গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা

গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা

ভর্তি পরীক্ষা

আমাদের মধ্যে এমন অনেক ভাই এবং বোনেরা আছেন যারা কিনা ইন্টারমিডিয়েট কমপ্লিট করে এখন ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।  আপনাদের মধ্যে অনেকেই জানেন না গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা কিভাবে হয়ে থাকে।  এবং এই না জানার ফলে অনেকে বিভিন্ন ধরনের ভুল করে থাকেন।  তাই আমরা আমাদের আজকের গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা আর্টিকেলটা তৈরি করেছি তাদের জন্য যারা কিনা ভর্তি পরীক্ষা দিতে ইচ্ছুক। 

বিষয়টি হল গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার সম্পর্কে।  ইন্টারমিডিয়েট কমপ্লিট করার পর পরই আমাদের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়ে যায় এই ভর্তি পরীক্ষা অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক হয়ে থাকে। তখন দেখা যায় আলাদা আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় আলাদা আলাদা ভাবে পরীক্ষা হয়ে থাকে। আর এই আলাদা আলাদা পরীক্ষা হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের অনেক ধরনের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।  কিন্তু গুচ্ছ পদ্ধতি এমন একটি পদ্ধতি যেখানে অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয়  মিলে একসাথে পরীক্ষা হয়ে থাকে। তবে চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক আমাদের আজকের আর্টিকেল গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা।  

গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা

সাধারণত গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হয়ে থাকে অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় মিলে।  এই ভর্তি পরীক্ষাতে বিভিন্ন ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একত্রিত হয়ে একটি পরীক্ষার মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীকে যাচাই বাছাই করে।  গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হলে অনেক মানুষের সুবিধা হয়ে থাকে।  কেননা এর ফলে একসাথে অনেকগুলো ইউনিভার্সিটিতে পরীক্ষা দেওয়া হয়।  আর এই পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে আপনি আপনার বিশ্ববিদ্যালয় পেয়ে যাবেন।  কেননা ভর্তি পরীক্ষায় আপনি যেই নাম্বারটা পাবেন সেই নাম্বারটা বিবেচনা করে আপনাকে যেকোনো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অনুমতি দেওয়া হবে।  তাই অবশ্যই আপনাকে ভর্তি পরীক্ষায় ভালো নাম্বার তুলতে হবে 

গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা এর বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা

যে সকল বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা গুচ্ছ পদ্ধতিতে হয়ে থাকে নিচে ওই বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর তালিকা দেওয়া হল।  সব বিশ্ববিদ্যালয় আবার গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হয়ে থাকে না। 

  • জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
  • শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
  • খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
  • বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় 
  • ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় 
  • হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় 
  • মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় 
  • নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় 
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় 
  • জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় 
  • যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় 
  • পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় 
  • বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
  •  বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় 
  • রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় 
  • রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় 
  • বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় 
  • শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় 
  • বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় 
  • পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
  • কিশোরগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
  •  চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় 

এগুলোর মধ্যে কিছু বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়।  আর কিছু বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।  

গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা এর মান বন্টন

গুচ্ছ পদ্ধতিতে যেভাবে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রিত করা হয় সেই বিষয়ে এখন আলোচনা করব।  গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হয় মোট ১০০ নম্বরে।  সকল ইউনিটের পরীক্ষার জন্য এক ঘন্টা সময় বরাদ্দ থাকে।  গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় প্রতিটি প্রশ্নের জন্য থাকবে এক নম্বর এবং প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য 0 দশমিক 25 নম্বর কাটা যাবে। আর এই গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা এর সময় ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে না।  এখন নিচে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার মানবন্টন বিজ্ঞান শাখার ক্ষেত্রে আলোচনা করা হলো। 

এ ইউনিট বিজ্ঞান শাখা

পদার্থবিজ্ঞান বিষয় থেকে থাকবে ২০ নম্বর।  

রসায়ন বিষয় থেকে থাকবে  ২০ নম্বর। 

বাংলা বিষয় থেকে থাকবে ১০ নম্বর। 

 ইংরেজি বিষয় থেকে থাকবে ১০ নম্বর। 

গণিত, জীববিজ্ঞান, আইসিটি, এই তিনটি বিষয় থেকে যেকোনো দুইটি বিষয় থেকে থাকবে ৪০ নম্বর।  একটিতে ২০ নম্বর এবং আরেকটিতে ২০ নম্বর এই মোট ৪০ নম্বর থাকবে এই দুটি বিষয় থেকে। 

মোট ১০০ নম্বর

আপনি যদি বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে পদার্থবিজ্ঞান বিষয়টি থেকে 20  প্রশ্ন করা হবে।  রসায়ন থেকে করা হবে আপনাকে 20 প্রশ্ন। বাংলা বিষয় থেকে আপনার জন্য থাকবে দশটি প্রশ্ন।  আর ইংরেজি বিষয় থেকে থাকবে আপনার জন্য দশটি বরাদ্দকৃত প্রশ্ন।  আপনি যেহেতু বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র বা ছাত্রীর সেহেতু আপনার একটি সুবিধা রয়েছে।  আর এই সুবিধাটি হল আপনি আইসিটি, গণিত, ও জীববিজ্ঞান এই তিনটি বিষয় থেকে যেকোনো দুটি বিষয় উত্তর করতে পারবেন।  

বি ইউনিট মানবিক শাখা

বাংলা থেকে থাকবে ৪০ নম্বর। 

ইংরেজি থেকে থাকবে ৩৫ নম্বর। 

আইসিটি থেকে থাকবে ২৫ নম্বর। 

মোট ১০০ নম্বর। 

আপনি যদি মানবিক শাখার ছাত্র-ছাত্রী হন।  তাহলে বাংলা থেকে আপনার জন্য থাকবে ৪০টি প্রশ্ন।  ইংরেজি থেকে থাকবে ৩৫ টি প্রশ্ন।  আইস্টি থেকে থাকবে ২৫ নম্বর।  মানবিক শাখার জন্য এই মোট ১০ নম্বরে পরীক্ষা হবে। 

সি ইউনিট বাণিজ্য শাখা

হিসাব বিজ্ঞান থেকে থাকবে ২৫ নম্বর।  

ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা থেকে থাকবে ২৫ নম্বর। 

বাংলা থেকে থাকবে ১৩ নম্বর। 

ইংরেজি থেকে থাকবে ১২ নম্বর। 

আইসিটি থেকে থাকবে ২৫ নম্বর। 

মোট  ১০০ নম্বর। 

আপনি যদি বাণিজ্য বিভাগের ছাত্র-ছাত্রী হয়ে থাকেন।  তাহলে হিসাব বিজ্ঞান থেকে আপনার জন্য ২৫ টি প্রশ্ন থাকবে।  ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা থেকে থাকবে ২৫ নম্বর।  আপনার জন্য বাংলা থেকে থাকবে ১৩ নম্বর।  ইংরেজি থেকে থাকবে ১২ নম্বর।  এবং আইসিটি থেকে থাকবে ২৫ নম্বর।  ব্যবসায় শিক্ষা শাখার জন্য এই মোট  ১০০ নম্বরে পরীক্ষা হয়ে থাকে। 

গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা এর আবেদনের যোগ্যতা

শিক্ষার্থীকে অবশ্যই ২০২০ বা ২০২১ সালে এইচএসসি পাস করতে হবে।  আমি  গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তির পরীক্ষার এই আবেদনের যোগ্যতাটা ২০২২ সালে যেই সার্কুলার প্রকাশিত হয়েছে সেই অনুযায়ী বিস্তারিতভাবে আলোচনা করছি। 

