পত্র লিখনঃ তোমার দেখা ঐতিহাসিক স্থানের বর্ণনা দিয়ে বন্ধুর নিকট পত্র লিখ।
পত্র লিখন
২০/১২/২০২০ ইং
২৭, লালবাগ রোড, ঢাকা।
সুপ্রিয় আইরিন,
প্রথমে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা নিও। আশা করি ভালো আছ। আমি স্কুলে ছুটির অবসরে বর্তমানে ঢাকায় বড় আপার বাসায় অবস্থান করছি। এখানে এসেই অপ্রত্যাশিতভাবে একটি ঐতিহাসিক স্থান 'লালবাগ দুর্গ' দেখার সৌভাগ্য হলো। সে সম্পর্কে তোমাকে কিছু জানানোর লোভ সংবরণ করতে পারছি না। তাই লিখছি।
তিন শ বছরের পুরোনো স্মৃতিবিজড়িত লালবাগ দুর্গ মুঘল স্থাপত্যশিল্পের এক অনুপম নিদর্শন। বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে পূর্ব-পশ্চিমে ১২০০ ফুট ও উত্তর-দক্ষিণে ৮০০ ফুট বিস্তৃত প্রাচীরঘেরা মূল দুর্গ। বর্তমানে দুর্গটি বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব ও জাদুঘর অধিদপ্তর কর্তৃক সংরক্ষিত। আমরা যথারীতি সরকার কর্তৃক ধার্যকৃত প্রবেশ মূল্য পরিশোধ করে দুর্গের ভিতরে প্রবেশ করলাম। দুর্গের অভ্যন্তরে ঘুরে-ফিরে দেখলাম সতের শতকে নির্মিত মুঘল স্মৃতি বিজড়িত দরবার হল, পরিবিবির স্মৃতিসৌধ, হাম্মামখানা, পুকুর, মসজিদ, ফোয়ারা, নর্দমা ইত্যাদি। এছাড়া দেখলাম, বিভিন্ন আকৃতির অসংখ্য ছোট-খাটো কুঠরির ধ্বংসাবশেষ।
দরবার হলটি বর্তমানে মুঘল আমলের প্রাচীন কীর্তিসমূহের জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সেখানে মুঘল আমলের অনেক নিদর্শন দেখলাম । যেমন— বন্দুক, পিস্তল, তীর-ধনুক, বর্শা, বল্লম, হাত-কুঠার, তরবারি, ঢাল, শিরোস্ত্রাণ ইত্যাদি। আরও দেখলাম মুঘল আমলের মুদ্রা, মুঘল বাদশাহদের জারিকৃত ফরমান, হস্তলিপি, পাণ্ডুলিপি, শিলালিপি, চিত্রশোভিত মৃৎপাত্র, তৈজসপত্র, কার্পেট, চিত্রকর্ম ইত্যাদি। দুর্গের বিশাল উন্মুক্ত চত্বরটি ফুল ও ফলবাগানে সুশোভিত ।
লালবাগ দুর্গ শুধু মুঘল স্মৃতির ধারক ও বাহক নয়; এ দুর্গের সাথে জড়িয়ে আছে ঐতিহাসিক অনেক ঘটনা। এ দুর্গটি দেশের প্রাচীন কর্তিতগুলোর মধ্যে অন্যতম এবং অতীত ইতিহাসের এক উজ্জ্বল স্বাক্ষর। দুর্গটি দেখে শুধু উপলব্ধি করা যায়, ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। আজ এ পর্যন্তই।
ইতি -
তোমারই ফারহানা