বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বক্তব্য
আজকে সভায় উপস্থিত সকল সুধীবৃন্দকে জানাই আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন আর যে বিশেষ কারণে আমরা সবাই একত্রিত হয়েছি তা হল আমাদের হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনকের জন্মদিন। দিনটি একই সঙ্গে শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এমন একজন মানুষের জন্মদিনে কিছু বলার সুযোগ পেয়ে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি ।
স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, বাঙালি জাতির অভিসংবাদিত নেতা ১৯২০ সালে ১৭ই মার্চ গোপালগঞ্জের জেলার টুঙ্গিপাড়া এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন । বাঙালি জাতির ইতিহাসে মহানায়ক আসন অলংকৃত করে আছেন তিনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান এই স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি আমরা। অপশক্তির শাসন ও শোষণ থেকে মুক্তির ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। তাই এই মহান মানুষটির জন্মের ১০৩ বছর উপলক্ষে বাঙালির কাছে এক অনাবিল আনন্দের দিন । তিনি জন্মগ্রহণ না করিলে আমরা পেতাম না স্বাধীন বাংলাদেশ ।
যদি রাত পোহালে শোনা যেত বঙ্গবন্ধু মরে নাই। যদি রাজপথে আবার মিছিল হতো বঙ্গবন্ধুর মুক্তি চাই। তবে বিশ্ব পেত এক মহান নেতা, আমরা পেতাম ফিরে জাতির পিতা। গানের কথাগুলো শুনলেই চোখ ভিজে আসে। বঙ্গবন্ধুর মতো নেতা শুধু বাংলায় কেন এই গোটা পৃথিবীতে খুব বেশি নেই যিনি একটা জাতিকে স্বাধীনতা স্বপ্ন দেখিয়ে ক্ষান্ত থাকেননি দ্বীনের উপর দিন লড়াই সংগ্রাম করে গেছেন স্বাধীনতার জন্য এবং সত্যি শুধু তিনি সেই দেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। ১৯৭৫ সালের 15 আগস্ট এর রাতে বঙ্গবন্ধুর রক্ত আর আকাশের অশ্রু যেন আসলেই তো শুধু তো বঙ্গবন্ধু নন, তার আদর্শকে হত্যা করার চেষ্টা হয়েছিল । তাইতো বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সব সদস্যরা এমনকি ১০ বছরের ছোট শিশু রাসেল ওদের হাত থেকে রেহাই পায়নি । ছোটবেলা থেকে তিনি ছিলেন মেধাবী। শিশু বয়সে তিনি গ্রামের অসহায় দরিদ্র মানুষের কষ্টের কষ্ট অনুভব করতেন। তিনি অনেক সাহসী ছিলেন। সাহসের ভর করে তিনি তারজীবন।
রাজনীতি এবং বাংলার মানুষের জন্য বিসর্জন দেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে তিনি সরাসরি যোগদান করেন এবং বন্দী হন । বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন সৎ আদর্শবান রাজনীতি । কখনো নিজের স্বার্থের কথা চিন্তা করেননি। সারাটা জীবন যৌবন তিনি কাটিয়ে দিয়েছিল অনেক জেলে বসেই । ত্যাগ করেছিলেন পারিবারিক সুখ। সময় দিতে পারিনি নিজের সন্তান, মা বাবা, স্ত্রীকে। বাঙালি জনগণের জন্য নিজের জীবন বিসর্জন দিয়েছেন। তাই তিনি আজ আমাদের সকলের কাছে প্রিয় হয়ে আছেন আজকে হাজারো তরুণ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে নিয়ে এর নিজেকে বিলিয়ে দিচ্ছে। যা আমাদের মহান নেতা দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গিয়েছেন। শুধু দেশের মানুষের জন্য বেঁচে থাকতে নয় মৃত্যুর মধ্য দিয়েও তিনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। তিনি মৃত্যুকে বরণ করেছেন বুক পেতে বীরের মত। 1975 সেই ভয়াল রাতে চাইলেই তিনি নিজের পরিবারকে নিয়ে পালিয়ে যেতে পারতেন তা তিনি করেননি। বরং ইতিহাসের বুকে উদাহরণ স্থাপন করে গেছেন। তিনি বুঝেছিলেন দেশের কি হবে তাই তো নিজের একার কথা কখনো ভাবেননি। বঙ্গবন্ধু কখনো লোভ ছিল না তাইতো তিনি তার বজ্র কন্ঠের ডাকে সাড়া জাগিয়েছিলেন লক্ষ্য মানুষের। মুক্তি স্বাদ এনে দিয়েছেন বাঙালি জাতিকে।
উনার মত সৎ আদর্শ নেতা কখনোই হবে না তাইতো আমি গর্ববোধ করি । উনার আদর্শকে বুকে ধারণ করে গর্ববোধ করি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন যাতে আমি বঙ্গবন্ধুর মতোই প্রকৃতপক্ষে তার যোগ্য অনুসারী হতে পারি দেশের জন্য জাতির জন্য কাজ করতে পারি । বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধের মহানায়ক তিনি । 1947 থেকে ১৯৭১ টানা ২৪ বছরের সেই সংগ্রাম যেন এক মহাকাব্য ।
কিছু বিপথগামী সেনা সদস্যের কারণে ১৯৭৫ এর ১৫ ই আগস্টে বঙ্গবন্ধু সহ পরিবারকে হত্যা করা হয় । আমাদের মনে রাখতে হবে, বঙ্গবন্ধু একটি দুর্নীতি মুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, তিনি দুর্নীতি ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতারণা জালিয়াতি কালোবাজারি, অর্থ পাচার এসবের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন । আজকের জন্মদিনে বঙ্গবন্ধুকে আমরা অনেকেই মিস করতেছি । আসলে যতদিন এই বাংলাদেশে থাকবে ততদিন থাকবেন বঙ্গবন্ধু । আর সেই কারণে বাঙালি কবি অনন্য দাস শংকর রাহের কথাগুলো বলতে হয়।
যত কাল রবে পদ্মা যমুনা গৈরি মেঘনা বহমান,
ততকাল রবে কৃতি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান ।