ছাত্র-ছাত্রীদের বিদায় উপলক্ষে শিক্ষকের বক্তব্য
আসসালামু আলাইকুম আশা করি আপনারা সকলেই ভাল আছেন ।আজকে আমি আলোচনা করব ছাত্রদের বিদায়ী উপলক্ষে সম্পর্কে শিক্ষকের বক্তব্য ।
আজকের বিদায়ী অনুষ্ঠানে উপস্থিত মাননীয় প্রধান শিক্ষক/ শিক্ষিকা আমার সহকর্মী শিক্ষক শিক্ষিকা বৃন্দ সবার প্রতি জানাই আন্তরিক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা এবং মঞ্চের সম্মুখে উপবিষ্ট আমার প্রিয় শিক্ষার্থীদের জানাই আমার হৃদয়ের অন্তস্থল এর শুভেচ্ছা ও ভালবাসা ।
বিদায় জিনিসটা খুব কষ্টের । অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বলতে হচ্ছে আজ তোমাদের বিদায় অনুষ্ঠান। যদিও আমি মনে করি একটি বিদায় এর আনুষ্ঠানিকতা মাত্র । কারণ মন থেকে চিরতরে বিদায় নেওয়া কখনো সম্ভব হবে না । তোমরা দীর্ঘ বছর পড়াশোনা করেছ এই বিদ্যালয় । মনে রাখবে এই বিদায
এক স্তর থেকে অন্য অন্য স্তরে যাওয়া মাত্র । আশা করি তোমাদের বিদায় শুভ হোক । তোমরা দেশ ও জাতির আগামীর ভবিষ্যৎ । তোমরা যেন এই বিদ্যালয়ে সুনাম বয়ে আনতে পারো । পিতা মাতার ও এলাকাবাসীর মুখ উজ্জ্বল করতে পারো ।
বিদায় মানে যেন বিচ্ছেদের এই কবিতা, যে কবিতা হৃদয় কে দুঃখ ভারাক্রান্ত করে দুচোখ হয় অশ্রু সজল। আজ তোমাদের বিদায় বেলা, ও বিদায় অনুষ্ঠান । হৃদয়ের স্মৃতি পটে তোমরা আমাদের হৃদয় থেকে যাবে । এই বিদায় আরো সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া, নিজের অমৃত সম্ভাবনা মিলে ধরায়, নিজের যোগ্যতা, মেধা ও পরিশ্রম নিয়ে জীবন গড়ার পদক্ষেপ ।
এই বিদ্যালয়ের প্রতিটি মুহূর্তে তোমাদের স্পর্শ লেগে আছে, এ বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে তোমরা ভরিয়ে রেখেছো, তোমাদের সরব উপস্থিতির মাধ্যমে, ভালো পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা ও সংস্কৃতিক প্রতিভার মাধ্যমে এই বিদ্যালয়কে তোমরা গর্বিত করেছ সম্মানিত করেছ আমাদের সকলকে । জীবনের নানা অভিজ্ঞতা তোমাদেরকে জীবনকে বৈচিত্রময় করবে । তাই বলি এগিয়ে যেতে হলে মাঝে মাঝে যেতে হয়, কাটতে হয় মায়ার ইন্দ্রজাল । বিদায় নেওয়াটাও একটা যোগ্যতার মধ্যেই পড়ে । দীর্ঘ সময় ধরে পরিশ্রম করে, পড়াশোনা করে তোমরা একেকটা ধাপ উত্তীর্ণ হয়ে আজ বিদায় লক্ষ্যে উপস্থিত হয়েছো আরো সামনের দিকে এগিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য । এই বিদ্যালয় থেকে তোমাদের শারীরিক বিদায় হলেও বিদ্যালয়ের অঙ্গন তোমাদের স্মৃতি কখনো মুছে যাবে না । জীবনের খেলাঘরে এই বিদায় যতটা দুঃখের ঠিক ততটা আনন্দের কারণ । মুঠো মুঠো করিয়ে নিবে জীবনের সাফল্য ।
কখনো তোমাদের বলবো না যে তোমাদের মেধা নেই, তোমরা তো ব্রিলিয়ান না । মেধার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে পরিশ্রম । যারা নিজের কষ্টকে ভেঙে পরিশ্রম করেছে তারা স্পর্শ করেছে সাফল্যের চড়া । তারা অর্জন করেছে সম্মান ও খেতি ভালোবাসা ।
তুমি যত জানবে যত পড়বে, যত অভিজ্ঞতা অর্জন করবে তোমার এগিয়ে চাওয়া কেউ পিছে ফেলাতে পারবে না । বিগত কয়েক বছর ধরে তোমাদেরকে আমাদের আন্তরিক ভালোবাসা অর্পণ করেছি । প্রয়োজনে কঠোর আচরণ করেছি যাতে তোমরা নিজেদের পড়াশুনা নিয়ে সিরিয়াস হয় । যেন পরীক্ষায় ভালো সাফল্য অর্জন করতে পারো ।
- আরো পড়ুনঃ স্বশিক্ষা অর্জনে বই পড়ার গুরুত্ব অনুচ্ছেদ
তোমরা নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে পরীক্ষা অংশগ্রহণ করবে । সময়টা খুবই স্পর্শকাতর একেবারে সময় নষ্ট করা যাবে না । সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এড়িয়ে চলতে হবে । এই বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ তোমাদের কখনোই ভুলবে না । আকাশের উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো, বাগানে ফুটে থাকা ফুলের সৌন্দর্য মত আমাদের হৃদয়ে তোমাদের আজীবন রেখে দেবো তোমরা আমাদের হৃদয়ে অমিল হয়ে থাকবে ।তোমাদের বিদায় শুভ হোক এই প্রত্যাশাই করি । জীবন বড়ই কঠিন, তোমরা শিক্ষকের কথা মেনে চলো বাবা-মার কথা মেনে চলো, তোমাদেরকে নিয়েই তাদের স্বপ্ন পূরণ। বিদ্যালয়ের মুখ উজ্জ্বল কর এবং সর্বোপরি তোমাদের নিজেকে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তোল । জীবনে সবসময় বড় স্বপ্ন দেখবে এবং সেটা অর্জনের জন্য পরিশ্রম করবে । বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গনে উপস্থিত সকলের প্রতি আমি আবারো আমার শ্রদ্ধে ভালোবাসাটা জানাচ্ছি । সময়টা আর কখনো ফিরে পাবে না কথায় আছে সময় গেলে সাধন হবে না । কথাটি সবসময় মনে রাখবে । যারা পড়াশোনা না করে গুরুত্ব না দিয়ে অবহেলা করেছে তারা অনেক বিপদে পড়ে গেছে । এজন্য কখনো পড়াশোনা কে অবহেলা করবে না ।
হযরত আলী রাঃ একটা বিখ্যাত উক্তি মনে পড়ে গেল মনে রাখবে সারা জীবন । জীবন হোক কর্মময়, নিরন্তর ছুটে চলা, ঘুমানোর জন্য কবর পড়ে রয়েছে । তোমাদের জীবনকে এমনভাবে তোমরা সাজাবে যেন তোমাদের প্রতিটি আনন্দ তোমরাও উপভোগ করতে পারো । আলসেমি করে কেউ কখনো বড় কিছু হতে পারেনি ।
বিদায়ী মুহূর্তে আর বেশি কিছু বলতে চাচ্ছি না । উপস্থিত সকলের দীর্ঘায়ু কামনা ও সকল ছাত্র-ছাত্রীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করে আমি আমার বক্তব্য এখানেই শেষ করছি । আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ।