কর্ণফুলী টানেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান |
বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ। তাই প্রতিনিয়ত আমরা বাংলাদেশের উন্নতি দেখতে পাচ্ছি। আর এই উন্নয়ন হচ্ছে বর্তমান সরকার বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের স্বপ্ন পূরণ করতে তার কন্যা যথাসাধ্য চেষ্টা করে উন্নয়নের পথে হাঁটছে। বর্তমান বাংলাদেশের প্রধান উন্নয়নের একটি নমুনা হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর টানেল। ইতিমধ্যে আপনারা সবাই অবগত হয়েছেন যে বঙ্গবন্ধুর টানেল টি আসলে কি? তাহলে আসুন বঙ্গবন্ধু টানেল সম্পর্কে আমরা কিছু সাধারণ জ্ঞানগুলো জেনে নেই।
কর্ণফুলী টানেল নিয়ে সাধারণ জ্ঞানঃ
১.প্রশ্ন. কর্ণফুলী টানেল প্রকল্পের যাত্রা কবে শুরু হয়?উত্তর:২০১৬ সালের ১৪ ই ফেব্রুয়ারি।
২.প্রশ্ন.কর্ণফুলী টানেলে নির্মাণ কাজ কবে উদ্বোধন করা হয়?
উত্তর :২০১৯ সালের ২৪ শে ফেব্রুয়ারি.
৩.প্রশ্ন. কর্ণফুলী টানেলের নির্মাণ কাজকে উদ্বোধন করেন?
উত্তর :বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
৪.প্রশ্ন. কর্ণফুলী টানেল কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: চট্টগ্রাম জেলায়।
৫.প্রশ্ন. কর্ণফুলী টানেল কোন কোন অঞ্চল সংযুক্ত করছে?
উত্তর :পতেঙ্গা ৪১ নং ওয়ার্ডের নেভাল ও একাডেমির বন্দর অঞ্চল থেকে চট্টগ্রামের আনোয়ারা পর্যন্ত।
৬.প্রশ্ন. কর্ণফুলী টানেলে কয়টি লেনের রাস্তা রয়েছে?
উত্তর: ৪লেনের রাস্তা রয়েছে।
৭.প্রশ্ন. কর্ণফুলী টানেলে কয়টি ক্যারেজওয়ে রয়েছে ।
উত্তর: চার লেনের ক্যারেজওয়ে এবং একটি পৃথক সার্ভিস লেন।
৮.প্রশ্ন. কর্ণফুলী টানেল এর মোট দৈর্ঘ্য কত?
উত্তর: ৯. ৩৯২ কিলোমিটার ।
৯.প্রশ্ন. কর্ণফুলী মূল টানেলের দৈর্ঘ্য কত?
উত্তর: কর্ণফুলী টানেলের মূল দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৩.৪৩ কিলোমিটার।
১০.প্রশ্ন. কর্ণফুলী ট্যানেলে বায়ু চলাচলের জন্য কয়টি ফ্যান রয়েছে?
উত্তর: মোট ৮।
১১.প্রশ্ন. কর্ণফুলী টানেলে যানবাহন চলাচলের ক্ষমতা কতটি?
উত্তর: প্রতি ঘন্টায় প্রায় ৮,০০০।
১২.প্রশ্ন.কর্ণফুলী টানেলে যানবাহনের গতিসীমা কত?
উত্তর: ঘন্টায় ৬০ কিলোমিটার।
১৩.প্রশ্ন.কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ কাজে কোন দেশের কোন কোম্পানি?
উত্তর: চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি(cccc)।
১৪.প্রশ্ন.কর্ণফুলী টানেলের মোট ব্যয় কত?
উত্তর: ১০, ৩৭৪কোটি ৪২ লাখ টাকা।
১৫.প্রশ্ন. কর্ণফুলী টানেলে বাংলাদেশ সরকারের বিনিয়োগ মোট ব্যয়ের কত?
