শিক্ষক দিবস কবে পালন করা হয়

জীবন গড়ার প্রাথমিক কাজ করেন যারা তারাই হলেন শিক্ষক। ছাত্র জীবন তো বটেই সারা জীবনে সাফল্যের প্রাথমিক বীজ বপন করে থাকে। প্রত্যেকটির ছাত্র-ছাত্রী জীবনে অসংখ্য শিক্ষক থাকে। অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রীদের জীবন সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে দেয় শিক্ষকেরা। শিক্ষকেরা ছোটবেলা থেকেই বুঝিয়ে দেয় কোনটি সঠিক আর কোনটি ভুল। শিক্ষকদের আদর্শর কারণে আমরা ভালোভাবে বেড়ে উঠতে পারি। এবং আমরা আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে  পারি। আর শিক্ষক দিবস এমন একটি দিন যে আমরা বছরের একটি দিন করে শিক্ষকদের উপহার দিতে পারি। আজ আমরা জানবো শিক্ষক দিবস সম্পর্কে। 

★ শিক্ষক দিবস কি 

বিশ্ব শিক্ষক দিবস উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে পালন করা হয়।বিশ্বের সব শিক্ষকের অবদানের কথা স্মরণ করার জন্য অঙ্গ সংস্থা ইউনেস্কোর ডাকে এই দিবসটি পালন করা হয়। ১৯৯৪ সাল থেকে প্রতিবছর ৫ই অক্টোবর বিশ্বব্যাপী শিক্ষক দিবস পালন করে আসছে। বিশ্বের ১০০ টি দেশ এই দিবসটি পালন করে থাকে। এই দিবসটির পালনে এডুকেশন ইন্টারন্যাশনাল ও তার সহযোগী ৪০১ টি সদস্য সংগঠন মূল ভূমিকা রাখে। শিক্ষক দিবস পালন করা হয় ৫ই অক্টোবর কিন্তু ভারতে শিক্ষক দিবস পালন করা হয় ৫ ই সেপ্টেম্বর দেশের শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে এই দিনে। ভারতের শিক্ষক দিবস অন্যদিন এই নিয়ে সকলের মনে প্রশ্ন। 

★ শিক্ষক দিবসের ইতিহাস 

১৯৬২ সালে যখন ডক্টর এস রাধা কৃষ্ণান ভারতের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তখন তার ছাত্ররা ৫ সেপ্টেম্বর একটি বিশেষ দিন হিসেবে উদযাপনের অনুমতি চেয়ে তার কাছে আসেন। পরবর্তীতে ডাক্তার রাধা কৃষ্ণান তার ছাত্রদের সমাজের শিক্ষকদের অবদান স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য এই তারিখটিকে শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করতে বলেছিলেন। বিশ্ব ব্যাপি ৫ই অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালন করা হয়। এটি ইউনেস্কো ও ইউনিসেফ এবং ILO এর মতো সংস্থাগুলি নেতৃত্বে একটি উদ্যোগ। 

ডক্টর রাধা কৃষ্ণনের ছাত্ররা তার পরামর্শের সম্মত হয়েছিল এবং সেই থেকে, ৫ই সেপ্টেম্বর ভারতের শিক্ষক দিবস হিসেবে পালিত হয়। দিনটি আমাদের জীবনের শিক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ এবং পরিশ্রম এবং উৎসর্গে প্রশংসা করার প্রয়োজনীয়তা একটি অনুস্মারক।

★ বাংলাদেশের শিক্ষক দিবস কবে পালন করা হয় 

২০০৩ সালে ১৯ জানুয়ারি বাংলাদেশের শিক্ষক সমাজকে যথাযোগ্য মর্যাদার প্রতিষ্ঠিত করার অঙ্গীকার নিয়ে তৎকালীন সরকারের দিবসটি চালু করে। এছাড়া আন্তর্জাতিকভাবে ৫ই অক্টোবর বাংলাদেশেও দিবস পালন করা হয়ে থাকে। 

★ শিক্ষক দিবসের তাৎপর্য 

শিক্ষক দিবস পালন করা হয় এবং শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষাবিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য এবং সারা ভারত জুড়ে স্কুল ও কলেজগুলো ডক্টর রাধাকৃষ্ণকে শ্রদ্ধা জানিয়ে দিনটি উদযাপন করেন। দিনটি শুধুমাত্র স্কুল ও কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের তাদের শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা দেখানোর জন্য সীমাবদ্ধ নয় বরং  কর্মরত পেশাদারদের পরামর্শদাতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা  দেখানোর জন্য এবং তাদের কর্মজীবনের বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করার জন্য তাদের প্রশংসা করার জন্য প্রসারিত হয়।  

শিক্ষক দিবস এমন একটি অনুষ্ঠান যার জন্য শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা সমানভাবে উন্মুক্ত। দিবসটির শিক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি তাদের শিক্ষকদের দ্বারা সঠিক শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য যে প্রতিষ্ঠা চালিয়েছে তা বোঝার সুযোগ দেয়। একইভাবে শিক্ষকরা ও শিক্ষক দিবস উদযাপনের জন্য অপেক্ষা করে কারণ তাদের প্রচেষ্টা গুলি ছাত্র এবং অন্যান্য সংস্থার দ্বারা স্বীকৃতি এবং সম্মানিত হয়। 

রাধাকৃষ্ণের মতো শিক্ষকরা হচ্ছেন জাতির ভবিষ্যৎ নির্মিত তার কারণ তারা নিশ্চিত করে যে তাদের ছাত্ররা তাদের জীবনকে দায়িত্বের সাথে পরিচালনা করার জন্য সঠিক জ্ঞান ও প্রজ্ঞায় সজ্জিত। শিক্ষক দিবস আমাদের সমাজে তাদের ভূমিকা এবং তাদের অধিকার তুলে ধরতে সাহায্য করে। 

★ শিক্ষক দিবস উপলক্ষে শিক্ষকদের নিয়ে কিছু কথা 

শিক্ষক হলো জাতীয় গঠনের কারিগর। পিতা-মাতার পরে শিক্ষকের মর্যাদা। কেননা পিতা-মাতা আমাদের তাদের ভাষা শেখালো তাদের সঠিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষকের ভূমিকা অপারিসীম।শিক্ষক আমাদের জীবনটা সুন্দর ভাবে গড়ে তুলতে সাহায্য করে। একজন আদর্শ শিক্ষক সর্বদাই তার শিক্ষার্থীদের নতুন কিছু শিখিয়ে থাকে। জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে শিক্ষক অবদান রেখে থাকে। প্রতিটি শিশুর প্রয়োজন একজন প্রকৃত শিক্ষক। শিক্ষক এমন একজন মহান ব্যক্তি যে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত করার জন্য তাদের পেছনে অক্লান্ত পরিশ্রম করে থাকে। একটু যাতে কেউ উন্নত করার পেছনে থাকে একজন শিক্ষকের অবদান যা যা থেকে উন্নত সফলতার চূড়ান্ত শাখায় পৌঁছাতে সাহায্য করে। একজন শিক্ষকেরই পারে ছাত্রদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করে দিতে।এক্ষেত্রে সঠিক শিক্ষা সবচেয়ে বেশি কার্যকরী হয়। ভালো শিক্ষাই হচ্ছে ভবিষ্যতের মূল ভিত্তি কেননা ভালো শিক্ষা না পেলে একজন মানুষের ভবিষ্যৎ কখনোই সুন্দর হবে না। একজন প্রকৃত শিক্ষক একজন শিক্ষার্থীকে নিজের সন্তানের মত ভালোবাসেন। 

★ শিক্ষক দিবস সম্পর্কে কিছু জানা অজানা তথ্য 

৫ই অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবস হিসেবে পালিত হয়। জার্মানি, ইংল্যান্ড, রাশিয়া, রোমানিয়া,সার্বিয়ার মতো কয়েকটি দেশ সেই দিনের শিক্ষক দিবস পালন করে। এছাড়াও বিশ্বের ১০০ টিরও বেশি দেশ পৃথক পৃথক তারিখের শিক্ষক দিবস পালন করে থাকে। ২৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষক দিবস পালিত হয় লিবিয়া, মরক্কো, আলজেরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির  মতো দেশে। 

১৯৪৪ সালে আমেরিকার মৈটে ওয়ায়েটে উডব্রিজ সর্বপ্রথম শিক্ষক দিবসের পক্ষে সওয়াল করেন। পরে উনিশশ তিপান্ন সালে মার্কিন কংগ্রেস তাতে সায় দেয়। ১৯৮০ সাল থেকে ৭ মার্চ শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা শুরু হয়। পরে মে মাসের প্রথম মঙ্গলবার এটি পালিত হয়ে থাকে। সিঙ্গাপুরে সেপ্টেম্বরের প্রথম শুক্রবার শিক্ষক দিবস পালন করা হয়। আফগানিস্তানের 5 অক্টোবর এই দিনটি পালন করা হয়ে থাকে।

★ শেষ কথা 

শিক্ষকরা আমাদের বাবা-মায়ের মতো। আমরা জীবনের অর্ধেকটি সময় পার করে আসি শিক্ষকদের সাথে। শিক্ষকরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে শুধু আমাদের ভালো ভবিষ্যতের জন্য। আর তাদের এই অক্লান্ত পরিশ্রমকে শ্রদ্ধা করে এই দিনটি পালন করা হয়। শিক্ষকদের কাছেও এটি বেশ সম্মানের হয়ে থাকে। আশা করি আমি আপনাদের শিক্ষক দিবস সম্পর্কে বোঝাতে পেরেছি।

শাহীন

আমি শাহীন । পেশায় একজন ব্যবসায়ী । পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করতে পছন্দ করি। আশা করছি আমার শেয়ারকৃত তথ্য থেকে আপনারা উপকৃত হচ্ছেন আর তা হলেই আমার পরিশ্রম স্বার্থক।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Ads

Ads