ঘূর্ণিঝড় মোখা বর্তমান অবস্থা
বিভিন্ন গণমাধ্যমের বরাতে আমরা জানতে পারছি যে বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড় মুখা ক্রমশ উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। এর তীব্রতা বাড়তে থাকার কারণে আবহাওয়া অধিদপ্তর স্থানীয় এলাকাবাসীদের কে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সঙ্গে দেখাতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে যদিও এটি ছিল দুই নম্বর সতর্ক সংকেত তবে চট্টগ্রাম কক্সবাজার মংলা এবং পায়রা বন্দরকে চার নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
চার নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেতের মানে হচ্ছে বন্দর ঘূর্ণিঝড় কবলিত এলাকা। বলা হচ্ছে এই ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য গতিবেগ ৫১ থেকে ৬১ কিলোমিটার পর্যন্ত।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য মতে ঘূর্ণিঝড়টি পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এই ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে প্রতি ঘন্টায় ১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাতাসের গতি হতে পারে তবে মাঝে মাঝে জড়ো হওয়ার আকারে তা ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। বলা হচ্ছে যে ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর এখন বিক্ষুব্ধ।
ঘূর্ণিঝড় মুখা কি সিডরের মত সুপার সাইক্লোন হতে পারে ?
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যসূত্র মতে এটি এখনো সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না যে সিডরের চেয়েও ভয়াবহ হবে কিনা। তবে এটি যে একটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হতে চলছে সেটা নিশ্চিত। আবহাওয়া অধিদপ্তরের মতে সিডর হচ্ছে সুপার সাইক্লোন তবে মুখে এখনো পর্যন্ত সুপার সাইক্লোন হতে পারেনি তবে প্রবল ঘূর্ণিঝড় বলা যায়।
যদি কোন ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্র থেকে 62 থেকে 88 কিলোমিটার এর মধ্যে থাকে তাহলে সেটা কি স্বাভাবিক ঘূর্ণিঝড় বলা হয়। আর যদি কেন্দ্র থেকে এটার গতিবেগ ৮৯ থেকে ১১৭ কিলোমিটার মধ্যে হয় তাহলে সেটাকে প্রবল ঘূর্ণিঝড় বাতাসের গতিবেগ যদি ১২৮ থেকে ২২০ কিলোমিটার মধ্যে হয় তাহলে সেটিকে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।
এছাড়া যদি ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের গতিবেগ ২২০ কিলোমিটারের বেশি হয় তাহলে সেটিকে সুপার সাইক্লোন বলা যায়। যেহেতু ঘূর্ণিঝড় মুখা এখনো পর্যন্ত সেই পর্যায়ে পৌঁছায়নি তাই এটাকে আমরা সাইক্লোন সিডরের সাথে এখনো তুলনা করতে পারছি না।
যে বছর অর্থাৎ 2007 সালে যখন হয়েছিল তখন সেটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ২৬০ কিলোমিটার।
এছাড়া ১৯৯১ সালের চট্টগ্রাম উপকূলে একটি ঘূর্ণিঝড় আঘাত এনেছিল যেটার গতিবেগ ছিল ২২৫ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড় মুখা এর গতিপথ কোন দিকে
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যসূত্র অনুযায়ী বর্তমান গতিপ্রকৃতি অনুযায়ী লক্ষ্য করলে দেখা যাচ্ছে যে এটি অর্থাৎ ঘূর্ণিঝড় মুখা ১৪ই মে বাংলাদেশের কক্সবাজার এবং মিয়ানমারের কিয়াকপিউয়ের মধ্যবর্তী এলাকা দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক বলেন গত ৫০ বছর ধরে ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ পর্যালোচনা করলে আমরা দেখতে পাই যে ঐতিহাসিকভাবে মে মাসের ঘূর্ণিঝড় উত্তর-পূর্ব দিকে ধাবিত হয়।
এছাড়া আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল গ্লোবাল মডেল বিশ্লেষণ করে বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় মুখা এর অগ্রভাগ ১৪ই মে সকাল ছয়টার পর থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত কক্সবাজার বিভাগের উপকূলে আঘাত করার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আরো বলেন এই ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এবং পেছনের অংশ সন্ধ্যা থেকে ১৫ই মে সোমবার ভোর পর্যন্ত উপকূল অতিক্রম করা সম্ভবনা রয়েছে।