কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান |
"এ কি অপরূপ রূপে মা তোমায় হেরিনু পল্লী জননী"
পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামের দেশটি খুঁজে বের করা সত্যিই কষ্টকর। কিন্তু এই বাংলাদেশে যে কত সুন্দর্য মিশে রয়েছে তা কারো অজানা নয়। বিশেষ করে বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলে রয়েছে পাহাড়-পর্বত সমুদ্র সৈকত ও সুন্দরবন। সত্যিই মহান সৃষ্টিকর্তার এক অপূর্ব দান বাংলাদেশের এই অপরূপ সৌন্দর্য।
শহরের এই ব্যস্ত কংক্রিট এর চারপাশের দেওয়াল এবং রাস্তায় যানজটের হয়রানি থেকে বাঁচতে কেনা চায় প্রাণ খুলে মন ভরে খোলা আকাশের নিচে শ্বাস নিতে। তাইতো এই ব্যস্ত জীবন জীবনকে একটু বিশ্রাম দিতে সকলেই চলে আসে কক্সবাজারে। হ্যাঁ পাঠক বন্ধুরা আজকে আমাদের এই প্রতিবেদন কক্সবাজারের দর্শনীয় স্থান সমূহ নিয়ে। যদি আপনি কক্সবাজারের দর্শনীয় স্থানসমূহ সম্পর্কে জানতে চান তাহলে প্রথম থেকে আমাদের সাথেই থাকুন।
কক্সবাজারের অবস্থানঃ
বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলে চট্টগ্রাম বিভাগে কক্সবাজার অবস্থিত। বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন অঞ্চল হিসেবে কক্সবাজার বিশেষ পরিচিত। কক্সবাজার জেলায় বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান রয়েছে। তাই কক্সবাজার যাওয়ার আগে অবশ্যই আপনাকে কক্সবাজারের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জেনে রাখতে হবে। তো পাঠক বন্ধুরা আসুন আমরা কক্সবাজারের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জেনে নেই।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতঃ
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশি সর্ববৃহৎ পর্যটন কেন্দ্র যা কক্সবাজার জেলায় অবস্থিত। বিশ্বের সবথেকে বড় সমুদ্র সৈকতের জন্য এটি সারা বিশ্বের কাছে সমাদৃত বা কক্সবাজার শহর থেকে বদর মোকাম পর্যন্ত একটানা ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। কক্সবাজারের আসল দর্শনীয় স্থান হচ্ছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। যা বন পাহাড় ঝর্ণা বালুর নরম বিছানা এবং বিশাল সমুদ্র সৈকত রয়েছে এখানে। বঙ্গোপসাগরের নীল জলরাশি আর সুসু গর্জনের মনোমুগ্ধকর সমুদ্র সৈকতের আরেক নাম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত।কক্সবাজারে বঙ্গোপসাগর ছাড়া রয়েছে বাংলাদেশের একমাত্র কোরাল লিভ সেন্ট মার্টিন, সোনা দিয়া দ্বীপ, পাহাড় দ্বীপ মহেশখালী, লাইট হাউজের কুতুবদিয়া, ডুলহাজারা সাফারি পার্ক, মাতারবাড়ি , শাহপরীর দ্বীপ। কক্সবাজারের এইসব দর্শনীয় স্থান আপনার ভ্রমণকে করে তুলবে আনন্দময়।
কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান (লাবনী পয়েন্ট):
কক্সবাজার শহর থেকে কাছে হবার কারণে লাবনী পয়েন্ট কক্সবাজারের প্রধান সমুদ্র সৈকত বলে বিবেচনা করা হয়। নানা রকম জিনিসের প্রশ্রয় সাজিয়ে সৈকত সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে ছোট-বড় অনেক দোকান পর্যটকদের জন্য বাড়তি আকর্ষণ। পুরো লাবনী পয়েন্ট জুড়ে রয়েছে শুটকির দোকান এবং ঝিনুকের বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী। এছাড়া সেখানে ছোট বড় সবগুলোতে পাবেন সামুদ্রিক মাছের বা খাবারের সমাহার।
কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান (হিমছড়ি):
