অনলাইনের মাধ্যমে মামলা কারার উপায় |
অনলাইনের মাধ্যমে মামলা কারার উপায়
মামলাঃ মামলা হলো একজন কোনো ভাবে বা কোনো ঘটনার মাধ্যমে প্রতারিত হয়ে,কোনো কিছু হারিয়ে গেলে,অর্থসম্পত্তি নিয়ে বিরোধ ইত্যাদি কারণেই আদালতে মাধ্যমে বিচার চাওয়া প্রক্রিয়াই হলো মামলা।
অপরাধের যেমন ধরণ আছে তেমনি তেমন মামলারও বিভিন্ন ধরণ আছে। আবার আদালতের ও বিভিন্ন ধরণ হয়। অপরাধের ধরণ অনুযায়ী মামলা করতে হয়। আবার সব অপরাধের জন্য সব ধরনের মামলা করা যায় না।
জিডিঃ কোনো ব্যক্তি বা কোনো জিনিস হারিয়ে গেলে জিডি করতে হয়।
মামলাঃ কিন্তু কোনো গুরুতর অপরাধ বা চুরি হলে মামলা করতে হয়।
বাদী বিবাদীঃ যে মামলা করে তাকে বাদী বলা হয় আর যার নামে মামলা করা হয় তাকে বিবাদী বলা হয়।
প্রতিবেশী বা নিকট আত্মীয় কোনো সমস্যা বা অন্যায়ের শিকার হলে আপনি বাদী হয়ে মামলা করতে পারবেন।আবার অনেক সমায় গুরুতর কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে পুলিশ নিজে বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
ভিন্ন ভিন্ন অপরাধের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন রকমের মামলা হয়ে থাকে। তবে মামলা করার ধরনের উপর ভিত্তি করে সব ধরনের মামলা কে ২ ভাগে ভাগ করা যায়।
- ১.ফৌজদারি মামলা
- ২.দেওয়ানি মামলা
- আবার মামলা কোথায় করা হয়েছে সেটার উপর ভিত্তি করে মামলা কে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
- ১.জিআর মামলা(জেনারেল রেজিস্ট্রার মামালা)
- জি আর মামলা থানায় এফআইআার হিসাবে রজু করা হয়।
- ২.সিআর মামলা(কমপ্লেইন রেজিস্ট্রার মামালা) সিআর মামলা থানাতে নয় আদালতে করতে হয়,,,,,এসব ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মেজিস্ট্রেট শুনানি ডেকে মামলা গ্রহণ অথবা প্রতাহার করে।
মামলার প্রকারভেদ। অনলাইনের মাধ্যমে মামলা কারার উপায়
আবার মামলাকে অপরাধের মাত্রার উপর ভিত্তি করে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
১ আমলযোগ্য মামলা(এ ধরনের কেস গুলোতে পুলিশ ওয়ারেন্ট ছাড়াই এরেস্ট করতে পারে এরং থানার অফিসার ইনচার্জ দ্রুত আদালতে প্রতিবেদন পেশ করে থাকে)
২.আমল অযোগ্য মামলা(ওয়ারেন্ট ছাড়া পুলিশ এরেস্ট করে না,,মেজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে ৬০ দিনের মধ্যে আদালত প্রোসিকিউশন রিপোর্ট জমা দেয়)
ফৌজদারি মামলা উল্লেখযোগ্য কিছু কারণ সমূহ
ফৌজদারি মামলা কে ক্রিমিনাল কেস বলা হয়ে থাকে। মূলত ব্যক্তির সমাজ রাষ্ট্রের শান্তির শৃঙ্খলা বিনষ্ট করে এমন অপরাধমূলক কাজ সংঘটিত হলে ফৌজদারি মামলা করা হয়।
১.অপহরণ
২.ধর্ষণ
৩.হত্যা
৪.এসিড নিক্ষেপ
৫.যৌতুক
৬.মাদক বহন কিংবা বিক্রয়
৭.অবৈধ অস্ত্র বহন কিংবা বিক্রয়
৮.জালিয়াতি বা প্রতারণা
৯.মারপিট বা শারীরিক আঘাত
১০.আত্মহত্যার প্ররোচনা
১১.পর্নোগ্রাফি
ফৌজদারি মামলা করার নিয়মঃ অনলাইনের মাধ্যমে মামলা কারার উপায়
ফৌজদারি মামলা করতে হলে ঘটনাস্থল যে থানার অধীনে সেই থানায় গিয়ে এফআইআর করতে হবে। মামলার দায়ের হলে প্রথমে তা ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে উপস্থাপন করা হয়। ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে উপস্থাপনের পর মামলার তদন্ত শুরু হবে।
দেওয়ানী মামলা করার উল্লেখযোগ্য কিছু কারণসমূহঃ
১. সম্পদের দখল অধিকার ও মালিকানা নিয়ে মামলা।২.জমিজমা সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের মামলা।
৩.চুরি সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের মামলা।
৪.পারিবারিক মামলা যেমন বিবাহ বিচ্ছেদ, সম্পত্তির উত্তরাধিকার, দেন মোহর আদায়, ভরণপোষণের দায়িত্ব আদায়, পারিবারিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার, সন্তান দত্তক নেওয়া বিবাহ বিচ্ছেদের পর সন্তানের দায়িত্ব নেওয়া ইত্যাদি
৫.দলিল সংশোধন ও বাতিল করা
৬.স্থায়ী অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার সংক্রান্ত মামলা
দেওয়ানী মামলা করার স্থান দেওয়ানি মামলাগুলো সাধারণত আদালত করতে হয়। মামলার ধারণ অনুযায়ী আদালত নির্বাচন করতে হবে। পারিবারিক জটিলতার মামলাগুলো পারিবারিক আদালতেই করতে হয়। জমিজমা সংক্রান্ত মামলাগুলো জেলা জজ আদালত, অতিরিক্ত জেলা আদালত, সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে নিষ্পত্তি করা হয়।
জানা জরুরি । অনলাইনের মাধ্যমে মামলা কারার উপায়
১.স্মল কজেস আদালতে ক্ষুদ্র মামলার বিচার করা হয়।মামলার মূল্যবান ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।
২.সহকারী জজ আদালতে ১৫ লাখ টাকার মূল্যবান মামলাগুলের বিচার হয়ে থাকে।
৩.সিনিয়র জজ আদালতে ১৫-২৫লক্ষ টাকার মূল্যবান যেসব মামলা আছে সেগুলোর বিচার হয়ে থাকে।
৪.জজকোট আদালতে দেওয়ানী মামলার মূল্যবান সর্বোচ্চ ৫ কোটি টাকার মামলাগুলোর বিচার এই আদালতে হয়ে থাকে
৫.অতিরিক্ত জেলা জজ কোর্ট আদালতে জেলা জজ কোর্ট থেকে পাঠানো সকল মামলার বিচার হয়ে থাকে।
৬.যুগ্ম জেলা জজ কোর্টে উত্তরাধিকারী সংক্রান্ত মামলা নিষপত্তি হয়ে থাকে। এর পাশাপাশি যেসব মামলার মূল্যবান ন্যূনতম ২৫ লাখ থেকে অসীম সেসব মামলারও বিচার এখানেই হয়ে থাকে।
ফৌজদারি ও দেওয়ানি মামলায় আইনগত সহায়তাঃ
ফৌজদারী মামলার ক্ষেত্রে ---- জেলা লিগ্যাল এইড অফিস ও প্যানেল আইনজীবীদের থেকে আইনগত পরামর্শ পাওয়া যায়।
দেওয়ানি মামলার ক্ষেত্রে ------প্যানের আইনজীবী নিয়োগের মাধ্যমে মামলা পরিচালনা ও লিগাল এইড অফিসারদের থেকে আইনগত পরামর্শ পাওয়া যায়।
এই একবিংশ শতাব্দীতে সবকিছুই ডিজিটাল করা হচ্ছে। অনালাইনে মামলা সুযোগ আমাদের বাস্তব জীবনের কিছু অসুবিধা দূর করেছে। যেমন অনেক সময় থানায় গিয়ে মামালা করলে বাস্তব জীবনের বিভিন্ন ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে, আশেপাশে অনেকে জেনে যাওয়ার আশংঙ্কা সময় সল্পতা ইত্যাদি সমস্যা সমাধান করে দিয়েছে।
সমসাময়িক দৈনন্দিন জীবনের সমস্যা গুলো থেকে তাৎক্ষণিক সমাধান পাওয়ার জন্য ৯৯৯ এ কল দিলে হয়।কিন্তু স্হায়ী সমস্যা সমাধানের জন্য মামলা করতে হয়।
অনলাইনে জি ডি করার নিয়মঃ
১.play store থেকে online GD App টি install করেতে হবে।
২.নিবন্ধন সম্পূর্ণ করতে ফোন নাম্বার ও একটি পাসওয়ার্ড ব্যাবহার করতে হবে।
৩.প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ফরম পূরণ করে, নিবন্ধনের চারটি(জাতীয় পরিচয় পত্র,পাসপোর্ট, ফোন নাম্বার, জন্মনিবন্ধন) মধ্যে যেকোনো একটি নির্বাচন করে জিডি করতে হবে।
অনলাইন জিডি সম্পূর্ণ হওয়ার পর একটি সার্ভিস কোড পাবে এবং app এর মাধ্যমে কিউআর কোড সম্বলিত একটি কপি সংগ্রহ করবে।সরাসরি অনলাইনের মাধ্যমে জিডি করতে চাইলে (GD.POLICE.BD) এখানে করতে হবে
অনলাইনের মাধ্যমে মামলা কারার উপায়
১.Googol অথবা Play store থেকে Online GD ওয়েব সাইড অথবা App install করতে হবে।
২.মোবাইল নাম্বার / NID Card দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে
৩.রেজিষ্ট্রেশনপর সমায় পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা
৪.যে বিষয়ে অভিযোগ করবেন সে
৫.অভিযোগ বাক্স এ বিস্তারিত তুলে ধরা। হারিয়ে যাওয়া জিনিস এর জন্য মামলা করতে চাইলে সেটার ছবি ব্যাবহার করা।
৬.কোন থানায় মামলা করতে চান সেটা উল্লেখ করা অভিযোগ কারীর বিস্তারিত তুলে ধরা।
অনলাইন জিডি বা মামলা করার সময় কেউ আপনাকে দেখতে পারবে না অথবা বাধাও দিতে পারবে না।