শিক্ষকরা হলেন সমাজ গড়ার কারিগর। ভবিষ্যৎ রজনীর জন্য পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালন করেন শিক্ষকরা। সারা বিশ্বের ৫ অক্টোবর আন্তর্জাতিক শিক্ষক দিবস পালন করা হয়। কিন্তু ভারতে শিক্ষক দিবস পালন করা হয় ৫ সেপ্টেম্বর। এদেশের প্রতিটি শিক্ষা ক্ষেত্রে মহাসমার রোহের এর সঙ্গে দিনটি পালন করা হয়। শিক্ষাবিদ তথা ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডক্টর সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন কে সম্মান জানানোর জন্যই ৫ সেপ্টেম্বর দিনটিকে শিক্ষক দিবস হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। আসুন এই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
শিক্ষক দিবসের ইতিহাসঃ
শিক্ষক দিবস সম্পর্কে জানার আগে এই শিক্ষক দিবসের ইতিহাস সম্পর্কে জেনে নিন। ১৮৮৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন। তার স্মরণে এই তারিখটিকে দেশ জুড়ে শিক্ষক দিবসে হিসেবে পালন করা হয়। আসলে ভারতে শিক্ষক দিবসের ইতিহাস সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণের সঙ্গে সম্পর্কিত। রাধা কৃষ্ণন চেন্নাইয়ের প্রেসিডেন্টি কলেজ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপনা করেন। তিনি অন্ধ্রপ্রদেশ বিশ্ববিদ্যালয়, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, এবং বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ডক্টর সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন যখন ১৯৬২ সালে ভারতের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তখন তার ছাত্ররা ৫ সেপ্টেম্বরকে একটি বিশেষ দিন হিসেবে উদযাপন করার অনুমতি চাইতে তার কাছে যান। কিন্তু রাধাকৃষ্ণন পরিবর্তে সময় শিক্ষকদের আমূলক অবদানকে সংস্কৃতি দিতে ৫ সেপ্টেম্বরকে শিক্ষক দেশী দিবস হিসেবে পালন করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। তাই এভাবে ৫ সেপ্টেম্বর ভারতে শিক্ষক দিবস পালিত শুরু হয়।
শিক্ষক দিবসের গুরুত্বঃ
জাতীয় শিক্ষক দিবস একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শিক্ষক দিবস পালন করা শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষাবিদদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য এবং যারা সারা বছর জুড়ে ছাত্রছাত্রীদের আদর যত্নে পরামর্শ দিয়ে শিক্ষা দান করে তাদের কৃতজ্ঞতা দেখানোর জন্যই এবং তাদের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানোর উদ্দেশ্যে এই শিক্ষক দিবস পালন করা হয়।
শিক্ষকরা হচ্ছেন জাতির ভবিষ্যৎ নির্মতা। কারণ তারা নিশ্চিত করে যে তাদের ছাত্ররা তাদের জীবনকে দায়িত্বের সাথে পরিচালনা করার জন্য সঠিক জ্ঞান ও প্রজ্ঞায় সজ্জিত। শিক্ষক দিবস আমাদের সমাজে তাদের ভূমিকা তাদের অধিকার তুলে ধরতে সাহায্য করে।
জাতীয় শিক্ষক দিবস নয় "বিশ্ব শিক্ষক দিবস" নতুন তথ্য ২০২৩ঃ
প্রতিবছর ৫ সেপ্টেম্বর জাতীয় শিক্ষক দিবস পালন করা হতো। কিন্তু এখন থেকে প্রতিবছর ৫ অক্টোবর "জাতীয় শিক্ষক দিবসের "পরিবর্তে" বিশ্ব শিক্ষক দিবস" উদযাপিত হবে।
সোমবার যার সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ের প্রেস ব্রিফিংয়ে এ অনুমোদনের কথা জানান মন্ত্রী পরিষদ সচিব মোঃ মাহবুব হোসেন।
এছাড়াও বৈঠকে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী সংশোধন আইন ২০২৩ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন হয়েছে।
শিক্ষক দিবস নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যে নির্দেশনা দিল মন্ত্রণালয়ঃ
আগামী ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সেমিনার করার নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সোমবার ২৫ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সেবা শাখায় সহকারী সচিব মোঃ মনিরুল ইসলাম মিলনের সই করা আদেশ থেকে তথ্য জানা গেছে।
শিক্ষকদের প্রতি শিক্ষার্থী ও সমাজের নানান শ্রেণীর পেশার মানুষের মধ্যে হতে সম্মান শ্রদ্ধাবোধ বাড়ে, সেজন্য র্যালি সবার সেমিনার থেকে সচেতনতা তৈরিতে কাজ করতে হবে।
নির্দেশনায় বলা হয় যে, শিক্ষার্থী অভিভাবক ও অংশীজনদের সাবেক বর্তমান শিক্ষক নিয়ে রেলি আলোচনা সভা ও সেমিনার করতে হবে।
বলা হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যুদ্ধে গিয়ে শিক্ষার মনোনয়নের শিক্ষকদের ভূমিকা এবং শিক্ষকদের প্রতি শিক্ষার্থীসহ সবার শ্রদ্ধাবোধ এবং সম্মান বৃদ্ধির জন্য সচেতনতা তৈরিতে সাবেক এবং বর্তমান শিক্ষক, শিক্ষার্থী সহ অংশীজনদের অংশগ্রহণে ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসের সব প্রতিষ্ঠান খোলা রেখে র্যালি, আলোচনা সভা, সেমিনারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শিক্ষক দিবস ২০২৩ নিয়ে আমাদের কিছু কথাঃ
শিক্ষক আমাদের জীবনে খুব গুরুত্বপূর্ণ একজন আদর্শ ব্যক্তি। যারা সবসময় শ্রদ্ধা ও সম্মানের অধিকারী। তাই আর জাতীয় শিক্ষক দিবস নয় বরং এখন থেকে পালন করা হবে বিশ্ব শিক্ষক দিবস। শুধু ভারত কিংবা বাংলাদেশে নয় সারা বিশ্বে পালিত হবে এই বিশ্ব শিক্ষক দিবস ৫ই অক্টোবরে। এবং এই শিক্ষক দিবস উপলক্ষে আর কোন প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে না। বরং সাবেক ও বর্তমান সকল শিক্ষক এবং ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে দিনটি উদযাপিত হবে বিভিন্ন আয়োজন এর মাধ্যমে। যেমন রেলি আলোচনা সভা এবং সেমিনারের মাধ্যমে। যার উদ্দেশ্য থাকবে সকল শিক্ষককে সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানো।