আমাদের দেশ রচনা |
আমাদের দেশ রচনা
সূচনা : সুজলা,সফলা,শস্য,শ্যমলাআমাদের এই বাংলাদেশ।সবুজে ঢাকা এই দেশটির রুপের কোনো শেষ নেই।কবির দেশ,বীরের দেশ,মায়ের দেশ,এরকম অনেক নামেই ডাকা হয় আমাদের দেশ কে।দেশের অবারিত রুপ দেখে কবি গেয়ে উঠেছেন-
"এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে না কো তুমি
সকল দেশের রাণী সেজে আমার জন্মভূমি "।
বাংলাদেশ আমাদের প্রিয় জন্মভূমি। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে বিজয় লাভ করে এ বিশ্বের মানচিত্রে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।
আরো রচনা পড়তে এখানে ক্লিক করো
অবস্থান ও আয়তন : বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি সম্ভাবনাময় দেশ। এর পূর্ব দিকে ভারতের আসাম, ত্রিপুরা ও বার্মা; উত্তরে পশ্চিমবঙ্গ ও মেঘালয়; পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও মেঘালয়; দক্ষিণে ময়ানমার ও বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। এদেশের আয়তন ১,৪৭,৫৭০ বর্গকিলোমিটার।
ভূপ্রকৃতিঃ বাংলাদেশের প্রায় সবটাই সমতল ভূমি। তবে সিলেটের কিছু অংশ, পার্বত্য চট্টগ্রাম, চট্টগ্রামের প্রায় সম্পূর্ণ অংশ পাহাড়, টিলা ও জঙ্গলে বৈচিত্র্যময়। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশের কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। এদেশে জালের মতো ছড়িয়ে আছে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, কর্ণফুলী, তিতাস প্রভৃতি ছোট-বড় নদ-নদী।
জনসংখ্যা : বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। এদেশের মোট জনসংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি। এদেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১০১৫ জন লোক বাস করে। জনসংখ্যার দিক থেকে পৃথিবীতে এর স্থান সপ্তম।
স্বাধীনতা লাভ : ১৯৭১ সালে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। এই স্বাধীনতা বাঙালি জাতির সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল ময় অধ্যায়। ১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাস দেশে সকল শ্রেণীর, সকল পেশার মানুষেরা এই যুদ্ধে তাদের বুকের তাজা রক্ত বিসর্জন দিয়ে ১৬ডিসেম্বর স্বাধীনতা লাভ করে।
ভাষা: বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। এ ভাষার ইতিহাস এক হাজার বছরেরও বেশি পুরনো। বাংলাদেশের প্রায় ত্রিশ কোটি মানুষ এ ভাষায় কথা বলে। পৃথিবীর চতুর্থ স্থানীয় ভাষা বাংলা।
অর্থনৈতিক অবস্থা : বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ। এর অর্থনীতি কৃষিনির্ভর। কিন্তু পুরোপুরি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ হয় না বলে কৃষির ফলন খুবই কম। সীমিত সংখ্যক শিল্পকারখানা থাকলেও শিল্পকারখানা থেকে উৎপাদিত পণ্য চাহিদার তুলনায় অনেক কম।
প্রাকৃতিক সম্পদ: ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশে প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে। আমাদের ভূমি উর্বর। আমাদের জমিগুলো প্রচুর বৃষ্টি, বাতাস ও রোদ পেয়ে থাকে। সূর্যালোক, নদী, মাটি, গ্যাস ইত্যাদি আমাদের মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ। কিন্তু আমাদের খনিজ সম্পদ অত্যন্ত কম।
শিক্ষা: সুদীর্ঘকালের পরাধীনতার কারণে বাংলাদেশে যুগোপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে ওঠে নি। ফলে এদেশের অধিকাংশ মানুষ আজো অশিক্ষিত রয়ে গেছে। এ অবস্থা থেকে যথাশীঘ্র উত্তরণের জন্য সরকার গণশিক্ষা কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষা বিস্তারের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে।
নদ-নদী: বাংলাদেশ নদী মাত্রিক দেশ।এইদেশে জালের মত নদ/নদী বয়ে চলে গেছে।আর তার তীরে গড়ে উঠেছে হাজারো মানুষের বসবাস।সেই নদীর মাছ ধরে জীবন চলে হাজারো মানুষের। তাই তো বাঙালীদের মাছে ভাতে বাঙালি বলাহয়।পদ্মা, মেঘনা,যমুনা, সুরমা, কুশিয়ারা, কর্ণফুলী ইত্যাদি। আর এতে রয়েছে অনেক রকমের মাছ।রুই,কাতলা,ইলিশ ইত্যাদি।
বাংলাদেশের ফসল: আমদের দেশে কৃষি প্রধান দেশ।তাই ৭০ ভাগ মানুষের প্রধান পেশা কৃষি। তারা তাদের হাতের জাদুতে সোনার ফসল ফলায়।যেমন:ধান,গম,ভুট্টা, সরিশা, পাট ইত্যাদি।
বাংলাদেশের ধর্ম : বাংলাদেশে বেশি ইসলাম ধর্মের মানুষ বেশি রয়েছে।তাই এই দেশকে ইসলাম ধর্মের দেশ বলা যেতে পারে।কিন্তু তাছাড়াও এই দেশে হিন্দু ধর্ম, খ্রিস্টান, ও বৌদ্ধ ধর্মের মানুষ ও রয়েছে।
উপজাতি : আমদের দেশের দক্ষিণ অঞ্চলে উপজাতিরা বাসকরে থাকে।তাদের মদ্ধে উল্লেখযোগ্য হলো :চামকা,গারো,সাওতাল।
বাংলাদেশের ঐতিহ্য: আমাদের দেশ ঐতিহ্যবাহি দেশ। এই দেশের মানুষ সব সময় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মেতে থাকে। যেমন : মেলা, নববর্ষ, পিঠা-পুলির উৎসব।
বাংলাদেশের পর্যটন এলাকা: আমাদের দেশ কিন্তু পর্যটন শিল্প দিয়েও এগিয়ে রয়েছে। প্রতি বছর বিভিন্ন দেশ থেকে আমাদের দেশে বেরাতে আসে।আমাদের দেশের পর্যটন এলাকা গুলো হল:সুন্দরবন,কক্স বজার,চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চল, চা বাগান, কুয়াকাটা ইত্যাদি।
বাংলাদেশের অর্থকারি ফসল: বাংলাদেশের অর্থকারি ফসল উৎপাদনেও এগিয়ে রয়েছে।যেমন:চা, পাট, চিংড়ি, ইলিশ ইত্যাদি।
উপসংহার: আমাদের প্রিয় জন্মভূমিকে আমরা মায়ের মতোই শ্রদ্ধা করি- ভালোবাসি। অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা, আত্মবলি আর শ্রমের বিনিময়ে আমরা এদেশকে স্বাধীন করেছি |