img:eastmojo.com |
কোরবানির পরশু জবাই করার কিছু সুন্নতি পদ্ধতি এবং গুরুত্বপূর্ণ তরিকা রয়েছে। সামনে পবিত্র ঈদুল আযহা। ঈদুল আযহা সামর্থ্যবানেরা কোরবানি দেবেন। কোরবানির আগের সময়টা পশু কেনার জন্য বেশ ব্যস্ততার সঙ্গে কেটে যায়। আজকের এই পোস্টে কোরবানির পশু জবেহ করার কিছু সুন্নতি পদ্ধতি এবং গুরুত্বপূর্ণ তরিকা সম্পর্কে আপনাদেরকে জানাবো।
১. কোরবানির পশুকে মাটিতে শোয়ানোর পর কেবলামুখী করে কোরবানির দোয়া পড়ে বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে জবাই করতে হবে। কেউ যদি কোরবানির দোয়া না পারে তাহলে শুধুমাত্র বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে জবেহ করবে।কোরবানির দোয়াটি হল:
২. নিজের কোরবানির পশু নিজেই জবাই করা উত্তম তবে যদি জবাই করতে না পারে তাহলে অন্ততপক্ষে জবাই করার সময় উপস্থিত থাকতে হবে। যদি মহিলাদের পর্দার ব্যাঘাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে সামনে উপস্থিত না থাকলে ক্ষতি নেই।
৩. কোরবানী পশু জবাই করার সময় কোরবানি দাতা বা কোরবানির দাতা গনের নাম মুখে উচ্চারণ করা অথবা কাগজে লিখে নেওয়া জরুরী নয়, কেননা আল্লাহ পাক জানেন এটা কার কোরবানি।
৪. ঈদের নামাজের আগে কোরবানি করা জায়েজ নেই। তবে যেখানে জুমুআ ও ঈদের নামায দুরস্ত নয় সেখানে সুবহে সাদেকের পর থেকেই কুরবানী করা দুরস্ত আছে।
৫. যিনি জবাই করবেন তাকে মুসলমান হতে হবে। কারণ কাফেরের জবাই করার যন্ত্র খাওয়া হারাম। ৬. পশুর জবাই করার সময় জবাই কারী এবং পশু উভয়ের মুখ কেবলার দিকে থাকা সুন্নতে মুয়াক্কাদা।
৭. জবাই করি মুসলমান পুরুষ কিংবা মহিলা উভয়ই হতে পারে।
৮. জবাই করে যদি নাবালেক ছেলেমেয়ে হয় যদি সে জবাই করতে পারে এবং বিসমিল্লাহ বা আল্লাহর নাম বলতে পারে তবে তার জবাই করা খাওয়া হালাল।
৯. জবাই করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করার বিধান রয়েছে। বিসমিল্লাহির আল্লাহু আকবার বলে সাধারনত জবাই করা হয়। ইচ্ছাকৃতভাবে বিসমিল্লাহ না বলে অন্য কোন বাক্য বললে যেখানে আল্লাহর নাম উল্লেখ নেই তাহলে উক্ত পশু খাওয়া হারাম হয়ে যাবে। তবে ভুলে ছুটে গেলে সেটি ভিন্ন বিষয়।
১০. কোরবানির পশু জবাই করার পূর্বে প্রাণীকে ক্ষুধার্ত রাখা যাবে না। এটা একপ্রকার জুলুম আর আল্লাহতালা জুলুমকারীকে পছন্দ করেন না।
১১. গোসল ওয়াজিব অবস্থায় কিংবা যদি অজু না থাকে তারপরেও জবেহ করা যাবে।
১২. পশু জবেহ করার পর ঠান্ডা হওয়ার পূর্বে চামড়া তোলা, অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কাটা বা ভাঙ্গা কিংবা গোস্ত কেটে নেওয়া মাক্রুহ।
১৩. জবাই করার সময় পশুর মাথা সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে গেলেও তা খাওয়া যায়। তবে এরূপ টা না করাই ভালো কারণ সম্পূর্ণ গলা কেটে খাওয়া মাকরুহ। তবে গলাকাটা গেলেও উক্ত জবাইকৃত পশু খাওয়া মাকরুহ নয়।
১৪. দাঁত বা নক দিয়ে জবাই করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
১৫. পাথরের আঘাতে অথবা যদি বন্দুকের গুলিতে কোন পশু মারা যায় তাহলে সেটি খাওয়া যাবে না। তবে যদি পাথরের আঘাত অথবা বন্দুকের গুলি লাগার পর উক্ত পশুর টিম মারা যাওয়ার আগেই জবাই করা হয়। তাহলে তা খাওয়া জায়েজ রয়েছে।
১৬. যদি চুরি না থাকে তাহলে ধারালো পাথর, বাঁশ বা আখের ধারালো বালা দিয়ে জবেহ করা যায়।
১৭. যেই ছুরি দিয়ে জবেহ করা হবে সেটা ভালোভাবে ধারালো করে নিতে হবে। ভোতা বা কম ধারালো ছুরি দ্বারা জবেহ করা মাকরূহ।
১৮. জবাইয়ের সময় জানোয়ারের চারটা রগ থাকে সেগুলো নিশ্চিত ভাবে কাটতে হবে। তবে কেউ কেউ বলেন তিনটি রোগ কাটলেও হবে। তিনটি রগের কম হলে সেই পশু মৃত বলে গণ্য হবে যা খাওয়া হারাম। এই চারটি রোগ হচ্ছে শ্বাসনালী, খাদ্যনালী এবং দুইটা শাহরগ।