সাদিও মানের জীবন কাহিনী

সাদিও মানের জীবন কাহিনী
সাদিও মানের জীবন কাহিনী 

জন্ম ও উচ্চতা: ১০ই এপ্রিল 1992 সালে  সেনেগালে জন্মগ্রহণ করেন।বর্তমান বয়স ৩১বছর । তার উচ্চতা ১.৭৪ মিটার (৫ ফুট ৮ ১⁄২ ইঞ্চি) 

সাদিও মানে জন্মভূমি এবং কল্পনায় জীবন ইতিহাস:

সেনেগালের রাস্তা থেকে ইউরোপ মাতানো সাদিও মানে আফ্রিকার দেশ সেনেগালের রাজধানী ডাকের এর চাইতে ৪২০ কিলোমিটার দূরে   বোমবমবালি নামের প্রত্যন্ত গ্রামে তার বাবা ছিলেন স্থায়ী মসজিদের ইমাম। এখানেই থাকতেন  সাদিও মানে। তার গায়ের রং হলো কালো ইটের দালানের আড়ালে এক দশক আগে বেম্ব্রলের এই সমস্ত ঘর ছিল কুঁড়েঘর এরকম জায়গায় আফ্রিকান বাড়ন্ত পরিবারের যে কোনো সন্তানের অন্তিম গন্তব্য কৃষিকাজ নয়তো পশুচরাণো। বড় চরিত্র পড়াশোনা করেছেনসেই চমকে দেওয়া সেনেগালের ছোট্ট মনের ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন বড় করেছিল ।

তিন বেলা খাবার জোটে না যাদের পরিবারে সায় দেয়নি মানের চাওয়াতে সামান্য পেট ব্যথায় গ্রামে কিংবা আশপাশে কোথাও হাসপাতাল ছিল না মাত্র 7 বছর বয়সে তিনি  বাবাকে হারালেন। এবং তার বাবার মৃত্যুর পরে আরো বড় কঠিন পরিস্থিতি হয়ে ওঠে । বড় ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন তাড়া করে বেড়ায়  সাদিও মানে,কিন্তু মা কে রাজি করাতে পারেনা ১৫ বছর বয়সে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান সাদিও  মানে । এবং ধীরে ধীরে তিনি বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করে তিনি বিশ্বের একজন অন্যতম খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে ওঠেন । এবং এটা দেখে তার মা বিশ্বাস করতে পারেনি যে তার সেই ছোট্ট ছেলেটা এত বড় হয়ে এত বড় একজন খেলোয়াড় হতে পারবে  । এবং তিনি তার সেই ছোট্টবেলার স্বপ্ন পূরণ করেন । এভাবে ধীরে ধীরে বদলে যেতে থাকে তার জীবন । এবং ইতিহাস গড়ে দেয় সেই সেনেগালের ছোট্ট কুঁড়ে ঘরের সন্তান সাদিও মানে  ।

সাদিও মানে অসম্ভব প্রতিভাবান :

গতি ক্ষিপ্রতা দু পায়ের সমান গোল করার সামর্থ্য সবমিলিয়ে একজন কাঙ্খিত উইঙ্গার হতে যা যা প্রয়োজন তার সবই ছিল। 19 বছর নাগাদ অসম্ভব প্রতিভাবান মানে ঠিকানা হয়েছিল তার প্রথম পেশাদার ফুটবল ক্লাব মেদযে ফোন করে যখন মাকে বলেছিলেন মা আমি এখন ফ্রান্সে। তার মা পড়তে পারিনি যে তার ছেলে এখন  ফ্রান্সের একটি ক্লাবে অনুশীলন করছেন। কুঁড়েঘরে বাস করা সেই ছেলেকে হঠাৎ করে দেখতে বলে একদিন টিভির পর্দায় এবং তা দেখে তার মা মোটেও বিশ্বাস করতে পারেনি যে আমার ছেলে এত বড় হয়ে গেছে ফুটবলার হিসেবে বড় সাদিও মানে হবেই।ফ্রান্স থেকে জার্মানির ক্লাব সালজবুরগ ইংল্যান্ডে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে সাউদাম্পটন ক্লাব এর স্লোগান লিভারপুলের অসাধারণ পথচলাকে নি য়ে গেছে পরবর্তী পর্যায়ে।এবং এভাবেই সে আস্তে আস্তে অনেক বড় খেলোয়াড় হয়ে ওঠে ।

