাকে।। এর জন্য প্রয়োজন গবেষণা ও বিশ্লেষণ। প্রচার করার সময়ও হতে হবে সাবধানে, পাঠক আপনার লেখা পড়তে আপনার ব্লগে আসেন, সারাক্ষণ পণ্য বা পরিষেবার প্রচার দেখলে তিনি বিরক্ত হতে পারেন।
আপনার ব্লগে এটি ব্যবহার করবেন
* প্রথমে বেছে নিন কোন পণ্য বা পরিষেবার মার্কেটিং করতে চান। কয়েকটি প্রচলিত এভিলিয়েট নেটওয়ার্ক খোলো ক্লিক ব্যাংক, ওএমজি ইন্ডিয়া, প্রোডাক্ট মিডিয়া। এছাড়াও ফ্লিপক কার্ড বা আমাজনের মত কোম্পানিতে মার্কেটিং এ ফিরিয়েট হিসেবে সরাসরি যুক্ত হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
* পছন্দের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন পত্র পূরণ করুন।। আপনি মার্কেটিং এর জন্য কি কি কৌশল পদ্ধতি ঠিক করেছেন তা জানতে হবে হতে পারে আবেদনের সময়।
* বেশিরভাগ ওয়েবসাইট২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দে আপনার আবেদন গৃহীত হলো কিনা।
* আবেদন গৃহীত হলে আপনার এফিলিয়েট একাউন্টটিতে লগইন করে বেছে নিতে পারেন আপনার ব্লগের জন্য উপযুক্ত লিংকটি। উপযুক্ত লিংক বা বিজ্ঞাপনটি আপনার ব্লগের যোগ করার পর দেখে নিন তা ঠিকমত কাজ করছে কিনা।
কত টাকা পেতে পারেন
বিক্রয় মূল্যের 2.5 শতাংশ থেকে 50 শতাংশ অবধি পেতে পারেন আপনি। কমিশনের মূল্য নির্ভর করে পণ্য বা ওয়েবসাইটের উপর। যেমন আপনি যদি flipkart এর বিজ্ঞাপন দেন তাহলে কোন ক্রেতা মোবাইল ফোন কিনলে আপনি যে কমিশন পাবেন তার থেকে অনেক বেশি কমিশন পাবেন কেউ জামা কাপড় কিনলে।
ব্লগে সরাসরি বিজ্ঞাপন প্রকাশ
ব্লগ থেকে টাকা রোজকারের খুবই চালু উপায় হল কোন কোম্পানি সঙ্গে সরাসরি কথা বলে তাদের বিজ্ঞাপন ব্লক দিয়ে দেওয়া।। এর ফলে এড নেটওয়ার্ক কে বাদ দিয়েই বিজ্ঞাপন দিতে পারছেন আপনি, বাড়ছে আই। এছাড়াও আপনি ঠিক করেছেন কোন বিজ্ঞাপন দেবেন ও তার জন্য কত টাকা ধার্য করবেন ফলে নিয়ন্ত্রণ থাকছে আপনার হাতে। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি খুবই ভালো কাজ করলেও অনেক ক্ষেত্রে একেবারে কার্যকরী হয় না।
আপনার ব্লগে এটি ব্যবহার করবেন কিভাবে
*কোন জায়গায় বিজ্ঞাপন ব্লগ দিতে চান ঠিক করুন, হেডার, ফুটার, সাইডবার বা লেখার মধ্যে যেকোনো জায়গায় দিতে পারেন বিজ্ঞাপনটি।
* আপনার ব্লগে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য কি করতে হবে সেই বিবরণ দিয়ে একটি পাতা তৈরি করুন। সেখানে লিখুন আপনার পাঠক কারা, আপনি কি বিষয়ে লেখেন, এবং আপনার ব্লগে বিজ্ঞাপনের মূল্য কত। ব্লগের বিভিন্ন জায়গার জন্য বিভিন্ন মূল্য নির্ধারণ করতে পারেন, যেমন হেডারের হয়তো আপনি বেশি মূল্য ঠিক করলেন আর লেখার মধ্যে কম। আপনার যোগাযোগ নম্বর বা ইমেল আইডি উল্লেখ করুন।
* মনিটাইজেশন নেটওয়ার্ক- এ নিজের ব্লগে নথিভুক্ত করান। এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আপনি অনেক বিজ্ঞাপনদাতার কাছে পৌঁছাতে পারবেন। বাই সেল এডসএরকম একটি জনপ্রিয় নেটওয়ার্ক।
* অনেক সময় বিজ্ঞাপনদাতার মূল্যের বিষয়টি আলোচনার মধ্যে স্থির করতে চাই সেই সুযোগ রাখুন মূল্যের বিষয়ে সহমতে এলে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করুন ও টাকা পান।
ব্লগের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্স
আপনি ব্লগিং করছেন মানে কোন বিষয়ের ওপর নিশ্চয়ই আপনার কিছু জ্ঞানও দক্ষতা রয়েছে। যেমন ধরুন আপনি ভালো কেক বানাতে পারেন, বা আঁকতে পারেন, ব্লগে আপনার এই দক্ষতার প্রচার করুন ও ফ্রিল্যান্স কাজ জোগাড় করে নিন। ধরুন এরকম কোন দক্ষতাই আপনার নেই, তাহলেও শুধুমাত্র ব্লগিং সংক্রান্ত টিপস দিয়ে আয় করতে পারেন আপনি। দেখবেন অনেকেই টাকা দিয়ে আপনার পরামর্শ নিচ্ছে তাই এতদিন আপনি বিনামূল্যে দিয়ে এসেছেন।
ব্লগে কিভাবে এটি ব্যবহার করবেন
* ফ্রিল্যান্স হিসেবে আপনি কি কি কাজ করতে পারেন তা সংক্ষেপে লিখুন।, লিখুন কোন একজন আপনাকে কাজ দেবে, অন্যদের থেকে আপনি কোথায় এগিয়ে, উল্লেখ করুন যোগাযোগের নম্বর ও টাকা।।
* আপনার পাঠকদের জানান কি কি কাজ আপনি করতে চান,তাদের আগ্রহ তৈরি করুন, তাদের বলুন তার পরিবার ও বন্ধুদের আপনার দক্ষতার কথা জানাতে। তারা যেহেতু ইতিমধ্যে আপনার ব্লগ পড়েন ও আপনার দক্ষতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল তাই তারা সহজে আগ্রহী হবেন।
* যখন কোন প্রজেক্ট নেবেন, তা পেশাদারিত্বের সঙ্গে শেষ করুন। আপনার ব্লগ থেকে আয় করুন।
কত টাকা আয় করতে পারেন
আই নির্ভর করছে আপনার জ্ঞান ও দক্ষতার উপর। এছাড়াও আপনার দক্ষতার চাহিদার ও কোন নির্ভর করছে আয়ের পরিমাণ। আপনি যদি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে কাজ করতে পারেন এবং জটিল প্রজেক্ট কাজ করার উপযোগী হন তাহলেই বাড়বে আইন।
পরিশেষে আপনারা যদি ব্লগ লিখে আয় করার উপায় গুলো কি কি এই বিষয়ে জানতে চান তাহলে অবশ্যই আমাদের আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। তবেই আপনারা বুঝতে পারবেন ব্লগ লিখে আয় করার উপায় গুলো কি কি হতে পারে। এবং ব্লগ লিখে আয় করার উপায় গুলো কি কি হতে পারে এই বিষয়ে আপনি অন্যদেরও ধারণা দিতে পারবেন।