চাকরির বাজারে টিকে থাকতে হলে অবশ্যই সিভি লেখার নিয়ম জানতে হবে। কেননা এটা আপনি নিশ্চয়ই জানবেন যে– চাকরি প্রস্তুতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো- ভালো সিভি তৈরি করা। আর বাংলাদেশে চাকরি পাওয়া মানে তো সোনার হরিন পেয়ে যাওয়া।এই চাকরির বাজারে আপনাকে এমন একটা সিভি লিখতে জানতে হবে, যেটা দেখার পর যে কেউ আপনাকে ইন্টারভিউ নেওয়ার জন্য ডাকবে। কেননা সিভি এমন একটি উপায় যার মাধ্যমে আপনাকে ছাড়াই আপনার প্রতিচ্ছবি রূপকথাতে দেখাবে।আর আমরা সবাই কমবেশি অবগত যে– ড্রিম জব পেতে হলে আমাদের পথের সর্বপ্রথম দুইটা বাধা দেখা দেয়। তার একটি হচ্ছে ইন্টারভিউ এবং অপরটি হচ্ছে সিভি। লক্ষ্য করলে এটা বুঝতে পারবেন সিভির গুরুত্বটাই অধিক বেশি।
কেননা আপনার যদি সিভি দেখে জব কর্তৃপক্ষের পছন্দ হয় তবেই না ইন্টারভিউ এর জন্য ডাক আসবে। কি তাইতো?. জ্বি একদমই তাই। তো সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা আজ আমরা আমাদের আলোচনার মাধ্যমে আপনাদেরকে অবগত করবো— সিভি লেখার নিয়ম।
সিভি লেখার নিয়ম
বর্তমান চাকরির বাজারে চাকরি পাওয়াটা খুবই কষ্টকর। তবে আপনি যদি নিজেকে যোগ্য এবং উপযুক্ত প্রার্থী হিসেবে কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের সামনে তুলে ধরতে পারেন তাহলে আপনার চাকরি সুনিশ্চিত। আর এজন্য আপনাকে ঠিকঠাক চাকরির প্রস্তুতি নিতে হবে নিজেকে যোগ্য হিসেবে গড়তে হবে। আর আপনার যোগ্যতার সম্পূর্ণটা সর্বপ্রথম সিভির মাধ্যমেই উপস্থাপন করতে হবে।
আমাদের মাঝে বেশি সংখ্যক মানুষ চাকরিপ্রার্থী হিসেবে বেশ বড় একটা ভুল করে থাকেন। আর সেটা হচ্ছে কম্পিউটার কম্পোজের দোকানে পাওয়া সিভি চাকরির আবেদনের সময় জমা দিয়ে দেন। আপনি হয়তো লক্ষ্য করলে এটা বুঝতে পারবেন– অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই সকল সিভির মান ঠিক থাকে না। তাই সিভি লেখার নিয়ম আপনাকে জানতে হবে এবং মানসম্মত একটি সিভি বানাতে হবে, যেটা আপনাকে চাকরি পেতে বাধ্য করবে।
সিভি কি?
সিভি হলো এমন একটি নথি যাতে ব্যক্তির অভিজ্ঞতা, কাজ, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও দক্ষতার সংক্ষিপ্ত উল্লেখ থাকে। সিভি মূলত ২-৩ পৃষ্ঠার হয় এবং অধিকাংশ সময়ই ইংরেজিতে লেখা হয়ে থাকে। এটি ইংরেজি শব্দ Curriculum Vitae এর সংক্ষিপ্ত রুপায়ন। সিভি চাকরি ক্ষেত্র ছাড়াও একাডেমিক ও ব্যক্তিগত বিভিন্ন কাজে দরকার হয়ে থাকে।
কর্মজীবনে প্রবেশের প্রথম ধাপটি যেহেতু সিভি তৈরি করা, তাই নির্ভুল ও নজরকাড়া একটি সিভি তৈরী চাকরিপ্রত্যাশী ব্যক্তির জন্য অনেক প্রয়োজনীয়।
সিভির আধুনিক ফরমেট কেমন হওয়া উচিত?
সিভি লেখার নিয়ম জানার সাথে সাথে বর্তমানে সিভির ফরমেট কেমন হওয়া উচিত? এমন প্রশ্ন অধিকাংশ মানুষের মাঝেই প্রকাশ পায়। দেখুন সিভি মূলত এমন একটি ডকুমেন্ট, যা দেখে খুব কম সময়েই আপনার এমপ্লয়ার আপনাকে মূল্যায়ন করবেন। এখানে তারা মূলত আপনার গাদা গাদা বর্ণনা জাতীয় লেখা পড়তে যাবেন না। তাই নির্দিষ্ট একটা ফরমেটে লিখতে হবে সিভি। যেটা অত্যন্ত স্মার্ট দেখাবে।অনেক সুন্দর দেখাবে।এবং আপনার ব্যাক্তিত্ব ফুটে তুলবে সেই সিভিতে। তাহলে আসুন জেনে নেই বর্তমানে একটি সিভির ফরমেট কেমন হওয়া উচিত!
প্রথমত: আপনি চাকরির জন্য অথবা একাডেমিক কারণে যে প্রয়োজনেই সিভি লিখে থাকেন না কেন, অবশ্যই সিভির দৈর্ঘ্য এক থেকে দুই পেজের মধ্যে শেষ করতে হবে। আপনাকে অনেক কম শব্দের মধ্যে অনেক অল্প বর্ণনার মাধ্যমে সম্পূর্ণ তথ্য ফুটিয়ে তুলতে হবে দুই পৃষ্ঠার মধ্যে।অযথা কোনো কিছু লেখার প্রয়োজন নেই।
দ্বিতীয়তঃ আপনাকে অবশ্যই ‘A4’ সাইজের পেইজ বা কাগজ ব্যবহার করতে হবে সিভি লেখার জন্য।
তৃতীয়ত: ‘Arial’, ‘Times New Roman’ বা ‘Calibri’ ফন্টে লিখতে হবে উক্ত সিভি।
চতুর্থত: সব সময় ১১ অথবা ১২ ফ্রন্টের সাইজ বেছে নিতে হবে।
পঞ্চমত: এক থেকে দুই ধরনের ফ্রন্ট কালার ব্যবহার করতে হবে। অবশ্যই চেষ্টা করবেন এর অধিক কালার ব্যবহার না করতে। কেননা অতিরিক্ত জাঁকজমক কালার আপনার সিভির মান কমিয়ে ফেলবে।
ষষ্ঠমত: সিভির প্রত্যেকটা অংশকে পরিষ্কারভাবে ফুটিয়ে তুলতে হবে। আর এক্ষেত্রে ১৪-১৬ ফ্রন্ট সাইজের সাব হেডিং ব্যবহার করবেন।
সপ্তমত: ইম্পর্টেন্ট বিষয়গুলোকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে এবং পড়ার সুবিধার জন্য বুলেট পয়েন্ট ব্যবহার করবেন। তবে হ্যাঁ এটা অবশ্যই সারাংশের জন্য প্রযোজ্য নয়।
অষ্টমত: দুই লাইনের মধ্যে সর্বদা যথেষ্ট স্পেসিং বজায় রাখার চেষ্টা করবেন এবং বিশেষ কোন প্রয়োজন ছাড়া সিভির ডিজাইনে বৈচিত্র্যতা নিয়ে আসবেন না। কেননা নিয়ম সবারর কাছে সমান।আপনার সেই ডিজাইন দৃষ্টিকটু লাগতে পারে তাই এ বিষয়টা নজরে রাখুন।
তো আশা করা যায়, আপনি যদি শুধুমাত্র এই আটটি স্টেপ ভালো করে খেয়াল করেন এবং আমাদের ফরমেট অনুযায়ী চাকরির জন্য সিভি লেখেন তাহলে অবশ্যই আপনার সেই সিভি গ্রহণযোগ্য হবে।
সিভিতে যা যা থাকবে
নাম ও যোগাযোগের ঠিকানাঃ সিভির প্রথম অংশে পুরো নাম লিখতে হবে। কোনোভাবেই ডাকনাম বা ছদ্মনাম লেখা যাবে না। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক বা বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদপত্রে যে নাম লেখা আছে তা-ই লিখতে হবে। নামের আগে মিস্টার বা মিসেস ব্যবহার করা যাবে না।
ঠিকানা লেখার ক্ষেত্রে চিঠিতে যোগাযোগ করা যায়, এমন ঠিকানা স্পষ্ট কিন্তু সংক্ষিপ্ত আকারে লিখতে হবে।
যোগাযোগের জন্য দিতে হবে ফোন নম্বর। যেখানে যোগাযোগ করলে আপনাকে অতি সহজেই পেয়ে যাবে।অপ্রয়োজনে ২-৩টি ফোন নম্বর লেখা যাবে না।
আর বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে ই-মেইল ঠিকানার ক্ষেত্রে। iamgreat@gmail. com বা sweetdreams@ymail. com—এ ধরনের হাস্যকর ই-মেইল ঠিকানা ব্যবহার করা যাবে না। নিজের নামের সঙ্গে মেলে এমন সংক্ষিপ্ত ই-মেইল ঠিকানা তৈরি করে সিভিতে ব্যবহার করতে হবে।
লিংকড–ইন প্রোফাইলের আইডি ব্যবহার করতে পারেন। প্রয়োজন না হলে ফেসবুক আইডি যুক্ত না করাই শ্রেয়। তবে ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট কিংবা নিজ কাজের পোর্টফোলিও প্রকাশিত হয়েছে এমন ওয়েবসাইটের নাম লেখা যেতে পারে।
ছবিঃ সিভিতে যে ছবি যুক্ত করবেন তা যেন সাম্প্রতিক সময়ে তোলা হয়। ছবির পটভূমি এক রঙের হতে হবে। চুল কিংবা দাড়ি পরিপাটি থাকতে হবে ছবিতে। চেহারা বোঝা যায় এমন যেকোনো ছবি ব্যবহার করতে পারেন।
পেশাগত লক্ষ্যঃ সিভিতে অবশ্যই আপনার পেশাগত লক্ষ্য লিখতে হবে। ভাষা হবে সংক্ষিপ্ত ও প্রাঞ্জল, গোছানো ভাষায়। যদি ইংরেজিতে লেখেন, বানান বা ব্যাকরণ যেন ভুল না হয়। যে পদে আবেদন করবেন তার সঙ্গে সম্পৃক্ত লক্ষ্য লিখতে হবে। আজগুবি, অপ্রাসঙ্গিক কিংবা কাল্পনিক কোনো বাক্য লেখা যাবে না।
শিক্ষাঃ সদ্য যে ডিগ্রি অর্জন করেছেন, সেটা লিখতে হবে প্রথমে। কোন বিষয়ে, কোন অনুষদে পড়েছেন, কত সালে পরীক্ষা দিয়েছেন, গ্রেড পয়েন্ট বা ফলাফল কী ছিল, এসবও উল্লেখ করতে পারেন। এখনো পাস করে না থাকলে ‘পরীক্ষার্থী’ শব্দটি লিখুন। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় থেকে ক্রমানুসারে মাধ্যমিক পরীক্ষা পর্যন্ত ফলাফলের তথ্য লিখতে হবে।
একাডেমিক প্রকাশনা বা প্রকল্পঃ স্নাতকপর্যায়ে পড়াকালীন কোনো গবেষণা বা রিপোর্ট প্রকাশিত হলে তা লিখুন। প্রকৌশল পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা নিজের কোনো প্রকল্পের নাম যুক্ত করতে পারেন। যাঁরা ব্যবসায়ে প্রশাসনে পড়ছেন, তাঁরা ইন্টার্ন হিসেবে কাজ করলে তার রিপোর্টের নাম লিখুন। কোনো জাতীয় বা আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিলে তার সংক্ষিপ্ত তথ্য যুক্ত করুন।
পেশাগত অভিজ্ঞতাঃ সাধারণত স্নাতকপড়ুয়া বা সদ্য উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সরাসরি পেশাগত অভিজ্ঞতা থাকে না। কিন্তু যে পদের চাকরির জন্য সিভি তৈরি করছেন, সেই সংশ্লিষ্ট কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে তা যুক্ত করুন। যেমন কোনো মেলায় বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করলে তা লিখুন বা কোনো কল সেন্টারে কাজ করে থাকলে তা-ও লিখতে পারেন। কোন পদে কাজ করেছেন, কত দিন করেছেন তা উল্লেখ করুন। কোনো সম্মেলন বা অনুষ্ঠানে আয়োজক হিসেবে কাজ করে থাকলে তা-ও লিখুন।
স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজঃ আপনি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যে কাজ বা সংগঠনে যুক্ত তার তথ্য লিখতে হবে। কত দিন ধরে কাজ করছেন, কোন পদে কাজ করছেন তা লিখুন। প্রয়োজন হলে, প্রতিটি কাজের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত করে কাজের বর্ণনা দিন।
কর্মশালা ও প্রশিক্ষণঃ বিশ্ববিদ্যালয়-জীবনে যেসব কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন বা প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন তার তালিকা যুক্ত করতে হবে। চাকরির পদের সঙ্গে গুরুত্ব বুঝে কর্মশালা ও প্রশিক্ষণের তথ্য সংক্ষিপ্ত আকারে লিখে রাখুন।
ভাষা দক্ষতাঃ সাধারণভাবে বাংলাদেশে চাকরির আবেদনের জন্য বাংলা ও ইংরেজি জানা আবশ্যিক। ইংরেজি ভাষা দক্ষতা-সংশ্লিষ্ট কোনো পরীক্ষা—যেমন আইইএলটিএস বা টোয়েফলে অংশ নিলে তার স্কোর লিখুন। অন্য কোনো ভাষা জানলে সেটিও উল্লেখ করুন।
কম্পিউটার-দক্ষতাঃ যে পদের জন্য সিভি তৈরি করছেন, সেই পদের কথা মাথায় রেখে কম্পিউটার–দক্ষতা লিখতে হবে।
এখন সব পর্যায়ের চাকরির জন্য মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, এক্সেল ও পাওয়ারপয়েন্ট জানাকে সাধারণ দক্ষতা হিসেবে ভাবা হয়। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, এক্সেল ও পাওয়ারপয়েন্টের কাজ খুব ভালো জানলে তা অবশ্যই সিভিতে যুক্ত করবেন। ডেটা অ্যানালাইসিস, ম্যাক্রো কিংবা মাইক্রোসফটের কোনো প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকলে তা লিখতে পারেন।
এ ছাড়া টেকনিক্যাল সফটওয়্যার যেমন ম্যাটল্যাব বা এসপিএসএস শেখা থাকলে সেটিও উল্লেখ করুন।
শখ ও আগ্রহঃ নিজের দু-একটি আগ্রহ ও শখের কথা লিখতে পারেন।
রেফারেন্সঃ সদ্য স্নাতকদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাই ভালো রেফারেন্স হিসেবে কাজ করেন। এ ক্ষেত্রে শিক্ষককে জানিয়ে তাঁর নাম ও পদবি ব্যবহার করুন।
কখনো কখনো চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান থেকে রেফারেন্সে যাঁর নাম থাকে, তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাই সঠিক পদ ও পরিচয় ব্যবহার করুন। অন্য কোনো পেশার পরিচিত কোনো পেশাজীবীর নাম ও পদবি যুক্ত করতে পারেন।
অঙ্গীকারনামাঃ সিভিতে যুক্ত আপনার সব তথ্য সঠিক ও নির্ভুল তা লিখতে হবে। লেখার নিচে আপনার স্পষ্ট স্বাক্ষর থাকতে হবে। চাকরিদাতা আপনার তথ্য যাচাই করার আইনগত অধিকার রাখেন, তাই কোনো ভুল তথ্য দেবেন না।
সতর্কতাঃ সিভি লেখার নিয়ম জানার সাথে সাথে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করে চলতে হবে।সেগুলো মন দিতে পড়ে নিন।
১.নির্ভুল বানান ও ভাষা নিশ্চিত করা জরুরি সিভি লেখার ক্ষেত্রে। কেননা ভুলে ভরা সিভি নিয়োগদাতাদের মনে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করে।
২.আপনি যে চাকরির বিজ্ঞপ্তিটি দেখে চাকরির জন্য আবেদন করছেন সে অনুযায়ী সিভির ভাষা এবং ধরনে পরিবর্তন আনুন।
৩.যথাসম্ভব সহজ এবং ছোট ছোট বাক্যের মাধ্যমে নিজেকে প্রকাশ করার চেষ্টা করুন। অপ্রয়োজনীয় ও অপ্রাসঙ্গিক কোনো কথা লেখা থেকে বিরত থাকুন।
৪.নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে নির্দিষ্টভাবে যদি উল্লেখ করা না থাকে তাহলে অবশ্যই সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টের লিংক আপনি শেয়ার করবেন না। তবে প্রযোজ্য হলে নিজের লিংকডইন একাউন্ট এর লিঙ্ক ব্যক্তিগত তথ্যের সেকশনে সাজিয়ে রাখতে পারেন।
৫.কিছু কিছু শব্দের অতিরিক্ত ব্যবহার করবেন না। চেষ্টা করবেন লিডারশিপ বা প্যাশনেট এ ধরনের শব্দগুলোকে রিজেক্ট করবার।
৬.সিভিতে চেষ্টা করবেন যে প্রতিষ্ঠানে আপনি কাজের জন্য যোগদান করতে চাচ্ছেন সেই প্রতিষ্ঠানের কাজের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কাজের অভিজ্ঞতা দক্ষতা এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা ভালোভাবে উল্লেখ করবার।
আশা করা যায় সিভি লেখার সময় যদি আপনি এই বিষয়গুলো মন দিয়ে মেনে চলতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনার সিভি গ্রহণযোগ্য হবে এবং নিয়োগ দাতাদের কাছে বেস্ট সিভি হিসেবে গণ্য হবে এবং আপনার ইন্টারভিউ এর জন্য ডাক আসবে।
সিভি লেখার নিয়ম:
বরাবর
সভাপতি
আদিতমারি উচ্চ বিদ্যালয়
আদিতমারি,লালমনিরহাট
বিষয়ঃ সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য আবেদন।
জনাব,
বিনীত নিবেদন এই যে, গত ০৫ জানুয়ারি,২০২১ ইং তারিখে “দৈনিক প্রথম আলো” পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানতে পারলাম যে,আপনার বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে ২ জন লোক নিয়োগ দেওয়া হবে। আমি উক্ত পদের একজন প্রার্থী হিসেবে আমার শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ যাবতীয় আনুষাঙ্গিক তথ্যাদি মহোদয়ের নিকট তুলে ধরলাম।
১। নামঃমাহির ফয়সাল
২। পিতার নামঃ
৩। মাতার নামঃ
৪। বর্তমান ঠিকানাঃ
৫। স্থায়ী ঠিকানাঃ
৬। জন্ম তারিখঃ
৭। জাতীয়তাঃ
৮। ধর্মঃ
৯। শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ
পরীক্ষার নাম বোর্ড পাশের সন প্রাপ্তগ্রেড
এসএসসি দিনাজপুর ২০০৬ জিপিএ-৫
এইচএসসি দিনাজপুর ২০০৮ জিপিএ-৫
বিবিএ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৩ প্রথম শ্রেণী
এমবিএ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৫ প্রথম শ্রেণী
১০।অভিজ্ঞতাঃ ১)………উচ্চ বিদ্যালয়,সহকারী শিক্ষক,৩ বছর ২)………উচ্চ বিদ্যালয়,সহকারী শিক্ষক,১ বছরঅতএব, মহোদয়ের নিকট বিনীত আবেদন এই যে, আমকে আপনার বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পেতে আপনার একান্ত মর্জি হয়।বিনীত
আপনার একান্ত বাধ্যগত
(মাহির ফয়সাল)
মোবাঃ ০১৬৭০-০০০০০০
তারিখ-১০ জানুয়ারি,২০২১ইং
সংযুক্তিঃ
১। পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি ২ ফটোকপি।
২। একডেমিক সকল সনদপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি।
৩। জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।
৪। ৫০০ টাকার পোস্টাল অর্ডার।
সিভি লেখার নিয়ম
কাভার লেটার লেখার পূর্বে আপনার করণীয় হবে আপনি বর্তমানে যে প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করার জন্য চাকরির বিজ্ঞপ্তির উপলক্ষে আবেদন করছেন সেই কোম্পানি বা বিজ্ঞাপন সম্পর্কে ভালোভাবে জানা এবং ওই কোম্পানির কাজ, কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দের কর্মকান্ড এবং চাকরি প্রত্যাশী ও প্রতিযোগীদের ধরন সম্পর্কে অবগত হওয়াটাও জরুরী। তাহলে আসুন জেনে নেই কভার লেটার লেখার সময় কি কি বিষয় রাখতে হবে এবং কি কি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে সে সম্পর্কে।
১.লেখার সময় সব সময় চেষ্টা করবেন তা সবচেয়ে ছোট আকারে প্রকাশ।
সব সময় মার্জিত ভাষায় কভার লেটার লিখবেন।
২.শুরুতে সবচেয়ে সুন্দর ও সাবলীল বাক্য দিয়ে কাভার লেটারের প্রথম লেখা শুরু করবেন যাতে করে আপনার সেই প্রথম লাইন পরেই নিয়োগদাতা আকৃষ্ট হতে পারেন।
৩.অনেকেই এমন বাক্য লেখেন যেমন, চাকরিটি পেলে আমি ধন্য হয়ে যাব, চাকরিটা আমার খুব খুব খুব প্রয়োজন ইত্যাদি ইত্যাদি। মনে রাখবেন নিয়োগ কর্তা কখনো আপনার এই সকল আজগুবি কথা জানতে চান না তারা মূলত এটা জানার আগ্রহ প্রকাশ করেন যে আপনি ওই কাজের জন্য কতটুকু যোগ্য ও উপযুক্ত। কখনোই দুর্বলতায় প্রকাশ করবেন না।
৪.সব সময় নিজে কাভার এটা লেখার চেষ্টা করুন কখনোই কপি পেস্ট করবেন না।
প্রয়োজনীয় নয় এমন ব্যক্তিগত তথ্য কাভার লেটারে উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই।
আশা করা যায় এই কয়েকটি সতর্কবার্তা মাথায় রাখলে আপনি খুব ভালোভাবে আপনার কভার লেটার উপস্থাপন করতে পারবেন।
আমাদের শেষ কথা : সিভি লেখার নিয়ম
সিভি লেখার নিয়ম সম্পর্কিত আমাদের আজকের আলোচনা মূলত এখানেই শেষ করছি। তো সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, সিভি লেখার নিয়ম এবং সিভি লেখার ফরমেট সম্পর্কে জানতে পেরে আপনারা যদি উপকৃত হন তাহলেই আমাদের সার্থকতা । সেই সাথে নমুনা চিত্রের মাধ্যমে উল্লেখিত প্রাথমিক সিভি দেখানোর চেষ্টা করেছি।
আশা করছি আমাদের দেওয়া নিয়ম গুলো অনুসরণ করলে আপনি যে কোন সিভি খুব সুন্দর ও সঠিকভাবে লিখে ফেলতে পারবেন। আজ এ পর্যন্তই সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং নিয়মিত এমন গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট এর নোটিফিকেশন সবার আগে পেতে আমাদের সাথে থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।