দাড়ি গজানোর সহজ উপায় জেনে নিন
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা ভালো আছেন। আজ আমরা আপনাদের সাথে দাড়ি গজানোর সহজ উপায় জেনে নিন এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। দাড়ি গজানোর সহজ উপায় জেনে নিন এই বিষয়টি হয়তোবা অনেকেরই অজানা। তাই আজ আমরা আপনাদের সাথে এই অজানা তথ্য টি হাজির করছি এই আর্টিকেলে।
অনেক পুরুষেরই ইচ্ছা তাদের মুখ ভর্তি দাড়ি থাকুক। কিন্তু তাদের ইচ্ছা থাকা সত্বেও তাদের কাঙ্ক্ষিত দাড়ি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয় না অনেক যুবকের। বাজারে বিভিন্ন ধরনের তেল ও রসুন কিনতে পাওয়া যায় যেগুলো দাড়ি গজাতে সহায়ক বলে দাবি করা হয়। তবে সেসব খরচসাপেক্ষ বিষয় এবং সেইসঙ্গে থাকতে পারে পার্শপ্রতিক্রিয়া। আপনার যদি মুখ ভর্তি দাড়ি পাওয়ার প্রত্যাশা থাকে তবে বেছে নিতে পারেন কিছু ঘরোয়া উপায়। তাহলে চলুন দাড়ি গজানোর সহজ উপায় জেনে নিন ঘরোয়া উপায়।
চুল ঘন ঘন কাটলেই লম্বা হয় এবং একটি ধারণা করে বেশিরভাগ মানুষ। আসলে এটি ঠিক নয়। এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও নেই। তাই ঘনঘন না কেট এর নির্দিষ্ট বিরতি নিন। ৪ থেকে ৬সপ্তাহ বিরতিতে দাড়ি কাটুন। এত ঘন দাড়ি পাওয়া সহজ হবে।
পেঁয়াজের রস ব্যবহার
পেঁয়াজের রসের ব্যবহার ঘন চুল কিংবা দাড়ি পাওয়া সম্ভব। কারণ পেঁয়াজের রস থাকে সালফার। নিয়মিত মুখেএবং দাড়ির গোড়ায় পেঁয়াজের রস ব্যবহার করলে তার ঘনত্ব বৃদ্ধি বাড়িয়ে দেয়।
হালকা গরম পানির ব্যবহার
দাড়ির সঠিক বৃদ্ধির জন্য মুখের ত্বক পরিষ্কার রাখা জরুরি। সেজন্য হালকা গরম পানি দিয়ে দিনে দুই থেকে তিনবার মুখ ধুয়ে নিতে হবে। এতে নতুন দাড়ি গজানোর সহজ হবে। ফলে দাড়ির ঘনত্ব বৃদ্ধি পাবে।
ম্যাসাজ করুন
আপনার মুখে যদি কোকড়ানো দাড়ি বিক্ষিপ্তভাবে থাকে তবে সে গুলো ছেঁটে ফেলতে পারেন। কারণ এরকম দাড়ি থাকলে তা অন্য দাড়ির বৃদ্ধিতে বাধা দিতে পারে। এছাড়া দিনে অন্তত দুইবার দশ মিনিট করে মুখে হালকা করে ম্যাসাজ করতে হবে। এতে মুখে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে। ফলে দাড়ি বাড়বে দ্রুতই ।
স্ক্রাব করুন
স্ক্রাব করা ত্বকের জন্য উপকারী। এটি নতুন দাড়ি গজানোর পক্ষেও সহায়ক। তাই সপ্তাহে অন্তত একবার মুখে স্ক্রাব করুন। এতে ত্বকের মৃতকোষ দূর হবে, রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে, ফলে নতুন দাড়ি গজাবে।
নারিকেল তেল
নারকেল তেল একটি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার। চুলের যত্নে নারিকেল তেলের ব্যবহার আদিকাল থেকে চলে আসছে। এভাবে দাড়ি গজানোর ক্ষেত্রে নারিকেল তেলের উপকারিতা অপরিসীম। রুক্ষতা দূর করে ত্বকের দাড়ি গজাতে এবং ঘন করতে সাহায্য করে। নারকেল তেলের সাথে রোজমেরি তেল মিশিয়ে ব্যবহার করলে তা আরো বেশি কার্যকর হয়। নারকেল তেলের দশভাগের একভাগ রোজমেরি তেল মিশিয়ে নিন। একটি তুলার সাহায্যে মুখে ব্যবহার করুন মিশ্রণটি। প্রায় 15 মিনিটের মত রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ভালো ফলাফলের জন্য সপ্তাহের দুই থেকে তিনবার এটি ব্যবহার করতে পারেন।
আমলকির তেল
দাড়ির বৃদ্ধির জন্য আমলকির তেল খুব উপকারী। আমলকিতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি। ভালো রাখার সাথে সাথে চুল এবং দাড়ি গজাতে সাহায্য করে। এটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি তাই তেল টি আপনার মুখে নিয়মিত ব্যাবহার করতে পারেন। 2,3ফোটা তেল নিয়ে মুখে ভালো করে ম্যাসাজ করে 20 মিনিট রেখে দিন। এরপর ভালো একটি ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। আশা করছি এই উপায়টি আপনার জন্য অনেক ফলদায়ক হবে।
লেবু এবং দারুচিনি
লেবুর রস এবং দারুচিনির দাড়ি বৃদ্ধি দারুণ কার্যকারী। লেবুতে ক্যালসিয়াম,সাইট্রিক এসিড, ভিটামিন সি, এবং ম্যাগনেসিয়াম এর মত পুষ্টি থাকে কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়। 2 চা চামচ লেবুর রসের সাথে 1 চা চামচ দারুচিনির গুঁড়ো মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে নিন। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে 20 মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দ্রুত এবং ভাল ফলাফল পেতে চাইলে সপ্তাহে অন্তত দুইবার এই প্রাকৃতিক ঘরোয়া প্যাক টি ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
মুখের ত্বক পরিষ্কার রাখুন
সাধারণত বাতাসে ধূলিকণা এবং ময়লা দিয়ে আমাদের ত্বকের লোমকূপ আটকে যায়। যা প্রতিদিন পরিষ্কার করাটা অত্যন্ত জরুরী । তা না হলে আটকে থাকা লোমকূপগুলো থেকে সহজে দাড়ি গজাতে পারে না। তাই প্রত্যেক বার বাইরে থেকে ঘরে ফিরে ভালো ব্রান্ডের ক্লিনজার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে ফেলুন। এতে দাড়ি গজানো সাথে সাথে দাড়ি ঘন সম্ভাবনা সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে।
ধূমপান করা থেকে বিরত থাকুন
ধূমপানের ফলে চুল পড়া বেড়ে যায় এবং তারসাথে দাড়ি গজানো হ্রাস পেতে থাকে। তামাকের ধোঁয়ায় অনেক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ থাকে। এই রাসায়নিক পদার্থ দাড়ির কোষে পুষ্টি চাহিদা পূরণ করা রক্তনালীর প্রদাহ এবং ডি এন এর ক্ষতি সাধন করে থাকে। স্বাভাবিক ভাবে দাড়ির বৃদ্ধি কমে যায়।
তাই আপনি যদি দাড়ি ঘন করতে চান তবে প্রথমেই ধূমপান ত্যাগ করুন। এর ফলে আপনার ত্বকের প্রদাহ এবং রক্তনালীর ক্ষতির সম্ভাবনা কমে যাবে। এবং আপনি খুব দ্রুত আপনার দাড়ি ঘন এবং বড় করতে পারবেন। যদিও ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করাটা বেশিরভাগ মানুষই অত্যন্ত কঠিন অথবা অসম্ভব মনে করেন। তবে ধীরে ধীরে চেষ্টা করতে থাকলে অবশ্যই এই অভ্যাসটি পরিবর্তন করা সম্ভব।
খাদ্যতালিকায় ভিটামিন এবং প্রোটিন রাখুন
দাড়ি গজানোর ক্ষেত্রে আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকা অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন এবং প্রোটিন নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়া ফলিকলগুলোকে পুনরায় সক্রিয় করে তোলে। যার ফলে যেসব জায়গা থেকে দাড়ি গজানো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সে সব থেকে নতুন করে দাড়ি গজানো শুরু করে। তাই প্রতিদিনকার খাবারের পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এবং প্রোটিন রাখা জরুরি। মাছ, ডিম, এবং দুগ্ধজাত খাবার থেকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং প্রোটিন পাওয়া যায়। মাংস এবং সামুদ্রিক মাছ ভিটামিন বি 12 এর চাহিদা পূরণ করে। এছাড়াও ভিটামিন বি যুক্ত খাবার গুলো দাড়ি গজানোর ক্ষেত্রে খুব কার্যকারী। দাড়ি গজানোর সহজ উপায় জেনে নিন এটার প্রধান উপাদান হচ্ছে খাদ্যতালিকায় ভিটামিন এবং প্রোটিন খাদ্য রাখুন।
পরিমিত ঘুম
আপনি যদি প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান তবে আপনার শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। যার ফলে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় দাড়ি গজানো এবং বেড়ে ওঠা বাধাপ্রাপ্ত হবে। সাধারণতঃ ঘুমের সময় আমাদের শরীরের ঘাটতি পূরণ হতে থাকে। ঠিকমতো ঘুম না হলে শরীর বিকাশে সমস্যা হতে পারে। যার কারণে শরীরের লোম চুল এবং দাড়ি বেড়ে উঠতে সমস্যা তৈরি হয়। তাই প্রতিদিন সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন।
কারণতো হরমোনজনিত অথবা বংশগত কারণে দাড়ি ঠিকমতো গজায় না। পুরুষ দেহে ক্রোধের হরমোন থাকে যার নাম টেস্টোটেরোন । এই হরমোনের অভাবে দাড়ি গজানোর ব্যাহত হয় অথবা অনেক দেরিতে গজায়। এই সমস্যা থেকে পরিত্রান পেতে হলে অবশ্যই আপনাকে আমাদের দেখা ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো জেনে নিতে হবে।
পরিশেষে
তাই আপনারা দাড়ি গজানোর সহজ উপায় জেনে নিন এই বিষয়ে জানার জন্য অবশ্যই আমাদের আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়বেন মনোযোগ দিয়ে। দাড়ি গজানোর প সহজ উপায় ঠিক সময় মতো দাড়ি না গজানোর উপায় গুলো অনুসরণ করে দেখুন। অনেকেই মনে করেন বারবার দাড়ি কমিয়ে ফেলে দ্রুত দাড়ি গজায়। কিন্তু এই ধারণা টি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। এতে আরও দাড়ি হালকা হয়ে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে ।