ফেসবুক থেকে কেনা কাটার আগে যা জানা জরুরি
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক আজ আমরা আপনাদের সাথে ফেসবুক থেকে কেনা কাটার আগে যা জানা জরুরি সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। আমরা অনেকেই এখন অনলাইন থেকে শপিং করি, জিনিস কেনাবেচার ক্ষেত্রে এখন আমরা অনলাইন কেই একটি মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছি। ডিজিটাল দেশ হিসেবে আমরা এখন বাইরে কোথাও না গিয়ে ঘরের মধ্যে অনলাইনে ফেসবুকের মধ্যে জিনিস কেনা কাটা করতে পারি। এই বিষয়ে আমাদের অনেক কিছুই অজানা তথ্য রয়েছে। তাই আজ আমরা আপনাদের সাথে ফেসবুক থেকে কেনা কাটার আগে যা জানা জরুরি এই বিষয় নিয়ে আলোচনা। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
কেনাবেচার অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে উঠেছে ফেসবুক। অনেকেই ঘরে বসে ব্যবসা চালিয়ে যেতে ফেসবুক ব্যবহার করছেন। আবার ঘরে বসেই পছন্দের পণ্যটি হাতে পেতে বিভিন্ন ফেসবুক পেজ এর উপর আস্থা রাখছেন ক্রেতারা। এতে করে বাচ্চা সময়, কমছে পরিশ্রম ও। হিসেব করে দেখা গেল, লাভবান হচ্ছে উভয় পক্ষ।
দিকে ফেসবুক পেজে বিক্রির নামে প্রতারণা ঘটনা ও কম নয়। অনেকে পছন্দ এর জিনিসটি কিনতে গিয়ে হচ্ছে প্রতারিত । বাহারি রঙের সব ছবি দেখিয়ে আকৃষ্ট করছেন। এরপর ডেলিভারির সময় পাচ্ছেন অত্যন্ত নিম্নমানের পণ্য। কেউ কেউ আবার অগ্রিম মূল্য নিয়ে পণ্য পাঠাচ্ছেন না। আরো ও ও অনেক উপায় আশ্রয় নিচ্ছেন প্রতারণা।
প্রতারণায় তবে কি ফেসবুক থেকে কেনাকাটা বন্ধ করে দেবেন? একদমই নয়। বরং ফেসবুকের পণ্য কিনে ঠকে যেতে না চাইলে সতর্ক হতে হবে আপনাকেই। কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখলে আটকে যাওয়ার ভয় থাকবে না। চলুন জেনে নেয়া যাক কোন বিষয় ফেসবুক থেকে কেনা কাটার আগে যা জানা জরুরি ।
প্রলোভনের পড়বেন না
আপনাকে আকৃষ্ট করার জন্য সব বিক্রয় প্রতিষ্ঠান আকর্ষণীয় সব বিজ্ঞাপন দেবে। তাই কোন আকর্ষণীয় বা লোভনীয় বিজ্ঞাপন দেখলেই হুট করে কিনে ফেলবেন না। প্রথম খেয়াল করুন প্রতিষ্ঠানে নাম ও ঠিকানার সঙ্গে মালিকের ও ঠিকানা মিল রয়েছে কিনা্।
ট্রেড লাইসেন্স
অনলাইন প্রতিষ্ঠানটির ট্রেড লাইসেন্স হয়েছে কিনা জেনে নিন। থাকলে তার নিবন্ধন নম্বর কত তা জেনে নিন। ওয়েবসাইটের ট্রেড লাইসেন্স এর কপি আছে কিনা তা জেনে নিন। এতে ঠকে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
মূল্য পরিশোধের ক্ষেত্রে
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধ করতে বললে প্রথমেই টাকা পাঠিয়ে দেবেন না। কয়েকটি নম্বর থেকে ফোন করে যাচাই-বাছাই করে তারপর টাকা পাঠান। নির্দিষ্ট পণ্য যেন পাঠায় এবং পণ্যের সঙ্গে রশিদ যেন পাঠায় সেটি উল্লেখ করে দেবেন।
ক্যাশ অন ডেলিভারি
পণ্য হাতে পাওয়ার পর মূল্য পরিশোধ করার পদ্ধতিকে বলা হয় ক্যাশ অন ডেলিভারি। তাই আগে পণ্য হাতে পেয়ে বিক্রয় প্রতিনিধিকে সরাসরি মূল্য পরিশোধ করা যায় এমন পেজ থেকে কেনাকাটা করাই বুদ্ধিমানের কাজ। হাতে পাওয়ার পণ্যটি বিক্রয় প্রতিনিধির সামনে চেক করে দেখে নিন।
রিভিউ দেখে নিন
কোন পেজে যদি রিভিউ অপশন না থাকে ভুলে ও সেখান থেকে পণ্য কিনবেন না। অর্ডার করার আগে রিভিউ অপশনে গিয়ে ভাল করে দেখে নিন। সেইসঙ্গে চোখ রাখুন পোস্ট এর নিচের কমেন্ট। পেজটি একদম নতুন কিনা, পোষ্টের রিস কেমন সেগুলো ভালো করে যাচাই করে নিন।
লাইভ দেখুন
যারা পণ্য নিয়ে লাইভে আসে, তাদের পণ্য কিনে ঠকে যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। কারণ তারা বিক্রির উদ্দেশ্যে লাইভ করে থাকে। আর এই লাইভ এর মানে হলো তাদের কাছে পণ্যটি রয়েছে। আবার পছন্দের পণ্যটির খুঁটিনাটি লাইভ এর মাধ্যমে দেখা যায়। তাই যারা পণ্য নিয়ে লাইভ করে তাদের পেজ থেকে পণ্য কেনার চেষ্টা করুন।
দামি পণ্য সস্তায় বিক্রির কথা বললে
কোন বিক্রেতা যদি দামী কোন পণ্য আপনাকে কম দামে বিক্রির কথা বলেন, বুঝবেন প্রতারণার ফন্দি আঁটছে তিনি। প্রতারকেরা এভাবেই ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এবং প্রতারণা করেন। এসব ক্ষেত্রে হয় আপনাকে নকল পণ্য দেবেন, নয়তো দিনশেষে কোন পণ্য দেবেন না প্রতারক।
বিক্রেতা ব্যক্তিগতভাবে দেখা করতে অস্বীকৃতি জানালেন
মূল্য পরিশোধের আগে বিক্রেতার সঙ্গে দেখা হলে পণ্য যাচাই বাছাই করা যায়। কোন বিক্রেতা যদি একই এলাকায় বসবাস করেও দেখা করতে না চায় তবে তার পণ্য ভালভাবে যাচাই করে নেবেন। আর দেখা করলে দিনের বেলায় পাবলিক প্লেসে করতে।
অন্য মাধ্যমে মূল্য পরিশোধ করতে বলবেন
ক্রয় সংক্রান্ত লেনদেন পিপল বা ফেসবুক একাউন্ট মত বিশ্বস্ত মাধ্যমে করা উচিত। এই মাধ্যমগুলোয় সুরক্ষায় নিরাপত্তা দেয়। এবং পণ্য না পেলে অর্থ ফেরত দেয়। কিন্তু বিক্রেতা যদি আপনাকে ভেনমো ক্যাশ অ্যাপ মূল্য পরিশোধের জোরাজুরি করেন, তবে বুঝবেন ঘাপলা আছে। এছাড়া পণ্য কেনা বেচায় যোগাযোগের ক্ষেত্রে ও ফেসবুক মার্কেটপ্লেসের বাইরে যাওয়া উচিত নয়।
মূল্যের বাড়তি অর্থ পরিশোধ করবেন
কিছু ক্ষেত্রে চোর বা অপরাধীরাও বিক্রেতাদের কাছে ক্রেতা এসে হাজির হন। তারা পণ্যের সম্ভাব্য ক্রেতা হিসেবে আগ্রহ দেখান এবং নির্ধারিত মূল্যের বেশি অর্থ পরিশোধ করেন। এক্ষেত্রে প্রতারক ভুয়া চেক, চুরি করা ক্রেডিট কার্ড বাল টাকায় মূল্য পরিশোধ করেন। এরপর ভুলবশত বেশি টাকা পরিশোধ করছেন বলে বাড়তি টাকা নিয়ে এসে পড়েন।
একটা বিষয় লক্ষ্য করা যায় করণা মহামারীর কারণে লকডাউন ছিল। তখন দেখা গেছিল যে সব মার্কেটে প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তখন ছিল ঈদের সময় লক ডাউন এর কারনে কি আর মার্কেট করা হবে না। তবে সেটা করতে গিয়ে আমাদের নির্ভর করতে হবে অনলাইন মার্কেটপ্লেসের ওপর।
লকডাউন এর ডেলিভারি চালু রেখেছে ফেসবুকভিত্তিক অনলাইন পেজ গুলো। ঈদের পোশাকের জন্য যেখানে টু মারতে পারেন। ফেসবুক থেকেকেনাকাটার আগে যা জানা জরুরি আমরা আগেই আপনাদের সাথে বলেছি। তবে অনলাইনে মার্কেট করা বিষয়টি লক্ষ্য করা যায় যখন করণা মহামারীর কারণে লকডাউন ছিল তখন থেকেই অনেক আলোচিত।
পরিশেষে
আমরা এতক্ষন আপনাদের সাথে ফেসবুক থেকে কেনা কাটার আগে যা জানা জরুরি এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলাম। আপনারা হয়তোবা এতোক্ষনে বুঝতে পেরেছেন ফেসবুক থেকে কেনা কাটার আগে যা জানা জরুরি এই বিষয়ে। আপনারা যদি ফেসবুক থেকে কোন জিনিস কেনাকাটা করেন তাহলে অবশ্যই আমাদের আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়বেন। তাহলে আপনারা কোনরকম ঠকবেন না।