শবে বরাতের রোজা কয়টি অথবা শবে বরাতের রোজার নিয়ত সম্পর্কে যারা ইন্টারনেটে সার্চ দিচ্ছেন তাদের জন্য আমাদের আজকের এই পোস্ট। নিচে আমরা শবে বরাতের রোজা কয়টি এবং শবে বরাতের রোজার নিয়ত সেই সাথে ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আরো জানিয়ে রাখছি যে শবেবরাত সম্পর্কে যদি আপনার আরো প্রশ্ন থাকে ইনশাল্লাহ এই পোস্টের মাধ্যমে সেগুলোর সমাধান পাবেন।
শবে বরাতের রোজা কয়টি
শবে বরাতের রোজা কয়টি এ সম্পর্কে আমাদের মনে অনেক কৌতুহল রয়েছে। তাই আপনাকে সর্বপ্রথম আমি জানিয়ে রাখছি যে শবে বরাত উপলক্ষে কোন রোজা নেই। বড় বড় ইসলামিক চিন্তাবিদ একমত প্রকাশ করেছেন যে শবে বরাত উপলক্ষে আসলে কোন রোজা নেই। তাই আমরা বলতে পারি যেহেতু শবে বরাত উপলক্ষে কোন রোজা নেই তাই শবে বরাতের রোজা কয়টি সেই প্রশ্ন তোলাটাই অবান্তর। শবে বরাতের রোজা কয়টি এই মর্মে কয়েকটি হাদিস পাওয়া গেলেও ইসলাম িক স্কলারগণ মনে করেন বা বলেন যে এগুলো সব জাল হাদিস। তাই বিশিষ্ট ইসলামিক স্কলারদের রহস্যমতে যেহেতু শবে বরাত উপলক্ষে কোন রোজা নেই তাই আমরা বলতে পারি আশা করছি শবে বরাতের রোজা কয়টি সে সম্পর্কে আপনার আর কোন প্রশ্ন থাকবে না।
শাবান মাসে কয়টি রোজা রাখতে হয়
শাবান মাসে শবে বরাত উপলক্ষে যদিও কোনো রোজা নেই তবে আমাদের নবীজি হযরত মুহাম্মদ সাঃ সাবান মাসে বেশি বেশি নফল এবাদত এবং নফল রোজা রাখতেন। এব্যাপারে রাসুল সাঃ বলেন যখন সাবানের মধ্য দিবস আসে তখন তোমরা রাতে নফল ইবাদত করো ও দিনের রোজা পালন কর সুনানে ইবনে মাজাহ। তবে শাবান মাসের ১৩-১৪ ও ১৫ তারিখ আইয়ামে বীজের নফল রোজা রয়েছে উল্লেখযোগ্য যে এই রোজা আমাদের আদি পিতা হযরত আদম আলাই সাল্লাম এবং আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ পালন করতেন যা মূলত একটি সুন্নত ইবাদত।
শবে বরাতের রোজার নিয়ত- শবে বরাতের রোজার নিয়ত বাংলা
যেহেতু আমরা ইতিমধ্যে বলেছি যে শবে বরাত উপলক্ষে কোন রোজা নেই তাই শবে বরাতের রোজার নিয়ত সম্পর্কে কিছু বলার প্রশ্নই আসে না। তবে যাই হোক শবে বরাতের রোজার নিয়ত সম্পর্কে বলার পূর্বে শুধুমাত্র নিয়ত সম্পর্কে কিছু কথা বলা জরুরী।
দেখুন আমরা জানি যে নিয়ত এর বাংলা অর্থ হচ্ছে সংকল্প, ইচ্ছা, মত পোষণ, সমর্থন ইত্যাদি। সহজ ভাষায় বললে নিয়ত হচ্ছে মনের ইচ্ছা। তাই আমরা যখন কোন কাজ করব বলে সিদ্ধান্ত নেই তখন কিন্তু মনে মনে নিয়ত করি এবং তারপর এই কাজটি করি। ঠিক একইভাবে যদি আমরা কখনো কোন এবাদত করতে চাই তার আগে মনে মনে সিদ্ধান্ত নেই। মনে মনে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এই পদ্ধতিটিকেই আসলে নিয়ত বলা চলে। তাই যেকোনো ফরজ অথবা নফল কিংবা সুন্নত এবাদতের সময় আলাদা করে নিয়ত করার নিয়মের অস্তিত্ব নেই।
আশা করছি আপনারা এতক্ষণে বুঝতে পেরেছেন যে যেহেতু কোন এবাদত করার পূর্বে আলাদা করে নিয়ত করার নিয়ম নেই তাই শবে বরাতের রোজার আলাদা নিয়ত থাকার প্রশ্নই ওঠে না।
শবে বরাতের রোজা রাখার নিয়ম
ইতিমধ্যে আমরা বুঝতে পেরেছি যে শবে বরাতের কোন রোজা নেই। যেহেতু শবে বরাতের আলাদা নির্দেশিত রোজা নেই তাই শবে বরাতের রোজা রাখার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা না করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। তবে যেহেতু শাবান মাসে নফল রোজা রাখা যায় সেই হিসেবে আমরা চাইলে নফল রোজা যেভাবে রাখে সেই নিয়ম মাফিক রোজা রাখতে পারব। উল্লেখ্য যে নফল রোজা রাখার জন্য আলাদাভাবে কোন নিয়ম নেই। সেহেরী করার সময় মনে মনে নকল রোজার নিয়ত করলেই হবে এবং সময়মতো ইফতার করলে ইনশাআল্লাহ আল্লাহ পাক আমাদের রোজা গ্রহণ করবেন। আশা করছি আপনারা শবে বরাতের রোজা রাখার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। নিচে শবে বরাতের রোজা ২০২৩ কবে সে সম্পর্কে আলোচনা করব।
শবে বরাতের রোজা কবে ২০২৩ বাংলাদেশ সময় অনুসারে
যদিও শবে বরাতের রোজা কবে সেটা জানতে হলে আরবি মাসের চাঁদ দেখার সময় এর উপর নির্ভরশীল হতে হয় তবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ক্যালেন্ডার গুলো থেকে পর্যালোচনার পরে আমরা জানতে পারি যে শবে বরাতের রোজা ২০২৩ অনুষ্ঠিত হবে । ২০২৩ সালের শবে বরাত হবে মার্চ মাসের ৮ তারিখ।
শবে বরাতের ফজিলত
শবে বরাত সম্পর্কে আমাদের নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম অনেক বেশি গুরুত্ব আরোপ করেছেন। নবীজি (সা.) বললেন, ‘এটা হলো অর্ধ শাবানের রাত। এ রাতে আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের প্রতি মনোযোগ দেন, ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করে দেন, অনুগ্রহপ্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন। আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের তাদের অবস্থাতেই ছেড়ে দেন’
তাই আমাদের উচিত এই রাত্রিতে আল্লাহ পাকের দরবারে বেশি বেশি করে ক্ষমাপ্রার্থনা করা এবং আমাদের মনে যে সৎ উদ্দেশ্য বা বাসনা রয়েছে সেগুলো আল্লাহর কাছে জানানো।
শবে বরাত সম্পর্কে আরো একটি প্রসিদ্ধ হাদিস রয়েছে যেমন- হাদিস শরিফে আছে, ‘হজরত মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা অর্ধশাবানের রাতে মাখলুকাতের দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া আর সবাইকে ক্ষমা করে দেন।’ (ইবনে হিব্বান: ৫৬৬৫, ইবনে মাজাহ: ১৩৯০, রাজিন: ২০৪৮; ইবনে খুজাইমা, কিতাবুত তাওহিদ, পৃষ্ঠা: ১৩৬, মুসনাদে আহমদ, চতুর্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা: ১৭৬)।
শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে লিখতে গেলে আমাদেরকে আলাদা করে একটি পোস্ট লিখতে হবে তাই এই পোস্টে আমরা ফজিলত সম্পর্কে এত কিছু না বলছি।