তিনি বলেন আমি বেম্বালির সন্তান  :

তিনি এটা অত্যন্ত গর্বের সাথে বলেন । সুযোগ পেলেই ছুটে যান তার ইমাম বাবা মারা গিয়েছিল সামান্য পেটব্যথায় চিকিৎসার অভাবে এরকম অভিজ্ঞতা। তার মত আর যাতে কোনো সন্তানের না হয়।এখন বর্তমানে তাই নিজের গ্রামে তৈরি করে দিয়েছেন হাসপাতাল প্রত্যন্ত বেমবালিতে ছেলেমেয়েদের জন্য আধুনিকযোগ-সুবিধা আছে গড়ে তুলেছেন এমন স্কুল। বানিয়ে দিয়েছেন স্টেডিয়ামও  সাদিও মানে   বিখ্যাত ব্রিটিশ দৈনিক টেলিগ্রাফ এর সাংবাদিকরা যখন জানার চেষ্টা করেছেন কিভাবে তিনি তার আয়ের সিংহভাগ জনসেবায় ব্যয় করছেন সাদিও মানে।তিনি অনুরোধ করেছিলেন তাঁরা এ সমস্ত খবর যাতে না ছাপিয়ে থাকে। মানব সেবার কাজটা তিনি আসলে গোপনে করতে পছন্দ করে

সাদিও মানের ধর্ম:

সাদিয়া মানে একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান । তিনি মুসলিম পরিবারের একজন শ্রেষ্ঠত্ব এবং সার্থক সন্তান এছাড়াও তিনি থেমে গেলে মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন । তিনি শান্তির ধর্ম ইসলামকে অনেক ভালোবাসে এবং ইসলামের অনুসরণে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকেন। তার মত এত ধর্ম প্রিয় মানুষ এই পৃথিবীতে খুব কমই দেখা যায

সাদিও মানে ক্লাব ক্যারিয়ার:

সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসরে নাম লেখালেন সেনেগালের তারকা ফুটবলার সাদিও মানে। সৌদির অনেকগুলো ক্লাবের ভিতরে আল নাসের ক্লাবটা অনেক জনপ্রিয় এবং এই ক্লাবে খেলে থাকেন বিশ্বের ১০ জন খেলোয়াড়ের ভিতর দুইজন খেলোয়াড় সেই ক্লাবে খেলে থাকেন।একই ক্লাবে আছেন পর্তুগালের ফুটবল এর সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলোয়াড় ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।লিভারপুলের হয়ে সম্ভাব্য সব ট্রফিই জিতেছেন এই মানে। এরপর ২০২২ সালে বায়ার্ন মিউনিখে যোগ দেন তিনি। তাকে দলে নেওয়া হয়েছিল রবার্ট লেওয়ানডোস্কির বিকল্প হিসেবে। তবে চোটের কারণে দলের হয়ে তেমন ভূমিকা পালন করতে পারেননি ।বায়ার্নের হয়ে সেনেগালের এই তারকা ফুটবলারের অর্জন শুধু লিগ শিরোপা। তবে এরই মাঝে আফ্রিকার বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হয়েছেন । আর জিতেছেন আফ্রিকান কাপ অব নেশন্সও।

তবে ইনজুরির কারণে তিনি কাতার বিশ্বকাপ খেলতে পারেননি। আর ইনজুরি থেকে ফিরেও পুরনো ছন্দ ফিরে পাননি সাদিও মানে।পুরো মৌশুমে ৩৮ ম্যাচ মানে গোল করেছেন মাত্র ১২টি। যে কারণে মাত্র এক মৌশুম পরেই তাকে বিক্রি করে দিল জার্মানির ক্লাব।তিন বছরের চুক্তিতে বায়ার্নে যোগ দিয়েছিলেন ৩১ বছর বয়সি মানে। কিন্তু বিদায় নিতে হলো দুই বছর আগেই।স্কাই জার্মানির সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মানে বলেন, ‘বায়ার্ন থেকে চলে যাওয়াটা আমাকে যন্ত্রণা দিচ্ছে। আমি এভাবে বায়ার্ন থেকে বিদায় নিতে চাইনি।’হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, আল নাসরে যোগ দেওয়ার পর ক্লাবটির সোশ্যাল মিডিয়াতে সমর্থকদের উদ্দেশে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন মানে। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘আপনাদের ক্লাবের অংশ হতে পেরে আমি সত্যিই গর্বিত।আসলে মানেকে যখন বিক্রির জন্য ফুটবলারদের দল বদলের বাজারে তোলে বায়ার্ন মিউনিখ, তখন তার ওপর আগ্রহ দেখিয়েছিল চেলসি, জুভেন্তাসের মতো ক্লাব। 