উত্তর: ৪ হাজার ৪৬১ কোটি ২৩ লাখ।
১৬.প্রশ্ন. কর্ণফুলী টানেল নির্মাণে চায়না এক সিম ব্যাংকের বিনিয়োগের সুদের হার কত?
উত্তর : ২%
১৭.প্রশ্ন. কর্ণফুলী টানের চাইনা এক্সিম ব্যাংক থেকে কত টাকা সহায়তা পেয়েছিল?
উত্তর: ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা।
১৮.প্রশ্ন. চ্যানেলটি নির্মিত হলে দেশের জিডিপি কত শতাংশ অবদান রাখবে?
উত্তর: ০.১৬৬ শতাংশ।
১৯.প্রশ্ন. কর্ণফুলী টানেলের দুটি টিউবের প্রতিটি দৈর্ঘ্য কত কিলোমিটার?
উত্তর: ২.৪৫কিলোমিটার।
২০.প্রশ্ন কর্ণফুলী টানেল এর ব্যাস কত মিটার?
উত্তর: ১০.৮০ মিটার?
২১.প্রশ্ন. কর্ণফুলী টানেল এর ইংরেজি অপর নামটি কি?
উত্তর: Two towns -One City.
২২.প্রশ্ন কর্ণফুলী টানেল এর আসল নাম কি?
উত্তর: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান টানেল।
২৩.প্রশ্ন. কোন নদীর তলদেশে এ টানেলের অবস্থান?
উত্তর: কর্ণফুলী নদী ।
২৪. প্রশ্ন. টানেল নির্মাণের ফলে ঢাকা- কক্সবাজারের কত কিলোমিটার দূরত্ব কমে গেছে?
উত্তর: ১৫ কিলোমিটার ।
২৫.প্রশ্ন. জলাবদ্ধতার আশঙ্কায় টানেলের ভেতর কতটি সেচ পাম বসানো হয়েছে?
উত্তর: ৫২ টি।
২৬.প্রশ্ন. জরুরি প্রয়োজনে এক টিউব থেকে অন্য টিউবে যাওয়ার জন্য কয়টি সংযোগ রাখা হয়েছে ?
উত্তর: ৩ টি।
২৭.প্রশ্ন .দক্ষিণ এশিয়ার নদীর তলদেশে প্রথম ও দীর্ঘতম সড়ক টানেল কোনটি ?
উত্তর: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল।
২৮. প্রশ্ন .নদীর তলদেশ দিয়ে বাংলাদেশের প্রথম টানেল কোনটি ?
উত্তর: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল।
২৯.প্রশ্ন. টানেল এর মধ্যে দিয়ে সর্বোচ্চ কত কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চালানো যাবে?
উত্তর: ৮০ কিলোমিটার।
৩০. প্রশ্ন. কর্ণফুলী টানেলে নির্মাণ কাজ তদারক করছে কোন প্রতিষ্ঠান?
উত্তর: বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ।
৩১.প্রশ্ন. বঙ্গবন্ধু টানেলের সংযোগ সড়কের দৈর্ঘ্য কত?
উত্তর: উভয়দিকে মোট ৫.৩৫ কিলোমিটার।
৩২. প্রশ্ন. কর্ণফুলী নদীর কত ফুট গভীরে টানেল নির্মাণ করা হয়েছে?
উত্তর: ১৫০ ফুট গভীরে ।
৩৩.প্রশ্ন. বঙ্গবন্ধু টানেলের ঋণ সহায়তা প্রদানকৃত ব্যাংকটি কয় বছর মেয়াদীর ঋণ দিয়েছে?
উত্তর: ২০ বছর মেয়াদী।
৩৪.প্রশ্ন. কর্ণফুলী টানেলের নির্মাণে চুক্তি সই হয় কবে?
উত্তর :১৪ অক্টোবর ২০১৬ ।
৩৫.প্রশ্ন. বঙ্গবন্ধু ট্যানেলের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন কে?
উত্তর :বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং।
৩৬.প্রশ্ন . মূল চ্যানেলের কতটি টিউব /সুরঙ্গ আছে ?
উত্তর : দুইটি ।
৩৭.প্রশ্ন. টানেলের মোট দৈর্ঘ্য কত কিলোমিটা?
উত্তর :৩. ৩২ কিলোমিটার বা ২.০৬ মাইল ।
৩৮.প্রশ্ন. কর্ণফুলী টানেল এর প্রতিটি সুরঙ্গের দৈর্ঘ্য কত কিলোমিটার?
উত্তর : ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার ।
৩৯.প্রশ্ন. টানেলের ভিতরে পর্যাপ্ত বায়ু প্রবাহ নিশ্চিত করার জন্য টানেলে মোট কতটি বায়ু চলাচল ফ্যান ও জেট ফ্যান রয়েছে?
উত্তর : ৮ টি ফ্যান এবং ১২৬ টি জেড ফ্যান।
৪০.প্রশ্ন কর্ণফুলী নদীর তলদেশে একটি টানেল নির্মাণের প্রথম প্রস্তাব করা হয় কত সালে?
উত্তর : ১৯৬০ সালে।
৪১. প্রশ্ন. টানলে প্রতি ঘন্টায় মোট কতটি যানবাহন চালনা করতে সক্ষম হবে?
উত্তর : ৮ হাজার টি যানবাহন।
৪২ . প্রশ্ন. কর্ণফুলী টানেলের নির্মাণ কাজ শেষ হবে কবে?
উত্তর ২০২৩ সালে শেষে।
৪৩. প্রশ্ন. কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামের মধ্যে কতটুকু দূরত্ব হ্রাস করবে এই কর্ণফুলী টানেল?
উত্তর :৪০ কিলোমিটার ।
কর্ণফুলী টানেল সম্পর্কে কিছু সাধারণ জ্ঞান তো আমরা জেনে নিয়েছি। এবার আসুন কর্ণফুলী টানেল সম্পর্কে কিছু বিস্তারিত তথ্য জেনে নেই।
ইতিহাসঃ
২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি কর্ণফুলী সুড়ঙ্গ বা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন।
কর্ণফুলী টানেল পরিচিতিঃ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল বা কর্ণফুলী টানেল চার লেনবিশিষ্ট। দুটি টিউবসংবলিত ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে এই টানেল নির্মিত হচ্ছে। চট্টগ্রাম শহরপ্রান্তের নেভাল একাডেমির পাশ দিয়ে শুরু হওয়া এই সুড়ঙ্গ নদীর দক্ষিণ পাড়ের সিইউএফএল (চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড) এবং কাফকো (কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার লিমিটেড) কারখানার মাঝামাঝি স্থান দিয়ে নদীর দক্ষিণ প্রান্তে পৌঁছাবে। কর্ণফুলী নদীর মধ্যভাগে সুড়ঙ্গ অবস্থান করবে ১৫০ ফুট গভীরে। নদীর তলদেশে প্রতিটি টিউব চওড়া ১০ দশমিক ৮ মিটার বা ৩৫ ফুট এবং উচ্চতা ৪ দশমিক ৮ মিটার বা অন্তত ১৬ ফুট। একটি টিউব থেকে অপর টিউবের পাশাপাশি দূরত্ব প্রায় ১২ মিটার।
টানেলের প্রস্থ ৭০০ মিটার এবং দৈর্ঘ্য ৩ হাজার ৪০০ মিটার। সুড়ঙ্গটির মূল দৈর্ঘ্য ৩.৪৩ কিলোমিটার হলেও এর সঙ্গে ৫ কিলোমিটারের বেশি সংযোগ সড়ক (অ্যাপ্রোচ রোড) যুক্ত হবে। টানেলের পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার এপ্রোচ রোড এবং ৭২৭ মিটার ওভার ব্রিজসম্পন্ন টানেলটি চট্টগ্রাম শহরের সঙ্গে আনোয়ারা উপজেলাকে সংযুক্ত করবে। প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডি প্রতিবেদন অনুযায়ী, কর্ণফুলী টানেল চালুর প্রথম বছর ৬৩ লাখ গাড়ি টানেলের নিচ দিয়ে চলাচল করবে। যেটি ক্রমান্বয়ে বাড়তে বাড়তে দেড় কোটিতে গিয়ে দাঁড়াবে। চালুর প্রথম বছরে চলাচলকারী গাড়ির প্রায় ৫১ শতাংশ হবে কনটেইনার পরিবহনকারী ট্রেইলর এবং বিভিন্ন ধরনের ট্রাক ও ভ্যান। বাকি ৪৯ শতাংশের মধ্যে ১৩ লাখ বাস ও মিনিবাস। আর ১২ লাখ কার, জিপ ও বিভিন্ন ছোট গাড়ি চলাচল করবে।
এই সুড়ঙ্গের মধ্য দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক যুক্ত হবে। এই সুড়ঙ্গটি নির্মাণ হলে এটিই হবে বাংলাদেশের প্রথম সুড়ঙ্গ পথ এবং দক্ষিণ এশিয়ায় নদী তলদেশের প্রথম ও দীর্ঘতম সড়ক সুড়ঙ্গপথ।
চুক্তি ও ব্যয়ঃ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল প্রকল্পটি বাংলাদেশ ও চীন সরকারের (জি টু জি) যৌথ অর্থায়নে সেতু কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হচ্ছে। ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের ঢাকা সফরে টানেল নির্মাণে ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর হয়।সুড়ঙ্গ নির্মাণে ব্যয় হবে ৯ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা। ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের ঢাকা সফরে কর্ণফুলী টানেল নির্মাণে ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তি অনুযায়ী চীনের এক্সিম ব্যাংক ২০ বছর মেয়াদি ঋণ হিসাবে ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা দিচ্ছে। বাকি অর্থায়ন বাংলাদেশ সরকার করছে।
প্রকল্পের সংক্ষিপ্ত বর্ণনাঃ
কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে ৪ লেন বিশিষ্ট সড়ক টানেল নির্মিত হবে। মূল টানেল ২টি টিউব সম্বলিত ও ৩.৪ কি.মি: দীর্ঘ এবং টানেলের পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে ৫.৩৫ কি:মি: এপ্রোচ রোড এবং ৭২৭ মিটার ওভার ব্রিজ (Viaduct) সম্পন্ন এই টানেলটি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলাকে শহরাঞ্চলের সাথে সংযুক্ত করবে। প্রকল্পটির প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৮৮০.৪০ কোটি টাকা। যার মধ্যে বাংলাদেশ Bangladesh সরকারের অর্থ সহয়তা ৩৯৬৭.২১ কোটি টাকা এবং চীন সরকারের অর্থ সহয়তা ৫৯১৩.১৯ কোটি টাকা।
কর্ণফুলী টানেল নির্মান তথ্যঃ
সুড়ঙ্গটির নির্মাণ কাজ হাতে পেয়েছে চীনের এক নির্মাণ সংস্থা।অনুমান করা হচ্ছে ২০২২ সালের মধ্যে টানেল বা সুড়ঙ্গটির নির্মাণ শেষ হবে। সুড়ঙ্গটির মূল দৈর্ঘ্য ৩.৪৩ কিলোমিটার হলেও এর সঙ্গে ৫ কিলোমিটারের বেশি সংযোগ সড়ক (অ্যাপ্রোচ রোড)যুক্ত হবে।
কর্ণফুলী টানেলের অবস্থানঃ
বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর শহর চট্টগ্রামে কর্ণফুলী টানেলটি অবস্থিত।টানেলটি প্রবেশ করে পতেঙ্গার ৪১ নং ওয়ার্ড থেকে এবং নদীর অপর পাড় আনোয়ারা প্রান্তে সার কারখানার মাঝামাঝি এস্থান দিয়ে বহি গমন করবে।এই চ্যানেলটি বন্দরনগরী চট্টগ্রামকে সংযুক্ত করবে দেশের বাকি অংশের সাথে আর এই সংযোগের ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাবে সংযোগের উন্নতি হবে।
বঙ্গবন্ধু টানেলের নকশাঃ
বঙ্গবন্ধু টানেল বা কর্ণফুলি টানেল রয়েছে দুই লেনের রাস্তা। ক্যারেজ ওয়ে রয়েছে চার লেনের এবং রয়েছে একটি পৃথক সার্বিক লেন।টানেলটির দৈর্ঘ্য ৯.৩৯২ কিলোমিটার কিন্তু পানিতে অবস্থান করবে ৩.৪৩ কিলোমিটার। এই টানেলে বায়ু প্রবাহ নিশ্চিত করার জন্য ১২৬ টি জেট ফ্যান থাকবে।এবং ৮ টি বায়ু চলাচল ফ্যান থাকবে।টানেলের ভেতর গতিসীমা থাকবে ঘন্টায় ৬০ কিলোমিটার। এবং সর্বোচ্চ ৮ হাজারটি যান বাহন চলাচলে সক্ষম হবে।
সুবিধাঃ
সরকারি বিভিন্ন তথ্য বিবরণীতে দেখা যায় উক্ত টানেল নির্মাণের পিছনে বহুবিধ কারণ রয়েছে। চীনের কুনসিংকে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ হয়ে ভারতের সাথে যুক্তকারী করিডোর বেল্ট এন্ড কোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরই) উদ্দেশ্য হচ্ছে :
১.পণ্য সেবা ও জ্বালানির বাজার প্রবেশগম্যতা বাড়ানোর পাশাপাশি অশুল্ক বাঁধা দূরীকরণ।
২.বাণিজ্য সহজীকরণ ত্বরান্বিত করা, অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ করা এবং খনিজ দ্রব্য পানি ও অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদের যৌথ উত্তোলন ও উন্নয়ন করা।
৩.এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা।
৪.চীনের সাংহাই নগরীর মতো চট্টগ্রামকেও ওয়ান সিটি এন্ড টু টাউন এর আদলে গড়ে তোলা।
৫.বঙ্গোপসাগরকে (Bay of Bengal) ঘিরে আবর্তিত ব্লু ইউকোনমি সমর্থন দেওয়া।
৬.আনোয়ারা উপজেলায় এক্সক্লুসিভ চাইনিজ ইকোনমিক ও কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনকে আরও সমর্থন জোগানো।
৭.চট্টগ্রাম নগরীতে নিরবিচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগের পাশাপাশি বিদ্যমান সড়ক নেটওয়ার্কের উন্নয়ন করা।
৮.পরিবহন কেন্দ্রস্থল হিসাবে চট্টগ্রাম বাণিজ্যিক শহরকে আরও বেশী শক্তিশালী করা।
৯.কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়ের মধ্যে যোগাযোগ ও ব্যবসা বাণিজ্যের উন্নতি প্রসার ঘটানো।
১০.কর্ণফুলী নদীর উপর বিদ্যমান দুই সেতুর ওপর থেকে যানবাহনের চাপ কমিয়ে আনা।
১১.ব্যবসা বাণিজ্যের প্রধান স্থানের সঙ্গে কর্ণফুলী পূর্ব পাশে নির্মীয়মান শহরের সংযোগ স্থাপন এবং উন্নয়ন কাজে গতি বৃদ্ধি করা।
১২.কর্ণফুলী নদীর পূর্ব পাশে নতুন শহর ও বসতি বাড়ানো।
১৩.চট্টগ্রাম বন্দরের বিদ্যমান সুযোগ সুবিধা আরও বৃদ্ধি করা।
১৪.ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মধ্যে নতুন সড়ক যোগাযোগের আরও উন্নয়ন করা।