হিমছড়ি কক্সবাজারের ১৮ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত চা পাহাড় আর ঝর্ণার কারণে পর্যটকদের কাছে অনেক জনপ্রিয়। কক্সবাজার থেকে হিমছড়ি যাওয়ার পথে বাম দিকে সবুজ ঘেরা পাহারা ডানদিকে সমুদ্রের নীল পানি আপনাকে মুগ্ধ করতে বাধ্য করবে।বর্ষার সময়ে হিমছড়ির ঝর্নাকে অনেক বেশি জীবন্ত প্রাণবন্ত হিসেবে পাওয়া যায়। মনে হয় এই ঝর্ণা যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছে। হিমছড়ির পাহাড়ের চূড়ায় ওঠার জন্য কয়েকশো সিঁড়ি রয়েছে। ফিরিবে পাহাড়ে উঠে পাহাড়ের উপরে বসে নিচে গ্রাম ও সমুদ্র দেখতে কতই না সুন্দর লাগে। হিমছড়ি যাওয়ার একটু আগে পাহাড় চূড়ায় দেখতে পাবেন "দরিয়া নগর "পর্যটন পল্লী। এই পল্লীর উঁচু পাহাড়ের নিচে রয়েছে এক কিলোমিটার দীর্ঘ কয়েকশো বছরের পুরনো একটি সুরঙ্গ পথ। রয়েছে একাধিক আদি গুহা ও ঝর্ণা। সম্প্রতি কালে হিমছড়িতে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু পর্যটন কেন্দ্র ও পিকনিক স্পট। যেখানে গেলে আপনার কোন অসুবিধা হবে না।
কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান( ইনানী সমুদ্র সৈকত) :
ইনানী সমুদ্র সৈকত যা কক্সবাজার থেকে ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। পাথরের সমারহে সৌন্দর্যে ভরপুর এই সমুদ্র সৈকতটি কক্সবাজার থেকে মাত্র আট ঘন্টার দূরত্বে অবস্থিত। পরিষ্কার ছাড়ছো পানির জন্য জায়গাটি পর্যটকদের কাছে সমুদ্র স্নানের জন্য একদম বিশেষ জায়গা বলে বিবেচিত।
কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান (নাইক্ষ্যংছড়ি লেক ও ঝুলন্ত ব্রিজ):
নাইক্ষ্যংছরি আসলে একটি প্রাকৃতিক জলাশয়। পাহাড়ের পাদদেশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ সমানাহার এই জলাশয় টি। এখানে রয়েছে একটি ঝুলন্ত ব্রিজ এর উপর দিয়ে লেকের এর পাড় থেকে ওপারে যাওয়া আসা করে। কক্সবাজার শহর থেকে সরাসরি গাড়িযোগে এই বিখ্যাত জায়গায় যাওয়া যায় এবং দিনে ঘুরে দিনে ফিরে আসা যায়। কক্সবাজার থেকে এর দূরত্ব ২৮ কিলোমিটার।
কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান (সেন্ট মার্টিন দ্বীপ) :
কক্সবাজার জেলার টেকনাফ হতে প্রায় ৯ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং মায়ানমারের উপকূল হতে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে নাফ নদীর মোহনায় অবস্থিত এই সেন্ট মার্টিন দ্বীপ। এটি বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণ এবং বঙ্গোপসাগরের উত্তর পূর্বাংশে অবস্থিত একটি প্রবাল দ্বীপ। প্রচুর নারিকেল পাওয়া যায় বলে স্থানীয়ভাবে এগেন নারিকেল জিঞ্জিরাও বলা হয়ে থাকে।
কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান (আদিনাথ মন্দির, মহেশখালী):
আদিনাথ মন্দির সমুদ্র স্তর থেকে ৮৫.৩ মিটার উঁচু মৈনাক পাহাড় চূড়ায় অবস্থিত । বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার অন্তর্গত মহেশখালী উপজেলাধীন গোরক ঘাটা ইউনিয়নে ঠাকুরতলা গ্রামে আদিনাথ মন্দিরের অবস্থান। এটি মূলত মহাদেবের মন্দির। জনশ্রুতি আছে কোন এক কৃষকেই দ্বীপের একটি বনের ভিতর মহেশ হিন্দু পৌরাণিক দেবতা মহাদেবের এর অপর নাম এর মূর্তিপান। এরপর এই দেবতার নামে একটি মন্দির তৈরি করে, সেখানে এই বিগ্রহ টি স্থাপন করেন। উল্লেখিত আছে যে এই মন্দিরটি বর্তমানে আদিনাথ মন্দির হিসেবে অভিহিত করা হয়ে থাকে। দ্বীপের ভূমি থেকে এই মন্দিরে উঠার জন্য মোট ৬৯ টি সিঁড়ি রয়েছে। আদিনাথ মন্দিরের দৈর্ঘ্য ১০.৫০ মিটার, প্রস্থ ৯.৭৫ মিটার, এবং উচ্চতা ৬ মিটার।ধর্ম প্রিয় মানুষের জন্য এটি অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান(ছেড়া দ্বীপ):
ছেড়া দ্বীপ যা বাংলাদেশ বিশ্বের বৃহত্তর ব-দ্বীপ সেন্ট মার্টিন এর সর্ব দক্ষিনে অবস্থিত। সেন্টমার্টিন দ্বীপ থেকে পাঁচ কিলোমিটার দক্ষিণে ছেঁড়া দ্বীপের অবস্থান। এর আয়তন তিন কিলোমিটার। ২০০০ সালের শেষের দিকে ছেঁড়া দুটি সন্ধান পাওয়া যায়। ছেড়া দ্বীপে দেখা যায় অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দৃশ্য। সামুদ্রিক ঢেউ আর সারি সারি নারিকেল গাছের এক অপরূপ দৃশ্য। প্রবাল পাথর ও পাথরের তৈরি বিভিন্ন কারুকার্য চোখে পড়বে ছেড়া দ্বীপে গেলে। চাঁদনী রাতে ছেড়া দ্বীপ সাজে তার অপরূপ সাজে। চাঁদনী রাতে যে কোন ভ্রমণকারীর মন ভরে যাবে ছেঁড়া দ্বীপের অপরূপ শোভা দেখে। ছেঁড়া দ্বীপের একদম উপরের দিকটাতে ভরা পূর্ণিমাতে ক্যাম্পিং করে থাকার মজাই আলাদা।
কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান( ডুলাহাজরা সাফারি পার্ক) :
সাফারি পার্কটি কক্সবাজার জেলা সদর থেকে ৪৮ কিলোমিটার উত্তরে এবং চক্রিয়া থানা থেকে ১০ কিলোমিটার দক্ষিণে, কক্সবাজার জেলা সদরের দক্ষিণ বন বিভাগের সাফিয়াখালি রেনসের দুলা হাজরা ব্লকে অবস্থিত। মূলত হরিণ প্রজনন কেন্দ্র হিসেবে ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় কর্তৃক এই পার্কটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সাফারি পার্কে নয়শো হেক্টর এলাকা জুড়ে অবস্থিত। দুলা হাজরা সাফারি পার্কে কেউ কেউ সাফারি পার্ক বলতে রাজি নন। কারণ এখানে প্রাকৃতিক অবকাঠামো ময় বদলে অত্যাধুনিক ও কৃত্রিম অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে বেশি। আরটি ব্লকে ভাগ করে গড়ে তোলা এ পার্কে মুক্ত পরিবেশে হাঁটাচলা করা যায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অনায়াসে বেড়ানো সম্ভব।
হাজারা সাফারি পার্ক মূলত হরিণ প্রজনন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও এখানে বাঘ, সিংহ, হাতি,ভাল্লুক,গয়াল,জলহস্তী, কুমির, মায়াহরিণ, সম্বর হরিণ, চিত্রা হরিণ, প্যারা হরিণ,প্রভৃতি প্রাণীয় রয়েছে। এই পার্কে সাধু পানির কুমির যেমন আছে তেমনি আছে লোনা পানির কুমির। কিছু পশু পাখি খাচায় বন্দি হলেও এ পার্কে অবস্থিত রত অধিকাংশ পশু পাখিদের বিচরণের জন্য প্রচুর উন্মুক্ত জায়গা রয়েছে। পর্যটকদের জন্য রয়েছে বিশ্রামাগার ও ডরমেটরি। এখানে স্থাপিত একাধিক পর্যবেক্ষণ টাওয়ার এর মাধ্যমে নয়ন ভারী সুন্দর্য পশু পাখিদের বিচরণ নিরাপদে পর্যবেক্ষণ করা যায়।
কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান(কুতুবদিয়া দ্বীপ) :
কক্সবাজারের একটি অন্যতম আকর্ষণীয় দর্শনীয় স্থান হচ্ছে কুতুব দিয়ে দ্বীপ। কুতুবদিয়া দীপ প্রায় ২১৬ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের একটি দ্বীপ জ্যাক কক্সবাজার জেলায় অবস্থিত। কুতুবদিয়া দ্বীপে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই।জেনারেটর ও পৌর বিদ্যুৎ দিয়ে এখানকার বৈদ্যুতিক চাহিদা মেটানো হয়ে থাকে। এখানে আছে নানান বৈচিত্র্যময় আশ্চর্যজনক নির্জন সমুদ্র সৈকত। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র, লবণ চাষ, বাতিঘর কুতুব আউলিয়ার মাজার সহ আছে দেখার মত অনেক কিছু।
কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান (সোনাদিয়া দ্বীপ):
সোনা দিয়ে দেব কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার একটি সুন্দর দ্বীপ। এই দ্বীপটির আয়তন প্রায় ৯ বর্গ কিলোমিটার। কক্সবাজার জেলায় সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে এবং মহেশখালী দ্বীপের দক্ষিণে সোনাদিয়ে দ্বীপটি অবস্থিত। এটি খাল দ্বারা একটি মহেশখালী দ্বীপ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। তিন দিকে সমুদ্র সৈকত, সাগর লতার ঢাকা বালিয়াড়ি , কে আনিশিনদার ঝোপ, ছোট বড় খাল বিশিষ্ট পেয়ারা বন এবং বিচিত্র প্রজাতির পাখি দ্বীপটিকে করেছে অন্যান্য বৈশিষ্ট্যমন্ডিত।
সোনা দিয়া দ্বীপের মানব বসতির ইতিহাস মাত্র ১০০ থেকে ১২৫ বছরের। দীপ্তি দুইটি পাড়ায় বিভক্ত। পূর্বপাড়া ও পশ্চিমপাড়া। দ্বীপের মোট জনবসতি প্রায় দুই হাজার।মাছ ধরা এবং মাছ শুকানো, চিংড়ি ও মাছের পোনা আহরণ দ্বীপের মানুষের প্রধান পেশা। কিছু মানুষ ইঞ্জিন চালিত নৌকা ও কাঠের সাধারণ নৌকা এবং উহা চালানোর সহকারী হিসেবে কাজ করেও জীবিকা নির্বাহ করে।
সোনা দিয়ে দ্বীপের সমুদ্র সৈকতের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে লাল কাঁকড়ার বিচরণ। সকালে রোদ ওঠার পরপরই কাকড়া গুলো গর্ত থেকে বেরিয়ে পড়ে। এছাড়া দ্বীপের সমুদ্র সৈকত এবং বালিয়াড়ি বিপন্ন সামগ্রিক আসিমের ডিম পাড়ার উপযোগী স্থান। শীতকালে তাদের ডিম পাড়ার উপযুক্ত সময়। এখানে সামুদ্রিক সবুজ কাসিম সমুদ্র সৈকতের বেলাভূমি পানির কিনারায় ঘেঁষে বিচরণ করে।
কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান (শাহ পরীর দ্বীপ) :
কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে অবস্থিত শাহ পরীর দ্বীপ। এটি মূলত সাবরাং ইউনিয়নের একটি গ্রাম। এ সময় একটি দ্বীপ থাকলেও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কিছুকাল আগে এটি মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে। টেকনাফ উপজেলা শহর থেকে শাহপরীর দ্বীপ প্রায় দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার। জনশ্রুতি আছে শাহ সুজার স্ত্রী "পরী" ও শাহ সুজার "শাহ " মিলে এ দ্বীপের নামকরণ শাহপরীর দ্বীপ করা হয়েছে। এই দ্বীপেই মূলত জোয়ার ভাটা ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায়।
কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান (মারমেড ইকো রিসোর্ট) :
ইনানের কাছে প্যাঁচার দিয়া গ্রামে গড়ে উঠেছে কক্সবাজার ভ্রমণকারীদের বড় আকর্ষণীয় এবং দর্শনীয় পেঁচার দ্বীপ। একপাশের ঝাউবন সমৃদ্ধ সমুদ্র সৈকত অন্য পাশে উঁচু পাহাড় মধ্যভাগ দিয়ে সুদূর টেকনাফ পর্যন্ত চলে গেছে প্রায় ৮৪ কিলোমিটারের কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়ক। সড়কের পশ্চিম পাশে (রেজু খালের পাশ ঘেষে) নির্জন দ্বীপ প্যাঁচার দিয়া গ্রাম।সেখানে আপনি থাকবেন সম্পূর্ণ কোলাহলমুক্ত। যেখানে কাক পক্ষীটি ও জ্বালাতন করতে আসবে না আপনাকে। কক্সবাজার শহরের কাকতলী থেকে সিএনজি চালিত অটো রিক্সায় সোজা রেজু ব্রিজ এর কাছে মারমেড ইকো রিসোর্ট। রাস্তার ওপর থেকে তাকালে গাছপালার আড়ালে চোখে পড়ে ছোট বড় অনেক কুটির। বড় রাস্তার ঢাল বেয়ে নিচে নামতেই কানে আসে কলরব। দুই পাশের জল ও ধারে চিটমি করে ভর দুপুরের রোদ্দুর। কক্সবাজারের সকল দর্শনীয় স্থানের মধ্যে এটি ও একটি অন্যতম স্থান।
কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান (শ্যামলাপুর সমুদ্র সৈকত) :
টেকনাফের কাছে বাহার ছড়া ইউনিয়নের পাশে সামলাপুর সমুদ্র সৈকত অবস্থিত। এটিও কক্সবাজারে একটি দর্শনীয় স্থান। মাছ ধরার নৌকা আর জেলেরা ছাড়া সেই ভাবে কোন মানুষজন চোখে পড়বে না। ঝা বনে পাওয়া যাবে সবুজের ছোঁয়া। কেউ কেউ একে বাহার ছড়া সমুদ্র সৈকত নামেও ডেকে থাকে। এখানকার দৃষ্টিনন্দন যাওবনে ঘিরা অপরূপ সুবিধ নির্জন সৈকতে এসে আপনার মন অবশ্যই ভালো হতে বাধ্য হবে।
কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান (রামু বৌদ্ধ বিহার) :
বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা রামু। ঐতিহ্যবাহী বৈদ্য পুরাকৃতি সমৃদ্ধ রামুতে রয়েছে অসংখ্য প্রাচীন ঐতিহাসিক নিদর্শন। এগুলোর মধ্যে রামুবৌদ্ধ মন্দির, বিহার ও চৈত্য- জাদি উল্লেখযোগ্য। রামদেপ্রায় ৩৫ টি বৌদ্ধ মন্দির বা কেন জাতি রয়েছে। বৈদ্য ঐতিহ্যের মধ্যে রামুল আমার পাড়া ক্যাং,কেন্দ্রীয় সীমা বিহার,শ্রী কুলের মৈত্রী বিহার, বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী মন্দির সমূহ দেখতে পারবেন। রামুর এই বৌদ্ধ ঐতিহ্য অতীতকাল থেকে গৌরবময় সাক্ষ্য বহন করে আসছে। এখানকার বৌদ্ধ বিহার ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন দর্শনে সারা বছর দেশি-বিদেশি পর্যটকদের সড়ক উপস্থিত দেখা যায়। আর পর্যটন নগরী হওয়ায় পর্যটকদের কাছে এগুলো আকর্ষণীয় অনেক বেশি। রামকোট বন আশ্রম বৌদ্ধ বিহার চৌমুহনী স্টেশন ৩ কিলোমিটার দক্ষিণে রাজারকুল এলাকার পাহাড় চূড়ায় অবস্থিত।
কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান (রামু রাবার বাগান) :
১৯৬০-৬১ সালে অনাবাদি জমি জরিপ করে গবেষণার মাধ্যমে রামুতে রাবার চাষবাদ শুরু করা হয়।রামুর ঐতিহ্যবাহী এর রাবার বাগান আজ দেশের অন্যতম পর্যটন স্থান হিসেবে দখল করে নিয়েছে। বর্তমানে বাগানের বিস্তৃতি ২ হাজার ৬৮২ একর।এর মধ্যে ১ হাজার ১৩০ একর এলাকা থেকে লিকুইড বাক্য সংগ্রহ করা হয়। রামুর রাবার বাগানে উৎপাদন ক্ষমতা আছে প্রায় ৫৮ হাজার। এসব গাছ থেকে বছরে প্রায় আড়াই লাখ কেজির রবার উৎপাদন হয়।। রবার গাছের সবুজ পাতাগুলো বাতাসে সব সময় দুলতে থাক। ঘন কালো এসব গাছের মাঝখান দিয়ে হেঁটে গেলে সবুজের সমরে হারিয়ে যাবে মন। গাছের ছায়ায় বসলে ঝুলে যাবে শরীরও প্রাণ।পাহাড়টিলা ও বিস্তৃত সমতল পাহাড়ের মধ্যে এর রবার বাগানের চারপাশে তাকালেও দেখা মিলবে অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ।
কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান (মহেশখালী ):
কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান (রেডিয়েন্ট ফিস ওয়াল্ড):
কক্সবাজারের একটি দর্শনীয় স্থান হচ্ছে রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড। রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড পর্যটন নগরী কক্সবাজার শহরের ঝাউ তলায় অবস্থিত একটি বিশেষ একুরিয়াম এবং ফিস মিউজিয়াম। একুরিয়াম কম্প্রেক্সও আছে সাগরো মিঠা পানির প্রায় ১০০ প্রজাতির মাছ। বিরল প্রজাতির মা সহ এখানে আছে হাঙ্গর, পিরানহা, শাপলা লতা, পান পাতা, কাছিম, কাঁকড়া, সামুদ্রিক শৈল , জেলিফিশ, পীতাম্বরী , সাগর কূচিয়া, আরো বিভিন্ন ধরনের মাছ।