তবে তাদের থেকে এগিয়ে গিয়েছিল সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসর।সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসরমানেকে কিনতে খরচ করেছে তিন কোটি ইউরো।প্রায় ৩৫৭ কোটি ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে তিন বছরের জন্য দলে টেনেছে আল-নাসের। তিন মৌশুমের জন্য সৌদি ক্লাবটির সঙ্গে চুক্তি করেছেন সাদিও মানে। তার হাতে ক্লাবের ১০ নম্বর জার্সিটি তাকে দেওয়া হয়।সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসর বছরে চার কোটি ইউরো বেতন পাবেন সাদিও মানে। এর বাইরে ফলভিত্তিক বোনাস হিসেবে আরও ১ কোটি ইউরো যোগ হতে পারে এই ক্লাবে ব্যাংক । বর্তমানে এই ক্লাবের হাল ধরে রেখেছেন  পরকালের সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো তার জার্সি নাম্বার হলো ৭ এবং তিনি হচ্ছেন বিশ্বের সেরা ১০ জন ইস্টিকার এর ভিতরে একজন ।  এবং তার সতীদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছে সাদিও  মানে তার জার্সি নাম্বার হচ্ছে ১০। 

সাদিও মানে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার:

সাদিও  মানেসেনেগাল অনূর্ধ্ব-২৩ দলের হয়ে খেলার মাধ্যমে সেনেগালের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ২০১২ সালের ২৬শে জুলাই তারিখে তিনি ২০১২ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে গ্রেট ব্রিটেনের বিরুদ্ধে ম্যাচে সেনেগাল অনূর্ধ্ব-২৩ দলের হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিষেক করেছেন। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে সাদিও মানে এর জার্সি নাম্বার 10 ।একজন বাম পার্শ্বীয়  খেলোয়াড় হিসেবে খেলে থাকেন মাঝেমধ্যে কেন্দ্রীয় আক্রমণ ভাগের খেলোয়ার এবং ডান পার্শ্বীয়  খেলোয়াড় হিসেবে খেলা থাকে। তার মূল্য প্রায় ২২ মিলিয়ন ইউরো এবং তার ওজন ৬৯ কেজি ।২০১২ সাল থেকে ১৪ ই জুলাই ২০২২ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের সর্বমোট গোলের তালিকা  নিচে প্রদান করা হলো :

দল সাল ম্যাচ গোল
সেনেগাল 2012 6 2
2013 8 1
2014 9 3
2015 9 3
2016 7 1
2017 10 4
2018 9 1
2019 11 4
2020 2 2
2021 9 5
2022 11 7

বর্ণিল অধ্যয় প্রায় চ্যাম্পিয়ন লীগ  ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ সকল ধরনের পুরস্কারী জিতেছেন। তিনি ব্যক্তিগতভাবে, মানে বেশ কিছু পুরস্কার জয়লাভ করেছেন, যার মধ্যে ২০১৮–১৯ প্রিমিয়ার লিগের গোল্ডেন বুট এবং ২০১৯ সালে বর্ষসেরা আফ্রিকান ফুটবলারের পুরস্কার জয় লাভ করেন অন্যত পৃথিবীর সবচেয়ে বিখ্যাত তারকাদের একজন হয়ে ওঠেন ।

শাহীন

আমি শাহীন । পেশায় একজন ব্যবসায়ী । পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করতে পছন্দ করি। আশা করছি আমার শেয়ারকৃত তথ্য থেকে আপনারা উপকৃত হচ্ছেন আর তা হলেই আমার পরিশ্রম স্বার্থক।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Ads

Ads