কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক আপনারা নিশ্চয়ই ভাল আছেন। আজ আমি আপনাদের সাথে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা নিয়ে আলোচনা ।আমরা হয়তোবা অনেকেই জানিনা কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা কতটুকু হলে আমরা কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার পড়তে পারবো। তাই আজ আমরা আপনাদের সাথে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা নিয়ে হাজির হয়েছি। বর্তমান ছেলেমেয়েদের মধ্যে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা এ বিষয়ে নিয়ে পড়াশুনা করলে কি ধরনের ক্যারিয়ার হতে হবে তা নিয়ে একটি প্রশ্ন কাজ করে। কারণ এই একবিংশশতাব্দীতে যখন সকল ধরনের প্রযুক্তি এই কম্পিউটার কে ঘিরে গড়ে উঠেছে তখন এ বিষয় নিয়ে আগ্রহ তৈরি হওয়াটাই স্বাভাবিক।
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং কি
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং কম্পিউটার সায়েন্স এবং ইলেকট্রিক্যাল সায়েন্স এর সমন্বয়ে তৈরি। এটি মূলত এই দুই ধারা সম্বন্ধে বিভিন্ন হার্ডওয়ার এবং ফার্মওয়্যার তৈরি করে যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। যেমন: মাইক্রোসিস, সার্কিট, প্রসেসর, কন্ডাক্টর অন্যান্য জিনিস( যেমন সুপার কম্পিউটার, স্মার্ট ফোন, ল্যাপটপ, সার্ভার, আইওটি গ্যাজেট) বিকাশ, প্রোটোটাইপ ইত্যাদি।
এই ধারার শিক্ষার্থীরা সাধারণত মাইক্রোসিস, বিভিন্ন প্রোটোটাইপ, সার্কিট, প্রসেসর এবং অন্যান্য হার্ডওয়্যার প্রস্তুত এবং সেগুলো নিয়ে গবেষণা করা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। এছাড়াও ফার্মওয়্যার লেভেল পয়েন্ট এবং অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার ও তারা তৈরি করে থাকে, যার ফলে এই হার্ডওয়্যারগুলো ঠিকভাবে কাজ করতে পারি। তাই কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা অনেক বেশি লাগে।
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য আপনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ যোগ্যতা থাকতে হবে। এই যোগ্যতাগুলো কিছু আপনার একাডেমি এবং কিছু যোগ্যতা মানসিক।
বিশ্লেষণ দক্ষতা
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা হিসেবে আপনার প্রথম গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা থাকতে হবে তাহলে। কেননা একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার কে অনেক জটিল এবং দীর্ঘ কোডিং এবং লজিক নিয়ে কাজ করতে হয়। যদি আপনার বিশ্লেষণধর্মী দক্ষতা না থাকে তাহলে সেই ক্ষেত্রে আপনি এই জটিল সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারবেন না।
সমস্যার গভীরে পৌঁছানোর দক্ষতা
সমস্যা সমাধানের দক্ষতা
একটি হার্ডওয়ার কিংবা সফটওয়্যার বানানোর পরে কিন্তু কাজ শেষ হয়ে যায় না। এ কাজটি করার অনেক সময় অপ্রত্যাশিত কিছু সমস্যার উদ্ভব হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সমস্যার স্থায়ী সমাধান এবং ভবিষ্যতে নিরাপত্তা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার দক্ষতা থাকতে হবে।
গাণিতিক দক্ষতা
একজন কম্পিউটার প্রকৌশলী কে অবশ্যই গাণিতিক দক্ষ হতে হবে। কারণ কম্পিউটার মানে গণিত এবং এর সব ধরনের কাজ গণিত এর মাধ্যমে করা যায়। তাই আপনি যদি হন তাহলে এই ধারায় পড়াশুনা করা আপনার জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
পদার্থবিজ্ঞান এর দক্ষতা
আপনার যদি কম্পিউটারইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশুনা করার পূর্ব পরিকল্পনা থাকে তাহলে আমাদের পরামর্শ হলো, গণিতের পাশাপাশি পদার্থবিজ্ঞানে ও নিজেকে দক্ষ রাখা। কারণ আপনি যখন কন্ডাক্টর, মাইক্রোসিস এবং অন্যান্য হার্ডওয়্যার নিয়ে কাজ করবেন তখন ইলেকট্রনিক সম্পর্কে ভালো ধারণা না থাকলে এই বিষয়গুলো বুঝতে কষ্টকর হয়ে পড়বে।
তাহলে বোঝা যাচ্ছে, একজন কম্পিউটার প্রকৌশলী হওয়া খুব সহজ কাজ নয়। এজন্য আপনার বিশ্লেষণ দক্ষতা সমস্যার গভীরে তার সমাধান খুঁজে বের করার মতো দক্ষতা থাকতে হবে। আর এইসব ক্ষেত্রে ভালো করলে আপনি এ পেশায় ভালো কিছু করতে পারবেন।
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এর বেতন
আপনি যখন ঐ কোন একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে পড়াশোনা করে সেই বিষয়ের উপর নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চাইবেন তখন স্বাভাবিক ভাবেই আপনার বেতন কত হবে প্রশ্ন মাথায় আসতেই পারে। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং হচ্ছে এমন একটি পেশা যে একই ক্রমবর্ধমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে নিজের চাহিদা বাড়িয়ে চলছে। বর্তমান বিশ্বে বিশেষ করে আমেরিকায় কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। এর কারণ হিসেবে কাজ করছে রোবট সাইন্স এর বিস্তার, গবেষণা এবং ক্রমবর্ধমান নতুন নতুন প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তা এবং বিস্তার।
বাংলাদেশি কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং প্রয়োজনীয়তা পিছিয়ে নেই। আজ থেকে সাত-আট বছর আগে ও এই পেশা টি ততটা জনপ্রিয় এবং চাহিদা ভুল ছিল না। বিশ্ব যত এগিয়ে যাচ্ছে তত বেশি এ কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার এর চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে। বর্তমান একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংযিনি বেশকিছু প্রজেক্ট,পেপার এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সফল ভাবে অংশগ্রহণ করছেন এবং যার প্রোগ্রামিং স্কিল ভালো, তার ন্যূনতম বেতন ধরা হয় 35 হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ছয় অঙ্কের অতিক্রম করতে দেখা যায়।
কোথায় পড়বেন
বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া হয়। নিচে বিশ্বের শীর্ষ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম দেওয়া হল।-
- ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি
- ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া( বাকলে)
- স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, ক্যালিফোর্নিয়া
- ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনইস
- কার্নেগী মিলন ইউনিভার্সিটি
- জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি
- ইউনিভার্সিটি অফ মিছিগান এন আর্বর
- ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি
- ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটন
কি ভাবছেন? বাংলাদেশে কোন ইউনিভার্সিটিতে আপনি কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়বেন। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কোন প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এর জন্য ভালো হবে তা কিছু বৈশিষ্ট্য ওপর নির্ভর করে। যেমন উক্তি প্রতিষ্ঠান আই ই বি এর অনুমোদন প্রাপ্ত না হলে আপনার নামের পাশে ইঞ্জিনিয়ার শব্দটি ব্যবহার করতে পারবেন না। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি কম্পিউটার ফ্যাসিলিটি কেমন বা স্ট্রাকদ এর যোগ্যতা কেমন তা যাচাই করতে হবে। পাশাপাশি বিভাগের শিক্ষকদের থিসস , প্রজেক্ট এবং অন্যান্য শিক্ষাগত যোগ্যতা গুলো দেখতে হবে।
এই বিষয়গুলো সামনে রেখে বাংলাদেশের শিশু বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম
- ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি
- ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ
- ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ
- ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
- গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ
- আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ
- নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি
- ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
- ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক
- স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ
- ইউনিভার্সিটি অফ লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ
- ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রাম
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এর ভবিষ্যৎ
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের জন্য একটি উজ্জ্বল ক্যারিয়ারের সুযোগ তৈরি করেছে। যদি কেউ ভালো কোন প্রতিষ্ঠানে ডেভলপার কিংবা প্রোগ্রামার হিসেবে চাকরি করতে চাই সেখানেও এখন ক্রমবর্ধমান বিভিন্ন সুযোগ তৈরি হচ্ছে। আপনার যদি উদ্যোক্ত তা হতে চান তবে সেটাও করতে পারেন। আবার বিভিন্ন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ের উপর উচ্চতার পর্যায়ে রিসার্চে সুযোগ রয়েছে। বিদেশে উচ্চশিক্ষায় পড়তে যাওয়া বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের অনেকেই এই বিষয়ের ওপর স্নাতক ডিগ্রী নিতে চাচ্ছেন ।
বরং প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্রমবর্ধমান চাহিদার উপর দৃষ্টি রেখে বিষয়টি যোগ করেছে। পৃথিবী প্রতিদিন আরও বেশি কম্পিউটার নির্ভরশীল হয়ে উঠছে এবং এই বিষয়ে অধ্যয়ন করে একটি পেশা প্রতিষ্ঠান সুযোগ বাড়ছে। এছাড়াও সরকারি বিভিন্ন ক্ষেত্রে বর্তমানে প্রচুর পরিমাণে কম্পিউটার প্রকৌশলী নেয়া হচ্ছে যা অন্যতম একটি উজ্জ্বল সেক্টর। এছাড়াও বর্তমানে রয়েছেন যারা এই বিষয়ে স্টার্টআপ দিয়ে সফল হয়েছেন ।সম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের অনেক তরুণ-তরুণীরা এই বিষয়ে পড়াশোনার শেষ করে গুগল ও মাইক্রোসফটের সহ আরো অনেক বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানগুলোতে জব করছেন।
শেষ কথা
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা সম্পর্কে আমরা আপনাদের অনেক কথাই আলোচনা করেছি। কারণ এই ক্ষেত্রটি শুধু তাদের জন্যই যারা ধৈর্যশীল, মেধাবী এবং নিজেকে এই ক্ষেত্রে উজ্জ্বল দেখতে বদ্ধপরিকর। তাই আজ থেকে নিজেকে তৈরি করুন এবং নিজের ক্যারিয়ারকে নিয়ে যান অনন্য উচ্চতায়। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা সম্পর্কে আপনাদের যদি আরো কিছু জানার থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন। আর অবশ্যই আপনারা কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা সম্পর্কে যদি জানতে চান তাহলে অবশ্যই আমাদের আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়বেন।