বিজ্ঞান বিভাগ

আপনি যদি বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র-ছাত্রী হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে এইচএসসি এবং এসএসসিতে মোট জিপিএ থাকতে হবে ৮ ।  এবং কোনোটিতে যদি জিপিএ ৩ দশমিক ৫০ এর কম হয় তাহলে আবেদন করা যাবে না।  আপনি যদি এইচএসসি বা এসএসসি তে ৩ দশমিক ৫০ এর কম নম্বর পেয়ে থাকেন তাহলে আপনি  গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন করতে পারবেন না।  তাই আপনাকে অবশ্যই দুটি পরীক্ষাতেই ৩ দশমিক ৫০ এর বেশি নাম্বার রাখতে হবে। 

ব্যবসায়ী শিক্ষা বিভাগ

গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা। আপনি যদি ব্যবসায়ি শিক্ষা বিভাগের ছাত্র-ছাত্রী হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে এইচএসসি এবং এসএসসিতে সর্বনিম্ন জিপিএ ছয় থাকতে হবে।  এবং কোনটিতে জিপিএ তিন এর রকম হওয়া যাবে না।  আপনি যদি এসএসসিতে বা এইচ এস সি তে জিপিএ ৩ এর চেয়ে কম পেয়ে থাকেন তাহলে আপনি গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন করতে পারবেন না।  আর আপনি যদি গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে দুটো পরীক্ষাতেই তিন এর বেশি থাকতে হবে।

মানবিক বিভাগ

আপনি যদি মানবিক বিভাগের ছাত্র-ছাত্রী হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে এইচএসসি এবং এসএসসিতে সর্বনিম্ন জিপিএ ছয় থাকতে হবে। এবং আপনি যদি কোনটিতে জিপিএ তিন এর কম নাম্বার পেয়ে থাকেন তাহলে আপনি আবেদন করতে পারবেন না। আপনাকে অবশ্যই দুটি পরীক্ষাতেই জিপিএ ৩ এর চেয়ে বেশি থাকতে হবে।  আর আপনার যদি জিপিএ ৩ এর চেয়ে কম হয় তাহলে আপনি গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি  পরীক্ষার আবেদন করতে পারবেন না।  আর আপনি যদি গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন করতে ইচ্ছুক হন তাহলে আপনাকে অবশ্যই তিন এর বেশি জিপিএ থাকতে হবে।  

এতক্ষণ আমরা ২০২২ সালের সার্কুলারের ভিত্তিতে আবেদনের যোগ্যতার গুলোর বিষয়ে জানলাম।  কিন্তু এই আবেদনের যোগ্যতা গুলো প্রতিবছরই পরিবর্তন হয়ে থাকে।  তাই আপনাকে অবশ্যই আপনার ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা এবং এসএসসি পরীক্ষা ভালো করে দিতে হবে।  যাতে আপনি জিপি এগুলো ভালো আসে।  কেননা যে কোন বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা দেওয়ার পূর্ব একটি শর্ত রয়েছে।  আর সেই শর্তটি হল আবেদনের যোগ্যতা।  আপনি খুবই ভালো স্টুডেন্ট কিন্তু আপনার আবেদনের যোগ্যতা নেই তাহলে আপনি পরীক্ষা দিতে পারবেন না।  তাই আপনাকে অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে এই দুটি পরীক্ষা ভালো করে দিতে হবে।  

গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা সম্পর্কে।  আশা করি আপনারা সবাই বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন আমাদের আজকের আর্টিকেল  গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা সম্পর্কে।  এই ভর্তি পরীক্ষার বিষয়গুলো প্রতিবছরই পরিবর্তন হয়ে থাকে।  তাই আপনাকে অবশ্যই এ সকল বিষয়ের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।  আপনাকে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। 

Md.Mahmud

আমার নাম মোঃ মাহমুদুল হাসান বাবু । আমি পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স এবং মাস্টার্স সম্পন্ন করেছি। এবং ইনফরমেশন টেকনোলজি বিষয়ে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছি । আমি বিজ্ঞান এবং টেকনোলজি নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করি । আমি আমার কাজের ফাঁকে ফ্রিল্যান্সিং ব্লগে লেখালেখি করি। 01921822498

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Ads

Ads